| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রাজীব নুর
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
এক বাসায় আমাকে দাওয়াত করে নেওয়া হয়েছে।
এরা কেউ আমার আত্মীয়স্বজন না। পরিচিত বলা যেতে পারে। দীর্ঘদিনের পরিচিত। তাদের ইচ্ছা একদিন যেন আমি তাদের বাসায় যাই। বেড়াতে যাই। যাই-যাই করে যাওয়া হচ্ছিলো না। তো সেদিন গেলাম সেই বাসায়! আমাকে দুপুরে খেতে দেওয়া হলো- বট, হ্যা গরুর বট। এদের ব্যবসাই গরুর বটের ব্যবসা। ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় এরা বট ভাজা বিক্রি করে। অনেক সময় রাস্তায় দেখেছি, ভ্যান গাড়িতে করে বট বিক্রি করছে। এক প্লেট বিশ টাকা। ফালতু একটা খাবার। গন্ধটাও ভালো নয়। রাস্তায় কাউকে এই খাবার খেতে দেখলে আমার ভালো লাগে না। দেখলেই বুঝা যায়- এই খাবারে আছে লক্ষ লক্ষ জীবানু। বাসায় ভালো করে ধুয়ে পরিস্কার করে রান্না করলে সেটা ভিন্ন কথা। আমার এক বন্ধুর বোন বট রান্না করে। খেতে দারুন মজা। পরোটা দিয়ে খেয়ে দেখেছি, খেতে ভালো।
বট আমার খুব পছন্দের কিছু না।
অথচ আমাকে দুপুরে খেতে দিয়েছে বট! সাথে আর কি একটা ভর্তা। বট এবং ভর্তার চেহারা দেখে আমার একেবারেই খেতে ইচ্ছা করছে না। অথচ ভদ্রতার খাতিরে সে কথা বলতে পারছি না। আহ যদি বলতে পারতাম, আমাকে একটা ডিম ভাজি করে দেন। আমার আর কিছু লাগিবে না। এরা সকালে আমাকে খেতে দিয়েছে- চটপটি। তাদের এলাকার মানুষ নাকি সকালে পরোটা বাজির চেয়ে চটপটি বেশি পছন্দ করে। এজন্য তাদের এলাকায় সকালবেলাতেই চটপটি পাওয়া যায়। এই পরিবারের দ্বিতীয় পছন্দ হলো- নুডুলস। যাইহোক, সকালে আমি চটপটি খেতে পারিনি। শুধু এক কাপ চা খেয়েছি। দুপুরে খেতে গিয়ে দেখি বট। পুরো বাড়িতে বটের গন্ধ। আমি যে চলে যাবো, সেটাও পারছি না। তারা যথেষ্ট আন্তরিকতা দেখাচ্ছে। এলাকা ভেদে মানুষের খাওয়া দাওয়া ভিন্ন হয়। সিলেট আর নোয়াখালি মানুষের রান্নার হাত ভালো না। আবার বিক্রমপুরের মানুষের রান্নার হাত ভালো।
প্রতিদিন এই বাড়িতে বট রান্না হয়, সেই বট ফুটপাতে বিক্রি হয়।
পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো। কিন্তু ঘর দুয়ারে রুচির ছাপ নেই। আমি বিদায় নিতে চাইলেই তারা আমার হাত ধরে রাখেন। রাতের খাবার খেয়ে যেতে হবে। হবেই। বিকেলে আমাকে চা নাস্তা দেওয়া হলো। চায়ের সাথে মুড়ি মাখা। মুড়ি মেখেছে বট দিয়ে। এরা দেখছি বট ছাড়া কিছু ভাবতেই পারে না। আমি যথেষ্ট বিরক্ত। রাত কখন হবে সেটাই ভাবছি। এক সময় রাত হলো। আমাকে খেতে দেওয়ান হলো বট। এবং বটের কাবাব। ঝোল করে বট রান্না করেছে। বট কি এমন আহামতি খাবার যে তিনবেলা খেতে হবে? এরা নাকি প্রতিদিন বট খায়। আর সকালের নাস্তা চটপটি! বটের ব্যবসা করে বলে, প্রতিদিন বট খেতে হবে! আমার ভাগ্য ভালো, বটের পাশাপাশি আমাকে মাছও দিয়েছে। কিন্তু পাঙ্গাস মাছ। চাষের পাঙ্গাস আমি খাই না। এই বাসায় কিছুদিন আগে একটা সাপ পাওয়া গেছে। সেটা দারুন এক গল্প। পরে আপনাদের বলব।
খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারে আমার অনেক বাছবিচার আছে।
সামনে পেলাম আর খেয়ে ফেললাম সেটা আমি পারি না। কিছুদিন আগে এক বিয়েবাড়িতে গিয়েছি। খেতে বসেছি। আমার সামনে বসা লোকটা আমার খাওয়ার রুচি নষ্ট করে দিলো। গাধা করলো কি এক বাটি গরুর মাংস পুরোটা নিজের প্লেটে ঢেলে নিলো। বাটিতে চামচ আছে। চামচ দিয়ে নে। গাধা পুরো বাটি কাঁত করে সব নিয়ে নিলো। এরকম আমি আগে কখনও দেখিনি। খাওয়ার মধ্যেও একটা সৌন্দর্য আছে। কিছু মানুষের খাওয়া দেখলে খাওয়ার রুচি নষ্ট হয়ে যায়। আরেকবার একজনকে দেখলাম- গ্রামের বিয়ে বাড়ি। খাওয়া শেষে দই দেওয়া হচ্ছে। লোকটা প্লেটে দই না নিয়ে পুরো দইয়ের হাড়ি নিয়েছে। দই হাড়িতে হাত ঢুকিয়ে দই খাচ্ছে। এটাও না হয় মেনে নিলাম। কিন্তু এর পর লোকটা যা করলো সেটা মেনে নিতে পারলাম না। লোকটা বলল- দই স্বাদ লাগছে না, বলেই মাংসের বাটি থেকে তেল ঢেলে নিলো দইয়ের মধ্যে!
২|
১৭ ই নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:০১
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: আজগুবী গল্প।
৩|
১৭ ই নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২৯
আফলাতুন হায়দার চৌধুরী বলেছেন: প্রিয় রাজীব ভাই। পড়লাম এবং হাসলাম। দয়া করে রাগ করবেন না, আপনার দুরবস্থা দেখে হাসিনি। সকালে চটপটি, দুপুরে বট, বিকেলে চায়ের সাথে বটমাখা মুড়ি। ইশ্ শি রে. . . তখন আপনার কি অবস্থা, ভাবতেই কেমন জানি লাগছে। এগুলো বস্তব অভিজ্ঞতা, নাকি গল্প লিখেছেন বুঝতে পারছিনা। তবে আমি বেশ উপভোগ করেছি।
বট আমার অনে-এ-এ-এ-এ-এ-ক প্রিয়।
আমার মা অনেক সময় নিয়ে কসরত করে বট রাঁধতেন। অসাধারণ হত। কিন্তু তিনি নিজে খেতেন না । তবে পরিষ্কার করতে গিয়ে প্রথমে কাজের ছেলে, পরে বুয়ার বেহাল অবস্থা হত। তারপর দিনের পর দিন বিশেষ পদ্ধতিতে সেদ্ধ করা, ক্রমে সম্পূর্ণ পরিষ্কার, জীবাণুমুক্ত এবং রান্নার উপযোগী হলে সেগুলোকে সাইজ করে রান্না, মানে ভূনা করা। কিংবা ভাজি করা।
পুরা গুষ্ঠি হাভাইত্তার মত খেতাম। কিন্তু আম্মা খেতেন না কখনোই।
এই বিদেশ বিভূঁইয়ে এসে আমার বৌও বট রান্না শিখে গেছে। এখানকার বট এক্কেবারে গ্যারান্টিড্ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং জীবণুমুক্ত। স্যান্ড-ব্লাস্ট করে ক্লীণ করে বিধায় ঝকঝকে পরিষ্কার, সামান্য গন্ধও থাকেনা। বাসায় এনে নাম কা ওয়াস্তে ধুয়ে সাইজ করে রান্না। উফফফ, অসাধারণ।
বিশ্বাস করেন, আপনারও ভালো লাগবে।
৪|
১৭ ই নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৪
কালমানব বলেছেন: আল-বটর ফ্যামিলির পাল্লায় পড়েছিলেন, ভাই । সহানুভূতি রইল ।
৫|
১৭ ই নভেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০১
এ পথের পথিক বলেছেন:
দিল্লীর দাসী খুনি হাসুর পক্ষ থেকে আজকের এই ঐতিহাসিক দিনে সবাইকে ভার্চুয়ালি মিষ্টি বিতরন করলাম ।
বুকে পাথার চাপা দিয়ে খেয়ে নেন ভাই
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫৮
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: বুকে পাথর চাপা দিয়ে আপনার বাজে অভিজ্ঞতা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
।