নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
ভয়াবহ একটা ঘটনা ঘটে গেছে।
অবশ্য এই ঘটনা খবরের কাগজে আসবে না। রফিক সাহেব অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে দেখলেন এক লোক পেয়ারা বিক্রি করছে। পেয়ারা দেখেই তার মনে পড়লো নীলা পেয়ারা খুব পছন্দ করে। পেয়ারা কিনতে গিয়ে রফিক সাহেব অবাক! পেয়ারা বিক্রেতা দেখতে একেবারে তার মতোন। রফিক সাহেব অবাক হয়ে তাকিয়ে আছেন! পেয়েরা বিক্রেতা বলল, পেয়ারা নিবেন? না নিবেন না? হা করে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন কেন? পেয়ারা না কিনে রফিক প্রায় দৌড় দিলেন বাসার দিকে। নীলা বলল, হাপাচ্ছো কেন? কি হয়েছে? রফিক সাহেব চুপ করে থাকলেন। একটু পরে কাজের মেয়ে হাফসা চা নিয়ে এলো। রফিক সাহেব চা নিতে গিয়ে দেখেন হাফসার চেহারা তার মতো হয়ে গেছে। আল্লাহ গো বলে চিৎকার দিয়ে উঠলেন রফিক সাহেব। হাফসার হাত থেকে চায়ের কাপ মাটিতে পড়ে গেল। দৌড়ে এলেন নীলা।
রফিক সাহেবের মাথায় পানি ঢালা হচ্ছে।
তিনি চোখ বন্ধ করে রেখেছেন। নীলা কাঁদতে কাঁদতে রফিক সাহেবের মাথায় পানি ঢালছে। নীলার ফোঁপানির শব্দ পেয়ে রফিক সাহেব বললেন, আমার তো জ্বর আসেনি, তুমি আমার মাথায় পানি দিচ্ছো কেন? আবার কাঁদছো? বোকা মেয়েছেলে নিয়ে এই এক সমস্যা। রফিক সাহেব চোখ খুলে দেখলেন নীলার মুখ বদলে গেছে। নীলার মুখের জায়গায় তিনি তার নিজের মুখ দেখতে পারছেন। এটা কি করে সম্ভব? তিনি যার দিকেই তাকাচ্ছেন, নিজেকে দেখতে পারছেন। তিনি কি পাগল হয়ে গেলেন? তাদের বংশে তো কোনো পাগল নেই। নাকি সম্পূর্নটাই তার মনের ভুল। রফিক সাহেব মনে মনে বললেন, হে আল্লাহ সহায় হও। এ আমার কেমন অসুখ দিলে? আমি নামাজ পড়ি, রোজা রাখি। দরিদ্র মানুষদের সাহায্য করি। জীবিনে কখনও অসৎ হইনি। ক্ষমা করো প্রভু। ক্ষমা করো।
পরের দিন রফিক সাহেব অফিসে গেলেন না।
চোখ বন্ধ করে বেলকনিতে চুপ করে বসে আছেন। এবং বলে দিয়েছেন তাকে যেন কেউ ডিস্টার্ব না করে। খাবারের জন্যও তাকে ডাকতে মানা করে দিয়েছেন। চোখ বন্ধ রেখেই তিনি ভাবতে শুরু করলেন, কেন তিনি কারো মুখের দিকে তাকালেই নিজের মুখ দেখছেন। রফিক সাহেব একজন সুখী মানুষ। চাকরি করছেন এইচ আর গ্রুপে এডমিন সেকশনে। তিন বছর প্রেম করে বিয়ে করেছেন। তার সাত বছর বয়সী একটা ছেলে আছে। ছেলের নাম সুমন। সুমন স্কুলে পড়ে। ফ্ল্যাটটি তার নিজের। গ্রামে বাবা-মাকে নিয়মিত টাকা পাঠান। প্রত্যেক শুক্রবার তিনি কাপ্তান বাজার থেকে বাজার করেন। নানান ভাবনা চিন্তা করেও রফিক সাহেব কোনো কূল কিনারা পেলেন না। তবে তিনি ঠিক করেছেন আজ ডাক্তার দেখাবেন। ডাক্তার অবশ্যই কোনো সমাধান দিতে পারবেন। এই রোগ না হয়ে যদি তিনি হঠাত অন্ধ হয়ে যেতেন তাও ভালো ছিলো।
ডাক্তার রফিক সাহের সমস্ত কথা শুনলেন।
ডাক্তার বললেন, এবার নিচের দিকে না তাকিয়ে আপনি আমার দিকে তাকান। আমার দিকে তাকিয়ে কথা বলুন। রফিক সাহেব বললেন, আপনার দিকে তাকালেই দেখা যাবে আপনার মূখ আমার মতোন হয়ে গেছে। ডাক্তার বলল, তারপরও আপনি আমার দিকে তাকান। রফিক সাহেব তাকালেন এবং ধীরে ধীরে ডাক্তারের মুখ তার মুখের মতন হয়ে গেল। রফিক সাহেব বললেন, ডাক্তার আপনার মুখ অবিকল আমার মুখের মতন হয়ে গেছে। ডাক্তার বললেন, এটা কি করে সম্ভব! আমি আমার ডাক্তারি জীবনে এরকম রোগী দেখি নি। যাই হোক, আপনি বিশ্রামে থাকুন। কোনো প্রকার চিন্তা ভাবনা করবেন না। খাবেন আর ঘুমাবেন। লুডিওমিল নামে একটা ওষুধ দিয়ে দিলাম। এটা খেলে ঘুমটা আনন্দময় হবে আশা করি। সাত দিন পর আপনি আবার আসবেন। রফিক সাহেব বাসার দিকে রওণা দিলেন। ডাক্তার তখন তার সাইক্রিয়াটিক বন্ধু স্টিভ ক্যানকে একটা মেইল পাঠালেন আমেরিকাতে। মেইলে রফিক সাহেবের সমস্যা গুলো পয়েন্ট আকারে লিখে দিলেন।
আজ এগারো তম দিন।
রফিক সাহেব সারাদিন বাসায় থাকেন। অফিসে যান না। এমন কি ঘরের কারো সাথে কথা বলেন না। কথা বলতে গেলেই তো তার দিকে তাকাতে হয়। দরজা বন্ধ করে চুপ করে বসে থাকেন। তার ছেলে সুমন এলোও তিনি কথা বলেন না। জানালা দিয়ে তাকে খাবার দেওয়া হয়। নীলা খুব কান্নাকাটি করছে। সে অসংখ্যবার জিজ্ঞেস করেছে, তোমার কি হয়েছে? রফিক সাহেব তাকে কিচ্ছু বলেন নি। রফিক সাহেব মনে করেন মেয়েদের সাথে সমস্যার কথা কম বলাই ভালো। তারা অযথা চিন্তা করবে। চিন্তা করে-করে প্রেসার বাড়াবে। কাজের মেয়ে হাফসা'র ধারনা রফিক সাহেব ভং ধরেছেন। কয়েকদিন পর এমনিতেই সব ঠিক হয়ে যাবে। একমাত্র ছেলে সুমন আছে মহা শান্তিতে। তার বাবা তাকে এখন বকাঝকা করছে না। যা ইচ্ছা তাই করতে পারছে। সন্ধ্যার সময় পড়তে বসার জন্য কেউ চাপ দিচ্ছে না। আরামসে কার্টুন দেখা যাচ্ছে।
রাত একটা।
রফিক সাহেব তার স্ত্রী নীলাকে ডাকলেন। সুমনকে ঘুম থেকে ডেকে তোলা হলো। কাজের মেয়ে হাফসাকেও ডাকা হলো। রফিক সাহেব বললেন, আমার কথা গুলো মন দিয়ে শোনো। কথার মাঝখানে কেউ কোনো কথা বলবে না। আমার এক কঠিন অসুখ হয়েছে। এই অসুখের চিকিৎসা নেই। মনে হচ্ছে আমি আর বাঁচবো না। আমার সময় শেষ। অথচ আমি কোনো পাপ করি নি। সহজ সরল জীবন যাপন করেছি। আমি জানি, যা ঘটছে সবই মহান প্রভুর ইচ্ছায় ঘটছে। তোমরা ভালো থেকো। ব্যাংকে আমার টাকা পয়সা যা আছে সব তোমার নামে লিখে দিলাম। সুমনের দিকে লক্ষ্য রেখো। বকাঝকা করো না। নীলা, সুমন, হাফসা সবাই কাঁদছে। রফিক সাহেবও কাঁদছেন।
এক সময় মসজিদে ফজরের আযান শুরু হলো। তার একটু পরে আকাশ ফর্সা হতে শুরু করলো। কিছু পাখি কিচির মিচির করতে করতে আকাশে উড়ে গেল। ঠিক তখন রফিক সাহেব মারা গেলেন।
০২ রা নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০৩
রাজীব নুর বলেছেন: দাঁত ব্যথা একটি আতংকের নাম। দাঁতের ব্যথায় যে ভোগে বা ভুগছে, এমন ব্যক্তি জানে কষ্টটা কতটা মারাত্মক। এই ব্যথা মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে তা এক মিনিটও সহ্য করে থাকা সম্ভব নয়।
২| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৫১
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: গল্পটা তাড়াতাড়ি শেষ অয়ে গেল !
০৩ রা নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৪০
রাজীব নুর বলেছেন: এটাই ভালো নয় কি?
৩| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:৩১
মা.হাসান বলেছেন: সকাল বেলা চায়ের দোকানে যায়ে দেখি বাস ভাড়া ২ টাকা বাড়ায়ে দিছে এর পরই কারেন্ট চলে গেল।
০৩ রা নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৪১
রাজীব নুর বলেছেন: হা হা হা
হে হে হে
হো হো হো
৪| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:৪২
কিরমানী লিটন বলেছেন: বরাবরের মতোই একরাশ মুগ্ধতার গল্প। +++
০৩ রা নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৪২
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।
৫| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৯ ভোর ৬:১৫
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
এই গল্পে আপনি পাঁচ তারকা পাওয়ার যোগ্যতা রাখেন।
০৩ রা নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৪২
রাজীব নুর বলেছেন: অনেক শুকরিয়া।
দোয়া করবেন।
৬| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:২৫
অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন:
ভাই বই কবে পাবো ।
আপনার প্রকাশনী তে কাজ করার ইচ্ছা আছে আমার ।
একটু দেখবেন ।
০৩ রা নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: প্রকাশনী দেওয়ার জন্য টাকার ব্যবস্থার করতেছি।
৭| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:৪৩
অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন:
অপেক্ষায় থাকলাম । জব ছেড়ে দিব ।
০৩ রা নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:৫২
রাজীব নুর বলেছেন: তাহলে প্রকাশনীতে এসে বসে থাকবেন। গল্প করবো।
৮| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:২৮
জাহিদ হাসান বলেছেন: পেয়ারা খেতে-খেতে আপনার পোস্টটা মজা করে পড়লাম।
০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:৩১
রাজীব নুর বলেছেন: গল্পটা কেমন হয়েছে??
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৫
ইসিয়াক বলেছেন: কি হলো ?????