নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আলো দে মা আঁধার ঘরে, জ্ঞানের আলো দে মা অন্তরে . . .

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:১৬



হিন্দু ধর্মে যত দেবী আছেন,
তাদের মধ্যে আমার সবচেয়ে ভালো লাগে 'সরস্বতী'কে। তিনি জ্ঞান, সংগীত, শিল্পকলা, প্রজ্ঞা ও বিদ্যার দেবী। বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, রামায়ণ, মহাভারত, সাহিত্য এবং ইতিহাসে দেবী সরস্বতীকে অনেক মহৎ কথা লেখা আছে। চার হাজার বছর আগে 'সরস্বতী' নামে একটা নদী ছিলো। এই নদী পারেই লেখা হয়েছে মহা ভারত। যাইহোক, সরস শব্দের অর্থ পানি। সরস্বতী শব্দের অর্থ হলো জলবতী অর্থাৎ নদী। খেয়াল করে দেখবেন- সরস্বতীর একহাতে বীণা অন্য হাতে পুস্তক। প্রতিটা দেব দেবীর বাহন আছে। সরস্বতীর বাহন হচ্ছে হাঁস। রাজ হাঁস। মানুষের ভেতরের পশুকে নিবৃত্ত করে জ্ঞান দান করেন বিদ্যার দেবী সরস্বতী। বিভিন্ন রূপ ধারণ করতে পারেন দেবী। এ কারণে সরস্বতীর আর এক নাম 'শতরূপা'।

বৌদ্ধ ধর্ম অনুযায়ী, সরস্বতী ছিলেন মঞ্জুশ্রীর এক সঙ্গিনী।
সরস্বতীর হাতে শোভা পায় বীণা। এটি শুধুমাত্র সুরেরই নয়, তা বুদ্ধি এবং মেধারও প্রতীক। আগে পূজা মন্ডপে দেখতে পেতাম সরস্বতীর চার টা হাত। এখন চার হাত আর দেখা যায় না। এখন দুই হাত। আমাদের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সরস্বতীকে নিয়ে কবিতা লিখেছেন। সরস্বতী পুজোর সঙ্গে হলুদ রং যেন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মেয়েরা হলুদ শাড়ি পড়ে, ছেলেরা পাঞ্জাবী পড়ে। বাংলাদেশে সরস্বতী পূজার প্রধান কেন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল মাঠ। প্রতি বছর সেখানে যাই। খুব ভালো লাগে। ইতিহাস থেকে আমরা জানতে পারি-হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো নগরে সরস্বতী দেবীর পূজা হতো। আইনস্টাইন সরস্বতীর কথা জানতেন। তিনি জ্ঞানী মানুষ। কিন্তু তার কোনো দেবীর কাছে জ্ঞান ভিক্ষা চাইতে হয়নি।

পন্ডিত বাৎসায়ন লিখছেন, কামদেবের পুজো করতে হলে ৬৪টি কলা শিখতে হবে।
আর সেই শিক্ষার শুরু সরস্বতী পুজোর দিন। সরস্বতী নদী থেকে তিনি বিদ্যার দেবী হলেন। এই বিবর্তনে একটা যুক্তি আছে। নদী তীরেই বেদ পাঠরত মুনিঋষিদের বাস। নদীর জল আর মাছেই তাঁদের পুষ্টি, নদীর জল থেকেই ফসল আসে তাঁদের। ১৮২২ থেকে ১৮২৫ এর মধ্যে কলকাতার নিষিদ্ধপল্লী নিয়ে তিনটা বই লিখেছিলেন 'ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়'। বই গুলোর নাম- নাম 'নববাবু বিলাস', 'নববিবি বিলাস' এবং 'দূতী বিলাস'। তিনটে বইতে আছে সরস্বতীর বন্দনা। শুনেছি, অনেক বিখ্যাত মুসলমান ওস্তাদেরা বাড়িতে সরস্বতী পূজা করতেন। 'জ্ঞান' কেউ কাউকে দুতে পারে না। 'জ্ঞান' অর্জন করে নিতে হয়। তবু মানুষ যুগ যুগ ধরে সরস্বতীর আরাধনা করেই যাচ্ছে। লালন, নিউটন, গোর্কি, আইনস্টাইন, এরিস্টটল ইত্যাদি জ্ঞানীগুণীদের 'জ্ঞান' কোনো দেব দেবী দেননি।

আপনাদের একটা ঘটনা বলি সংক্ষেপে। সময়টা ১৯৪২ সাল।
সৈয়দ মুজতবা আলি হঠাৎ কি মনে হতে গঙ্গার ঘাটে গিয়েছেন। তখন বেলা ১২টা। চারিদিকে অনেক মানুষ। মুজতবা আলির কাছে এক বৃদ্ধা এগিয়ে এলেন। সঙ্গে একটা দশ-বারো বছরের ফুটফুটে মেয়ে। বৃদ্ধা বললেন, 'আমার বাড়ির সরস্বতী পূজাটা একটু করে দাও না বাবা। সকাল থেকে পুরুত ঠাকুরের অপেক্ষা করছি, তিনি আসেননি। এখন রাস্তায় পুরুত খুঁজতে বেরিয়েছি। আমার নাতনিটা সেই সকাল থেকে অঞ্জলি দেবে বলে না খেয়ে বসে আছে'। মুজতবা সাহেব সেখানে গিয়ে নিখুঁত সংস্কৃত মন্ত্রোচ্চারণ করে হিন্দু শাস্ত্র মতে সরস্বতী পুজো করলেন। তিনি মুসলিম হলেও হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে তার ছিল অগাধ পান্ডিত্য, অনেকেই সেটা জানেন।

সরস্বতী পুরাণে বলা হয়েছে-
ব্রহ্মা যখন জগৎ সৃষ্টির লক্ষ্যে গভীর ধ্যানমগ্ন হন, তখন তাঁর বীর্য থেকেই সরস্বতীর জন্ম হয়। সরস্বতীর জন্ম মাতৃগর্ভে ছাড়াই হয়। জাপানে সরস্বতী দেবীকে বলা হয়- বেনজাইটেন। পলাশ ফুল সরস্বতী পূজায় ব্যবহার করা হয়। এখন শীতের শেষে, বসন্ত আগমনের আগে পলাশ ফুলে ভরে যায় গাছ। পলাশ ফুলের গন্ধ নেই। এই গন্ধহীন ফুল পূজায় নিবেদন করার উদ্দেশ্য হলো, ভোগ-বাসনার আসক্তি মনে না এনে শুদ্ধ অন্তরে দেবীর বন্দনা করতে হয়। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, সবাই এ দেশের অধিবাসী। সবারই লক্ষ্য হতে হবে দেশপ্রেমিক প্রকৃত মানুষ হওয়া। হে সরস্বতী, তোমাকে জানাই হৃদয়ের ভক্তিপূর্ণ প্রণাম।

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৪২

নতুন বলেছেন: কাল্পনিক কাহিনিতে আপনার হৃদয়ে এত ভক্তি?

আপনি তো কাল্পনিক কাহিনি গুলি পছন্দ করেন না।

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৯:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: মেরাজ বলেন, মাছের পেটে চলে যাওয়া বলেন, লাঠি সাপ হয়ে যাওয়া অথবা- হও বললেই হয়ে যায়- ইত্যাদি সব কিছুই কাল্পনিক। এগুলো প্রতি আমার কোনো ভক্তি নেই। আমি এসব বিনোদন হিসেবে নিই।

২| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৫২

অক্পটে বলেছেন: ইসলাম ধর্মে আপনার কি ভালো লাগে?

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৯:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: ঈদ ভালো লাগে। সেদিন গরীব দুখীদের মুখে হাসি দেখা যায়।
রমজান মাস ভালো লাগে। সন্ধ্যায় অনেক রকম খাবার নিয়ে ইফিতারী করি।

৩| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:০৩

সোনাগাজী বলেছেন:



সৈয়দ মুজতবা আলী সাহেব অনেক ভাষা শুদ্ধভাবে জানতেন, ইহা বিশাল ব্যাপার ছিলো।

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৯:৫৬

রাজীব নুর বলেছেন: উনি গুনী মানুষ। আধুনিক মানুষ।
বর্তমানে তার মতো লোক বঙ্গ দেশে নাই বললেই চলে।

৪| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৩৯

পুকু বলেছেন: আপনার লেখা যতই পড়ি,আপনাকে প্রতিবারই নতুন ভাবে আবিস্কার করি।আপনার মতো লোক বাঙ্গলাদেশে ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে।এরা মুজতবা আলী পড়ে কিন্ত মানসিক ভাবে এরা মধ্যযুগেই আছে।তার মতো আদৌ হতে পারবে কি ?

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৯:৫৯

রাজীব নুর বলেছেন: এই সমাজে যাদের সম্মান করা হয়। কদর করা হয়। খাতির করা হয়- তাদের আসল রুপ আমি দেখেছি। সমস্যা এইখানেই।

৫| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৪১

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: ধর্মীয় বিষয়ে দেখা যাচ্ছে বেশ ভালোই গবেষণা করছেন, চালিয়ে যান।

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:০০

রাজীব নুর বলেছেন: ধর্মীয় বিষয় নিয়ে গবেষনার কিছু নেই। ধর্মীয় জগত রুপকথার জগত। আর আমি বাস করি বাস্তবে।

৬| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫৫

কামাল১৮ বলেছেন: হিন্দু ধর্ম ভারতিয়দের ধর্ম না।এটা আর্যদের ধর্ম।আর্যরা আসে পশ্চিম থেকে।দ্রাবিড়দের পরাজিত করে তারা উত্তর ভারতে স্থায়ী হয়ে বসে।আর দ্রাবিড়দের দাসে পরিণত করে।
সব ধর্মই মানুষে মানুষে বিভেদ তৈরী করে।হিন্দু ধর্ম করে সবথেকে বেশী।
মহেঞ্জোদারো হরপ্পাসভ্যার লোকরা কোন ধর্ম পালন করতো এমন কোন প্রমান পাওয়া যায় না।
তাদে লীপির পাঠোদ্ধার এখনো সমস্ত হয় নাই।

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:০৪

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার চোখ কিচ্ছু এড়ায় না।
আমাদের গ্রামের ভাষায় বলে- হাতের আঙ্গুলের ফাক দিয়ে কিচ্ছু পড়ে না। অর্থ্যাত একটা লেখার ভুল গুলো আপনি খুব সহজে ধরে ফেলেন।
আপনি পাঠক হিসেবে অনেক এগিয়ে। এমনকি চাঁদগাজীর চেয়ে এগিয়ে।

৭| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮:১৭

নিমো বলেছেন: বেশি আলো দিতে নিষেধ করুন, পরে না সেই আলোতে চোখে আঁধার দেখেন।

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:০৭

রাজীব নুর বলেছেন: আধার তো অলরেডি দেখতে শুরু করেছি। ডাক্তার চশমা দিয়েছেন।

৮| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮:৩৪

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: যাকে বিশ্বাস করেন না, তার নিকট আলো চাইলেন কোন হিসাবে? আপনার অনেক পোষ্ট কেন জানি আমার বোধগম্য হয় না। পড়ি ঠিক। কিন্তু বোধগম্য না হওয়ার কারণে মন্তব্য করতে পারি না।

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:০৮

রাজীব নুর বলেছেন: আসসালামু আলাইকুম।
আমার পোষ্ট আপনি বুঝেন না কারন, আপনি আমাকে পছন্দ করেন না।
আমাকে পছন্দ করলে, আমাকে ভালোবাসলেই আপনি আমার পোষ্ট গুলো বুঝতে পারবেন।

৯| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮:৪৫

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: শুনার মত গান

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:১৩

রাজীব নুর বলেছেন: হ্যাঁ গানটা শুনলাম।
বাচ্চার কন্ঠ টা সুন্দর।

১০| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:২২

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:


জ্ঞানের ভার এখনো বইছে স্বরসতী দেবী।

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: সরস্বতী একটি কাল্পনিক চরিত্র।

১১| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:০৩

বিটপি বলেছেন: ব্রহ্মার বীর্য থেকে সরস্বতীর জন্ম - এই তথ্য আপনি পেলেন কোথায়? সরস্বতী যদি ব্রহ্মার কন্যা হয়ে থাকে, তাকে মহাদেব কে? কেন দূর্গা মুর্তির সাথে তাকেও রাখা হয়?

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:২৬

রাজীব নুর বলেছেন: যীশুর মতো সরস্বতীও অলৌকিক ভাবে এসেছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.