নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের একটি দেশ ডেনমার্ক।
ডেনমার্কের রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাঁদছে নুরুজ্জামান। বেশ কয়েকজন পথচারী নুরুজ্জামানের দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। ডেনমার্কের মতো উন্নত দেশে কেউ রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাঁদে না। বিশেষ করে পঁয়তাল্লিশ বছর বয়সের কেউ। নুরুজ্জামান সমানে কেঁদেই যাচ্ছে। নুরুজ্জামান ডেনমার্ক এসেছে প্রায় বিশ বছর আগে। এর মধ্যে সে বেশ কয়েকবার দেশে গিয়ে বাবা-মা, ভাই বোনের সাথে দেখা করে এসেছে। দশ বছর আগে সে দেশে গিয়ে বিয়ে করেছে। বিয়ে করে বউ ডেনমার্ক নিয়ে এসেছে। তাদের তিনটি পুত্র সন্তান। বেশ হাসি খুশি পরিবার। নুরুজ্জামান ভালো চাকরি করেন। অথচ সুখি মানুষের দেশে নুরুজ্জামান সমানে কেঁদেই যাচ্ছেন।
এক বছর আগে নুরুজ্জামান একটি বাড়ি কিনেন।
প্রায় আড়াই কোটি টাকা দাম বাড়িটির। তার এত টাকা নেই। তার এক কোটি জমানো ছিলো। এই এক কোটি টাকা জমাতে তার বিশ বছর লেগেছে। এবং বাকি দেড় কোটি টাকা ব্যাংক থেকে লোন নিয়েছেন। প্রতিমাসে তার সেলারি থেকে ব্যাংক তার লোনের টাকা কেটে নেয়। বাড়িটির ইন্সুরেন্স করা আছে। ব্যাংকের টাকা দ্রুত পরিশোধ করার জন্য নুরুজ্জামান গোপোনে একটি নেপালি পরিবারকে নিচ তলা ভাড়া দেন। ডেনমার্ক এর নিয়ম অনুযায়ী ওই এলাকায় বাড়ি ভাড়া দেওয়া যাবে না। দোলতলা বাড়ি। খুব সুন্দর। বাড়ির সামনে বাগান আছে। বাড়ির পেছনে একটা ছোট্র পুকুর আছে। পুকুরের পানি স্বচ্ছ। ছুটির দিনে পরিবারের সবাইকে নিয়ে নুরুজ্জামান পুকুরে সাঁতার কাটেন। তখন তিনি নিজেকে একজন সুখী মানুষ মনে করেন।
নুরুজ্জামান তার পরিবার নিয়ে বেশ সুখে ছিল।
ভাড়া বাড়ি থেকে নিজের বাড়িতে উঠার পর তাদের সুখ আরো বেড়ে গেল। নুরুজ্জামানের একটা গাড়ি আছে। নুরুজ্জামান গাড়ি চালিয়ে অফিস যান। তার বউ রোকেয়া খুব ভালো একটা মেয়ে। রোকেয়া সারাদিন তিন বাচ্চা ও ঘর সামলায়। রান্না করে। নুরুজ্জামান সারাদিন থাকেন অফিসে। ছুটির দিনে তারা ঘুরে বেড়ান। নুরুজ্জামানের তিন সন্তানের মধ্যে দুইজন স্কুলে পড়ে। ছোটটা খুব ছোট। মাত্র এক বছর। বাড়ি কেনার পর বাড়ির লোন খুব সুন্দরভাবে পরিশোধ করা হচ্ছে। নিচ তলার নেপালি ভাড়াটিয়া সময় মতো ভাড়া দিচ্ছে। নুরুজ্জামান দেশে বাবা-মাকে টাকা পাঠাচ্ছে। বাড়ির লোন শোধ হচ্ছে। গত দুই পছর দেশে যাওয়া হয় নাই। আগামী বছর তিনি পরিবারের সবাইকে নিয়ে দেশে বেড়াতে যাবেন। অফিস তাকে এক মাসের জন্য ছুটি দিবেন।
নিচ তলার নেপালি ভাড়াটিয়ারা ছিল খ্রিস্টান।
একদিন সকালে মোমবাতি জ্বালিয়ে নেপালি স্বামী স্ত্রী প্রার্থনা করতে বসলেন। প্রার্থনা শেষে স্বামী স্ত্রী দুইজন'ই কাজে বের হয়ে গেল। বের হওয়ার সময় তারা দেখলো নুরুজ্জামান বাগানের গাছ গুলোতে পানি দিচ্ছে। গাছে পানি দেওয়া শেষ। বাড়ির সামনে এলো স্কুলের গাড়ি। নুরুজ্জামান তার দুই ছেলেকে স্কুলের গাড়িতে তুলে দিলেন। তিনিও নাস্তা করে কিছুক্ষনের মধ্যে অফিসের উদ্দ্যেশে বের হবেন। হঠাত তিনি জানালা দিয়ে দেখতে পান নিচতলা থেকে কালো ধোঁয়া বের হছে। প্রচুর কালো ধোঁয়া কুন্ডুলি পাকিয়ে উপরের দিকে উঠছে। দেখতে দেখতে মুহুর্তের মধ্যে কালো ধোয়া দিয়ে পুরো বাড়ি ভরে গেল। নিচ তলায় আগুন লেগেছে। খুব বেশি আগুন লেগেছে। ধোঁয়ায় ঠিক করে নিঃশ্বাস নেওয়া যাচ্ছে না।
তীব্র ধোঁয়ায় নুরুজ্জামান অজ্ঞান হয়ে গেছে।
তার স্ত্রী রোকেয়া ছোট্র শিশুকে কোলে করে বাইরে নিরাপদে চলে এসেছে। অথচ ঘরে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে আছে নুরুজ্জামান। খুব দ্রুত ফায়ার সার্ভিস চলে এসেছে। তারা নুরুজ্জামানকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। রোকেয়াকেও হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। দুই বাচ্চা স্কুলে থাকাতে বেঁচে যায়। আগুন লাগার কারন হচ্ছে নিচ তলার নেপালি ভাড়াটিয়া প্রার্থনা করার সময় মোমবাতি জ্বালিয়েছিল। তারা বের হবার সময় মোমবাতি নিভিয়ে দিতে ভুলে গিয়েছিল। পুলিশ নুরুজ্জামানের বাড়িটি ঘিরে রাখে। কাউকে সেই বাড়িতে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। পুলিশ তদন্ত করে দেখেছে নুরুজ্জামান নিচ তলা ভাড়া দিয়েছে। বাড়িটি সিলগালা করা হয়েছে। মামলা হবে। মামলা নিষ্পত্তি হলে তারপর বুঝা যাবে নুরুজ্জামান বাড়িটি ফিরে পাবে কিনা।
নেপালি পরিবারটি আপাতত পলাতক আছে।
নুরুজ্জামান তার এক বন্ধুর বাসায় পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। তার মন মেজাজ খুব বিক্ষিপ্ত। তিনি হয়তো খুব ভালো করেই মামলায় ফেঁসে যাবেন। এদিকে ব্যাংক লোন কিভাবে শোধ করবে? দেশেও টাকা পাঠাতে হয়। নুরুজ্জামান রোকেয়ার সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করেছে। রোকেয়া রাগ করে তার তিন সন্তান নিয়ে কোথায় যেন চলে গেছে। তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। নুরুজ্জামান রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাঁদছেন। তিনি পুরোদমে সাংসারিক মানুষ। বউ বাচ্চাকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন। তিনি মনে মনে ভেবে রেখেছেন, বাড়ি যাক, বাড়ি তার দরকার নাই। তিনি তার পরিবার ফিরে পেতে চান। সবার আগে তার কাছে তার পরিবার। রোকেয়াকে রাগের মাথায় থাপ্পড় মারা উচিত হয়নি। রোকেয়ার পায়ে ধরে তিনি মাফ চাইবেন।
২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:৫৯
রাজীব নুর বলেছেন: বাস্তব ঘটনা।
২| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:৩১
ল বলেছেন: সবার আগে পরিবার।।। সেটাই।।
২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:৫৯
রাজীব নুর বলেছেন: বিপদে আপদে সবার আগে থাকে পরিবার।
৩| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:৪৬
সারিয়া তাসনিম বলেছেন: সবার আগে পরিবার !!!!!!!!!!
২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ২:০০
রাজীব নুর বলেছেন: অবশ্যই।
৪| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ২:১৩
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: সত্য ঘটে নাকি ? মর্মান্তিক।
২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৯:২৩
রাজীব নুর বলেছেন: জ্বী সত্য।
৫| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ২:৩৪
জোবাইর বলেছেন: গল্প হউক আর সত্যি ঘটনা হোক, ব্যাপার হচ্ছে বিদেশে আইন কড়াকড়ি। সেখানে সবার আইন মেনে চলা উচিত। বিশেষ করা আমরা তৃতীয় বিশ্বের মানুষেরা লোভ সামলাতে পারি না! ইনস্যুরেন্স কোম্পানী আইনের ফাঁক পেলে কোনো টাকা দেবে না। সামান্য কিছু অর্থের লোভে নুরুজ্জামানের সুখের সংসারে আগুন লাগলো।
২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৯:২৫
রাজীব নুর বলেছেন: না গল্প নয়। সত্য ঘটণা। এই ৩/৪ দিন আগের ঘটনা।
৬| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ২:৩৮
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: এরকম ভাগ্য যেন কারো না হয়...
২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৯:২৬
রাজীব নুর বলেছেন: ইয়েস।
৭| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৩:০৯
শাইয়্যানের টিউশন (Shaiyan\'s Tuition) বলেছেন: ঐসব দেশে বাড়ির ইনস্যুরেন্স থাকে। ঐ ভদ্রলোক হয়তো তা পেয়ে যাবেন।
তবে, বিনা-অনুমতিতে বাসা ভাড়া দেওয়ায় জরিমানা গুনতে হবে তাকে।
ঝামেলা আছে।
২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৯:৩১
রাজীব নুর বলেছেন: মানূষের জীবনে সামান্য একটা ভুল সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হয়।
৮| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৪:১৬
কিরমানী লিটন বলেছেন: দাগ কে্টে গেলো- মর্মান্তিক....
ভালোবাসা আর শুভকামনা সতত সুপ্রিয় রাজিব নুর ভাই
২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৯:৩২
রাজীব নুর বলেছেন: আমার পোষ্টে আসার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
৯| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৪:১৭
রাতুল_শাহ বলেছেন: বাসা ভাড়া দেওয়া নিষেধ কেন?
নুরুজ্জামানের জন্য খারাপ লাগছে
২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৯:৩২
রাজীব নুর বলেছেন: ওই দেশের নিয়ম হবে হয়তো।
১০| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৪:৩৯
ওমেরা বলেছেন: জীবন অনেক কঠিন ।
২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৯:৩৩
রাজীব নুর বলেছেন: অবশ্যই কঠিন।
১১| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৪:৫০
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: আইন মানবেন সব সময়।
২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৯:৩৩
রাজীব নুর বলেছেন: আমি থাকি আইন না মানার দেশে।
১২| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৫৫
চাঁদগাজী বলেছেন:
লেখায় সামান্য গরমিল আছে: বাড়ী পোড়া গেছে, তাতে কোন অসুবিধা হবে না, ইন্সুরেন্চ টাকা দেবে।
২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৯:৩৫
রাজীব নুর বলেছেন: একতলা পুরোটা আগুনে পুড়ে শেষ।
ইন্সুরেন্স কোম্পানী যখন জানবে আইন অমান্য করে নিচতলা ভাড়া দেওয়া হয়েছে তখন হয়তো টাকা দিবে না। এদিকে পুলিশ তো বাড়িতে কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না।
১৩| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১১:৩৪
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: কেমন আছেন রাজীব ভাই?
২৭ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১২:৫৬
রাজীব নুর বলেছেন: জ্বী ভালো আছি।
দোয়া করবেন।
১৪| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:৪৮
ভুয়া মফিজ বলেছেন: আগুনের ব্যাপারে সবার সাবধান থাকা উচিত। একটু ভুলের জন্য বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যায়। ঘটনাটা বেদনাদায়ক!
২৭ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:৫১
রাজীব নুর বলেছেন: শুধু আগুনের ব্যাপারে না, সব বিষয়েই সাবধান থাকতে হবে।
১৫| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:৫৪
ভুয়া মফিজ বলেছেন: অবশ্যই।
আপনি আপাততঃ আগুন নিয়ে বলেছেন, তাই আমিও বললাম। যখন অন্যকিছু নিয়ে বলবেন, তখন সেটা নিয়ে বলবো।
২৭ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:৫৮
রাজীব নুর বলেছেন: আরে মিয়া ভাই বুঝতে পেরেছি আমি।
আপনি আছেন কেমন?? দিনকাল কেমন যাচ্ছে??
১৬| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ২:০২
ভুয়া মফিজ বলেছেন: দিনকাল চলে যাচ্ছে কোন রকমে, আপনাদের দোয়ায়।
আপনার কন্যা ছাড়া আপনার দিনকাল নিশ্চয়ই খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। অস্ট্রেলিয়া থেকে আসার সময় আপনার জন্য নিশ্চয়ই অনেক কিছু নিয়ে আসবে! যা যা আনবে তার ছবি দেখায়েন কিন্তু!
২৭ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৪:৫৮
রাজীব নুর বলেছেন: অবশ্যই ছবি দিব।
মেয়ে আর মাত্র দুই দিন পর চলে আসবে।
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:২৬
ইসিয়াক বলেছেন: মর্মান্তিক।