নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের শাহেদ জামাল- (একান্ন)

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:২০



শাহেদ জামাল সকালে মেসে খায় না।
সকালবেলা বুয়া ডাল ছাড়া খিচুড়ি রান্না করে। মসুরির ডাল ১৪০ টাকা কেজি। হলুদও দেয় না। সাদা খিচুড়ি। ভাত হয় সাদা, খিচুড়ি নয়। সাথে রসুন আর মরিচ ভর্তা। মিথ্যা বলব না মাঝে মাঝে বুয়া ডিম ভাজি, আলু ভর্তাও দেয়। যাইহোক, বুয়ার প্রতিটা রান্না অতি অখাদ্য। অথচ মেসের লোকজন এই অখাদ্য আগ্রহ নিয়ে খায়। এমনকি খাবার টান পড়ে যায়। মেসের লোকজন বলে আর একটু বেশি করে রান্না করো। শাহেদ জামাল বুঝে না এরকম ফালতু খাবার লোকজন কি করে খাচ্ছে? শাহেদ মেস মেম্বারদের বলেছে, সবাই মিলে কিছু টাকা বাড়িয়ে দিলে সকলে মিলে ভালো মন্দ খাওয়া যায়। কেউ শাহেদ জামালের কথা শুনেনি। তাঁরা চায় টাকা বাঁচাতে। প্রয়োজনে না খেয়ে থাকবে। অথচ একটু বুদ্ধি করলেই প্রতিবেলা আরাম করে খাওয়া যায়। নির্বোধ গুলো বুঝে না। বুদ্ধি না থাকলে এই সমাজে টিকে থাকা যাবে না। নিজের পথে নিজেকেই বেছে নিতে হয়।

শাহেদ জামাল সকালে রেস্টুরেন্টে নাস্তা করে।
তার পকেটে টাকা না থাকলেও সমস্যা নাই। হোটেল মালিক শাহেদ জামালকে অত্যাধিক স্নেহ করেন। তিনি বলেছেন, যখন ইচ্ছা তুমি আমার হোটেলে এসে খেয়ে যাও। মাস শেষে টাকা দিলেই হবে। হোটেল মালিকের নাম আলামিন। উনি নামাজি মানুষ। তার কপালে স্থায়ী কালো দাগ বসে গেছে। এরকম মানুষ অতি সহজেই বোকা বানানো যায়। শাহেদ জামাল একদিন হোটেলে এসে দেখে আলামিন সাহেবের মন খারাপ। তখন শাহেদ তাকে দুটা হাদীস বলে। হাদীস শুনে আলামিন সাহেবের মন ভালো হয়ে যায়। তিনি শাহেদ জামালকে বুকে জড়িয়ে ধরে। এরপর একদিন শাহেদ ফযরের সময় মসজিদে যায়। মসজিদে দেখা হয় আলামিন সাহবের সাথে। আলামিন সাহেব শাহেদকে মসজিদে খুব খুশি হয়। শাহেদ নরম কমল গলায় বলে- আল্লাহপাক সবার আগে নামাজের হিসাব নেবেন। নামাজ না পড়লে তাকে কি জবাব দিবো। আসলে শাহেদ আলামিন সাহেবকে খুশি করার জন্য এই ভোরবেলা আরামের ঘুম বাদ দিয়ে মসজিদে যায়। তার চিন্তা অন্য জায়গায়। শাহেদ সফল হতে পেরেছে।

এখন সে আলামিন সাহেবের হোটেলে খেতে পারে।
টাকা না থাকলেও সমস্যা নাই। এমনকি হোটেলের মেসিয়াররা পর্যন্ত শাহেদ জামালকে খাতির করে। তাদের মালিক খাতির করে। তাঁরা তো করবেই। শাহেদ জামাল খেতে বসলো। নেহারি নিলো। রুটি নিলো। বেশ স্বাদ। হোটেল বয় বলল, আজ কিন্তু কলিজা ভূনা করা হয়েছে। সেটা খেয়ে দেখুন। শাহেদ বলল, আনো। তাড়াতাড়ি আনো। কলিজা ভূনা ভালোই হয়েছে কিন্তু ঝাল বেশি। সব শেষে স্পেশাল চা। মালাই চা। দুধের সর জমিয়ে রাখে। কাউকে দেয় না। তাঁরা জানে শাহেদ আসবে। যে লোক চা বানায় সে একবার বিরাট বিপদে পড়েছিলো। তার মোবাইল কিছুতেই অন হচ্ছিলো না। তখন শাহেদ জামালের কাছে আসে। শাহেদ সেই মোবাইল অন করে দেয়। এরপর চায়ের কারিগর লোকমান শাহেদের ভক্ত হয়ে যায়। মোবাইলের কিছু হয় নাই। চার্জ ছিলো না। শাহেদ মোবাইল চার্জ দিলো। এরপর অন করে দিলো। এভাবে সে অনেকের সমস্যার সনাধান করেছে।

শাহেদ জামালের টাকার দরকার।
বিকেলে সে নীলার সাথে দেখা করতে যাবে। অথচ পকেটে কোনো টাকা নেই। শাহেদ ফুটপাতে দাঁড়িয়ে সিগারেট ধরালো। ভাবছে কিভাবে টাকা ম্যানেজ করা যায়। এমন সময় দেখা গেলো আলামিন সাহেব আসছেন। হোটেল মালিক আলামিন সাহেব। শাহেদ তাকে সালাম দিলো। বলল, একটা কোরআন শরীফ আছে। সবুজ মলাটের কোরআন। এই কোরআন মক্কা শরীফ থেকে আনা হয়েছে। এর আগে এই কোরআনটা ছিলো মদীনায়। আপনি শুনলে অবাক হবেন এই কোরআনটা এখন আছে বাংলাদেশে। আলামিন সাহেব বললেন, আমার নবীর দেশে থেকে আনা কোরআনটা যদি একবার হাতে নিতে পারতাম! শাহেদ বলল, এটা সম্ভব। খুব সম্ভব। আপনি ইচ্ছা করলে এই কোরআন আপনার নিজের কাছেও রাখতে পারেন। আমি ব্যবস্থা করে দিবো। আলামিন সাহেব বললেন, তাহলে তো খুব ভালো হয়। কত টাকা লাগবে বলো আমি দিচ্ছি। শাহেদ বলল কোরআন শরীফের কোনো দাম হয় না। দামের কথা বলে আপনি গুনাহ করলেন। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান। আলামিন বললেন, আমি পাপী। আমি ক্ষমা চাই।

শাহেদ বলল, কোরআনটা আছে এখন সিলেট শাহজালাল মাজারের খাদেমের কাছে।
সেই খাদেমের সাথে আমার বিশেষ খাতির আছে। আমি বিকেলের প্লেনে সিলেট চলে যাই। আপনি আগামীকাল আছরের নামাজের পর কোরআন শরীফ আপনার হাতে পাবেন। আলামিন সাহেব বললেন, সুবাহানাল্লাহ। শাহেদ বলল, প্লেনে যাতায়াত করবো বেশ খরচ আছে। আলামিন সাহেব বলল, খরচ নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না। আমি তোমার বিকাশে টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছি। আলামিন সাহেব চলে গেলেন। শাহেদ জামাল আরেকটা সিগারেট ধরালেন। পুরো ঘটনা আচমকা বানানো। আলামিন সাহেবকে দেখেই কোরআনের কথাটা বানিয়ে বানিয়ে বলা। মূলত প্রয়োজন মানুষকে মিথ্যা বলতে শেখায়। শাহেদের এরকম কোনো পরিকল্পনা ছিলো না। এখন বায়তুল মোকাররম থেকে একটা কোরআন কিনে বই বাধানোর দোকান থেকে সবুজ মলাট লাগিয়ে নিলেই হবে। আলামিন সাহেব দিল দরিয়া মানুষ। বিকাশে ভালো পরিমানের টাকাই পাঠাবেন।

সন্ধ্যা ঘনায়মান। উত্তরার স্টিভ অস্টিন রেস্টুরেন্ট।
চমৎকার রেস্টুরেন্ট। লোকে বলে এই রেস্টুরেন্টে খাবার বানাতে যা যা দরকার সবই বিদেশ থেকে আনা হয়। এমনকি পানির বোতল পর্যন্ত। আলামিন সাহেব বিকাশে টাকা পাঠিয়েছেন। অনেক টাকা। নীলা আর শাহেদ মুখোমুখি বসে আছে। নীলাকে আজ খুব সুন্দর লাগছে। সে অফ হোয়াইট শাড়ি পড়েছে। মনে হচ্ছে নীলা পৃথিবীর কোনো মানবী নয়। এই মাত্র বেহেশত থেকে এসেছে। শাহেদ জামাল আজ তাকে একটা চুমু দিবেই। নইলে জীবন বৃথা। একটা মানুষ এত সুন্দর হয় কি করে! হু। নীলা বলল, আমরা আর কতদিন এভাবে পার্কে- রেস্টুরেন্টে দেখা করবো? একটা চাকরী তুমি যোগার করতে পারছো না? শাহেদের হাতে একটা আংটি। সুন্দর পাথর বসানো। পাথরটা ঝকমক করছে। শাহেদ নীলার আঙ্গুলে আংটি পড়িয়ে দিলো। বলল, আমাদের এঙ্গেজমেন্ট হয়ে গেলো। খুব শ্রীঘই বিয়ে হয়ে যাবে। এখন কি আমি রাজকুমারীকে একটা চুমু খেতে পারি? প্লীজ।

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৫৫

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:



এভাবে চলতে থাকলে মৃত্যুর পর শাহেদ জামালের স্বর্গে যাওয়াও সহজ হবে।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: সে তো স্বর্গে যাবে না। তার পছন্দ জাহান্নাম।

২| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৪৮

সোনাগাজী বলেছেন:



ঢাকায় জমায়েত দেশের সব ধারণের মানুষজন।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:২৬

রাজীব নুর বলেছেন: ঢাকা নষ্টদের শহর।

৩| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮:০৩

নিবর্হণ নির্ঘোষ বলেছেন: আপনার লিখার অনেক উন্নতি হচ্ছে ! বেশ ভালো লিখছেন আজকাল , নগরের এক অকর্মণ্য যুবার পক্ষ থেকে আপনার জন্য শুভ কামনা রইল !

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:২৮

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৪| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮:৪৩

কামাল১৮ বলেছেন: ধর্মবেচে শাহেদ জামালের ভালোই চলছে।সেতো মৌলভী না,মৌলভীদের এই কৌশল সে শিখলো কেমন করে।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: ধর্ম বেঁচে কোটি কোটি মানুষ ভালো আছে।

৫| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৯:২২

বিষাদ সময় বলেছেন: সহ ব্লগার এবং পাঠক হিসাবে মন খুলে মন্তব্য করছি আশা করি কিছু মনে করবেন না। এটাকে গল্প না বলে মনে হয় রিপোর্টিং বলাই ভালো। কোন হোটেল ব্যাবসায়ী এত বোকা হয় না। ব্যাবসায়ী হতে হলেই ধুরন্ধর হতে হয় আর হোটেল ব্যাবসায়ী হলে তো কথাই নাই। আর ধার্মিক কেশিরভাগ ব্যাবসায়ী ধুরন্ধর চতুর এবং ব্যাবহার খারাপ। মিলিয়ো দেখতে পারেন।

আরেকটা কথা ধর্মকে নিয়ে যদি খেলতেই চান তবে আরো শৈল্পিক খেলা খেলুন, এটা নেহায়েত স্থুল খেলা কোন আর্ট নাই। ধন্যবাদ।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:৩১

রাজীব নুর বলেছেন: সকলকে এক কাতারে মেপে ফেললেন!!!!

৬| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৮:১৩

রানার ব্লগ বলেছেন: শাহেদ জামাল বেশ ধড়িবাজ মনে হচ্ছে।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:১২

রাজীব নুর বলেছেন: না। তা নয়।
সে ভালো মানুষ।

৭| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৮:৫৩

শেরজা তপন বলেছেন: ব্লগার বিষাদ সময় ঠিক বলেছেন; আপনি ব্যাবসায়ীদের চিনতে ভুল করেছেন।
আর ধর্ম নিয়ে খেলার কথাটাও ঠিক!

এই পর্বটা এলোমেলো মনে হয়েছে। আপনার বানানে ইদানিং বেশ ভুল হচ্ছে। তাড়াহুড়ো করছেন মনে হয়।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:১৬

রাজীব নুর বলেছেন: কিছু ব্যবসায়ী আছেন সহজ সরল। আমি দেখেছি।
ধর্ম নিয়ে খেলবো। খেলতে খেলতে তিতা বানিয়ে ফেলব।

হ্যাঁ এলোমেলো। ল্যাপটপে সমস্যা। তাই বানান বেশি ভুল হচ্ছে।

৮| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৯:০২

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: গল্পের গরু আকাশে উড়ে, বাস্তবে হোটেল ব্যবসায়ীরা এতটা বোকা নয়,এই হোটেল ব্যবসায়ী হুমায়ুন আহমেদের বিসমিল্লাহ হোটেলের মালিকের মত বোকা। যাই হোক বর্ণনা ভাল হয়েছে।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: সে নামাজী মানুষ। ধার্মিক মানুষ। এক শ্রেনীর ধার্মিকদের মানুষদের মন কিছুটা নরম হয়।

৯| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৯:১২

অনামিকাসুলতানা বলেছেন: ভাল লেগেছে।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:১৮

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ অনামিকা। ভালো থাকুন।

১০| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:০৯

চারাগাছ বলেছেন:
এইসব ম্যাচ মেম্বার , হোটেল মালিক , মেসিয়ারদের হুমায়ুন আহমেদের বইতে অনেক পাওয়া যায়।

আপনার হুমায়ুন আহমেদের আগে লেখা শুরু করা দরকার ছিল। 'অত্যাধিক' কথা বার্তা হুমায়ুন ছাড়া কোথাও পায়নি।


নীলা হত্যারের অংশ মনে করে পড়েছিলাম।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: নীলাকে নিয়ে আজ হয়তো লিখতে পারি।

১১| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:৪৩

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনি হিমু হতে চাইলেও হিমু হতে পারবেন না। কয়েক হাজার পাগল আপনার মত হিমু হওয়ার চেষ্টা করেছে। হুমায়ূন আহমেদ জাতে মাতাল কিন্তু তালে ঠিক ছিলেন। উনি নিজে পাগল না কিন্তু পাগল বানিয়ে গেছেন একটা প্রজন্মের কিছু বলদকে।

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:৩২

রাজীব নুর বলেছেন: আমি হিমু হতে চাই না। সে ইচ্ছা আর বয়সও নেই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.