নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাইকেল মধুসূদন দত্ত

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১১:২৮



প্রথম পর্ব
দ্বিতীয় পর্বের লিঙ্ক
তৃতীয় পর্বের লিঙ্ক

মাইকেল মধুসূদন লিখলেন- 'বীরাঙ্গনা'।
বইটি উতসর্গ করলেন পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে। বাংলা সাহিত্যে নতুন ভাব ও নতুন আঙ্গিক সৃষ্টি করেছেন মাইকেল তার সমস্ত লেখায়। মাইকেল বুঝতে পেরেছিলেন, বাংলার নারীর মনে আত্মভাবনা ও অহং চেতনা জাগিয়ে তুলতে হবে। তাই তিনি লিখলেন 'বীরাঙ্গনা'। বীরাঙ্গনা মানে শ্রেষ্ঠ নারী। খুব অল্প সময়ে মাইকেলের সাহিত্য খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে সারা বাংলায়। 'মেঘনাদ বধ কাব্য' তৃতীয় মুদ্রন বের হয়ে গেছে। লিখে লিখে বেশ ভালোই অর্থ আসতে শুরু করলো। বাপ দাদার জমি নিয়ে মামলা চলছিলো। সেই মামলায় রায় তার পক্ষে গেলো। সম্পদ ফিরে পেলেন। অভাব চলে গেলো। পুলিশ আদালতের চাকরী থেকেও অল্প কিছু টাকা আসে। সব মিলিয়ে এখন মাইকেলের আর্থিক অবস্থা খুব ভালো। এই খুশিতে মাইকেল মদ খাওয়া কমিয়ে দিলেন। টানা তিন বছর সাহিত্য রচনা করে মাইকেল বিপুল সম্মান পেয়েছেন।

মাইকেল মধুসূদন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কর্মকান্ড দেখে মুগ্ধ।
লোকটা শুধু মাত্র ধুতি আর চাঁদর গায় দেয়। অথচ কি তেজ। কি সাহস। পরিশ্রম করতে পারেন প্রচুর। একদিন মাইকেল ঈশ্বরচন্দ্রের সাথে দেখা করলেন। অনেক গল্প করলেন এবং দুজনেই দুজনের প্রতি মুগ্ধ হলেন। একজন জ্ঞানী মানুষ, আরেকজন জ্ঞানী মানুষকে দেখলে ঠিক চিনতে পারেন। যাইহোক, মাইকেল জীবনে কোনোদিন ধুতি পরেননি। গায়ে চাঁদর জরাননি। মাইকেল মধুসুদনের সব সময়ের স্টাইল ছিলো- কোট, প্যান্ট এবং টাই। এবং মুখে সিগারেট। এমন কি বাসাতেও মাইকেল কোট প্যান্ট টাই পড়ে থাকতেন। এক পাগলা জমিদার পুত্র মাইকেলের লেখা পড়ে মুগ্ধ। সে মাইকেলকে সম্মান জানাতে চায়। জমিদার পুত্র রুপা দিয়ে একটা গ্লাস বানিয়ে মাইকেলকে উপহার দেন। কারন মাইকেল মদ খেতে পছন্দ করেন। সে যেন রুপার গ্লাসে করে এখন থেকে মদ খায়।

হাতে পর্যাপ্ত টাকা আসার পর মাইকেল ঠিক করলেন তার জন্মস্থানে যাবেন।
যশোর। কপোতাক্ষের পাড়ে সাগরদাঁড়ি। সেখানেই তার শৈশব কেটেছে। স্ত্রী বললেন, আমিও যাবো। সাথে দুই বাচ্চাও যাবে। শমির্ষ্ঠা আর মিল্টন। শর্মিষ্ঠার বয়স তিন বছর। মিল্টনের দেড় বছর। তখন মাইকেলের বয়স ৩৮ বছর। যাইহোক, টাকার অভাব গুচে গেছে মাইকেলের। বিশাল দুটা বজরা ভাড়া নেওয়া হলো। কাজের লোক নেওয়া হলো ৫ জন। মাইকেল বজরার ছাদে বসে নদী উপভোগ করছেন। এই বাংলা তাকে মুগ্ধ করেছে। তার বজরার মাঝি বরশি দিয়ে এক বড় ইলিশ মাছ ধরে ফেলল। মাঝি বলল, স্যার মাছটা আপনি গ্রহন করলে আমি খুশি হবো। মাইকেল বললেন, মাছটা তুমি এখনই ভেজে নিয়ে আসো। স্ত্রী, পুত্র, কন্যা নিয়ে খাই। অনেকদিন ইলিশ মাছ খাওয়া হয় না। বজরার ছাদে বসে মাইকেল তার পরিবার নিয়ে ইলিশ মাছ খেয়ে মুগ্ধ হলেন।

নিজের জন্মস্থান গিয়ে মাইকেল আবেগে আপ্লুত হলেন।
গ্রামবাসীর সাথে দেখা করলেন। কেউ কেউ মাইকেল পছন্দ করলো। কেউ কেউ মাইকেলকে দেখেই পালিয়ে গেলো। কারন মাইকেল খিস্টান হয়ে জাত হারিয়েছে। তার সাথে কথা বললে জাত চলে যাবে। কিন্তু তাঁরা মামা মাইকেলকে দেখে বুকে জড়িয়ে ধরলেন। টানা সাত দিন মাইকেল সাগরদাঁড়িতে থেকে গেলেন। ছোট ছোট বাচ্চাদের এবং গ্রামের দরিদ্র মানুষদের মাঝে দুইহাতে টাকা ছিটালেন। গ্রাম থেকে ফিরে মাইকেল খিদিরপুরে বড় বাসা ভাড়া নিলেন। আগের বাসাটা ছোট ছিলো। এমনকি পুলিশ আদালতের চাকরী টা ছেড়ে দিলেন। কারন এখন তার আর্থিক সমস্যা নেই। পৈত্রিক সম্পত্তি ফিরে পেয়েছেন। একদিন বিকেলে মাইকেল রাস্তায় হাঁটতে বের হয়েছেন। দেখলেন- দোকানে বসে একলোক তার লেখা মেঘনাদ বোধ কাব্য পড়ছেন। মাইকেল বললেন, বইটা কেমন? জবাব এলো দুর্দান্ত। এত সুন্দর লেখা জীবনে কম পড়েছি।

মাইকেল ঠিক করলেন তিনি লন্ডন যাবেন।
ব্যারিস্টারী পড়বেন। কিন্তু তার বন্ধুরা বলল, এখন তোমার ব্যারিস্টারী পড়তে বিলেত যেতে হবে না। সমস্ত বাংলার মানুষ তোমাকে চিনে। তুমি এখন লিখো। মন দিয়ে লেখো। বন্ধুদের ভয় মাইকেল লন্ডন গেলে আর ফিরে আসতে পারবে না। কারন এর আগে লন্ডন গিয়ে রামমোহন এবং দ্বারকানাথ ফিরে আসেন নি। তাদের সেখানেই মৃত্যু হয়েছে। ভারতবর্ষে যত বাঙ্গালী আছে তাদের মধ্যে এই তিনই শ্রেষ্ঠ। রামমোহন, দ্বারকানাথ আর মাইকেল। মাইকেল বন্ধুদের বললেন, আমি ফিরে আসবো। ব্যারিস্টারী পাশ করেই ফিরে আসবো। স্ত্রী আর পুত্র কন্যাদের কলকাতায় রেখে যাচ্ছি। এই বাংলার মানুষ আমায় কোনোদিন ভুলতে পারবে না। আমি দিয়ে গেলাম অমিত্রাক্ষর ছন্দ। ইয়েস। আমি এসেছি, লিখেছি, জয় করেছি। বাঙ্গালীরা আমাকে কোনদিন ভুলতে পারবে না।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৪৫

সোনাগাজী বলেছেন:




বাংলাদেশে মেঘনাদবধ কাব্য কেমন পপুলার?

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৪৮

রাজীব নুর বলেছেন: পরীক্ষায় মেঘনাদ বোধ থেকে অবশ্যই প্রশ্ন আসে।
আসলে মাইকেলের লেখা গুলো বুঝা সহজ ব্যাপার না। অতি পন্ডিত ছাড়া তার লেখা কেউ পড়ে বুঝতে পারবে না। আমি নিজেও মাইকেলের লেখা বুঝি না। কিন্তু পড়তে ভালো লাগে। সাধু ভাষার লেখা পড়া যায় অতি সহজে। কিন্তু মাইকেলের লেখা বুঝতে হবে ভাষায় দক্ষতা থাকতে হবে। ব্যকারন জানতে হবে, বুঝতে হবে অবশ্যই।

২| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২২ ভোর ৪:৫৯

কামাল১৮ বলেছেন: পড়া হয় নাই।মাইকেলের লেখা থেকে বশি পড়েছি তার সম্পর্কে অন্যদের লেখা।এই যেমন আপনার লেখা পড়ে অনেক কিছু জানলাম।

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:০০

রাজীব নুর বলেছেন: মাইকেল অবহেলিত। কারন তার সময়টা আর আজকের সময়টা বিশাল পার্থক্য।

৩| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:০০

আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: মাইকেল নিয়ে সুন্দর লেখেছেন রাজীব দা

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:০০

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৪| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৫৬

স্বরচিতা স্বপ্নচারিণী বলেছেন: সুন্দর লেখা। এর আগে মধুসূদনের জীবনী নিয়ে অনেক বই পড়েছি ছোট থাকতে। তব এই পার্ট টি কখনও পড়িনি। ভালো লেগেছে।

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১০:৩৪

রাজীব নুর বলেছেন: আমি যা লিখেছি সেসব আপনি কোথাও খুঁজে পাবেন না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.