নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবনের গল্প- ২৫

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:৫৮



মায়ের বয়স প্রায় ৫৬ বছর।
উনার চার ছেলে। কোনো মেয়ে নাই। তার সব ছেলেরাই চাকরি করছে। ঢাকা শহরে উনার নিজেদের পাঁচ তলা বাড়ি। বাড়ির দেখভাল উনিই করেন। দেখভাল মানে বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস বিল বা সিটি করপোরেশন ইত্যাদি উনিই দেখাশোনা করেন। উনার ছেলেরা চাইলেও উনি তাদের বাড়ির কাজে হাত বাড়াতে দেন না। উনার বড় ছেলে বলে- মা তুমি লাইনে দাঁড়িয়ে বিল দিতে যাও কেন? অনলাইনেই বিল দিয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু মা নিজেই বিল দেন। বাড়ির সমস্ত হিসাব তার কাছে। এবং তিনি তা সুন্দরভাবে পালন করছেন। উনি মনে করেন উনার ছেলেরা বোকা।

এই মা একজন সুখী মানুষ।
অথচ উনি খুঁজে খুঁজে সমস্যা বের করেন। এই সমস্যা গুলো নিয়ে উনি ভীষন ব্যস্ত থাকেন। সমস্যা গুলো নিয়ে চিন্তা-চিন্তা করে টেনশন বাড়ান। শেষে ডাক্তারের কাছে যেতে হয়। উনি সব সময় সরকারী হাসপাতালে যান। অথচ উনি চিকিৎসার জন্য দেশের সেরা হাসপাতালে যেতে পারেন। উন্নত হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য তার টাকাও খরচ হবে না। বড় ছেলের অফিস থেকে সমস্ত খরচ দিবে। তবুও উনি সরকারী হাসপাতালে যান। নিয়মিত যান। সরকারী হাসপাতাল তার কাছে ভালো লাগে। উনি জানেন ঢাকা শহরে কোথায় কোন হাসপাতালে কোন অসুখের জন্য যেতে হবে। তার ছেলে বলে, বাইরে গেলে গাড়ি নিয়ে যেও। কিন্তু উনি গাড়ি নিবেন না। উনি বাসেই যাবেন।

উনার ছেলেদের উনি বলেন, বাপের বাড়ি যাই।
বাপের বাড়ি মানে? মায়ের কাছে বাপের বাড়ি হলো সরকারী হাসপাতাল। হাসপাতালের নিয়ম কানুন উনার সব জানা। এমনকি হাসপালাতের ডাক্তার, নার্স, ওয়ার্ড বয় সবাই উনাকে চিনেন। উনার শরীর খারাপ না হলেও উনি রোগ খুঁজে খুঁজে বের করেন। তারপর হাসপাতালে যান। উনার কোনো ওষুধ টাকা দিয়ে কিনতেও হয় না। সরকারী হাসপাতাল থেকেই উনি ফ্রি ওষুধ পান। প্রতিমাসে নানান রকম টেস্ট করান সরকারী হাসপাতালে। গত ত্রিশ বছর ধরে উনি নিয়মিত ওষুধ খেয়েই যাচ্ছেন। বাসায় মানুষ এলে যদি উনাকে জিজ্ঞেস করেন, কেমন আছেন? তখন উনি উনার ওষুধের বাক্স বের করে দেখান। দেখেন আমি কত অসুস্থ। প্রতিদিন এত গুলো করে ওষুধ খেতে হয়। তখন তার চোখে মুখে একটা তৃপ্তির ভাব থাকে।

উনার স্বামী উনার সাথে থাকেন না।
গত তের বছর ধরে স্বামী আলাদা থাকেন। স্বামী বলেন, এই মহিলার সাথে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব না। উনার সাথে থাকার চেয়ে জঙ্গলে গিয়ে থাকাও অনেক ভালো। তবে ছেলেরা বাপের সাথে সম্পর্ক বজায় রেখেছে। বাবার সাথে গিয়ে দেখা করে আসে। নিয়মিত মোবাইলে কথাবার্তা বলছে। এই মা তার চার সন্তানকে সমান চোখে দেখেন না। যে ছেলে বেশি ইনকাম করে এবং যে ছেলে তাকে বেশি টাকা দেয় তাকে উনি বেশি ভালোবাসেন। অবশ্য উনি দাবী করেন উনি তার চার সন্তানকেই সমান চোখে দেখেন। এই মা সারাদিন শুয়ে বসে মুভি, নাটক, ক্রাইম পেট্রোল ইত্যাদি দেখেন। তার রান্না করার কোনো চিন্তা নাই। তার ছেলের বউরা তিনবেলা যথাসময়ে তাকে খাবার দিয়ে যান।

এই মাকে তার ছেলের বউরা দুই চক্ষে দেখতে পারে না।
এবং উনিও উনার ছেলের বউদের দুই চক্ষে দেখতে পারেন না। মা সুযোগ পেলেই বাইরের মানুষদের কাছে তার ছেলের বউদের বদনাম করতেই থাকে। কারো সাথে উনি গল্প করা মানে বউদের বদনাম করা। অথচ উনার শরীর খারাপ হলে এই বউরাই দৌড়ে আসেন। কেউ পা টিপে দেয়, কেউ মাথা,অথবা কেউ স্যুপ তৈরি করে দেয়। এই মায়ের তার চার সন্তান ছাড়া দুনিয়াতে আর কেউ নেই। সন্তানরা মাকে অনেক ভালোবাসেন। মা একটু অসুস্থ হলেই সন্তানরা অস্থির হয়ে যায়। প্রতিদিন ছেলেরা সকালে অফিসে যাওয়ার পথে এবং রাতে বাসায় ফিরে মায়ের সাথে দেখা করে যায়।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:০৮

জুল ভার্ন বলেছেন: ভালো লেগেছে।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:১৬

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
এই ঘটনাটা কার? আপনার? না অন্য কারো?

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: অন্য কারো।

৩| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১৫

ইসিয়াক বলেছেন: আপনারা চার ভাই তাই না?
এই পোষ্টের মানে বুঝলাম না।বুঝিয়ে বলেন।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৩৪

রাজীব নুর বলেছেন: শিরোনামেই তো দেওয়া আছে।
জীবনের গল্প।

৪| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৪৭

শাহিন-৯৯ বলেছেন:



গুনীদের লেখা মাঝে মধ্যে মাথার উপর দিয়ে যায়।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৩৪

রাজীব নুর বলেছেন: আমি মোটেও গুনী নয়।

৫| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:০৯

সোহানী বলেছেন: একজন মায়ের কষ্ট, দু:খ, ভালোলাগা, মন্দলাগা, তার লজিক, সহজে কেউ বুঝতে পারে না। এবং ছেলের বউদের সাথে এ ধরনের স্পর্কের টানাপোড়া খুবই কমন। যাইহোক, পৃথিবীর সব মা ই ভালো থাকুক।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৩৫

রাজীব নুর বলেছেন: ঠিক বলেছেন।
সব মা ভালো থাকুক।

৬| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৩৮

ইসিয়াক বলেছেন: 'কত ভালবাসি'
==============
-কামিনী রায়
=============
জড়ায়ে মায়ের গলা শিশু কহে আসি,-
“মা, তোমারে কত ভালোবাসি!”
“কত ভালবাস ধন?” জননী শুধায়।
“এ-ত।” বলি দুই হাত প্রসারি’ দেখায়।
“তুমি মা আমারে ভালবাস কতখানি?”
মা বলেন “মাপ তার আমি নাহি জানি।”
“তবু কতখানি, বল।”
“যতখানি ধরে
তোমার মায়ের বুকে।”
“নহে তার পরে?”
“তার বাড়া ভালবাসা পারি না বাসিতে।”
“আমি পারি।” বলে শিশু হাসিতে হাসিতে!

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৪০

রাজীব নুর বলেছেন: হুম।

৭| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৩৯

ইসিয়াক বলেছেন: আমাদের মা
============
হুমায়ুন আজাদ
=============
আমাদের মাকে আমরা বলতাম তুমি, বাবাকে আপনি।
আমাদের মা গরিব প্রজার মত দাঁড়াতো বাবার সামনে,
কথা বলতে গিয়ে কখনোই কথা শেষ ক’রে উঠতে পারতোনা।
আমাদের মাকে বাবার সামনে এমন তুচ্ছ দেখাতো যে
মাকে আপনি বলার কথা আমাদের কোনোদিন মনেই হয়নি।
আমাদের মা আমাদের থেকে বড় ছিলো, কিন্তু ছিলো আমাদের সমান।
আমাদের মা ছিলো আমাদের শ্রেনীর, আমাদের বর্ণের, আমাদের গোত্রের।
বাবা ছিলেন অনেকটা আল্লার মতো, তার জ্যোতি দেখলে আমরা সেজদা দিতাম
বাবা ছিলেন অনেকটা সিংহের মতো, তার গর্জনে আমরা কাঁপতে থাকতাম
বাবা ছিলেন অনেকটা আড়িয়াল বিলের প্রচন্ড চিলের মতো, তার ছায়া দেখলেই
মুরগির বাচ্চার মতো আমরা মায়ের ডানার নিচে লুকিয়ে পড়তাম।
ছায়া সরে গেলে আবার বের হয়ে আকাশ দেখতাম।
আমাদের মা ছিলো অশ্রুবিন্দু-দিনরাত টলমল করতো
আমাদের মা ছিলো বনফুলের পাপড়ি;-সারাদিন ঝরে ঝরে পড়তো,
আমাদের মা ছিলো ধানখেত-সোনা হয়ে দিকে দিকে বিছিয়ে থাকতো।
আমাদের মা ছিলো দুধভাত-তিন বেলা আমাদের পাতে ঘন হয়ে থাকতো।
আমাদের মা ছিলো ছোট্ট পুকুর-আমরা তাতে দিনরাত সাঁতার কাটতাম।
আমাদের মার কোনো ব্যক্তিগত জীবন ছিলো কিনা আমরা জানি না।
আমাদের মাকে আমি কখনো বাবার বাহুতে দেখি নি।
আমি জানি না মাকে জড়িয়ে ধরে বাবা কখনো চুমু খেয়েছেন কি না
চুমু খেলে মার ঠোঁট ওরকম শুকনো থাকতো না।
আমরা ছোট ছিলাম, কিন্তু বছর বছর আমরা বড় হতে থাকি,
আমাদের মা বড় ছিলো, কিন্তু বছর বছর মা ছোটো হতে থাকে।
ষষ্ঠ শ্রেনীতে পড়ার সময়ও আমি ভয় পেয়ে মাকে জড়িয়ে ধরতাম।
সপ্তম শ্রেনীতে ওঠার পর ভয় পেয়ে মা একদিন আমাকে জড়িয়ে ধরে।
আমাদের মা দিন দিন ছোটো হতে থাকে
আমাদের মা দিন দিন ভয় পেতে থাকে।
আমাদের মা আর বনফুলের পাপড়ি নয়, সারাদিন ঝরে ঝরে পড়েনা
আমাদের মা আর ধানখেত নয়, সোনা হয়ে বিছিয়ে থাকে না
আমাদের মা আর দুধভাত নয়, আমরা আর দুধভাত পছন্দ করিনা
আমাদের মা আর ছোট্ট পুকুর নয়, পুকুরে সাঁতার কাটতে আমরা কবে ভুলে গেছি।
কিন্তু আমাদের মা আজো অশ্রুবিন্দু, গ্রাম থেকে নগর পর্যন্ত
আমাদের মা আজো টলমল করে।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: খুব সুন্দর।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.