নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবনের গল্প- ৯৫

১১ ই নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৩



বয়স হয়ে গেলে কি মানুষ একা হয়ে যায়?
অসহায় হয়ে পড়ে? কাছের মানুষজন সব দূরে চলে যায়? এমনকি নিজের ছেলেমেয়েও দূরে চলে যায়? একাকীত্বের কষ্ট, মারাত্মক কষ্ট। বুড়ো বয়সে একাকীত্ব ক্ষতবিক্ষত করে দেয়। আমাদের এলাকায় একজন বয়স্ক মানুষ আছেন। তার নাম হামিদা। বয়স ৭৫ থেকে ৮০ হবে। মহিলা একা এক ফ্লাটে থাকেন। তার সাথে তার ছেলেমেয়ে কেউ থাকে না। তার বড় ছেলে দিনাজপুর জেলা স্কুলের শিক্ষক। সে বউ বাচ্চা নিয়ে দিনাজপুরেই থাকে। ছোট ছেলে বউ বাচ্চা নিয়ে আমেরিকা থাকে। আর দুই মেয়ে ঢাকা থাকে। তারা তাদের ঘর সংসার নিয়ে ব্যস্ত। মায়ের খোজখবর বড়জোর ফোন করে নেয়। অথচ মা চায় তার ছেলেমেয়েরা তার সাথেই থাকুক। তাকে সময় দিক। খালি বাসায় তার ভালো লাগে না। দম বন্ধ হয়ে আসে। মাঝে মাঝে হামিদা বেগম রাস্তায় বের হয়ে এক দোকানে বসে থাকেন। মানুষ দেখেন। তার ভালো লাগে। হামিদা বেগম অসুস্থ শরীর নিয়ে বাজার করেন, রান্না করেন, ডাক্তারের কাছে যান।

বেগম হামিদাকে আমি খালা বলে ডাকি।
উনি আমাকে আজকাল প্রায়ই ফোন করেন। তার বাসায় যেতে বলেন। আমি তার বাসায় গেলেই, উনি কান্না করেন। তার ছেলেমেয়েদের জন্য কি কি এবং কত কষ্ট করেছেন সেগুলো বলেন। বেগম হামিদার স্বামী মারা যান বহু বছর আগে। তখন হামিদা তার ছেলেমেয়েকে লেখাপড়া শেখান। জীবন যুদ্ধে উনি সফল হয়েছেন। তার ছেলেমেয়ে সকলেই শিক্ষিত এবং প্রতিষ্ঠিত। শিক্ষিত-প্রতিষ্ঠিত ছেলেমেয়েরা মায়ের কাছে আসে না। মাঝে মাঝে ফোন দেয় এক মিনিটের জন্য। মা কি খায়? কে রান্না করে দেয়? কে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়? এসব নিয়ে ছেলেমেয়েরা ভাবে না। তবে বড় ছেলে দিনাজপুর থেকে নিয়মিত মার জন্য টাকা পাঠায়। হামিদা বেগম ভালো নেই। বয়স হয়ে গেলে মানুষ ভালো থাকে না। নানান অসুখ বিসুখ ধরে। একদম কাবু করে ফেলে। অথচ হামিদা বেগম যৌবনে কি সুন্দরী ছিলেন! কি তার দাপট ছিলো! অথচ আজ তার কি করুন পরিণতি। একা ঘরে জীবনযাপন করছেন। কিছুদিন আগে ব্রেন স্ট্রোক করেছেন।

শেষ বয়সে এসে বাবা মায়ের এত কষ্ট কেন হবে?
ছেলেমেয়ে জন্ম দেওয়া কি তাদের পাপ হয়েছে? ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শিখানো কি পাপ করা হয়েছে? আচ্ছা, আমি যখন বুড়ো হয়ে যাবো- তখন কি আমারও এই অবস্থা হবনে? আমার মেয়ে আমার কোনো খোজ খবর করবে না? আমাকে ঘিরে ধরবে একাকীত্ব, সেই সাথে নানান অসুখ বিসুখ। আমাকে দেখার কেউ থাকবে না! ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার কেউ থাকবে না? আমি ধুকে ধুকে মরে যাবো? না আমার এরকম হবে না। আমি বই পড়বো। লিখবো। হাতে লাঠি নিয়ে ধীর পায়ে শহরের অলিগলি হেঁটে বেড়াবো। শরীরের জোর না থাকলে বিছানায় শুয়ে থাববো। হা হুতাশ করে তো কোনো লাভ নাই। ভাগ্যকে মেনে নিবো। তবে আমার ধারনা আমার কন্যা যে শিক্ষা পেয়ে বড় হচ্ছে- সে তার বাবা মাকে অবহেলা করবে না। আগলে রাখবে। যেমন আমার দাদা দাদীকে আগলে রেখেছিলো আমার বাবা। কি সেবা! কি যত্ন! কোনো কিছুর অভাব হয়নি। আমাদের এলাকায় এক মহিলাকে দেখি, বাবা মায়ের খুব সেবা করে। কারণ সে বেহেশতে যেতে হয়। তাকে হুজুর বলেছেন, বেহেশতে যেতে হলে- বাবা মায়ের সেবা করো।

আমার বাবা করোনায় মারা গেলো।
মা আছেন। মা অসুস্থ। প্রায় ৬০ বছর বয়স। আমার মা কেমন আছেন? মায়ের অবস্থা হামিদা বেগমের মতো নয়। তার চার ছেলে তার সাথেই থাকে। তার চিকিৎসা ভালো ভাবেই হচ্ছে। তার পছন্দের খাবার তাকে যথাসময়ে রান্না করে দেওয়া হয়। মা ইউটিউবে সারাদিন নাটক সিনেমা দেখে। এজন্য মাকে বিশাল সাইজের এক টিভি দেওয়া হয়েছে। মা নিয়ম করে- ফোন করে চার ছেলের সাথে কথা বলেন। ছেলের বউরা মায়ের খোজ খবর নেয়। চলে যাচ্ছে। সময়। আমি দেখেছি আমার বাপ চাচা আর ফুপুরা- তাদের বাবা মায়ের সেবা করতে। এরকমটা আমি আর কোথাও দেখি নাই। সব ছেলেমেয়েরা সারাক্ষন বাপ মাকে ঘিরে থাকতো। তারা ভাই বোনরা- বাপ মায়ের সেবা করতে কোনো কার্পন্য করেন নাই। এক ছেলে ডাব নিয়ে সামনে দাঁড়িয়ে থাকতো। আরেক ছেলে বাবার পা টিপে দিতো। আরেক ছেলে গিয়ে নাপিত খুঁজে এনে বাবার চুপ দাটি কাটিয়ে দিতো।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৯

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

ভাগ্য।
বাংলাদেশের মানুষ ভালো না।

১১ ই নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:০৪

রাজীব নুর বলেছেন: কোন দেশের মানুষ ভালো?
কানাডা? জার্মানী? আমেরিকা? সৌদি?

২| ১১ ই নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৫

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: শেষের প্যারায় স্ববিরোধীতা। গুড গুড :D

চার ছেলে মায়ের সংগেই থাকেন পরক্ষণেই বলছেন মা নিয়ম করে ফোন করে চার ছেলের সংগে কথা বলেন!!

১১ ই নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: মগজহীন হয়ে পড়েছেন??
যখন আমরা চার ভাই অফিসে থাকি, তখন মা ফোন করে খোজ খবর নেয়। যথাসময়ে অফিসে পৌঁছেছি কিনা? দুপুরে খেয়েছি কিনা। ক্লিয়ার?

৩| ১১ ই নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৩৮

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আপনি এই ধরণের লিখা লিখবেন । পলিটিকাল লিখা গুলো খুবই পচা হয় ।

১১ ই নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৮

রাজীব নুর বলেছেন: আচ্ছা, ঠিক আছে।
তার আগে আপনি আমাদের জাতীয় সংগীত মূখস্ত করেন।

৪| ১১ ই নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৩

হুমায়রা হারুন বলেছেন: রাজীব ভাইয়া, পাখিটা কি আপনার ?

৫| ১১ ই নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:০১

জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:



আমাদের সমাজ ব্যবস্হা ও জাতীয় আচরণের ভয়ংকর অধপতণ হয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.