নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

নিজেকে জানো

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:১৯



আশা করি আপনারা সকলেই ভালো আছেন।
আপনি কি নিজেকে জানেন? জানলে কতটুকু জানেন? নিজের ব্যক্তিত্ব বা পার্সোনালিটি সম্পর্কে ধারণা রাখুন। ব্যক্তি হিসেবে আপনি কেমন, সেটা আপনার থেকে ভালো কেউ জানবে না, তাই নিজের খবর নিজেকেই রাখতে হবে। একজন মানুষ তার নিজের আত্মাকে চিনবে তখনই, যখন তার লক্ষ্য থাকবে নিশ্চিত, আর সে সেই লক্ষ্যে থাকবে স্থির, অবিচল। অর্থের পিছনে দৌড়ানো ঠিক না। আপনাদের প্রথম কর্তব্য হওয়া উচিত আত্মার উন্নয়ন সাধন। নিজেকে জানতে হলে প্রচুর পরিমানে পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের প্রয়োজন আছে। সত্যিকার অর্থে নিজেকে জানার জন্য কোন নির্দিষ্ট সময় নেই। এটা নির্ভর করে তার বুদ্ধিমত্তার উপর।

নিজেকে জানার মত বড় গুণ আর নেই।
আপনি নিজেকে ভালো করে দেখুন। যতোটা সম্ভব জানতে চেষ্টা করুন। আপনার নিজের ভালো দিক, খারাপ দিক গুলো ভাল করে জানতে চেষ্টা করুন। আপনার প্রতিভা খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন। আমি বিশ্বাস করি- প্রতিভা শূন্য মানুষ নেই। আপনার মধ্যে অবশ্যই কোনো না কোনো প্রতিভা আছে'ই। মানুষের নিজের ভেতরে, তার নিজস্ব অস্তিত্বে যেসব গুপ্তধন রয়েছে সে গুলোকে খুঁজে বের করার জন্য প্রয়োজনীয় চেষ্টা প্রচেষ্টার অবসরটুকুও যেন তার নেই। জীবনে সাফল্য লাভ ও সন্তুষ্টির ব্যাপারে পবিত্র কুরআন চমৎকার জীবনযাপন পদ্ধতির দিকনির্দেশনা দেওয়া আছে। জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো আত্মসচেতনতা। আত্মসচেতনতা মানে হলো নিজেকে চেনা, নিজের সম্পর্কে জানা।

পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, নিজেকে জানার মত বড় গুণ আর নেই। ‘মানুষ কি মনে করে, তাকে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়ানোর জন্য পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে? তোমরা কি ভেবেছ তোমাদের অহেতুক সৃষ্টি করেছি।’ মোটেও নয় বরং বিশেষ উদ্দেশ্যের জন্যই আমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে। অনেক হয়েছে, আর না- এখন সময় এসেছে নিজেকে চেনা ও জানার, নিজেকে সংশোধন করার। অনেকে বলতে পারেন, কেবল নিজেকে চিনলে লাভ কী? হ্যাঁ, লাভ আছে রে ভাই। সৃষ্টির সেরা জীব ভিক্ষা করবে কেন? করে; এজন্যই যে সে জানে না সে যে কে? মানুষ যদি নিজেকে চিনতে পারতো তবে কাউকে ভিক্ষা করতে হতো না। নবী (স.) বলেন, তুমি যদি আল্লাহকে চিনতে চাও তবে আগে নিজেকে চেনো। মানুষ আসলে নিজেকে চেনার চেষ্টাই করে না। তাকায় কিন্তু দেখে না, শ্রবণ করে কিন্তু শুনে না, পড়ে কিন্তু বুঝে না।

সৃষ্টিকর্তা বলেন, আমি মানুষের জন্য সব কিছু সৃষ্টি করেছি, সাত আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে তা মানুষের জন্যই সৃষ্টি। অথচ মানুষ না খেয়ে থাকে, ভিক্ষা করে। কারণ সে জানেই না যে বিশ্বের সমস্ত কিছু তার জন্যই সৃষ্টি করতে হয়েছে। আপনার অবস্থার পরিবর্তন তখনই হবে যখন আপনি পরিবর্তন চাইবেন। আপনি যদি একটি চেয়ারকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরাতে চান তবে তার আগেও আপনাকে চিন্তা করতে হবে আমি চেয়ারটি সরাবো কি সরাবো না। একটি চেয়ারও সরবে না যদি সরাতে না চান, আর জীবন তো সরবেই না। জীবনের পরিবর্তন চাইলেই পরিবর্তন ঘটবে। সহজ সরল কথা হলো- নিজেকে জানো, শান্তিতে থাকো। নিজেদের জানতে হলে ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে। ইতিহাস মানেই আমাদের চেনা-জানা অতীতের মানুষের গল্প।

একটা কথা মনে রাখতে হবে আপনার জন্ম আপনার হাতে নেই কিন্তু আপনার জীবনের সফলতা আপনার হাতে। আপনি কত ফিট লম্বা হবেন তা আপনার হাতে নেই কিন্তু আপনি কত বড় হবেন তা আপনার হাতে। আপনার গায়ের রং কেমন হবে তা আপনার হাতে নেই কিন্তু আপনার জীবনকে আলোকময় করা আপনার হাতে। মানুষ মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত জ্ঞানী হতে পারেনা, জ্ঞানী হওয়ার প্রয়াস করতে পারে মাত্র। এই জন্যই যে নিজেকে জেনেছে সে জ্ঞানের কাছাকাছি গিয়েছে, যে নিজেকে জানেনি সে জ্ঞানকেই বুঝতে পারেনি। আমরা কেউই এই পৃথিবীতে গুরুত্বহীন নই। ঠেলাগাড়ি যে চালায়, দিনশেষে সেও একটা পরিবারে ফিরে যায়, যেখানে সে কারো বাবা, ছেলে, স্বামী কিংবা ভাই। কাজেই নিজের মূল্য দেওয়া শিখতেই হবে। আর সেই শিক্ষাটা শুরুই হয় নিজেকে জানার মাধ্যমেই।

একটি ছোট গল্প দিয়ে লেখাটি শেষ করি-
প্রাচীন গ্রিসের মানুষেরা মনে করতো পৃথিবীর সবকিছুর কেন্দ্র হচ্ছে গ্রিস আর গ্রিসের কেন্দ্র হচ্ছে একটা মন্দির। সেই মন্দিরটার নাম হচ্ছে ডেলফি মন্দির। সারা দেশের মানুষ ঐ মন্দিরে আসতো নিজের অতীত বর্তমান এবং ভবিষ্যৎকে জানার জন্য।

মন্দিরের সামনে দাঁড়িয়ে যেই প্রশ্নই করা হতো ভিতর থেকে একটা নারী কণ্ঠে প্রতিধ্বনি হয়ে উত্তরটা প্রশ্নকর্তার কাছে ফিরে আসতো। একদিন সক্রেটিসের বন্ধু মন্দিরে গিয়ে জিগ্যেস করলো, “এখন এথেন্সের সবচেয়ে জ্ঞানী ব্যক্তি কে”? মন্দিরের ভিতর থেকে সক্রেটিসের নাম প্রতিধ্বনিত হয়ে সক্রেটিসের বন্ধুটির কাছে ফিরে আসলো।

সক্রেটিসের বন্ধুটি যখন সক্রেটিসকে এই কথাটি জানালো তখন সক্রেটিস একটু অবাক হলেন। তখন তিনি ভাবলেন আমি তো কিছুই জানিনা, তারপরেও আমাকে সবচেয়ে জ্ঞানী বলা হলো? তিনি তখন তা পরীক্ষা করার জন্য এথেন্সের যতো জ্ঞানী আছে তাদের কাছে গিয়ে জ্ঞান সম্পর্কে জানতে চাইলেন। কিন্তু অবাক করার বিষয় যার কাছেই গিয়েছেন তিনিই এমন ভাব দেখিয়েছেন যে, জ্ঞানটা যেন একা তারই আছে অন্য কারোর কাছে নেই। তারা প্রত্যেকেই নিজেকে শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী বলে জাহির করেছেন।

সক্রেটিস তখনই বুঝতে পারলেন যারা নিজেদের শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী বলে দাবি করছেন তারা আসলেই জানেন না তাদের সীমাবদ্ধতা কি। কিন্তু সক্রেটিস জানেন তার অজ্ঞতা কোথায়। সক্রেটিস বুঝতে পারলেন তারা নিজের সম্পর্কে জানেন না, কিন্তু সক্রেটিস জানেন এটাই তাকে সবচেয়ে জ্ঞানী মানুষে পরিণত করেছে। তাই তিনি বলেছেন, নিজেকে জানো, নিজেকে চিনো। যে নিজেকে চিনতে পারবে সেই পৃথিবীতে বেশি পাণ্ডিত্য অর্জন করতে পারবে।

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:৫৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: Know thyself
সত্যিকারের জ্ঞানী হওয়ার পথে তুমি এগুতে পার যখন তুমি জানবে যে তুমি কি জান না। দেবতা আপোলোর মন্দির ডেলফিতে দৈববাণী হয়েছিল যে সক্রেটিসই হচ্ছে জীবিতদের মধ্যে সবচাইতে জ্ঞাণী পুরুষ। তাই সক্রেটিস জুরিদের উদ্দেশ করে বলেছেন, আমি প্রমাণ করতে চাইলাম যে দৈববানী ভুল, তাই আমি প্রথমে গেলাম রাষ্ট্রপরিচালকদের কাছে এবং দেখলাম যাদেরকে সবচাইতে জ্ঞানী বলে মনে হয় তারাই সবচাইতে বেশি মূর্খ। তখন আমি বুঝলাম আমি তাদের চাইতে বেশি জ্ঞানী , কারন আমি অন্তত এটুকু জানি যে আমি কিছু জানি না। তারপর আমি কবিদের কাছে গেলাম এবং দেখলাম তারা জ্ঞানের সাহায্যে নয় বরং দৈবজ্ঞানীদের মতো অনুপ্রানিত হয়ে কাব্য রচনা করেন, তারা অনেক চমৎকার কথা বলেন কিন্তু যা বলেন তার কিছুই বোঝেন না। তথাপি কবিরা মনে করেন যে তারাই সর্বশ্রেষ্ট জ্ঞানী। তারপর আমি গেলাম কারিগরদের কাছে, দেখলাম তার অনেক কিছুই জানেন যা আমি জানি না, যেমন জাহাজ কিংবা জুতো তৈরী করা; কিন্তু কবিদের মতোই তারা বিশ্বাস করেন যে তাদের জানা বিষয়গুলোই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন , যেমন জুতো তৈরি করা। এই বিশ্বাস তাদেরকে জ্ঞানী হতে বাধা দেয়।এ সব দেখেশুনে আমি সিদ্ধান্তে এলাম যে আসলে কেউই জ্ঞানী নয়—রাষ্ট্রপরিচালকরা নয়, কবিরা নয়, কারিগররা নয়, এমনকি আমিও নই, যার সম্পর্কে ডেলফিতে দৈববাণী শোনা গিয়েছিল; কিন্তু আমি অন্তত এটুকু জানি যে আমি কিছু জানি না। তোমরা তোমাদের শরীর কিংবা অর্থের পিছনে ছুটোনা, তোমারদের প্রথম কর্তব্য হওয়া উচিত আত্মার উন্নয়ন সাধন। যতদিন পযর্ন্ত সত্য ও জ্ঞানের খোজ না পাও ততদিন পযর্ন্ত অর্থ, যশ বা প্রতিপত্তির কথা চিন্তা করোনা। সততা অর্থ থেকে আসে না বরং সততাই অর্থ ও অন্যান্যা ভালো জিনিস টেনে আনে। এটাই আমার শিক্ষা। আমার এই মতবাদ যদি এথেন্সের যুবসমাজকে কুপথে নেয় তা হলে আমি দোষী। যদি কেউ বলে এসব ছাড়া আমি অন্যকিছু শিখিয়েছি, সে মিথ্যুক।

সক্রেটিস বক্তৃতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হচ্ছে: ‘জ্ঞানেই পুণ্য’। এই নীতি অনুযায়ী ভালোকে জানা মানেই ভালো কাজ করা। মানুষ খারাপ কাজ করে শুধুমাএ তার অজ্ঞতার জন্য। যদি জ্ঞানেই পুন্য লাভ হয়, ভালোকেই জানার অর্থ যদি হয় ভালো কাজ করা, তা হলে একজন লোক তখনই কুকর্মে ব্যাপৃত হবে যখন সে ভালোকে জানতে ব্যর্থ হবে। এখানেই সক্রেটিস সেই বিখ্যাত করেন: ‘কেউ স্বেচ্ছায় কুকর্ম করে না।’ ভালো কে জানার পর কেউ স্বেচ্ছায় মন্দ বেছে নেয় না। কিন্তু আমরা প্রায়শই বলি –“জেনেশুনে অন্যয় কাজটি করলাম।”অথবা চাইলেই ভালো কাজটি করতে পারতাম। সক্রেটিসের বিবেচনায় এটা একেবারেই অসম্ভব; যদি কেউ সত্যিই কেউ ‘ভালো’ কে জানে তা হলে সে ভালো কাজটিই করবে । তুমি যা করেছ তার চেয়ে যদি উত্তম বিবেচনাবোধ তোমার থাকত, হা হলে তুমি সেটাই করতে। সক্রেটিস আর বলেছেন, যখন কেউ কোনো খারাপ কাজ করে তখন এই আশায় করে যে এর ফলে সে উপকৃত হবে,লাভবান হবে। একজন চোর জানে যে চুরি করা অন্যায় , কিন্তু যখন সে একটি হীরার হার চুরি করে, সে হয়তো এই আশায় চুরি করে যে এর বিনিময়ে সে তার কাঙ্খিত রমনীর যৌনানুগ্র লাভ করবে, এই চোরের মতো প্রায় সবাই জীবনপাত করে ক্ষমতা, প্রতিপত্তি বা অর্থে পেছনে ছোটে, কারন তারা মনে করে যে এসবই ভালো এ সবের মধ্যে তারা সুখ খুজে পাবে। কিন্তু তারা জানে না কোনটি ভালো। তারা জানে না এ সবে মধ্যমে সে কখনও সুখ খুঁজে পাবে না। মানুষের জন্য কী ভালো এবং কিসে মানুষের সুখ, তার জীবনযাপন পদ্ধতি কী হওয়া উচিত এবং কীভাবে সে সেটা আয়ত্ত করবে তা জানার জন্য প্রথমে মানবচরিত্র বুঝতে হবে। মানুষ যদি তা বোঝার চেষ্টা না করে, যদি কোনো দিন না জানে কোনটি তার জন্য ভালো হা হলে সুখী হওয়ার সমস্ত চেষ্টাই ব্যর্থ হবে। এই ধরনের জীবনকে সক্রেটিস অপরিক্ষীত জীবন বলে উল্লেখ করেছেন। তার অন্যতম বিখ্যাত উক্তি: “অপরিক্ষিত জীবন ভালো জীবন নয়।”

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: হুম।

২| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:০০

ইসিয়াক বলেছেন: একদিন আমি হারিয়ে যাব
=================
একদিন আমি হারিয়ে যাব। সত্যি হারিয়ে যাব, দেখতে।
একদিন আমি হারিয়ে যাব। অভিমানে অথবা দুঃখ বিলাসে;
তোমারা জানবে না কারণ। কারণ হয়ত তখনই সময়।

রাত্রির মরুতারা সাথে নিয়ে
একা হয়ে একলা দাঁড়াবো,
যাচ্ছেতাই আমি আমার মত।

আলো অন্ধকার যেখানে একঘরে; কাছাকাছি বালুঝড়ে অপাংক্তেয় আমি;
আমি আমায় মিশে গিয়ে, অন্তত একবার সত্যিই দাঁড়াবো;
আমার সমস্ত অনুভব নিয়ে। একাগ্র একান্তে আমাকে নিয়ে।

শব্দগুলো যেখানে অনেকটা অপার্থিব,
প্রাচীন পৃথিবী যেখানে আপনার,
দিগন্তরেখার আদুরে আলো যেদিকে,
সেখানটায় একবার, আমার জন্য,
আমি একলা দাঁড়িয়ে দেখব।
আমার মত। আমি হতে।

একদিন আমি হারিয়ে যাবই।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: হুম।

৩| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:০৫

ইসিয়াক বলেছেন: নিজেকে জানো
==============
সক্রেটিস
===============
সত্যিকারের জ্ঞানী হওয়ার পথে তুমি এগুতে পার যখন তুমি জানবে যে তুমি কি জান না। দেবতা আপোলোর মন্দির ডেলফিতে দৈববাণী হয়েছিল যে সক্রেটিসই হচ্ছে জীবিতদের মধ্যে সবচাইতে জ্ঞাণী পুরুষ। তাই সক্রেটিস জুরিদের উদ্দেশ করে বলেছেন, আমি প্রমাণ করতে চাইলাম যে দৈববানী ভুল, তাই আমি প্রথমে গেলাম রাষ্ট্রপরিচালকদের কাছে এবং দেখলাম যাদেরকে সবচাইতে জ্ঞানী বলে মনে হয় তারাই সবচাইতে বেশি মূর্খ। তখন আমি বুঝলাম আমি তাদের চাইতে বেশি জ্ঞানী , কারন আমি অন্তত এটুকু জানি যে আমি কিছু জানি না। তারপর আমি কবিদের কাছে গেলাম এবং দেখলাম তারা জ্ঞানের সাহায্যে নয় বরং দৈবজ্ঞানীদের মতো অনুপ্রানিত হয়ে কাব্য রচনা করেন, তারা অনেক চমৎকার কথা বলেন কিন্তু যা বলেন তার কিছুই বোঝেন না। তথাপি কবিরা মনে করেন যে তারাই সর্বশ্রেষ্ট জ্ঞানী। তারপর আমি গেলাম কারিগরদের কাছে, দেখলাম তার অনেক কিছুই জানেন যা আমি জানি না, যেমন জাহাজ কিংবা জুতো তৈরী করা; কিন্তু কবিদের মতোই তারা বিশ্বাস করেন যে তাদের জানা বিষয়গুলোই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন , যেমন জুতো তৈরি করা। এই বিশ্বাস তাদেরকে জ্ঞানী হতে বাধা দেয়।এ সব দেখেশুনে আমি সিদ্ধান্তে এলাম যে আসলে কেউই জ্ঞানী নয়—রাষ্ট্রপরিচালকরা নয়, কবিরা নয়, কারিগররা নয়, এমনকি আমিও নই, যার সম্পর্কে ডেলফিতে দৈববাণী শোনা গিয়েছিল; কিন্তু আমি অন্তত এটুকু জানি যে আমি কিছু জানি না। তোমরা তোমাদের শরীর কিংবা অর্থের পিছনে ছুটোনা, তোমারদের প্রথম কর্তব্য হওয়া উচিত আত্মার উন্নয়ন সাধন। যতদিন পযর্ন্ত সত্য ও জ্ঞানের খোজ না পাও ততদিন পযর্ন্ত অর্থ, যশ বা প্রতিপত্তির কথা চিন্তা করোনা। সততা অর্থ থেকে আসে না বরং সততাই অর্থ ও অন্যান্যা ভালো জিনিস টেনে আনে। এটাই আমার শিক্ষা। আমার এই মতবাদ যদি এথেন্সের যুবসমাজকে কুপথে নেয় তা হলে আমি দোষী। যদি কেউ বলে এসব ছাড়া আমি অন্যকিছু শিখিয়েছি, সে মিথ্যুক।

সক্রেটিস বক্তৃতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হচ্ছে: ‘জ্ঞানেই পুণ্য’। এই নীতি অনুযায়ী ভালোকে জানা মানেই ভালো কাজ করা। মানুষ খারাপ কাজ করে শুধুমাএ তার অজ্ঞতার জন্য। যদি জ্ঞানেই পুন্য লাভ হয়, ভালোকেই জানার অর্থ যদি হয় ভালো কাজ করা, তা হলে একজন লোক তখনই কুকর্মে ব্যাপৃত হবে যখন সে ভালোকে জানতে ব্যর্থ হবে। এখানেই সক্রেটিস সেই বিখ্যাত করেন: ‘কেউ স্বেচ্ছায় কুকর্ম করে না।’ ভালো কে জানার পর কেউ স্বেচ্ছায় মন্দ বেছে নেয় না। কিন্তু আমরা প্রায়শই বলি –“জেনেশুনে অন্যয় কাজটি করলাম।”অথবা চাইলেই ভালো কাজটি করতে পারতাম। সক্রেটিসের বিবেচনায় এটা একেবারেই অসম্ভব; যদি কেউ সত্যিই কেউ ‘ভালো’ কে জানে তা হলে সে ভালো কাজটিই করবে । তুমি যা করেছ তার চেয়ে যদি উত্তম বিবেচনাবোধ তোমার থাকত, হা হলে তুমি সেটাই করতে। সক্রেটিস আর বলেছেন, যখন কেউ কোনো খারাপ কাজ করে তখন এই আশায় করে যে এর ফলে সে উপকৃত হবে,লাভবান হবে। একজন চোর জানে যে চুরি করা অন্যায় , কিন্তু যখন সে একটি হীরার হার চুরি করে, সে হয়তো এই আশায় চুরি করে যে এর বিনিময়ে সে তার কাঙ্খিত রমনীর যৌনানুগ্র লাভ করবে, এই চোরের মতো প্রায় সবাই জীবনপাত করে ক্ষমতা, প্রতিপত্তি বা অর্থে পেছনে ছোটে, কারন তারা মনে করে যে এসবই ভালো এ সবের মধ্যে তারা সুখ খুজে পাবে। কিন্তু তারা জানে না কোনটি ভালো। তারা জানে না এ সবে মধ্যমে সে কখনও সুখ খুঁজে পাবে না। মানুষের জন্য কী ভালো এবং কিসে মানুষের সুখ, তার জীবনযাপন পদ্ধতি কী হওয়া উচিত এবং কীভাবে সে সেটা আয়ত্ত করবে তা জানার জন্য প্রথমে মানবচরিত্র বুঝতে হবে। মানুষ যদি তা বোঝার চেষ্টা না করে, যদি কোনো দিন না জানে কোনটি তার জন্য ভালো হা হলে সুখী হওয়ার সমস্ত চেষ্টাই ব্যর্থ হবে। এই ধরনের জীবনকে সক্রেটিস অপরিক্ষীত জীবন বলে উল্লেখ করেছেন। তার অন্যতম বিখ্যাত উক্তি: “অপরিক্ষিত জীবন ভালো জীবন নয়।”

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: আচ্ছা।

৪| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:২৬

কিরমানী লিটন বলেছেন: নিজেকেই যে জানলো না- বিশ্বকে সে জানবে কি করে? তাই সবার আগে নিজেকে জানা প্রয়োজন। চমৎকার একটি বিষয় তুলে ধরেছেন পোস্টে। অভিবাদন আপনাকে। শুভরাত্রি।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

৫| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১:০৮

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:



২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:২৬

রাজীব নুর বলেছেন: ইয়েস।

৬| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৪৪

হাবিব বলেছেন: আপনি কি আপনার নিজেকে চিনতে পেরেছেন? তিনটি শব্দে আপনার নিজেকে প্রকাশ করুন তো!

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:০৫

রাজীব নুর বলেছেন: চেষ্টা অব্যাহত আছে।

৭| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:১১

জুল ভার্ন বলেছেন: নিজেকে জানো নিয়ে সক্রেটিসের মন্তব্যটাই যথাযথ বলেই বিশ্বাস করেছি। বাড়তি ভাবনা জুগিয়েছে আপনার লেখা, সেই সঙ্গে সংযুক্ত ছোট গল্পটা।
শুভ কামনা।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:১৩

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ পোষ্ট টি পড়ার জন্য।

৮| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:৫৭

কনফুসিয়াস বলেছেন: দারুন। কিন্তু কোথা থেকে কোথায় চলে গেলেন ?

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্ট টি বড্ড অগোছালো হয়ে গেছে। স্যরি।

৯| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:২৩

সাইফ নাদির বলেছেন: সবার আগে নিজেকে জানতে হয়

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: ইয়েস।

১০| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:১১

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: আপনারে চিনতে পারলে রে--
যাবে অচেনারে চেনা---

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:২০

রাজীব নুর বলেছেন: ইয়েস। ঠিক বলেছেন।

১১| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:২৮

আহমেদ জী এস বলেছেন: রাজীব নুর,




সক্রেটিস বলেছেন, নিজেকে চিনে উঠতে।
এই আমার আমিকে চিনতে হলে, আমার কর্মকান্ড বিবেচনা করতে হলে, একটা বিষয়ই বিবেচনা করতে হবে এবং তা হলো আমি আমার কাজটি ঠিক মতো করেছি কিনা, ভালো মানুষের মতো অথবা খারাপ মানুষের মতো ।

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর বলেছেন।

১২| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৭:৪৮

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: অসাধারণ একটি পোস্ট ব্রাদার।

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: হুম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.