নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

\'দৃষ্টিপাত\' বই রিভিউ

২৪ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:০৭



কোনোদিন সন্ধ্যাবেলায় তাঁর কুশল কামনা করে তুলসীমঞ্চে কেউ জ্বালাবে না দীপ, কোনো নারী সীমন্তে ধরবে না তাঁর কল্যাণ কামনায় সিদুরচিহ্ন, প্রবাসে অদর্শনবেদনায় কোনো চিত্ত হবে না উদাস উতল। রোগশয্যায় ললাটে ঘটবে না কারও উদ্বেগকাতর হস্তের সুখস্পর্শ, কোনো কপোল থেকে গড়িয়ে পড়বে না নয়নের উদ্বেল অশ্রুবিন্দু। সংসার থেকে যেদিন হবে অপসৃত, কোনো পীড়িত হৃদয়ে বাজবে না এতটুকু ব্যথা, কোনো মনে রইবে না ক্ষীণতম স্মৃতি।
প্রেম জীবনকে দেয় ঐশ্বর্য, মৃত্যুকে দেয় মহিমা। কিন্তু প্রবঞ্চিতকে দেয় কী? তাকে দেয় দাহ। যে আগুন আলো দেয় না অথচ দহন করে, সেই দীপ্তিহীন অগ্নির নির্দয় দহনে পলে পলে দগ্ধ হলেন কান্ডজ্ঞানহীন হতভাগ্য চারুদত্ত আধারকার ।


মানুষটির নাম বিনয় মুখোপাধ্যায়।
তিনি একটি বই লিখলেন- 'দৃষ্টিপাত' নামে। বইয়ের প্রধান চরিত্র মিনি বা পোটলা বলা যেতে পারে। সে ব্যারস্টারি পড়তে চায়। তিনি একটা পত্রিকার প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন দিল্লীতে। 'দৃষ্টিপাত' কোনো প্রেমের উপন্যাস নয়। রাজনীতি নয়, রম্য গল্পও নয়। চিঠি নয়। নিছক কোনো গল্প নয়, আবার ভ্রমন কাহিনীও নয়। ডায়েরী নয়। জীবনদর্শন নয়। আমি বলব, যা মন চায়- লেখক শুধু লিখে গেছেন। বিনয় মুখোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম ছিলো- যাযাবর। দীর্ঘদিন মানুষ জানতে পারেননি 'দৃষ্টিপাত' এর লেখক কে? যখন বইটি লেখা হয়- একদিকে চলছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, অন্যদিকে ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রাম।

বইটিতে সেই সময়ের দিল্লী শহর উঠে এসেছে।
লেখক দিল্লী শহরের সুন্দর বর্ননা দিয়েছেন। বই পড়লে বুঝা যায় লেখক যথেষ্ঠ রসিক মানুষ। লেখা সহজ সরল প্রানবন্ত। বইয়ের শেষের দিকে কিছুটা প্রেম ভালোবাসার ছোঁয়া পাওয়া যায়। মারাঠি যুবক আধারকার এর সঙ্গে এক বিবাহিতা বাঙালিনী সুনন্দার প্রেমকাহিনী। মারাঠি যুবক প্রেমে পড়ে পড়তে শুরু করলেন রবীন্দ্রনাথ। 'দৃষ্টিপাত' বইটি প্রথম প্রকাশ করা হয় ১৯৪৭ সালে। সত্য কথা বলি, দৃষ্টিপাত বইটি আমার তেমন ভাল লাগেনি। কিন্তু কলকাতার লেখক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় এই বইয়ের খুব সুনাম করেছেন। এজন্যই পড়েছি। লেখকের প্রথম বই 'দৃষ্টিপাত'। এই লেখক খুব বেশি লেখালেখি করেন নি। সব মিলিয়ে তার গ্রন্থের সংখ্যা ৭টি।

শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় একবার আমেরিকা যান।
সময়টা তখন ১৯৯৭। সেখানে গিয়ে তিনি দৃষ্টিপাত এর লেখকের দেখা পেয়ে যান। যাইহোক, লেখক তার 'দৃষ্টিপাত' বইতে নারীদের নিয়ে হাসাহাসি করছেন। তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেছেন। এই বইয়ের দুটা লাইন আপনাদের জন্য- 'আবিষ্কার নয়, যেমন পুরুষের কাছে। মেয়েরা স্বভাবত সাবধানী, তাই প্রেমে পড়ে তারা ঘর বাঁধে। ছেলেরা স্বভাবতই বেপরোয়া, তাই প্রেমে পড়ে তারা ঘর ভাঙ্গে। প্রেম মেয়েদের কাছে একটা প্রয়োজন, সেটা আটপৌরে শাড়ির মতই নিতান্ত সাধারণ।' আরেক জাগায় লেখক বলেছেন- 'মানুষের জীবন যখন জটিল হয় নি, তখন তার অভাব ছিল সামান্য, প্রয়োজন ছিল পরিমিত'।

১৯৫০ সালে সমকালীন বাংলা সাহিত্যের সর্বশ্রেষ্ঠ বই হিসেবে-
'দৃষ্টিপাত' নরসিংহ দাস পুরস্কারে সন্মানিত হয়। ১৯৬০ সালে এর হিন্দী অনুবাদ প্রকাশিত হয়। লেখক সাহিত্যকীর্তির জন্য পশ্চিম বঙ্গ সরকারের কাছ থেকে বিদ্যাসাগর পুরস্কার পান। দৃষ্টিপাতের শেষ লাইনগুলি এখনও অনেক পাঠকের মুখস্ত আছে: প্রেম জীবনকে দেয় ঐশ্বর্য, মৃত্যুকে দেয় মহিমা। কিন্তু প্রবঞ্চিতকে দেয় কি? তাকে দেয় দাহ। যে আগুন আলো দেয় না অথচ দহন করে, সেই দীপ্তিহীন অগ্নির নির্দয় দহনে পলে পলে দগ্ধ হলেন কাণ্ডজ্ঞানহীন হতভাগ্য চারুদত্ত আধারকার। মাত্র ৯৭ পৃষ্ঠার এই উপন্যাস একটি পরকীয়া প্রেমের উপাখ্যান বলাটা অন্যায় হবে না।

বিনয় কুমারের জন্ম বাংলাদেশে।
চাঁদপুরের জুবিলি স্কুলে তার পড়াশোনা। তার বাবা ব্যবসায়ী ছিলেন। পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে বিনয় সবার বড়। তিনি কলকাতা থেকে বি এ পাশ করেন। ছাত্র থাকাকালীন তিনি গান লিখতেন। কর্ম জীবনে দৈনিক পত্রিকায় 'শ্রী পথচারী' ছদ্মনামে রাজনৈতিক কলাম লিখতেন। ক্রিকেট খেলা নিয়ে তার দুটা বই রয়েছে। ২০০২ সালে এই লেখক দিল্লীতে ইন্তেকাল করেন।

লেখক বিনয় মুখোপাধ্যায়।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:৪৪

কামাল১৮ বলেছেন: এই বইটি নিয়ে লেখার উদ্দেশ্য বুঝতে পারলাম না।ঢাকার ফুট পাতে অনেক দেখেছি,তাতে মনে হয় বইটি অনেক পঠিত হয়েছে।আমার পড়া হয় নাই।এক সময় প্রচুর ছোট গল্প পড়তাম সেই তুলনায় উপন্যাস পড়াই হয় নাই।ইংরাজি কিছু ক্লাসিক উপন্যাস পড়েছি।সেও অনেক আগে।আপনি অনেক বই পড়েন।

২৪ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:৫২

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় এই বইয়ের অনেক সুনাম করেছেন।
অনেকবার পড়েছেন। তার নাকি এই বইয়ের অনেক লাইন মুখস্ত। শীর্ষেন্দু আমার প্রিয় লেখকদের একজন। উনার খাতিরে এই বই দুবার পড়েছি, আমার খুব একটা ভাল লাগেনি।

বই পড়তে আমার ভাল লাগে।
কারন আমি আমার সব বন্ধুবান্ধব বিসর্জন দিয়েছি। এখন বইয়ে দুব দিয়েছি। বেশ ভাল আছি।

২| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:৪৭

কামাল১৮ বলেছেন: বন্ধুছাড়া বাঁচার বয়স আপনার হয়নি।সম মনাদের সাথে বন্ধুত্ব রাখবেন।দিনের কিছুটা সময় বন্ধুদের সাথে কাটাবেন,তাতে মন ভালো থাকবে।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: সুযোগ পেলেই অপমান করবে, খোঁচা দিবে- এরা বন্ধু হতে পারে না।
বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার চেয়ে মাছের বাজারে গিয়ে মাছ কাটা দেখা অনেক ভাল।

৩| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১:১৪

সোনাগাজী বলেছেন:


স্কুলে থাকালীন পড়েছিলাম, মানুষের আচরণ বুঝার প্রয়াস।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: এই লেখকের সাথে আপনার কখনও দেখা হয়নি? এই লেখক অনেকদিন নিউ ইয়র্ক ছিলো।

৪| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৩ ভোর ৬:৫৫

হাসান জামাল গোলাপ বলেছেন: পড়িনি, হয়তো পড়া হবে না।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: ছোট বই। পড়ে ফেলুন। ঠকবেন না।

৫| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৯:১৪

সোহানী বলেছেন: লেখক যাযাবর এর সব বই আমার পড়া। কারন উনি মায়ের প্রিয় লেখক ছিলেন। আমি উনাকে নিয়ে একটা লিখা শুরু করেছিলাম কিন্তু শেষ করতে পারিনি।

যখন অল্প বয়স ছিল তখন শীর্ষেন্দু প্রিয় ছিল। কিন্তু এখন উনার বই পড়তে বসলে মেজাজ খারাপ হয়ে যায় কারন নারী বিদ্বেষী ভাব ছড়ানো পুরো ঘটনায়। একটু গভীরে ভাবতে বসলে টের পাবেন। আর যদি ভাবাভাবি না করেন তাহলে ঠিক আছে..........

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৪২

রাজীব নুর বলেছেন: লেখাটা শেষ করুণ।
হয়তো আপনার লেখা থেকে নতুন কিছু জানা যাবে।

হ্যাঁ শীর্ষেন্দুর লেখায় স্পষ্ট নারী বিদ্বেষের ছাপ পাওয়া যায়। এটা কথা উনি কিছুটা স্বীকারও করে নিয়েছেন। উনি উনার স্ত্রীকে চাকরী থেকে ছাড়িয়ে দিয়েছেন। উনার স্ত্রী কলেজে পড়াতেন।

৬| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৯:২৪

শ্রাবণধারা বলেছেন: দৃষ্টিপাত বইটা আসলে খুবই ভাল। আপনার ভাল লাগেনি জেনে আশ্চর্য হলাম!

লেখক বইটাতে মেয়েদের ছোট করেছেন এটা শুনে আরও বেশি আশ্চর্য হলাম! যে উদাহরণ গুলো দিয়েছেন সেগুলো মেয়েদের ছোট করার জন্য নয়।

বইটা লেখা হয়েছে চিঠির আকারে যার প্রাপক একজন নারী। সেই নারীর সাথে লেখকের যে সম্পর্ক তা অতিশয় সূক্ষ্ম আর পরিশীলিত, বাংলা গল্প উপন্যাসে যার উদাহরন খুব বেশি নেই।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: হ্যাঁ আপনি ঠিক বলেছেন।

৭| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:১১

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:


আপনি নিশ্চই বইপোকা নন?

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: না বইপোকা নই।

৮| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২৩

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- শুরু করেও বইটি পড়া হয়ে উঠেনি। হয়তো কোনো একসময় পড়বো।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: হ্যাঁ পড়ে ফেলবেন। পাতলা বই।

৯| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫৫

মনিরা সুলতানা বলেছেন: খুব পরিচিত বই !
ভালো লিখেছেন রিভিউ।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ আপা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.