নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমি যদি দূর্নীতিবাজ হতাম!

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৪০



ধরে নিন আমি একজন দূর্নীতিবাজ।
সীমাহীন টাকার মালিক আমি। জমিজমা আর সম্পত্তির অভাব নেই। লোকজনের ধারনা সাড়ে দশ হাজার কোটি টাকা আছে আমার। কিন্তু আমার টাকা তার চেয়ে অনেক গুন বেশী। নগদ টাকা আমার কাছে যা আছে, তত টাকা একটা ব্যাংকেও থাকে না। এই শহরে যত নগদ টাকার মালিক আছে, তাদের চেয়ে নগদ টাকার পরিমান আমার অনেক বেশী। দুই একজন সচিব, ব্যবসায়ী এবং সাবেক মন্ত্রী আমার নগদ টাকা সম্পর্কে জানেন। আমি একজন মন্ত্রীর ছত্রছায়ায় থেকে এই টাকার মালিক হয়েছি। মন্ত্রীর পিএ, এপিএস ও বড় বড় ব্যবসায়ীর লোকজন বড় বড় ব্যাগ ভরতি করে আমাকে টাকা পৌঁছে দিয়ে গেছে। অবশ্য তাদের আমি অনেক কাজ করে দিয়েছি।

অন্যসব দূর্নীতিবাজ যা করে আমিও তাই করলাম।
সবার আগে একটা অনলাইন নিউজ পোর্টাল খুললাম। একটা দৈনিক পত্রিকা বের করলাম। টিভি চ্যানেল খোলার ইচ্ছা আছে। সেটা পরে। এমপি হবার পর আমি টিভি চ্যানেল খুলবো। তা না হলে মানুষের চোখ লেগে যাবে। আমার গ্রামের বাড়ীতে একটা ফাউন্ডেশন খুললাম। সবাই খুলে বাপ দাদার নামে। আমিও খুললাম। আমার ফাউন্ডেশন থেকে দরিদ্র মানুষদের সাহায্য করা হয়। কাউকে ভ্যান কিনে দেওয়া হয়, কাউকে ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা কিনে দেওয়া হয়। কাউকে নগদ টাকা দিয়ে সাহায্য করা হয়। এই সাহায্য তাদের এমনি এমনি করা হয় না। ভবিষ্যতে আমি এমপি নির্বাচন করবো সেই খাতিতে নিজের এলাকায় সাহয্য সহযোগিতা করে প্রভাব বিস্তার করছি। টাকা পয়সা কামিয়েও শান্তি নাই। চারিদিকে মানুষ জিব বের করে রাখে। সবাইকেই খুশি রাখতে হয়।

দেশের ক্ষমতাবান সমস্ত লোক আমার হাতের মুঠোয়।
আমি নিয়মিত তাদের মাসোহারা দেই। দুদকে পিয়ন থেকে শুরু করে উপরের লেভেল পর্যন্ত সবাইকে আমি খুশি রেখেছি। থানা পুলিশ র‍্যাবদের আমি খুশি রেখেছি। বড় বড় ব্যবসায়ী আর সাংবাদিক নেতাদের খুশি রেখেছি। বিশেষ দিনে তাদের উপহার পাঠাই। সবচেয়ে সস্তা হলো সাংবাদিকরা। এরা অল্পতেই খুশি হয়। অমুকে ফোন করে বলে, সে পরিবার নিয়ে নেপাল বেড়াতে যাবে- আমি তার একাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দেই। গ্রামের বাড়িতে তিন কোটি টাকা খরচ করে বাড়ি করেছি। প্রতিদিন রাত্রে আমার বাড়ীতে সাত জন পুলিশ পাহাড়া দেয়। অথচ আমি সরকারী নিয়ম হিসাবে পুলিশ পাহারা পাই না। কিন্তু থানার ওসি আমাকে খুশি করতে চায়। কারন তাদের আমি খুশি করে দেই। দুদকের লোকদের কোরবানীর সময় আস্ত গরু পাঠিয়ে দেই। ঈদের সময় নানান রকম উপকরন পাঠাই। প্রচুর টাকা পয়সা করার এই এক জ্বালা, সবাইকে খুশি রাখতে হয়।

আমি মন্ত্রী হওয়ার লক্ষ্যে একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছি।
টাকা দিয়ে আমার অঞ্চলের মানুষের ভালোবাসা কিনে নিয়েছি। কেউ অসুস্থ হলে আমি হেলিকাপ্টারে করে তাকে ঢাকা নিয়ে আসি। আমার গ্রামের বহু মানুষকে আমি চোখের অপারেশন করিয়েছি, হত দরিদ্রদের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দিয়েছি। স্কুল করেছি, মাদ্রাসা করেছি। মসজিদ মাদ্রাসায় নিয়মিত টাকা দিয়েছি। পূজোর সময় মোটা অংকের টাকা দিয়েছি। এখন এলাকায় যে কোনো অনুষ্ঠানে সবার আগে আমাকে ডাকা হয়। আমি হই প্রধান অতিথি। আমি হই বিশেষ অতিথি। ঢাকা শহরেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের প্রধান ব্যাক্তি হই আমি। আমি জোর করে কিছু দখল করি না। দখল করি টাকা দিয়ে। টাকা দিয়ে সব কিছু কেনা যায়। তবে এই দেশের মানুষ ভালো না। বেঈমান। আমি আমার পরিবারকে এই দেশে রাখবো না। তাদের কানাডা পাঠিয়ে দেবো। সেই ব্যবস্থা চলছে। যদিও মালোশীয়া আর দুবাইতে আমার বাড়ি আছে। পরিবার দুবাই, মালোশীয়া থাকবে না। তাদের পছন্দ কানাডা।

আমি অতি চালাক। অতি ধুরন্ধর ব্যাক্তি।
আমার অনলাইনে আর পত্রিকাতে সারাদিন সরকারের সুনাম করে বেড়াই। একসময় আমার কোনো চালচুলা ছিলো না। এখন আমাকে সবাই চিনে। জানে। মানে। মোটা অংকের টাকা দিয়ে সরকারের দলের একটা পদ কিনে নিলাম। কয়েকটা সংগঠোনের সভাপতি হয়ে গেলাম এবং আমি নিজেই একদিন ঘোষনা করে দিলাম- ছোটবেলা থেকেই আমি সরকার দলের রাজনীতি করছি। স্কুল জীবন থেকে অনেক মিটিং মিছিল করেছি। কলেজ জীবনে মিছিল মিটিং করেছি অনেকবার। জেলেও যেতে হয়েছে। ইত্যাদি ইত্যাদি। আমার লোকজন চারিদিকে এই কথা গুলো ছড়িয়ে দিয়েছে। মাত্র তিন বছরে আমি মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছি। আমি মাছের তেল দিয়ে মাছ ভাজি। সমস্যা হলো- আমার রাতে ঘুম হয় না। এবং আমি কোনো খাবারে স্বাদ পাই না। এ আমার কেমন অসুখ হলো!

যারা আমার বিরুদ্ধে গেছে, তাদের কঠিন শাস্তি দিয়েছি।
মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছি। গ্রামের বহু লোক আমার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বিনিময়ে আমি তাদের কাছ থেকে সাদা কাগজে সাইন নিয়ে রেখেছি। আমার গাড়ি মোট চার টা। আমি পারাডোতে চড়ি। প্যারাডো গাড়ির ড্রাইভার দুইজন। আমার প্যারাডোর দাম দেড় কোটি টাকা। আমার পাসপোর্টে সব সময় চার পাঁচ টা দেশের ভিসা লাগানোই থাকে। আমার এবং আমার পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে আমি তাদের সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথ নিয়ে যাই। দেশে চিকিৎসার উপর আমার আস্থা নেই। যেই মন্ত্রীর মাধ্যমে আমি এত এত টাকা করেছি, সেই মন্ত্রী আমাকে অনেক পীড়া দিয়েছে। রাত দুইটায় ফোন দিয়ে বলে আমড়া খেতে ইচ্ছা করছে। অথচ তখন আমরা সিজন ছিলো না। যাই হোক, আমি আমড়া ঠিকই ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আরেকবার বলল, তার নদীর পাঙ্গাস খেতে ইচ্ছা করছে, নদীর পাঙ্গাসের ব্যবস্থা করেছি। ইন্ডিয়া থেকে একটা নায়িকা এনে দিয়েছিলাম মন্ত্রীকে এক রাতের জন্য। বুড়ো মন্ত্রীমকিছুই করতে পারে নি। তবে আমাদের এই মন্ত্রী খুব ভালো মানুষ। তার কল্যানে আমরা সতের জন আজ সীমাহীন টাকার মালিক হতে পেরেছি।

আমি একজন ভালো মানুষ।
আমার সাত টা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে। সেখানে বহু লোককে আমি চাকরী দিয়েছি। এখনও দশ জন চাকরী চাইলে আমি দুইজনকে চাকরী দেই। নামে বানামে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অভাব নাই। আমার ১৮৮ টা ট্রেড লাইসেন্স আছে। ইনকাম টেক্স অফিসের এক সরকারীর কর্মচারীর বুদ্ধিতে আমি এত গুলো ট্রেড লাইসেন্স করেছি। এগুলো সামলানোর জন্য আমার আলাদা আলাদা লোক আছে। আমার কাছ থেকে অর্থ সাহায্য পেয়ে বহু লোক ঘর বাড়ী করেছে, খেয়ে পড়ে বেঁচে আছে। আমার সবচেয়ে ভালো দিক হলো- আমি দুই হাতে টাকা খরচ করতে জানি। বহু লোক আমার কাছে টাকা চায়। আমি তাদের টাকা দিয়ে দেই। আসলে আমি তাদের কিনে নিই। খুব শ্রীঘই আমি এদেশের এমপি হবো এবং তারপর মন্ত্রী হবো। আমি সেদিকেই এগুচ্ছি। অন্যরা যেভাবে এমপি মন্ত্রী হয়েছে, আমি তাদের দেখানো পথই ধরেছি।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৬

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: ভিআইপিরা বছরের পর বছর জনগণের পিছনে প্রাণপাত করে যে সম্পদ করেছেন তারদিকে কুনজর দেওয়া ঠিক না। তাদের কষ্টার্জিত সম্পদ; তাকে প্রকাশ্যে বিবৃতি দিতে পারেন না। চৌদ্দ পুরুষের ভাগ্য করে যারা ভিআইপি, দর ভিআইপি, তস্যু ভিআইপি হয়েছেন তাদেরও এজীবনে বহু স্বপ্ন অধরাই থেকে যায়। প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতির পদ এদের স্বার্থে দশ বিশটা করা গেলে হয়তো আরও ভালো হতো।ফ্রান্সে কনসুলেটের শাসনামলে যদি একাধিক কনসুলেট থাকতে পারেন তাহলে দেশের সোনার সন্তান এই সব ভিআইপিদের আরেকটু উচ্চাসন দেওয়া যেতেই পারে।
সবশেষে বাসায় নুতন সদস্য আমাদের ছোট্ট সোনাটা আশাকরি ভাইকে সারাদিন খুবই ব্যস্ত রেখেছে। সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইলো।

১৪ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: দাদা সুন্দর মন্তব্য করেছেন।
আমাদের দেশের মানুষ ভারত থেকেই দূর্নীতির কলা কৌশল শিখেছে।
আপনাদের ওখানে করোনা পরিস্থিতি কি?

২| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:০৮

চাঁদগাজী বলেছেন:



শেখ হাসিনার ছবি দেয়াতে বিভ্রান্ত হলাম; ভাবছিলাম, শেখ হাসিনা নিজের দুর্নীতি নিয়ে কথা বলছেন!

১৪ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:৪০

রাজীব নুর বলেছেন: একমাত্র বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনা কোনো দিন দূর্নীতি করেন নি।

৩| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:২৮

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: ছোটবেলায় রচনা পড়তাম: আমি যদি প্রেসিডেন্ট হতাম বা রাষ্ট্রপতি হতাম, আমি যদি ডাক্তার হতাম, আমি যদি শিক্ষক হতাম...

১৪ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: হ্যা আমিও পড়েছি।

৪| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:৫২

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: সরকার ও বিরোধী দল থেকে দুরে থাকুন।ঘন ঘন হজ্ব ও ওমরাহ করুন দান খয়রাত মসজিদ মাদ্রাসা করুন আর গোপনে সরকারকে যতটাকা চাঁদা দিবেন বিরোধী দলকে দিবেন তার অর্ধেক।কৌশল করে কপালে একটা কালো দাগ ফেলেন।আজান দিয়ে দুই এক পুরুষ দুর্নীতি করুন কোন সমস্যা নাই।

১৪ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:৪৪

রাজীব নুর বলেছেন: ওকে।
দূর্নীতি আমি করবো না।
সুখের থেকে স্বস্তিতে থাকা ভালো।

৫| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১:৫৯

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: যারা দুর্নীতি করে ঝামেলায় ঝড়ায়নাই তারা সুখেই আছে।নির্ভর করে দৃষ্টিভংঙ্গির উপর।
মুন্সিগঞ্জের এক লোক পোষ্টঅফিসের দশ কোটি টাকার ষ্টাম্প মেরে দিয়ে, টাকাটা নিরাপদে রেখে দোষ স্বিকার করে সাত বছর জেল খেটে বাকি জীবন আরামে কাটিয়ে দিল।তখন অবশ্য সরকারী টাকা মেরে দেয়ার সর্বোচ্চ সাজা ছিল সাত বছর।

১৪ ই জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৫:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: মুন্সিগঞ্জের অনেক খবরই রাখেন দেখছি।

৬| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ৯:২৮

প্যারাডাইম বলেছেন: আমার রাতে ঘুম হয় না। এবং আমি কোনো খাবারে স্বাদ পাই না। এ আমার কেমন অসুখ হলো!


এখানেই যা বলার, তা বলা হয়ে গেছে; আর কিছু বলার নাই।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৫৮

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।
আসলে সুখের চেয়ে স্বস্তিতে থাকা ভালো।

৭| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:৩০

এমেরিকা বলেছেন: ইন্ডীয়ার নায়িকা নিয়ে মন্ত্রীর কি করার কথা ছিল, বুড়ো হয়ে যাবার কারণে পারেনি?

১৯ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:০২

রাজীব নুর বলেছেন: জিং জিং

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.