নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

সম্পর্ক

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:৫৮



এই শীতের গল্প।
আমি এক মহিলার কাছে প্রায় প্রতিদিনই পিঠা খেতে যাই। প্রতিদিন পিঠা খেতে খেতে অনেক গল্প হয় তার সাথে। মহিলা তার বাসার সামনেই পিঠা বিক্রি করেন। একটা ভ্যান গাড়িতে করে। মহিলাকে সবাই লক্ষ্মীর মা বলে ডাকেন। মহিলা দেখতে বেশ সুন্দর। হাসি খুশি। দেখে মনেই হয় না উনি রাস্তায় পিঠা বিক্রি করা মানুষ। মনে হয় কোনো সম্ভ্রান্ত ঘরের মেয়ে। বেশ কয়েকদিন এই মহিলা আমাকে তার পিঠার দোকানে রেখে ঘরে চলে গিয়েছেন। আমি ভ্যানে বসে পিঠা বিক্রি করেছি। আমি নিজেই চিতই পিঠা বানিয়েছে। দুই পদের ভর্তা দিয়ে বিক্রি করেছি। মহিলা আমাকে কেন বিশ্বাস করলেন? আমি তো দুষ্টলোকও হতে পাড়তাম। পিঠা বিক্রির সব টাকা নিয়ে চলে যেতে পাড়তাম। কেউ আমাকে বিশ্বাস করলে আমার ভালো লাগে। দুনিয়া থেকে তো বিশ্বাস উঠেই গেছে।

মাঝে দিয়ে একদিন আমি পিঠার দোকানে যেতে পারি নি।
পরের দিন গিয়েছি। ভদ্রমহিলা বেশ রাগ করেছেন। আমি কেন যাই নি। তাকে বুঝিয়ে বললাম, আমি সেদিন খুব ব্যস্ত ছিলাম। তাই যেতে পারি নি। ভদ্রমহিলা মানে লক্ষ্মীর মা বললেন, আব্বা তুমি নাকি বেকার তাহলে তোমার এত কাজ কিসের? লক্ষ্মীর মা পিঠাওয়ালী আমাকে আব্বা বলে ডাকেন। বেশ লাগে আমার শুনতে। আমার মতো একজন তুচ্ছ মানুষকে উনি কেন এত আন্তরিকতা দেখান আমি বুঝি না। এত আদর ভরা গলায় কেন আব্বা বলে ডাকেন! ইদানিং উনি আমার কাছ থেকে পিঠার টাকাও নেন না। প্রতিদিন আমি দু'টা পিঠা খাই। কিছুতেই আমার কাছ পিঠার দাম নেন না। জোর করে টাকা দিতে গেলে রাগ করেন। আমার দু'টা পিঠা বড় করে বানিয়ে দেন। জীবনে খুব বেশি মানুষের কাছ থেকে আন্তরিকতা পাই নি।

আমি ঘন্টাখানেক তার পিঠার দোকানে থাকি।
লক্ষ্মীর মা'র সমস্ত ইতিহাস আমার জানা হয়ে গেছে। উনার স্বামী দীর্ঘদিন অসুখে ভূগে মারা গেছেন। প্রায় পাঁচ বছর আগে। উনার এক মেয়ে আছে। মেয়ের নাম মালা। মালা গত বছর ইন্টার পাশ করেছে। মনে হয় মালার আর লেখাপড়া হবে না। সমস্যা একটাই টাকার অভাব। ঘর ভাড়া দিতে হয় এগারো হাজার টাকা। ফ্লাট বাড়ির মধ্যে ছোট্র এক রুম নিয়ে মা মেয়ে থাকেন। সন্ধ্যার পর লক্ষ্মীর মা পিঠা বিক্রি করেন। আর দিনের বেলা মতিঝিলের এক অফিসে রান্না করেন। এভাবেই চলছে তাদের জীবন। জানলাম লক্ষ্মীর মার হাতের রান্না বেশ ভালো। উনি আমাকে দাওয়াত দিয়েছেন। গত শুক্রবার আমি তার বাসায় দাওয়াত খেয়েছি। আসলেই উনি দারুন রান্না করেন। আমাকে বাধাকপি দিয়ে গরুর মাংস রান্না করে খাইয়েছেন। আসলেই রান্না বেশ ভালো।

আমিও আমার গল্প করেছি লক্ষ্মীর মার কাছে।
সুরভির কথা বলেছি। পরীর কথা বলেছি। উনি আমাকে এখন নিজের ছেলের মতো দেখেন। বেশ আবদার করে আমার সাথে কথা বলেন। দাবী করে কথা বলেন। আমার ভালো লাগে। আমার আব্বার শরীরটা আজ কেমন? আমি বলি, ভালোই আছি। উনি জানেন আমি চা পছন্দ করি। পাশের দোকান থেকে চা আনেন। একদিন বলেছি এই দোকানের চা ভালো না। খেয়ে আরাম পাই না। কাপটাও ময়লা। এরপর দিন তার কাছে গিয়েছি দেখি, নতুন ফ্লাক্স আর নতুন চায়ের কাপ। উনি আমার জন্য নিজের হাতে চা বানিয়ে নিয়ে এসেছেন। দারুন চা হয়েছে। সুরভিও এত সুন্দর চা বানাতে পারে না। আমি বললাম, ফ্লাক্স কিনেছেন, চা পাতি, দুধ চিনি! এতো অনেক খরচ। আমার জন্য এত খরচ কেন করছেন? লক্ষ্মীর মা বলেন- আব্বা তুমি খাও তো। এত কিছু তোমার ভাবতে হবে না।

গতকাল লক্ষ্মীর মার দোকানে গিয়েছি।
দেখি পিঠার দোকান বন্ধ। রাস্তায় শুধু ভ্যানগাড়িটা পড়ে আছে। যেহেতু দোকানের সামনেই তার বাসা। আমি খোঁজ নিতে তার বাসায় গেলাম। দেখি, লক্ষ্মীর মার জ্বর। খুব জ্বর। তার মাথায় পানি দিচ্ছে তার মেয়ে মালা। মালাকে দেখে আমি অবাক। এত সুন্দর মেয়ে! খুব মায়াময় একটা মূখ। আমি কসম খেয়ে বলতে পারি এই মেয়ে অনায়াসেই সিনেমার নায়িকা হবার যোগ্যতা রাখে। এর আগেও একদিন লক্ষ্মীর মার বাসায় এসেছিলাম সেদিন মালার সাথে আমার দেখা হয় নি। মালার মাথা ভরতি চুল। গায়ের রঙ দূর্দান্ত। চোখ মুখ দারুন মায়াময়। আমি যদি সুরভিকে বিয়ে না করতাম তাহলে এই মেয়েটাকে বিয়ে করতাম। আমি ফার্মেসী থেকে একজন ডাক্তার নিয়ে এলাম। ডাক্তার দেখলেন মালার মাকে। কিছু ওষুধ দিলেন। আমি ওষুধ কিনলাম। আপেল, কমলা আর আঙ্গুর কিনলাম। মালার হাতে ফল গুলো দিলাম এবং ওষুধ গুলো কখন খাওয়াবে তা বুঝি দিলাম।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:০৯

নিভৃতা বলেছেন: হিমু ভূতেে ধরেছে আপনাকে। ভালোই।
গল্পটা কিন্তু দারুণ হয়েছে। বেশ দারুণ।

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:০৮

রাজীব নুর বলেছেন: গল্প নয় বাস্তব।

২| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:০৯

অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: পরিচিত এক মহিলা, যিনি আয়ার কাজ করেন; উনাকে শাশুড়ি ডাকলে খুব খুশি হন। এখানে উল্লিখিত মহিলাও হয়ত আপনাকে জামাই করতে চান।

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: হা হা হা------

৩| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ভোর ৬:৫৬

চাঁদগাজী বলেছেন:


ভালো কাজ

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: হে হে---

৪| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৭:৪৭

ইসিয়াক বলেছেন: প্রেমে পড়েছেন নাকি? সর্বনাশ!!!!!!!!!!

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:১০

রাজীব নুর বলেছেন: রসিকে সাপ ভাববেন না।

৫| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:২৫

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




পিঠা খাওয়ার জন্য ভ্যান গাড়ির সামনে চলে আসবো কি? সাধারণতঃ আপনি কখন কখন থাকেন? খেজুরের গুড় দিয়ে পিঠা খাওয়ার ব্যবস্থা কি আছে?

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: না, উনি শুধু চিতই পিঠা বানান। সাথে দুই পদের ভরতা আছে। আমি সন্ধ্যার দিকে যাই।

৬| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৩৬

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: বাহ! ভালই তো! কমিশনার প্রার্থী হয়ে যান...

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: হে হে----------

৭| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:০৮

নিভৃতা বলেছেন: গল্প তো বাস্তবেেরই অংশ। কিছু কল্পনা, কিছু সত্যি। কিংবা পুরোটাই সত্যি।

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:১১

রাজীব নুর বলেছেন: পুরোটাই সত্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.