নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রিয় কন্যা আমার- ৮৫

১৯ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:৪৭



ফারাজা তাবাসসুম খান-
অনেকদিন তোমাকে নিয়ে কিছু লেখা হয় না। ব্যস্ত আছি। এতই ব্যস যে রাতে অল্প সময় ঘুমাই। এজন্য দিনের বেলা ঝিমানি আসে। ঝিমানি আসে দুঃখ নাই, দুঃখ হলো- সকালে যখন বাসা থেকে বের হই, তখন তুমি ঘুমে। আবার রাতে যখন বাসায় ফিরি তখনও তুমি ঘুমে। তোমার সাথে দেখা হচ্ছে না, কথা হচ্ছে না। এদিকে আমি বাইরে থাকলে তোমাকে ভিডিও কল দেই কিন্তু কোনো এক বিচিত্র কারণে তুমি মোবাইলে কথা বলতে চাও না। স্পষ্ট বলেই দাও- বাবা আমি বিজি আছি। অথচ তুমি টিভি দেখছো। তুমি বাচ্চা একটা মেয়ে। বয়স এখনো পাচ বছর হয়নি। অথচ বড় মানুষদের মতো বলছে, 'বাবা এখন আমি বিজি আছি'। বাপ ফোন দিয়েছে, মেয়ে কথা বলবে। এটাই বড় কথা। এটাই স্বাভাবিক। মেয়ে কেন বলবে, বাবা বিজি আছি। আমি তো আমার বাপকে কোনোদিন বলতে পারিনি, আব্বা বিজি আছি। পরে কথা বলব। এরকম বললে, আমার বাবা আমার কানটা টেনে ছিড়ে ফেলত। যুগ বদলেছে, সময় বদলেছে। এখন ছেলেমেয়ের কথায় বাবা মায়ের উঠবস করতে হয়।

প্রিয় কন্যা আমার-
তোমাদের স্কুলে ইসলামিক প্রতিযোগিতা হচ্ছে। তোমাকে ত্রিশটা প্রশ্ন দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ত্রিশটা প্রশ্ন থেকে প্রশ্ন করা হবে। সব গুলো প্রশ্ন ইংরেজিতে। ত্রিশটা প্রশ্নের উত্তর তোমার মুখস্ত। প্রশ্ন গুলো অতি সাধারন। শেষ নবীর নাম কি? আল্লাহ কত দিনে পৃথিবী তৈরি করেছেন? কোরআন কোন নবীর উপর নাজিল হয়? কালেমা শাহাদাত বলো? সব গুলো প্রশ্নই সহজ। তুমি স্কুলের প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহন করেছো। তোমাকে প্রশ্ন করা হয়েছে। কিন্তু তুমি প্রশ্নের উত্তর দেরী করে দিয়েছে। এজন্য প্রতিযোগিতা থেকে তুমি ছিটকে পড়ে গেলে। তুমি খুবই আপসেট হলে। মন খারাপ করলে। স্কুল থেকে ফেরার পথে তোমার মা তোমাকে প্রশ্ন গুলো জিজ্ঞেস করেছে, তুমি ঝটপট উত্তর দিয়েছো। যাইহোক, আমার কথা হচ্ছে- তুমি নবীদের নাম জানো কিন্তু মহান বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের নাম জানো না। দার্শনিক এরিস্টলকে চিনো না। গৌতম বুদ্ধকে চিনো না। নেলসন মেন্ডেলা কিংবা মাদার তেরেসাকে চিনো না। অবশ্য এখন তুমি ছোট। মাত্র নার্সারীতে পড়ো। বয়স বাড়ার সাথে সাথে সব জানবে, বুঝবে।

প্রিয় কন্যা আমার-
দেশের বর্তমান অবস্থা তোমাকে কিছু বলতে চাই। শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় দিয়ে দিয়েছে! একবার ভেবে দেখো। শেখ মুজিবের কন্যা। যে শেখ মুজিব বাংলাদেশের প্রান। গত ১৭ বছরে শেখ হাসিনার অবদান তো কম নয়। প্রচুর উন্নয়ন তার আমলে হয়েছে। ফারাজা ভেবে দেখো, আমাদের মতো দরিদ্র দেশে উনি মেট্রোরেল করেছেন, পদ্মাসেতু করেছেন। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে করেছেন। এখন জামাত শিবির তাকে ধরে বেধে জোরজবরদস্তি ফাঁসির রায় দিয়েছে। যদিও এই রায় কোনো দিন কার্যকর হবে না। এদিকে ইউনুস সরকার কারাগার থেকে দাগি আসামিদের ছেড়ে দিয়েছে। সমস্ত জঙ্গীদের ছেড়ে দিয়েছে। সমস্ত রাজাকারদের এখন রমরমা অবস্থা। নাক টিপ দিলে দুধ পড়ে এমন ছেলেপেলেরা এনসিপি নামে দল খুলেছে। এরা এখন চ্যাটাং চ্যাটাং কথা বলছে। শেখ মুজিবের অঞ্চল গোপালগঞ্জ গিয়ে তারা বলছে মুজিব মূর্দাবাদ। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি ভেঙ্গে দিয়েছে। চিন্তা করো অবস্থা। কত বড় বেয়াদব! নেতাদের বাড়িতে আগুন দিয়েছে। অত্যন্ত দুঃখজনক। এই বিষয় গুলো নিয়ে আমি মর্মাহত এবং চিন্তিত।

ফারাজা তাবাসসুম-
বাসায় ফেরার সময় খালি হাতে বাসায় ফিরতে পারি না। কারন বাসায় ফিরলেই তুমি জিজ্ঞেস করো- বাবা আমার জন্য কি এনেছো? যদি বলি কিছু আনিনি, তুমি ভীষন মন খারাপ করো। সেদিন সন্ধ্যায় তুমি ফোন করে বললে, বাসায় ফেরার পথে যেনো আইসক্রিম নিয়ে ফিরি। আমি আইসক্রিম কিনিনি। বাসার কাছে এসে মনে পড়লো- তুমি আইসক্রিমের কথা বলেছিলে। সময় তখন রাত বারোটা। বাসার কাছে সব গুলো বন্ধ। শেষমেষ অনেক দূরে একটা দোকান খোলা পেলাম। সেখান থেকে আইসক্রিম নিয়ে বাসায় ফিরি। ফাজ্জা তোমাকে বলি- যখন তুমি ছিলে না, তখনও আমি খালি হাতে বাসায় ফিরতাম না। তোমার মায়ের জন্য কিছু না কিছু নিয়ে বাসায় ফিরতাম। অতি সামান্য জিনিসেও তোমার মা ভীষন খুশি হতো। তোমারও একই অবস্থা। তোমার মা এবং তুমি খুশি হলেই আমি খুশি। আজ বাসায় ফেরার পথে তোমার জন্য কি নিয়ে যাবো, সেই চিন্তা করছি। আইসক্রিম নেওয়া যাবে না। তোমার ঠান্ডা লেগেছে। চকলেট নিতে তোমার মা নিষেধ করেছে। ভাবছি এক বাটি দই নিয়ে যাবো।

প্রিয় কন্যা আমার-
আগামী মাসের অর্থ্যা ডিসেম্বরে তোমার জন্মদিন। ৩১ ডিসেম্বর। ধুমধাম করে তোমার জন্মদিন হয়তো পালন হবে না। কারন তোমার মা হয়তো ধর্মীয় কারণে তোমার জন্মদিন পালন করবে না। কিন্তু তোমাকে নিয়ে বেড়াতে যাবে। সাথে আমিও যেতে পারি। তবে ফারাজা তোমার চিন্তার কোনো কারন নেই। আমি অবশ্যই তোমার জন্য বিশাল এক কেক আনবো। কেকের গায়ে লেখা থাকবে- 'শুভ জন্মদিন ফারাজা'। আমার মধ্যে কোনো ধর্মীয় গোড়ামি নেই। কুসংস্কার নেই। ফারাজা তোমার মধ্যেও কোনো ধর্মীয় গোড়ামি বা কুসংস্কার রেখো না। প্রচুর পড়াশোনা করলেই তুমি সব বুঝতে পারবে। পড়াশোনা তোমার সমস্ত অন্ধকার, সমস্ত গোড়ামি, সমস্ত কুসংস্কার দূর করে দিবে। তুমি হবে একজন আধুনিক মানুষ। মানবিক এবং হৃদয়বান। উদারচিত্ত, মহানুভব, সহানুভূতিশীল এবং স্নেহপূর্ণ। তুমি এগিয়ে যাবে আলোর দিকে, মঙ্গলময় মহা সত্যের দিকে। তোমার জীবন আলোকিত তোমাকেই করতে হবে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২১

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আমি একটা ইশকুল/কোচিং এ বাইশ সালে পড়ায়েছিলাম ৩/৪ মাসের মতো । সেখানে রচনা প্রতিযোগিতায় দাইয়ুস নিয়ে ৫০০০ ওয়ারডের রচনা লিখতে বলা হয়েছিলো । যার লেখা সবচেয়ে ভালো হবে সে পাবে ৫০০০ টাকা । বেশ অবাক হয়েছিলাম। হেড-টিচারের মাথায় কি পরিমাণ ঘিলু থাকলে এমন আইডিয়া বের হয় । তবে উনার আখলাক হইতেসে গিয়া তোয়াহা হুজুরের মতো । তিনি মাসনা এবং সুলাই'সা বিশারদ ছিলেন । ;)

উইনটার সিজন ছিলো জানুয়ারিতে । আমি রেড কালারের jacket পড়তাম । হেড- টিচারের ইহা ভালো লাগতো না । তিনি একদিন সরাসরি কইয়া ফেলাইসেন: " ও মিয়া লাল কাপড় বেডা মাইনষের লাগিয়া মাখরুহ । উহা কেবল বেডি মানুষের পরনে শোভা পায় । " =p~

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.