নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাপ

১৫ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:১১



ভোর পাঁচটা। শুরু হয়েছে তুমুল বৃষ্টি।
আমরা যাবো সিলেট। একটা বারো সিটের গাড়ি রেডি। যাচ্ছি মোট আট জন। নোরা আর আমি পেছনে বসেছি। নোরার মা আর আমার মা আমাদের সামনের সিটে বসেছে। তারা খুব গল্প করছেন। আর হাসছেন। বৃষ্টি দেখে নোরা আর নোরার মা ভীষন খুশি। নোরার মা বলছেন, আহ নিজের দেশের বৃষ্টি, কি মিষ্টি! নোরা বলল, বৃষ্টি দেখে আমি মুগ্ধ! মেয়েরা বৃষ্টি নিয়ে বিলাসিতা করেই থাকে। আমার মা বলল, যাত্রা শুরুতেই এমন বৃষ্টি! আমি বললাম, মা বৃষ্টি মানেই শুভ কিছু ঘটবে। বৃষ্টি মানেই আনন্দময় কিছু। এবং সবজান্তার মতোন বললাম, ঢাকার বাইরে গেলেই দেখবে বৃষ্টি নেই। থাকবে ঝকঝকে রোদ। নোরা বলল, তুমি জানলে কি করে? আমি কিছু না বলে একটা মিষ্টি হাসি দিলাম।

নোরা'রা থাকে আমেরিকায়।
ওরা আমাদের লতায়-পাতায় আত্মীয়। অনেক দূরের আত্মীয়। তবে আমাদের একই গ্রামে বাড়ি। নোরা আর নোরার মা কিছু দিনের জন্য দেশে এসেছে। নোরার বাবা আসেন নি। তিনি ত্রিশ বছর নিউ ইয়র্ক ছিলেন। একদিন কি একটা কাজে মিশিগান যান। তারপর নোরার বাবা সম্পূর্ন বদলে যান। এখন তিনি তার পরিবার নিয়ে থাকছেন মিশিগানে। সেখানে তিনি এখন একটা মসজিদের ইমাম। শুনেছি সারা সপ্তাহের মধ্যে জুম্মাবারে ২০/২৫ লোক নামাজ পড়তে আসেন। এছাড়া সারা সপ্তাহ প্রায় মসজিদে কেউই আসেন না। যাই হোক, নোরা'রা উঠেছে আমাদের বাসায়। আমরা যাচ্ছি সিলেট। চা বাগানে। সেখানে নোরার মামার নিজস্ব চা বাগান আছে। আছে টিলার উপর নিজের দোতলা বাড়ি। আমরা তিনদিনের জন্য সেখানেই বেড়াতে যাচ্ছি। তবে সত্য কথা, নোরা না থাকলে আমি সিলেট যেতাম না। বহুবার আমি সিলেট গিয়েছি।

গাড়ি নয় আমরা চেয়েছিলাম ট্রেনে করে যেতে।
কিন্তু ট্রেনের টিকিট পাওয়া যায় নি। ট্রেনের টিকিট কখনই পাওয়া যায় না। এটা একটা আজিব ব্যাপার! সিলেট যেতে আমাদের সময় লাগলো প্রায় আট ঘন্টা। এত সময় লাগার কথা ছিলো না। প্রচুর বৃষ্টি। এত ঘন বৃষ্টি যে একহাত দূরের জিনিসও দেখা যায় না। গাড়ি চলেছে খুব ধীরে ধীরে। দুপুরবেলা সিলেট এসে পৌছালাম। প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। সিলেটে তো এমনিতেই বৃষ্টি বেশি হয়। আমি নোরাকে বলেছিলাম, ঢাকা থেকে বের হলেই বৃষ্টি কমে যাবে। রোদ উঠবে। রোদ তো উঠেই নি বরং বৃষ্টি আরো বেড়েছে। অবশ্য নোরা আমাকে এ প্রসঙ্গে কিছু বলেনি। হয়তো নানান কথাবার্তার মধ্যে ভুলে গেছে। দুপুরে আমরা খুব খেলাম। নোরার মামা অনেক রকম খাবারের ব্যবস্থা করেছেন। আমার ধারনা ছিলো সিলেটের মানুষের রান্না ভালো না। একবার সিলেটে এক ধনী লোকের বিয়ের অনুষ্ঠানে খেয়েছিলাম। ফালতু খাবার। এত এত আইটেম ছিলো কিন্তু কোনো খাবারই ভালো হয় নি।

নোরার কথা আগে কিছুটা বলে নিই।
নোরা দারুন সুন্দর একটা মেয়ে। দেখতে ভীষন মিষ্টি। সে পাঁচ-ছয় বছর আগে আমেরিকাতে সুন্দরী প্রতিযোগিতায় বাঙ্গালী মেয়েদের মধ্যে সেরা সুন্দরী হয়েছে। প্রথম হয়েছে। ঢাকায় অনেক পত্রপত্রিকাতে সে বিষয়ে অনেক লেখা হয়েছে। নোরা আমার চেয়ে দুই বছরের ছোট। নোরার জন্ম আমেরিকাতেই। সে বিদেশীদের মতোন বাংলায় কথা বলে। শুনতে ভালো লাগে। 'ত' উচ্চারন করতে পারে না। 'তোমার'কে বলে টোমার। খেয়েছি বলতে পারে না, বলে খাইয়াছি। তেঁতুল বলতে পারে না। বলে টেটুল। নোরার কথা শুনে আমি আর আমার মা হাসতে হাসতে শেষ। যাই হোক, নোরা আমার ভালো বন্ধু। মাঝে মাঝে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ এ কথা হয়। দেশের সব খবর নোরা আমার কাছ থেকে জেনে নেয়। আমাদের গ্রামে একজন কামলা ছিলো। রমিজ নাম। রমিজ কোনো বিশেষ বাড়ির কামলা না। সে সব বাড়ির কাজ করতো। বিনিময়ে টাকাও নিতো না। পেট ভরে ভাত খাইয়ে দিলেই হলো। নোরার বাবা রমিজকে আমেরিকা নিয়ে গিয়েছেন। রমিজ এখন জ্যাকসন হাইটসে ঝালমুড়ি বিক্রি করে।

পরের দিন ঝকঝকে রোদ উঠলো।
আমাদের চা বাগানের ডাকবাংলো থেকে চা বাগান দেখা যাচ্ছে। ছোট ছোট টিলার উপর চা বাগান। চারিদিকে সবুজ। গাঢ় সবুজ। আগের দিন বৃষ্টি হয়ে যাওয়াতে সবুজ রঙটা জেগে উঠেছে। নোরা বলল, আমি চা বাগানের মধ্যে দিয়ে হাটবো। আমি বললাম, চলো। চা বাগান দেখে নোরা খুব খুশি। একদম বাচ্চা মেয়েদের মতোন করছে। হাঁটতে হাঁটতে একা অনেকটা দূর চলে গেছে নোরা। আমি দূর থেকে নোরার হাসিভরা মুখ দেখছি। হঠাৎ নোরার চিৎকার। ভয়ানক চিৎকার। আমি তুফানের মতো নোড়ার দিকে দৌড়ে গেলাম। নোরার হাত ধরলাম। নোরা থরথর করে কাপছে। বললাম, কি হয়েছে? তখন ফিস ফিস শব্দ শুনলাম। দেখি, মস্ত এক সাপ। কালো রঙের। সাপটা দেখেই মনে হলো সারা শরীরে ভিষে ভরা। আমি সাপ খুব ভয় পাই। সাপটা ফণা তুলে ফেলেছে। ঠিক তখন...

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:৩৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


চা বাগানে মালীরা (চা তোলার লোকজন) কিভাবে কাজ করে? গাছে নীচে, বা ডালে সাপ থাকতে পারে।

১৫ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: চা বাগানে প্রায়ই সাপ হানা দেয়।
চা শ্রমিকেরা বেশীর ভাগই নারী। তারা দাঁড়িয়ে কাজ করে। মালীরা কাঁধে একটা ঝুড়ি বেঁধে নেয়। তাতে চা বাগান থেকে কচি কচি পাতা ঝুড়িতে নেন।

২| ১৫ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১:৪৫

নেওয়াজ আলি বলেছেন: সংগ্রাম করে সংসার চালায় চা শ্রমিক

১৫ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ২:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: বাংলাদেশে ৭০% মানুষই সংগ্রাম করে সংসার চালায়।

৩| ১৫ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ১০:৫৫

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: সাপ দেখে দৌড়ে পালিয়েছিলেন। হিরোইসম দেখাতে পারেন নাই। তাই সেটা না লিখেই লেখা শেষ করেছেন। হয়ত নোরা আপনাকে বাঁচিয়েছিল। সেটা তো আর লেখা যায় না।

ছোটকালে টারজান বইয়ের একটা ভার্শন পড়েছিলাম সেখানে নায়িকার নাম ছিল নোরা। শিম্পাঞ্জির নাম ছিল চিতা।

১৫ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:৫৮

রাজীব নুর বলেছেন: না দ্বিতীয় পর্ব হয়তো লিখব।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.