নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালো থেকে মন্দ

২০ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৫০






ব্রাজিলের এক গ্রামে এক তরুন সন্যাসী বাস করতেন।
তিনি খুবই বিখ্যাত ছিলেন এবং তার প্রচুর খ্যাতি ছিল। তাঁর সম্মানে সারা গ্রামে গান গাওয়া হত। কিন্তু একদিন সব কিছু বদলে গেল।
সেই গ্রামের এক কুমারী মেয়ে গর্ভবতী হল এবং একটি শিশুর জন্ম দিল। যখন তার পরিবারের লোকজন তাকে প্রশ্ন করল এই শিশুটি কার, তখন সে বলল এই শিশুটি সেই তরুন সন্যাসীর।

গুনমুগ্ধ থেকে শত্রু হতে কতটুকু সময় লাগে?
কতটুকু সময়? এর জন্য এক মূহুর্ত সময়ও লাগে না, কারণ প্রতিটি গুনমুগ্ধের মাঝে একজন নিন্দাকারী লুকিয়ে থাকে। মন শুধু একটা সুযোগের অপেক্ষায় থাকে, এবং যেদিন থেকে মুগ্ধতা শেষ হয় সেদিন থেকে তার নিন্দা শুরু হয়। যে মানুষেরা আজ শ্রদ্ধা করছে তা এক মিনিটেই অশ্রদ্ধায় পরিণত হতে পারে। যে ব্যক্তি আজ কারো পা ছুঁয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে এক মূহুর্তেই সে তার মাথা কাটার জন্য প্রস্তুত হতে পারে। শ্রদ্ধা এবং অশ্রদ্ধার মাঝে কোন পার্থক্য নেই-এ দু’টি কেবল একই মুদ্রার দু’টি দিক।

সবাই সন্যাসীর বিপরীতে চলে গেলো।
সে গ্রামের সব মানুষ ঐ সাধুর কুড়ে ঘর আক্রমন করে জ্বালিয়ে দিল। দীর্ঘদিন তারা শ্রদ্ধা করে এসেছে কিন্তু এতো দিনে তাদের অবদমিত ক্ষোভ বেরিয়ে এসেছে। এখন তাদের অশ্রদ্ধা করার সুযোগ এসেছে, সূতরাং তারা সবাই সাধুর কুড়ে ঘরে আগুন লাগাতে ছুটে এসেছে। এবং সেই পিঁচ্চি শিশুটাকেও তারা সাধুর পানে ছুড়ে মারতে দ্বিধা করল না।
সাধু শুধাইলো, ব্যাপার কি? ঘটনা কি?

পুরো গ্রামের মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়ছে।
লোকজন চিৎকার করে বলল, তুমি আমাদের প্রশ্ন করছ ব্যাপার কি? এত সাহস তোমার? এই শিশুটি তোমার। এই জ্বলন্ত ঘরের দিকে তাকাও, তোমার হৃদয়ের দিকে তাকাও, এই শিশুটা আর এর মায়ের দিকে তাকাও। তোমাকে আর আমাদের বলতে হবে না যে এই শিশুটা তোমার।
সাধু বললেন, তাই নাকি? এই শিশুটা আমার!

শিশুটা দেখতে ভীষন মিষ্টি।
শিশুটা কান্না জুড়ে দিলে সাধু গান গেয়ে তাকে থামাতে চেষ্টা করল, এবং গ্রামবাসী ঐ শিশুটি সহ তাকে সেই পোড়া ঘরের পাশে রেখে চলে গেল। তারপর তিনি যথাসময়ে ভিক্ষা করতে গেলেন, বিকেল হয়েছে। কিন্তু কে তাঁকে খাবার দেবে আজ? আজ তিনি যে দরজায় দাড়ালেন সেটাই সজোরে বন্ধ হয়ে গেল তাঁর দিকে। তাঁর পিছু পিছু একদল ছেলেবুড়ো বিদ্রুপ করে চলল, পাথর ছুড়ে মারল। শেষ পর্যন্ত শিশুটা যে মেয়েটির ছিল তিনি সেই দরজায় এসে বললেন, আমাকে না হয় খাবার নাই দিলেন, কিন্তু এই শিশুটার জন্য তো একটু দুধ দিন! আমার দোষ থাকতে পারে কিন্তু এই অবলা শিশুটার কি দোষ?

শিশুটা কাঁদছিল- চারপাশে লোকজনের ভিড়।
এই অবস্থা শিশুটার মায়ের কাছে অসহনীয় হয়ে উঠল। সে তার বাবার পায়ে পড়ে বলল, আমাকে ক্ষমা করুন, আমি ঐ সাধুর নামে মিথ্যা বলেছি। আমি শিশুটির প্রকৃত বাবাকে বাঁচাতে এই সাধুর নাম নিয়েছি। তাঁর সাথে আমার কোন পরিচয়ও নেই। মেয়েটির বাবা হতচকিত হয়ে গেলেন, এ তো মস্ত বড় ভুল হয়ে গেছে। তিনি দৌড়ে বাইরে এসে সাধুর পায়ে পড়লেন এবং শিশুটিকে তাঁর কাছে থেকে নিতে চাইলেন। সাধু আবারো শুধালেন, ব্যাপার কি?
মেয়েটির বাবা বললেন, আমাকে ক্ষমা করুণ, বড় ভুল হয়ে গেছে আমাদের। এই শিশুটা আপনার নয়।
সাধু উত্তর দিলেন, তাই নাকি? সত্যি শিশুটা আমার নয়?
ঐ গ্রামের লোকজন সাধুকে বলে, আপনি একটা পাগল! সকালেই কেন আপনি এটা অস্বীকার করলেন না?
সাধু বললেন, তাতে কি পার্থক্য হত? এই শিশুটা নিশ্চয় কারো হবে। এবং ইতোমধ্যে আপনারা একটা ঘর জ্বালিয়েছেন, এখন আর একটা ঘর জ্বালাতে হবে। আপনারা একজনকে অপদস্থ করা উপভোগ করেছেন এখন আর একজনকে অপদস্থ করা উপভোগ করবেন। তাতে কি পার্থক্য হবে? শিশুটা নিশ্চয় কারো না কারো হবে। আমারও হতে পারত। সুতরাং সমস্যা কি?
তারা বলে, আপনি কি বুঝতে পারছেন না সবাই আপনাকে দোষারোপ করছে, অপদস্থ করছে, অবমাননা করছে?

সাধু বলেন, আমি যদি আপনাদের নিন্দায় উদ্বিগ্ন হতাম তবে আপনাদের শ্রদ্ধা নিয়েও আমাকে উদ্বিগ্ন হতে হয়। আমি যা ঠিক মনে করি তা করেছি, আপনাদের যা ঠিক মনে হয়েছে করেছেন। গতকাল পর্যন্ত আমাকে শ্রদ্ধা করা ঠিক মনে হয়েছিল, সূতরাং আপনারা তাই করেছেন। আজ আপনাদের মনে হচ্ছে আমাকে শ্রদ্ধা করা ঠিক নয়, করছেন না। কিন্তু আমি আপনাদের শ্রদ্ধা বা অশ্রদ্ধা নিয়ে উদ্বিগ্ন নই।
তারা বলে, ওহে মহামান্য সাধু, আপনার খ্যাতি নষ্ট হচ্ছে সে বিষয়টি অন্তত বিবেচনা করতে হত।

সাধু উত্তর দিলেন, আমি ভালও নই মন্দও নই। আমি কেবল আমি। আমি ভাল এবং মন্দের এই চিন্তা ছেড়েছি। আমি ভাল হবার সকল চিন্তা ছেড়েছি কারণ আমি যত ভাল হতে চেষ্টা করেছিলাম দেখেছি তত মন্দ হয়েছি। আমি যতই মন্দত্ব থেকে মুক্তি পেতে চাইছিলাম ভালত্ব ততই আমার থেকে দূরে চলে যাচ্ছিল, সূতরাং আমি এই সব চিন্তা ছেড়েছি।
আমি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ হয়েছি। এবং যেদিন নিরপেক্ষ হয়েছি সেদিন বুঝেছি আমার মাঝে ভালত্ব বা মন্দত্ব কিছুই নেই। পরিবর্তে আমার মাঝে নতুন কিছুর জন্ম হয়েছে যা মন্দত্ব এবং ভালত্বের তুলনায় ভাল এবং তার মাঝে মন্দত্বের কোন ছায়াও নেই।

মন্তব্য ২৬ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (২৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৫৯

রানার ব্লগ বলেছেন: এই সাধুর মত অন্যরাও যদি আমাদের বর্তমান সমাজের লোক গুলা হতো কি না ভালো হতো।

২০ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৩৪

রাজীব নুর বলেছেন: না সেটা সম্ভব না।

২| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:১৯

আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: আসলেই তো ভান মন্দের কোন ছায়া নেই জীবনটা এরকম হওয়া উচিত রাজীব দা

২০ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৩৫

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:২৯

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন। ভালো লেগেছে।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: আসলে এটা আমার লেখা না। আমি শুধু কিছুটা এডিট করেছি।

৪| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:০৫

মুরাদ বেগ বলেছেন: ভালো লেগেছে।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৫| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:২৬

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: ভালো লাগলো গল্পটি। নিজে লিখেছেন ? নাকি কপি পেস্ট?

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:০৭

রাজীব নুর বলেছেন: আমার সম্পর্কে আপনার আস্থা ভালো না, সেটা আমি জানি।

৬| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৩১

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
একটি পুরোনো গল্প, শেয়ারে ধন্যবাদ।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:০৭

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো থাকুন।

৭| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৭

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: শিক্ষণীয় গল্প।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:০৮

রাজীব নুর বলেছেন: তা বটে।

৮| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৮

চাঁদগাজী বলেছেন:


সাধু চরিত্রকে শক্তিহালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে সৃষ্টি করা হয়েছে।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:০৮

রাজীব নুর বলেছেন: অবশ্যই।

৯| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৮:০৫

কনফুসিয়াস বলেছেন: এমন সাধুরা একবিংশ শতাব্দীতে কোথায় আছেন? খুবিই মিস করছি উনাদের।

ভালবাসা নিবেন ভাই৷ আশা রাখি, পরি মামনি সুস্থ আছে।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: এযুগে কোনো ভালো মানুষ নেই। বিশেষ করে আমাদের মতো দরিদ্র দেশে।

হ্যা সবাই ভালো আছে। দোয়া করবেন।

১০| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৩৩

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আজ শুধু হাজিরা দিতে এলাম। শুভেচ্ছা প্রিয় ছোট ভাইকে।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: এতটূকুতেই আমি খুশি।

১১| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৪৭

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: এই সাধু এখন নবী হয়ে উঠবে।যেমন করে নবী হয়েছিল যিশু।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: মূর্খদের সমাজে এরকমই হয়।

১২| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১:৫১

কল্পদ্রুম বলেছেন: তরুণ সন্ন্যাসীর গল্প ভালো হয়েছে।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:১০

রাজীব নুর বলেছেন: ভালোবাসা জানবেন।

১৩| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৫২

শোভন শামস বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন। ভালো লেগেছে।

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.