নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

নীল শাড়ির রহস্য অমিমাংসিত

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:২৫



You can fool some of the people all of the time,
And all of the people some of the time,
But you cannot fool all of the people all the time".


ছোটবেলা থেকেই অনেক ভূতের বই পড়েছি।
ভূতের মুভি দেখেছি। কিন্তু কোনোদিন সত্যিকার ভূত দেখলাম না, আফসোস! কত মানুষ কত কিছু দেখে বেড়ায়, শুনি তাদের গল্প।অশরীরি দেখার জন্য কত কিছুই না করেছি জীবনে। সারারাত কবরস্থানে বসে থেকেছি। রাতবিরাতে কত গ্রাম ঘুরে বেড়িয়েছি, কত পুরনো বাড়িতে রাত কাটিয়েছি। বন্ধ হয়ে যাওয়া রেলস্টেশনে শুয়ে থেকেছি। নৌকা নিয়ে মাঝ নদীতে রাত কাটিয়েছি। কিন্তু কোনোদিন ভূতের দেখা পাই নি। এমন কি সুন্দরবন গিয়েও ভূতের দেখা পাই নি।

আমি একজন আধুনিক ছেলে।
কোনো কুসংস্কার বিশ্বাস করি না। অনেকে যখন অদ্ভুত কাহিনী শুনায়, আমি তাদের ভুল গুলো কে সুন্দর করে বুঝিয়ে দেই- যুক্তি দিয়ে।আমি দেখেছি গ্রামের মানুষরা বেশী কুসংস্কার বাদী হয়। তাদের অলৌকিকতা আমি বিজ্ঞান দিয়ে বুঝিয়ে দেই। মূর্খরা আমার যুক্তি বুঝে। কিন্তু ধার্মিকেরা কোনো যুক্তি তর্ক বুঝে না। ধার্মিকদের গাঁড় ত্যারা হয়। এদের আছে শুধু অন্ধ বিশ্বাস। ধর্ম ধার্মিকদের আগে বাড়তে দেয় না। সমাজে শুধু মাত্র ধার্মিকরাই পিছিয়ে থাকে।

কিছুদিন ধরে আমার কিছুই ভালো লাগছে না।
এই ঢাকা শহর আর ভালো লাগছে না। দূরে কোথাও যেতে ইচ্ছা করছে। অনেক দিন দূরে কোথাও যাই না। অনেক দিন সুন্দরবন যাই না। সমুদ্রে যাই না। পাহাড়ে যাই না। হঠাৎ ঠিক করলাম সুন্দরবন যাবো। সুন্দরবনের কাছে একটা গ্রামে আমার বন্ধু থাকে বাবলু।বাবলু'র বাবা-মা আমাকে অনেক আদর করেন। তারা অনেক দিন থেকে আমাকে যেতে বলছেন, সময় আর সুযোগের কারনে যাওয়া হয়ে উঠেনি। ঠিক করলাম আজ রাতের গাড়িতেই বাগেরহাট যাবো। রায়েন্দা।

বাসার কাউকে কিছু না বলে রাত দশটার গাড়িতে উঠে পড়লাম।
আমি আগেও এরকম অনেক করেছি। বাসার সবাই আমাকে খুব ভালো চিনে, জানে এবং বুঝে কাজেই কোনো সমস্যা নাই। আমি কোনো কিছুই গুছিয়ে লিখতে পারি না। আর এই জন্য আমার কোনো দুঃখও হয় না। আমি তো আর লেখক না। তাই, বুদ্ধিমানের মতো এই লেখাটা এলোমেলো হওযায় আগেই আমি আমার মূল কাহিনীতে চলে যাবো। বেশী ভনিতা করতে গেলেই ধরা খাবো। দলবল নিয়ে গিয়ে ভ্রমনে আনন্দ কম। একা একাই ভালো।

রাত তিনটায় বাস থেকে নেমে বিপদে পড়ে গেলাম।
আমি যাবো রসুলপুর গ্রামে। কোনো রিকশা বা ভ্যানগাড়ি নেই। সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। অপেক্ষা করতে আমার কোন দিনই ভালো লাগে না। আমি হেঁটেই রওনা দিলাম। দূরত্ব সাত মাইল। যেতে দেড় ঘন্টার বেশী সময় লাগার কথা না। আমি একটা সিগারেট ধরিয়ে হাঁটা শুরু করলাম। শীতের রাত এক কাপ গরম চা হলে ভালো হতো। এতো রাতে আমার জন্য নিশ্চয় কোন দোকান খোলা থাকবে না। সুন্দর জ্যোস্না রাত। চারিদিক ফকফকা। মাটির রাস্তা। কি সুন্দর পরিবেশ মন ভালো হয়ে যায়। রাস্তার দু'পাশে ধানক্ষেত।একটু পরপর ঠান্ডা বাতাস বয়ে যাচ্ছে। আমি ফুরফুরা মেজাজে হেঁটে যাচ্ছি।

একটা ব্যাপারে আমি নিজেই অবাক হচ্ছি-
গভীর রাত আমার ভয় লাগছে না। নির্জন রাস্তা। আমি গুনগুন করে গান গাইতে গাইতে চলেছি। কতক্ষন ধরে হাঁটছি জানি না। পথ আর শেষ হয় না, ভুল পথে চলে এলাম নাকি! হঠাৎ আমি থমকে গেলাম। দেখি একটা মেয়ে গাছের ডালে দোলনা বানিয়ে বসে আছে আর গুনগুন করে গান গাইছে।'

আমি কসম খেয়ে বলতে পারি-
এতো সুন্দর মেয়ে আমি আগে কখনো দেখিনি। মনে মনে আমি তিন বার বলেই ফেললাম- কি সুন্দর! কি সুন্দর! কি সুন্দর! আমি সাহস করে মেয়েটার কাছে গিয়ে দাঁড়াই। মেয়েটার মাথা ভরতি চুল, চুলে অনেক গুলো ফুল গোঁজা। মিষ্টি একটা গন্ধ পাচ্ছি। কোন ফুলের ঘ্রান মনে করতে পাচ্ছি না। মেয়েটার চোখে কাজল। সে মোটা করে কাজল দিয়েছে। কপালে একটা নীল টিপ। আমার মনে হলো চারপাশটা চাঁদের আলো'র চেয়ে মেয়েটার রুপের আলো বেশী অনেক বেশী। যেন চারপাশ ঝলমল করছে।

আমি এখন কি করবো?
আমি কি মেয়েটার পাশে বসে গল্প করবো নাকি আমার বন্ধু'র বাসায় চলে যাবো? মেয়েটাকে একা ফেলে চলে যাবো! মেয়েটা কি কোন অশরীরি বা মেয়েটার বাসা হয়তো আশে পাশেই ঘুম আসছিল না তাই এখানে বসে আছে। নাকি মেয়েটা দুষ্ট কোনো জ্বিন। আমাকে মেরে ফেলবে? অনেকক্ষন চুপ থাকার পর মেয়েটা বললো- তুমি ভুল পথে চলে এসেছো। এটা রসুলপুর যাবার রাস্তা না। আমার হাত ধরো, আমি তোমাকে রসুলপুর দিয়ে আসি। মেয়েটার গলার স্বর খুব মিষ্টি। আচ্ছা মেয়েটা জানলো কি করে যে, আমি রসুলপুর যাবো? এখন আমার এতো কিছু ভাবার সময় নেই, আপাতত এই নীল শাড়ি পরা মেয়েটার পাশে থাকলেই আমি বেশী আনন্দ পাবো। মেয়েটা আমার হাত ধরে হাঁটা শুরু করলো। আহ্ কি নরম হাত। যদি একটা জীবন এই মেয়েটার হাত ধরে পার করে দিতে পারতাম!

পরিশিষ্ট
ভোরবেলা আমার বন্ধু'র বাবা ফযরের নামাজের জন্য অজু করতে এসে আমাকে পুকুর পাড়ে অজ্ঞান অবস্থায় আবিস্কার করেন।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ৮:৪১

সোবুজ বলেছেন: বিশ্বাস না করলে দেখা যায় না।আজকে বিশ্বাস করেন কালকেই ভূত দেখতে পাবেন।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:৩৬

রাজীব নুর বলেছেন: বিশ্বাস করি না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.