নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রিয় কন্যা আমার- ২৫

২৩ শে নভেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৩



প্রিয় কন্যা আমার-
আগামী মাসে তুমি বারো মাসে পা রাখবে। আশা করি আগামী মাসে তুমি একাএকা হাঁটবে। এবং তোমার দাঁত উঠবে। এই এগারো মাসে তুমি খুব দুষ্ট হয়ে গেছো। আমার সাথে এবং তোমার মায়ের সাথে তুমি খুবই দুষ্টমি করো। তোমার দুষ্টমি ভালো লাগে। সুরভি আর আমি তোমার দুষ্টমি দেখে খুব হাসি। আমাদের ঘরটা তুমি হাসিতে ভরে রেখেছো। এবং তুমি খিচুরী খাওয়ার সময় পুরো ঘর হামাগুড়ি দিয়ে বেড়াও। তোমার পেছনে পেছনে ছুটতে হয়। পুরো ঘর খিচুড়ি দিয়ে মাখামাখি অবস্থা। তোমার মা সারাক্ষণ তোমার পেছনে আঠার মতো লেগে থাকে। তার সবটুকু সময় শুধু তোমার জন্য। তোমার খাওয়া, ঘুম পাড়ানো, গোছল, পটি পরিস্কার করা। জামা বদলানো। ডিম সিদ্ধ, আলু সিদ্ধ, ফল জুস করা, খুচুরি রান্না ইত্যাদি সব কাজ সুরভি একাই করছে।

প্রিয় কন্যা ফারাজা,
জীবনে চলতে গেলে টাকার প্রয়োজন। প্রচুর টাকা লাগে। টাকা না থাকলে পৃথিবীতে সুন্দর ভাবে বাঁচা যায় না। অভাব খুব খারাপ জিনিস। টাকা ইনকাম করতে হয়। দুনিয়ায়র কেউ এসে তোমার হাতে টাকা দিবে না। লেখাপড়া শিখে চাকরী বা ব্যবসা করে তোমাকে টাকা উপার্জন করতে হবে। হবেই। তোমার চার, পাঁচ বছর হলেই তোমাকে স্কুলে ভরতি করাবো। তখন অনেক টাকা লাগবে। তোমার বড় বোন পরী যে স্কুলে পড়ে সেখানে অনেক টাকা লাগে। প্রতিমাসে স্কুলের বেতনই ১৮ হাজার টাকা। অন্যান্য সব খরচ বাদ দিয়ে। তোমার মা তোমার কথা ভেবে তোমার জন্য দুটা একাউন্ট করেছে। পাঁচ বছর পর অনেক টাকা পাওয়া যাবে। আমার বাবা মা কিন্তু আমাদের জন্য এরকমটা ভাবে নি।

প্রিয় কন্যা আমার-
ছোটবেলা আমরা চার ভাই প্রায় একা একাই বড় হয়েছি। যদিও আমাদের অনেক আত্মীয়স্বজন। চাচা ফুপুরা আমাদের কাছ থেকে বলা যায় দূরেই ছিলেন। আব্বা মারা যাবার পর তাঁরা আমাদের নিয়মিত খোজ খবর নিচ্ছেন। বাসায় আসছেন। আগামী মাসে অর্থ্যাত ১১ ডিসেম্বর আব্বার মৃত্যুর এক বছর হবে। আর ৩১ তারিখ তোমার এক বছর হবে। তোমার প্রথম জন্মদিন। আমার মায়ের কিছু আত্মীয়স্বজন আছে। তবে তাদের সাথে আমাদের তেমন কোনো যোগাযোগ নেই। মার একবোন আছে। মানে আমার খালা। খালার অনেক গুলো ছেলেমেয়ে। তাদের সাথে দেখা হয়, কথা হয়। তোমার আমাদের মতো করে একা বড় হতে হবে। তোমার তিন চাচা আছে, চাচী আছে। অনেক গুলো চাচাতো ভাই বোন আছে। তোমার খালা আছে, খালাতো ভাইবোন আছে। সবচেয়ে বড় কথা বটগাছের মতোন আমি আছি, তোমার মা আছে। তোমার কোনো ভয় নেই। তবে আমি বা সুরভি মরে গেলে কি হবে জানি না। কাজেই তোমার পায়ের নীচের মাটিটা শক্ত করার দায়িত্ব তোমার নিজেকেই নিতে হবে।

প্রিয় কন্যা ফারাজা তাবাসসুম,
তুমি এখন যা দেখো তাতেই প্রচন্ড অবাক হও। তোমার মা যখন নামাজ পড়ে, তুমি অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকো। তখন তোমার চোখে এক আকাশ বিস্ময় খেলা করে। তোমার এই বিস্ময়টুকু আমি উপভোগ করি। ইদানিং তুমি টা টা দেওয়া শিখেছো। কেউ বাইরে গেলে তুমি তাকে টা টা দাও। আবার তোমাকে যখন কোলে নিয়ে আমি বাইরে যাই, তখনও তুমি বাসার লোকজনকে হাত নেড়ে টা টা দাও। প্রিয় কন্যা গত এক বছর আমি আরাম করে ঘুমাতে পারি না। এর কারন তুমি। আমি অনেক রাতে ঘুমাতে যাই। কিন্তু অনেকবেলা পর্যন্ত ঘুমাতে পারি না। তুমি ভোরে উঠে যাও। উঠে ক্যাচ ক্যাচ শুরু করো। ঘুম বাদ দিয়ে তোমাকে কোলে নিয়ে বসে থাকি। তোমার মা তখন তোমার জন্য খাবার তৈরি করে। সুরভি, আমি খুব সাবধান আছি। কারন, তুমি হামাগুড়ি দাও। যদি খাট থেকে পড়ে যাও। আমরা সাবধান থাকার ফলে তুমি এখন পর্যন্ত একবারও খাট থেকে পড়ে যাওনি। এদিকে রোহা দুই বার খাট থেকে পরে মাথা আলু বানিয়ে ফেলেছে। দুই একবার তুমি খাট থেকে পরে যাচ্ছিলে আমি দৌড় দিয়ে তোমাকে বাচিয়েছি।

প্রিয় কন্যা ফাইহা,
তোমার কারনে এখন আমাকে নাচতে হয়, গান গাইতে হয়। সুরভিও নাচে, গান গায়। নানান রকম ছলাকলা করে তোমাকে খাওয়াতে হয়। তোমাকে খাওয়ানো বিরাট দিকদারি। এক ঘন্টার বেশি সময় লাগে তোমাকে খাওয়াতে। আবার তোমার মুখে খাবার দিলে তুমি পিচ করে ফেলে দাও- আমার গায়ে বা সুরভির গায়ে অথবা ফ্লোরে। প্রতিদিন তোমার একগাদা জামা কাপড় ধুতে হয়। এ দৃশ্য প্রতিদিনকার। তুমি ঘুমিয়ে গেলেও শান্তি নাই। তোমার ডায়পার বদলাতে হয়। ঘুমের মধ্যেও তোমাকে খাওয়াতে হয়। তুমি ঘুমের সময় খুব হাত পা ছড়িয়ে ঘুমাও। তখন তোমার গা থেকে চাঁদর সরে যায়। আমি বা সুরভি তোমার গায়ে চাঁদর দিয়ে দেই। তুমি আবার চাঁদর সরিয়ে দাও আবার আমরা চাদর দিয়ে দেই। ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। বাচ্চাদের নাক দিয়ে পানি পরা ভালো লক্ষন নয়।

প্রিয় কন্যা আমার-
জীবনে বড় হতে গেলে কোথায় কোথায় বাঁধা পড়ে। কোথায় কোথায় সমস্যা হয় তা আমি আমার জীবন থেকে শিখেছি। তোমার যেন কোনো বাঁধা না পড়ে এবং সমস্যা না হয় সেদিকে আমি লক্ষ্য রাখবো। আমার বাঁধা গুলো এবং সমস্যা গুলো বুঝার, দেখার কেউ ছিলো না। বলে দেওয়ার কেউ ছিলো না। বড্ড অসহায় অবস্থার মধ্যে বড় হয়েছি। আব্বা দূরে দূরে থাকতো। মা একা ঘর সামলাবে না চার সন্তানকে সামলাবে? এদিকে তার মেজাজ থাকতো সব সময় খারাপ হয়ে। আমাদের চার ভাইয়ের খাওয়া দাওয়া, গোছল, রান্না, স্কুল। সেই সময় আমার মা বোকা মানুষ ছিলেন। তবে মা এখন অনেক চালাক হয়ে গেছে। কিছুটা নিষ্ঠুর। আমার মা, তোমার দাদী। মার কিছু ভুলের কারনে আমার জীবনটা কিছুটা অগোছালো হয়েছে। সন্তান ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাবা মায়ের কারনে। তাই আমি এবং সুরভি খুব সাবধান থাকি। আজ এইটুকু থাক। আবার পরে তোমাকে নিয়ে লিখব।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৬

চাঁদগাজী বলেছেন:



পরীকে কি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে দিয়েছেন, ১৮ হাজার টাকা ফি?

২৩ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: পরী একটা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ছে।

২| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



পরীকে সাধারণ স্কুলে দিয়ে, ওকে আপনি প্রতিদিন নিজে পড়ান, ১৮ হাজার টাকা আয় করেন।

২৩ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: সাধারণ স্কুলের মান ভালো না।
পরীর সাথে আপনি কথা বললে বুঝতেন। পরীর সাথে ইংরেজিতে কথা বলে আমিও পারি না।

৩| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫১

জুল ভার্ন বলেছেন: শুভ কামনা।

২৩ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৪০

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৪| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৫৫

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: পরী কোন ক্লাসে পড়ে, কোন স্কুলে?

১৮ হার টাকায় আপনার কয়েক বছরের বেতন হয়ে যেতো বলেই আপনার বাবা-মা কোনো একাউন্ট খোলেনি।

২৩ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৪৯

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।

৫| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ১১:১১

প্রত্যাবর্তন@ বলেছেন: অনেক কিউট। শুভকামনা।

২৩ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৪৯

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৬| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ২:২৫

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: কোথায় টাকা রাখলে ৫ বছরে দ্বিগুণের বেশি হবে।একটা বেদেশি ভাষা শিখার থেকে বিজ্ঞান ও অংকে কেমন করছে সে দিকে বেশি খেয়াল রাখবেন।অক্সফোর্ড না কেমব্রিজ কোন সিলেবাস ফলো করে।স্কলাস্টিকায় বেতন অনেক কম।পরীক্ষাতো দিবে ও লেভেল এই জন্য এখনই এতো বেতন দিয়ে পড়ানো ঠিক কিনা চিন্তা করবেন।দিন শেষে বুয়েট বা কোন প্রাইভেট ভারসিটিতেই পড়তে হবে।অথবা বিদেশের কোন ভলো কলেজে।
ছোট মেয়ে দেখতে দেখতে বড় হয়ে স্কুলে যাবে তখন খরচ আরো বেড়ে যাবে।

২৪ শে নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:০৫

রাজীব নুর বলেছেন: টাকা কোথায় রাখলে দ্বিগুন হবে আমি জানি না।
বিজ্ঞান আর অংক খুবই জরুরী।
অক্সফোর্ড না কেমব্রিজ সিলেবাস ফলো করে আমি জানি না।
তবে যে স্কুলে পড়ছে লেখাপড়ার মান ভালো। এটা পরিস্কার বুঝা যায়।

৭| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৩১

খায়রুল আহসান বলেছেন: আদর ও মায়ার সংলাপ, ভালো লেগেছে।

২২ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১২:১৩

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.