নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের শাহেদ জামাল- (আটচল্লিশ)

০৭ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:৪৭



গতকাল রাতে আচমকা মনে হলো-
আগামীকালটা অন্য রকম ভাবে শুরু হবে। এতটাই অন্যরকম যে প্রতিদিনকার জীবনযাত্রা বদলে যাবে। এক ঘেয়েমি এবার বিদায় নেবে। যে জন্য শাহেদ খুশি হবে। এই জন্যই তো শাহেদ দীর্ঘদিন অপেক্ষায় ছিলো। সারা শরীরে আনন্দের জলতরঙ্গ বয়ে গেলো শিরায় শিরায়। দীর্ঘদিন দিন ধরে একই এরকম জীবনযাত্রায় ক্লান্ত শাহেদ। যথেষ্ঠ বিরক্ত। তার আশে পাশের মানুষও বিরক্ত। সেটা স্পস্ট বুঝতে পারে তাদের চোখ মুখ দেখে। তাদের বিরক্তি শাহেদকে যন্ত্রনা দেয়। ইচ্ছা করে তাদের প্রত্যেককে শাস্তি দিতে। কিন্তু শাহেদ নরম মনের মানুষ। মানুষকে ক্ষমা করে দিতেই ভালোবাসে। অদৃশ্য উঁচু পাহাড়ের উপর দাঁড়িয়ে মাটির মানুষদের ক্ষমা করে দেয় শাহেদ। যাদেরকে ক্ষমা করে দেওয়া হলো তাঁরা কি ক্ষমা চেয়েছে?

এ বছর বেশ শীত পড়েছে।
শাহেদের মনে আছে প্রত্যেক বছর শীতে নতুন নতুন জামা বানাতো। সকালে গরম পানি দিয়ে গোছল করতো। তারপর ধোয়া পরিস্কার আয়রন করা জামা পড়ে বাসা থেকে বের হতো। গায়ে থাকতো দামী কোট। তিন রকমের সুগন্ধি গায়ে মাখতো। যেদিক দিয়ে হেঁটে যেতো লোকজন তার দিকে ফিরে ফিরে চাইতো। ওয়ালেটে সব সময় থাকতো ক্যাশ দশ হাজার টাকা। সব গুলো নোট নতুন। একদম চকচকে। ময়লা টাকা শাহেদ জামাল সাথে রাখে না। এটিএম কার্ড, ক্রেডিট কার্ড। দামী দামী রেস্টুরেন্ট ছাড়া কফি খেতো না। একদিন এরকম একটা রেস্টুরেন্টে কফি সামনে নিয়ে বসে আছে। তার পাশের টেবিলে সুন্দর মতো একটা মেয়ে একা বসে আছে। শাহেদের মনে হলো মেয়েটাকে সঙ্গ দেওয়া দরকার। তার কিছু অলৌকিক ক্ষমতা আছে। কোনো মেয়ের দিকে তাকালে মেয়েরা মুগ্ধ হয়ে তার দিকে তাকিয়ে থাকে। যেন তাদের হিপনোটাইজ করা হয়েছে।

মেয়েটার সাথে ভাব হতে এক মুহুর্ত সময় লাগলো না।
মেয়েটার নাম বিনা। অনেক পুরাতন নাম। যা আজকাল কেউ রাখে না। বেশ কয়েকদিন মেয়েটার সাথে কথালো। ঘুরে বেড়ানো হলো। মোবাইলে রাত জেগে অনেক গল্প করা হলো। তারপর মেয়েটাকে বাদ দিয়ে দেওয়া হলো। দীর্ঘদিন একই মেয়ের সাথে সম্পর্ক রাখ শাহেদের পোষায় না। বিনা একদিন এক মগ বিয়ার খেয়ে শাহেদের উপরে হুড়মুড় করে বমি করে দিলো। শাহেদ প্রচন্ড বিরক্ত হলো। যে জিনিস খেয়ে রাখত পারে না, সেই জিনিস খাও কেন? এরপর বিনার সাথে শাহেদ আর কোনো যোগাযোগ করেনি। কিন্তু আজকাল শাহেদের বিনার কথা খুব মনে পড়ে। মেয়েটা রবীন্দ্র সংগীত খুব ভাল গাইতো। আর খুব সুন্দর করে চুমু দিতে জানতো। চুমুর মধ্যেও যে কত রকম ফের আছে বিনা'ই শিখিয়ে ছিলো।

একদিন শাহেদ রুমু নামের এক মেয়ের সাথে সিনেমা দেখতে গিয়েছে।
এক কোনায় অন্ধকারে বসেছে। হঠাত দেখে বিনাকে। সে একলোকের সাথে সিনেমা দেখতে আসছে! এই লোকটা কি বিনার স্বামী? না শাহেদের মতো কেউ? রুমু বলল, ঐ দিকে চেয়ে আছো কেন শাহেদ? ঐ যে অফ হোয়াইট শাড়ি পরা মেয়েটাকে দেখছো, সেই মেয়েটাকে আমি চিনি। এই মেয়েটা দারুক করে চুমু দিতে জানে। রুমু হাসলো। বললো, শাহেদ তুমি এত সুন্দর করে মিথ্যা বলতে পারো! শাহেদ হাসলাম। মাঝে মাঝে সত্য কথাও কেউ বিশ্বাস করে না। রুমু শাহেদের বুকে মাথা রাখলো। শাহেদ একটা গন্ধ পেলো। বাজে পারফিউম। শাহেদের ইচ্ছা করলো রুমুকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিতে। এরপর থেকে শাহেদ আর রুমুর সাথে যোগাযোগ রাখিনি। সেই বাজে পারফিউম ব্যবহার করার কারনে। অবশ্য রুমুকে কারনটা স্পষ্ট করে বলা হয়নি।

এখন শাহেদ প্রতিদিন চুলে শ্যাম্পু করে না।
রাস্তায় হাঁটার সময় শিস দিয়ে গান করে না। দুপুরবেলা ঘুমায় না। দামী রেস্টুরেন্টে গিয়ে কফি খায় না। রাস্তার পাশের চায়ের দোকান থেকে চা খেয়ে নেয়। লোকাল বাসে উঠে শালা বলে গালি দেয়- কেউ যদি তার জুতোতে পাড়া দিয়ে দেয়। রাতের বেলা ছাদে গিয়ে পায়চারি করে। সস্তা সিগারেট খায়। দাঁড়ি কামায় না দিনের পর দিন। মাথার চুল দিয়ে কান ঢেকে আয়। টানা এক সপ্তাহ চুলে চিরুনি দেয় না। ঘন্টার পর ঘন্টা নিজেকে আয়নায় দেখে। মাঝে মাঝে আয়নাতে দেখা যায় কে যেন ঠোঁট নাড়ছে। কিছু যেন বলতে চায় শাহেদকে। শাহেদ ভয় পায়। বিরক্ত হয়। পাগল হয়ে যাচ্ছে নাকি সে! নিজেকে নিজেই গালি দেয়। দিন রাত চব্বিশ ঘন্টা তাকে ঘিরে ধরেছে অবসাদ। আগে তো মাস শেষ হলেই একাউন্টে মোটা অংকের টাকা ঢুকে যেতো। বাবুগিরি দেখানো যেতো। জিনিসপত্রের দাম জিজ্ঞেস না করেই কিনে ফেলা যেত। আবার সেরকম সময় নিশ্চয়ই আসবে। দেরী হোক।

সিপাইবাগের দিকে যে দোকানে শাহেদ চা খায়-
সেখানে গিয়ে পরিচয় হয়েছে রাজ্জাক ভাইয়ের সাথে। রাজ্জাক সাহেব তার চেয়ে বয়সে কমপক্ষে দশ বছরের বড় হবেন। রাজ্জাক সাহেব বিয়ে করেননি। এজি ফার্মে চাকরী করেন। রাজ্জাক ভাই শাহেদকে প্রায়ই বলেন, 'শাহেদ সাহেব আমি বিয়ে করবো। মেয়ে দেখেন। আমার বিশেষ চাহিদা নেই। তবে মেয়েটা যেন সাংসারিক হয়'। রাজ্জাক ভাইকে শাহেদ প্রশ্ন করেছে, কেন আগে বিয়ে করেন নি? পঞ্চশ বছর বয়স আপনার। এই বয়সে কেন বিয়ে করতে যাবেন? রাজ্জাক ভাই বললেন, যৌবনে এক মেয়েকে ভালোবেসেছিলাম। সেই মেয়ে একদিন অন্য একটা ছেলেকে বিয়ে করে ফেলল। এবং আমাকে বলল, তুমি কোনদিন বিয়ে করো না। কথা দাও আমায়। রাজ্জাক ভাই মেয়েটাকে কথা দিলেন উনি বাকি জীবনে আর বিয়ে করবেন না। এখন পঞ্চাশ বছরে এসে রাজ্জাক ভাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি বিবাহ করিবেন। সেই মেয়েটাকে কথা দেওয়া ঠিক হয় নাই।

উদাসীন। বড় উদাসীন অবস্থা।
পৌষ মাসের মাঝামাঝি। ঝাকিয়ে শীত পড়েছে। পানি ঠাণ্ডা। যেন ফ্রিজের পানি। শাহেদ ফুটপাত দিয়ে হাঁটছে। প্রচুর ঠান্ডা বলে রাস্তায় লোকজন কম। বেশ কুয়াশা। এই ঠান্ডায়ও উন্নয়নের মহাসড়কে গুটিকয়েক মানুষ পশুর মতো শুয়ে আছে। শাহেদ তাদের ডিঙ্গিয়ে গেলো। সামনেই পার্ক। পার্কের গেট বন্ধ। শাহেদ দেয়াল টপকে পার্কে প্রবেশ করলো। চারদিকে গাছগাছালি বেশি বলে পার্কের ভেতর শীতের মাত্রা অনেক বেশি। একটা অশ্বথ গাছের নিচে তিনটা মেয়ে আগুন পোহাচ্ছে। এই শীতের রাতে তাদের বের হতে হয়েছে! শাহেদের কাছে টাকা থাকলে এদের প্রত্যেককে পর্যাপ্ত টাকা দিয়ে বলতো, তোমরা বাসায় চলে যাও বোন। আরাম করে ঘুমাও। একটা মেয়ে শাহেদের দিকে এগিয়ে এলো। মেয়েটা দেখতে বিনার মতো। মেয়েটা কছে আসতেই ল্যাম্প পোষ্টের আলোতে মেয়েটাকে রুমুর মতো লাগলো। কুয়াশা কি শাহেদের মধ্যে বিভ্রম তৈরি করলো!

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৪৫

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: শীতের সাথে ডিপ্রেশনের একটা সম্পর্ক রয়েছে, তবে মাসে মাসে একাউন্টে মোটা অংকের টাকা ঢুকলে ডিপ্রেশন সব কেটে যায়।

০৭ ই জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৪:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: শাহেদ শীতে কুপোকাত। কুপোকাত।

২| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৫৪

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:


শাহেদ সবাইকে নিয়ে ভালো থাকুক।

০৭ ই জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৪:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: হ্যা শাহেদ সবাইকে নিয়েই সুখে থাকতে চায়।

৩| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:০৪

সোনাগাজী বলেছেন:



ঢাকা শহরে কি পরিমাণ মেয়ে দেহ পসারিনী?

০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৪০

রাজীব নুর বলেছেন: এক লাখ তো হবেই।

৪| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫১

কামাল১৮ বলেছেন: যৌনকর্মী, এটাও একটা কর্ম।সরকার অনুমোদিত একটি কর্ম।

০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: কেউ শখ করে এ পেশায় আসে না।

৫| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:৫১

কাঁউটাল বলেছেন: শাহেদ জামাল সম্ভবত রাজিব নূর নিজেই

০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৪২

রাজীব নুর বলেছেন: না।
শাহেদ জামাল আমার বন্ধু। ভেরি ক্লোজ ফ্রেন্ড।

৬| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮:৪৮

হাসান জামাল গোলাপ বলেছেন: শাহেদ ভালো মানুষ, চাইলে সেই মেয়েদের জন্য ভালো কিছু করতে পারে।

০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৯:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: হ্যাঁ সে অবশ্যই কিছু করবে।

৭| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৯:১৩

কামাল১৮ বলেছেন: শখ করে কেউ কোন পেশাতেই আসে না।আসে উপার্জন করে জীবন বাঁচাতে।যৌন কর্মিরাও তাই করে।

০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৯:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: হ্যাঁ সেটাই।
আমি যৌন কর্মীদের জন্য কাজের ব্যবস্থা করবো।

৮| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১:৩৮

নীলা(Nila) বলেছেন: ভাইয়া একটু সাহায্য করবেন দয়া করে,,, সামু থেকে এইটা আছে কয়েকদিন ধরে

আপনার উপর নজর রাখা হচ্ছে
উপর্যুপরি নিয়ম ভঙ্গ করায় আপনার উপর নজর রাখা হচ্ছে এবং এর ফলশ্রুতিতে আপনার লেখা সরাসরি প্রথম পাতায় প্রকাশ হবে না। আপনার লেখা কেবল মাত্র আপনার নিজস্ব পাতায় প্রকাশিত হবে। তবে মডারেটর উপস্থিত থাকলে তার বিবেচনা সাপেক্ষে আপনার লেখা প্রথম পাতায় প্রকাশ করা হতে পারে। দয়া করে ব্লগ সাইটের নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে চলুন।

এইটার কারণে আমার পোস্ট প্রথম পাতায় দেখাচ্ছে না এবং শুধু আমি একাই দেখতে পাচ্ছি, অন্য কেউ দেখতে পাচ্ছল না

১৪ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:৪৯

রাজীব নুর বলেছেন: হুম।
আসলে আপনাকে সামুর নীতিমালা মেনে চলতে হবে। হয়তো তাদের কোনো নীতিমালা ভঙ্গ করেছেন। তাই আপনার লেখা আপাতত কিছুদিন প্রথম পাতায় আসবে না। এরকম শাস্তি আমি, চাঁদগাজী বহুবার পেয়েছি।

কাল্পনিক ভালোবাসা (কা_ভা) ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করুণ।

৯| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:২৭

নীলা(Nila) বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া

১৪ ই জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:০০

রাজীব নুর বলেছেন: ভাল থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.