নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
ছবিটা আহামরি কিছু না।
কিন্তু যখন আপনি ছবির পেছনের গল্পটা জানবেন তখন আপনার মন কিছুটা বিষন্ন হবে। অবশ্য আপনি যদি কঠোর প্রকৃতির মানুষ হোন- তাহলে আপনি বিষন্ন হবেন না। যাইহোক, ছবির পেছনের গল্প বলি- তখন আমি কলেজে পড়ি। ঈদের ছুটিতে বন্ধুর সাথে তার গ্রামের বাড়ি গেলাম। একদম সুন্দরবনের কাছে একটা গ্রাম। অজপাড়া গা। বিদ্যুৎ নেই। পাকা রাস্তা নেই। গ্রামের নাম রসুলপুর। অতি দরিদ্র গ্রাম। গ্রামের মানুষদের পেশা হচ্ছে- সুন্দরবন থেকে মধু সংগ্রহ। কেউ লাকড়ি টোকায়। আবার কেউ কেউ নদীতে মাছ ধরে। এই অঞ্চলের মানুষ মোবাইল চার্জ করতে হলে- তাদের বাজারে আসতে হয়। পাঁচ টাকার বিনিময়ে মোবাইল চার্জ করে নিয়ে যায়। যাদের মোবাইল নেই, তাঁরা বাজারে এসে ৮ টাকার বিনিময়ে এক মিনিট কথা বলার সুযোগ পায়া।
ছবিটা ভালো করে দেখুন। একটা ছেলে গাছে উঠেছে।
সে জাল শুকাচ্ছে। এই জালই তার একমাত্র আয়ের পথ। এই জাল দিয়ে সে সমুদ্রে মাছ ধরে। সমুদ্রের পানি লোনা। লোনা পানিতে প্রচুর কাঁকড়া থাকে। কাকড়া গুলো জাল কেটে দেয়। ছেলেটা গাছের ঢালে জাল বিছিয়ে জালের ছেঁড়া অংশ গুলো খুঁজে বের করছে। তারপর সেলাই করছে। গাছ থেকে ছেলেটা যে কোনো সময় পড়ে যেতে পারে। সেদিকে তার কোনো হুশ নেই। খুলনা, বাগেরহাঁট, রায়েন্দা, ইত্যাদি এলাকার জেলেরা সাধারণত রাতের বেলা মাছ ধরে। সারারাত মাছ ধরে। মাছ ধরা খুব সহজ কাজ নয়। অনেক পরিশ্রমের কাজ। যারা টিকিট কেটে পুকুরে বরশি দিয়ে মাছ ধরে, সেটা এক ধরনের বিলাসিতা। তাদের যদি একরাত রাতের বেলা ছোট একটা নৌকায় বিশাল সাগরে ঢেউয়ের মোকাবেলা করতে হতো- তাহলে তাঁরা বুঝতো মাছ ধরা কাকে বলে। এবং জেলেদের জীবন কশষ্টের!
রসুলপুর গ্রামের কথা কিছু বলা দরকার।
দরিদ্র একটা গ্রাম। বাজারে একটাই ফার্মেসী আছে। ফার্মেসীতে কোনো এমবিবিএস ডাক্তার নেই। এমনকি এই ফার্মেসীতে সব রকমের ওষুধ পাওয়া যায় না। একজন গ্রাম্য চিকিৎসক আছেন তিনিই এই এলাকার ডাক্তার। আমি নিজের চোখে দেখেছি- একজন সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে গেছেন। মাথা ফেটে ভয়াবহ অবস্থা। উনি এসেছেন ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার তাকে পাঁচটা সেলাই করে দিলেন। রোগী বলছেন- ডাক্তার স্যার দশটা সেলাই দিন। এমন রোগীও এখানে আসেন বাঘের থাবা খেয়ে চামরা অনেকেখানি ছিড়ে গেছে। এই গ্রামে দৈনিক পত্রিকা আছে একদিন পর। অর্থ্যাত আজকের খবরের কাগজ তারা হাতে পায় পরের দিন। বেশির ভাগ লোকজন পড়তে জানে না। সন্ধ্যার পর গ্রামের বয়স্করা ডাক্তারের ফার্মেসীতে আসে। ডাক্তার তাদের পত্রিকা পড়ে শোনান। এই গ্রামের মানুষ সন্ধ্যার পরপরই রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। ঘুম থেকে ওঠে ভোরবেলা।
এই গ্রামে সবচেয়ে বড় সমস্যা পানি নিয়ে।
অসংখ্য চাপকল আছে। কিন্তু পানি লোনা স্বাদ। লোনা পানির কারনে সব রকম ফসলের চাষ করা যায় না। বেশির ভাগ জমিতে চাষবাস হয় না। সরকার থেকে দূরের এক গ্রামে পানির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। পুকুরের পানি সেখানে বিশুদ্ধ করে পান করা হয়। লোকজন চার মাইল হেঁটে এখান থেকেই পানি সংগ্রহ করে নেয়। প্রতি বছর নিয়ম করে ২/৩ বার এই অঞ্চলে ঝড় তুফান আর বন্যা হয়। এজন্য সরকার থেকে এই অঞ্চলে একটা সাইক্লোন বিল্ডিং করে দেওয়া হয়েছে। যেন ঝড় তুফান হলে মানুষ 'সাইক্লোন বিল্ডিং' এ এসে আশ্রয় নিতে পারে। এরকম গ্রাম বাংলাদেশের অনেক জায়গাতে আছে। এই গ্রামে আমি অনেকবার গিয়েছি। তাঁরা আমার অনেক খাতির যত্ন করেছে। হরিনের মাংস খাইয়েছে। অতিথি পাখি খাইয়েছে। নানান রকম মাছ খাইয়েছে। মাছ গুলোর স্বাদ দারুন।
বর্তমানে এই গ্রামের অবস্থা অনেক উন্নত হয়েছে।
এখন অনেক পাকা রাস্তা হয়েছে। বিদ্যুৎ আছে। অনেক ঘরেই টিভি, ফ্রিজ আছে। ইন্টারনেট আছে। স্কুল হয়েছে। পার্লার হয়েছে। কমিউনিটি সেন্টার হয়েছে। গ্রামে এমবিবিএস ডাক্তার আছে দুইজন। প্রাইভেট ক্লিনিক হয়েছে। সব মিলিয়ে অনেক উন্নত হয়েছে। তবে সুন্দরবন থেকে মধু, মাছ, কাঁকড়া, লাকড়ি ইত্যাদি সংগ্রহ করার লোক অনেক বেড়েছে। এখন সবার হাতে হাতে মোবাইল। কেউ কেউ অনেক ধনী হয়েছে। একসময় এই গ্রামে যেতে সময় লাগতো ১১ ঘন্টা। এখন সময় লাগে ৪/৫ ঘন্টা।
১১ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ১০:২০
রাজীব নুর বলেছেন: যেহেতু মডারেটর সাহেব কারন জানান নি। তাই আমি কিছু জানি না। উনি জানালে জানতে পারবো।
২| ১১ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ৮:০০
হাসান জামাল গোলাপ বলেছেন: মহসিন হাকিমের সুন্দরবনের অনেক ভিডিও দেখেছি, মাছ ধরা কঠিন, তার চেয়ে কঠিন তাঁদের জীবনসংগ্রাম। ভালো থাকবেন।
১১ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ১০:২০
রাজীব নুর বলেছেন: হ্যাঁ তার ভিডিও আমিও দেখেছি।
মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
৩| ১১ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ১১:১৭
মৌন পাঠক বলেছেন: লেখা খুজে বের করে পড়তে হয়, পড়লাম।
১১ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ১১:৪৫
রাজীব নুর বলেছেন: মডারেটর সাহেব আমাকে চিপায় ফেলে দিয়েছেন।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৩:১৩
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
ব্যানে পড়লেন কেন? কি মনে হচ্ছে?