নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

তুমি কথা বেশি বলো!

০২ রা নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:২৯



অনেক দিকদারির মধ্যে আছি।
নতুন করে কোনো ঝামেলা চাই না। বাচি না নিজের জ্বালায়। কথা কম বলা ভালো। মুরুব্বিরা বলেছেন, বোবার কোনো শত্রু নাই। বেশি কথা বললেই সমস্যা। গ্রামের নানী দাদীরা বলেন, বেশি পিরীতে পেট বাঝে। একসময় আমি অনেক কথা বললাম। নীলা নামের একটা মেয়ে ছিলো। নীলা বেশির ভাগ দিন ক্লাস করতো না। আমাকে ফোন দিয়ে ডেকে আনতো। নীলার সাথে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতাম। ফুলার রোড ধরে হেটে হেটে শহীদ মিনার পর্যন্ত যেতাম। নীলা পাশে থাকলে নিজেকে মিশরের সম্রাট বলে মনে হতো। আমার কথা শুনতে শুনতে নীলা বিরক্ত। বলতো, তোমার সমস্যা হলো- তুমি কথা বেশি বলো। এত বক বক করো, মাথা ব্যথা করে। আমি অবাক হই। দুজন মানুষ পাশাপাশি থাকবে আর কথা বলবে না! নীলার সবচেয়ে ভালো দিক ছিলো দুটা। সে দেখতে ভীষণ সুন্দর। সহজ সরল সুন্দর। আর দুপুর বেলা আমাকে হাজির বিরানী খাওয়াতো।

আজকাল আমার সমস্যা হয়েছে।
কারো সাথেই কথা বলতে ইচ্ছে করে না। আমার ভালো লাগে একা থাকতে। চুপচাপ থাকতে। এজন্য আমি আমার বন্ধু শাহেদ জামালের মতো রমনা পার্কে গিয়ে চুপচাপ বসে থাকি। বড় ভালো লাগে। সাধুদের মতো বলতে ইচ্ছে করে আইছি একা, যামু একা। ঢাকা শহরে নিরিবিলি জায়গা পাওয়া মুশকিল। অবশ্য আমি কয়েকটি নিরিবিলি জায়গা খুজে পেয়েছি। রমনা পার্ক, বোটানিক্যাল গার্ডেন এবং গুলশান—১। অবশ্য এসব জায়গায় যেতে হয় ভরদুপুর বেলা। রমনা পার্কে শেরাটন হোটেলের এই দিকটায় দুপুর বেলা বেশ নির্জন থাকে। বোটানিক্যাল গার্ডেনে পদ্মপুকুরের কাছটা বড় বেশি নির্জন। একটু ভিতরের দিকে বলে, প্রেমিক প্রেমিকারা কম যায়। আর গুলশানের জায়গাটা আবিষ্কার করেছি আমি। লাইট হাউজ নামে একটা সুন্দর বাড়ি আছে। বাড়ির কাছেই লেকটা। লেকে নৌকা আছে। লোকজন নৌকা দিয়ে এপার ওপার যাচ্ছে।

আমি একজন জ্ঞানহীন মানুষ। বিনা দ্বিধায় বলতে পারেন মগজহীন মানুষ।
আমি কোনো প্রশ্নের উত্তর জানি না। ফারাজা নামের এক বাচ্চা মেয়ে আমাকে অনেক প্রশ্ন করে, আমি তার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারি না। নিজের কাছে নিজে ছোট হয়ে থাকি। বড় আফসোস হয়। তবু ফারাজা আমাকে প্রশ্ন করে। তার ধারণা আমি অনেক কিছু জানি। ফারাজা একদিন প্রশ্ন করলো- আল্লাহ দেখতে কেমন? আরেকদিন প্রশ্ন করলো- ডিম ভাজা খাওয়া ভালো না সিদ্ধ। আমি ফারাজাকে প্রশ্ন করলাম, তুমি কাকে বেশি ভালোবাসো বাবাকে না মাকে? যদিও বাচ্চাদের এরকম প্রশ্ন করা ঠিক না। আমি আমার বাবাকে ছোট বেলা কোনো প্রশ্ন করিনি। আসলে বাবাকে কাছেই পেতাম না। মনে অনেক প্রশ্ন আসতো, নিজেই প্রশ্ন গুলোর উত্তর খুজে বের করতাম। স্কুলের ম্যাডামকে কোনো প্রশ্ন করতাম না। ম্যাডামকে ভয় পেতাম। কোনো দিন কেউ মাথায় হাত বুলিয়ে জানতে চায়নি, আমার কোনো প্রশ্ন আছে কিনা।

মানুষের কাছ থেকে আমি দূরে থাকবো।
কাজী নজরুলের মতো, আমি চিরতরে দূরে চলে যাব, তবু আমারে দেব না ভুলিতে…..। দীর্ঘদিন ধরে আমি মোটামুটি একা আছি। বেশ ভালো আছি। আত্মীয় স্বজন, বন্ধুবান্ধব কেউ আমার খোজ নেয় না। আমিও কারো খোজ নিই না। একা একা এই শহরে হেটে বেড়াই। এক গলি থেকে আরেক গলি। তৃষ্ণা পেলে রাস্তার পাশের দোকান থেকে এক কাপ চা খেয়ে নিই। সেদিন পথে পথে হেটে আমি ক্লান্ত। বিধ্বস্ত। কড়া রোদ উঠেছিল। প্রচন্ড ক্ষিধে পেয়েছিল। অথচ পকেটে টাকা ছিলো না। টাকা না থাকলেই আমার বেশি ক্ষুধা পায়। ইচ্ছে করছিলো সাদা ভাত, লাল শাক দিয়ে খাই। আর দেশি মূরগী। শেষে ডাল। একটু লেবু মিশিয়ে নিব। আল্লাহপাক আমার রিজিক রাখেন নাই। দুপুরের কড়া রোদে আমার কষ্ট হচ্ছিলো। আমি মসজিদের ভিতরে গেলাম। কিছুক্ষণ শুয়ে থাকবো। এসি আছে। কি ঠান্ডা। মসজিদের ইমাম সাহেব আমার কাছে এলেন, বললেন- তুমি আমার ঘরে আসো। আমার সাথে খাবে। আমি হুজুরের ঘরে গেলাম। হুজুর টিফিন বক্স খুললেন। আমি অবাক হলাম! বক্সে ভাত, লাল শাক, দেশি মূরগী আর ডাল। সাথে লেবু কাচা মরিচও আছে।

মানুষ বদলে যায়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষ বদলে যায়।
স্বভাব, চরিত্র, খাওয়া দাওয়া, মানসিকতা। সব কিছুই বদলায়। একসময় আমি পোলাও পছন্দ করতাম। সাথে দেশি মূরগী। আর এখন আমার পোলাও ভালো লাগে না। ভালো লাগে সাদা ভাত আর লাল শাক। সেদিন এক বাসায় গিয়েছি, অনেক কিছু রান্না করেছে, টেবিল ভরতি খাবার। অরচ আমার কিছুই খেতে ইচ্ছা করলো না। বললাম, আমাকে একটা ডিম ভরতা করে দেন। আরাম করে ডিম ভর্তা দিয়ে ভাত খেলাম। বড় ভালো লাগলো। একসময় সারাদিন আড্ডা দিতাম। এখন ভালো লাগে একা চুপচাপ শান্ত পুকুর পাড়ে বসে থাকতে। আমি ঠিক করেছি, কারো সাথে কোনো কথা বলব না। কারো সাথে কোনো যোগাযোগ করবো না। মোবাইলটা ছুড়ে ধানমন্ডি লেকে অথবা বোটানিক্যাল গার্ডেনের পদ্মপুকুরে ফেলে দিব। শুধু পড়বো। বই পড়বো। আমি বাংলা সাহিত্য আর বিশ্ব সাহিত্যের দুই শ' বইয়ের তালিকা করেছি। বই কিনবো আর পড়বো। পড়ার চেয়ে শান্তি দুনিয়াতে আর কিছুতে নেই।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:৩৯

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: পড়লাম।

০৩ রা নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার অশেষ দয়া।

২| ০২ রা নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:৪৬

জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:



আমি বেশ কিছু সময়ের জন্য নিউইয়র্কের ১ গ্রামে চাকুরী করেছিলাম; সেখানে ১ জন বাংগালী বয়স্ক প্রফেসর ছিলেন; উনি পার্টনারের অভাবে তাস খেলতে পারতেন না; আমার জন্য প্রতিদিন অপেক্ষা করতেন। কিন্তু উনার স্ত্রী ছিলেন কুসংস্কারে বিশ্বাসী, তাস খেললে ধর্মের ক্ষতি হবে। আমি তাস খেলতে গেলে উনি খুবই খুশী হতেন।

০৩ রা নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: ধর্ম বিশ্বের জন্য ক্ষতিকর।

৩| ০২ রা নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৩

আরোগ্য বলেছেন: বই কিনবো আর পড়বো। পড়ার চেয়ে শান্তি দুনিয়াতে আর কিছুতে নেই। ভালো বলেছেন। বই মানুষের নিঃস্বার্থ বন্ধু, বিনা অভিযোগ আর প্রত্যাশায় সবসময় পাশে থাকে।

০৩ রা নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন।

৪| ০২ রা নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৫৩

হুমায়রা হারুন বলেছেন: সুন্দর উপলদ্ধি

০৩ রা নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৪৯

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৫| ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৩

dupur১২৩ বলেছেন: ভালো লেখা , লেখিকার থেকেও ভালো। আপনার দয়াওয়াত এর অপেক্ষা করতে করতে ছুটি শেষ হয়ে গেলো। আবার যে কবে আসি

০৩ রা নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: বাংলাদেশে যারা সরকারি চাকরি করে, তারা ভালো লিখতে পারে না। তবে কলকাতগার সরকারি চাকরি করা লোকজন দারুন লিখেন।

৬| ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৫ ভোর ৬:৩১

নতুন নকিব বলেছেন:



মসজিদের ইমাম সাহেব কি মনে করে আপনাকে খাওয়ালো?

০৩ রা নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: এটা ইমাম সাহেব ভালো বলতে পারবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.