নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লেখক নই আমি। কোন চলচ্চিত্র দেখা মাত্র মনের কথা গুলি লিখে ফেলি আর কি।

রাজিন

আমি অসাধারণ মায়ায় আবৃত সাধারণ একজন মানুষ

রাজিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাজিন রিভিউ: Ae Dil Hai Mushkil

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৮:১১


মানুষ সামাজিক প্রাণী। তারা একে অন্যের সাথে তৈরী করে সম্পর্ক। কেউ হয় বন্ধু আবার কেউ হয় প্রেমিক বা প্রেমিকা। সমস্যা হয় যখন বন্ধুত্বের সাথে প্রেম নিয়ে ভুল বুঝাবুঝি হয় এবং দুজনের মধ্যে যে কোন একজনকে “শুধু বন্ধুত্ব” এর খাঁচায় আটকে রাখা হয়। এই ধরণের জটিল সম্পর্কের নাম “ফ্রেন্ডজোন” (বাংলায়: “জসিমের মত আমাকে ভাই বলবেন না”) ।
এই ধরণের সম্পর্ক নিয়েই ,
করণ জোহারের নতুন মুভি “এ দিল হ্যা মুশকিল”।
আর যে ব্যক্তি এই বস্তাপঁচা মুভির রিভিউ দিচ্ছেন
তার মাথায় মারুন ঢিল!

কাহিনী জানা যাক। রণবীর কাপুর এবং আনুশকা শর্মা হচ্ছেন লন্ডন প্রবাসী দুই আকাইম্মা! রণবীর ভাঙা গলার সুরহীন গায়ক এবং আনুশকা সবজান্তা মুশকিল আহসান বেবী। দুজনে একসাথে মদ খায় যেটা মুভির যুক্তি অনুযায়ী বন্ধুত্ব এবং একসাথে হিন্দী মুভির গানে নাচে যেটা প্রেম। রণবীর আনুশকার প্রেমে পড়ে যায়। এদিকে আনুশকা তাকে ফ্রেন্ডজোনে পাঠায় দিয়ে ফাওয়াদ খানের সাথে বিয়ে করতে যায়। আনুশকা এতটাই উদ্ধত টাইপ মেয়ে যে তার কোন বন্ধুই নাই। দাওয়াত পায় দুদিনের পরিচয়ের একমাত্র বন্ধু রণবীর। তারপর ভগ্নহৃদয় রণবীরের। ছ্যাঁকা খেয়ে গানের গলা হঠাৎ ঠিক হয়ে গেছে। হঠ্যাৎ দেখা হয় ইভা রহমান ( ঐশ্বরিয়া রাই) এর সাথে। ব্যস। এটিএন বাংলার ফরেন লোকেশানে গানের সুযোগ পেয়ে যায় রণবীর। সংগীতের ওস্তাদ মাহফুজুর রহমানের সহচার্যে হয় ওঠে ময়না দ্বীপের সর্বসেরা গায়ক।

মুভিটির সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো নায়ক-নায়িকার চরিত্র। আনুশকার চরিত্রটি চরম শয়তান এক মাইয়া। অথচ মুভির চিত্রনাট্যানুযায়ী আপনাকে ধরে নিতে হবে যে তাকে দেখলেই যে কেউ প্রেমে পড়বে। নায়িকা প্রতি দৃশ্যে হাসিমুখে নায়ককে অপমান করলেই কী নায়িকা স্মার্ট হয়ে গেল? মেয়েদের স্মার্টনেসের একধরণের অপমান করা হয়েছে।
নায়ক চরিত্রটি এতটাই গোবেচারা যে প্রতি দৃশ্যে কাঁদতেই থাকে। ফারাক্কা বাঁধ আটকায় দিলে তারে ঐখানে রেখে দিয়ে আসলেই হলো। কাঁদতে কাঁদতে বন্যা বানায় দিবে। অথচ নায়কের প্রতি কোন মায়াই আসে না। নায়ক-নায়িকা দুটি চরিত্রই মেরুদন্ডহীন টাইপ।
এছাড়া মুভিতে বন্ধুত্ব এবং প্রেমের ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। বন্ধুত্ব এবং প্রেমের সূক্ষ পার্থক্য জানতে হলে করণ জোহারের “কুচ কুচ হোতা হ্যায়” দেখলেই ভালো ধারণা পাওয়া যায়।

মুভিটির শুরু বেশ হাস্যকর হলেও কিছুক্ষণ পর খেয়াল করলাম যে ভাড়ামি হচ্ছে। পুরোনো দিনের হিন্দী মুভির সংলাপ ব্যবহার করেই প্রথম অর্ধ চালিয়ে দেয়। পরের অর্ধেকে আমি মুভির পর্দায় তাকিয়ে খালি করণ জোহারকে গালি দিসি। কাহিনী জানার কোন ইচ্ছাই হয় নাই। মুভিতে অনেক দুঃখের পরিবেশ তৈরী করলেও মোটেও দুঃখ আসে নাই। অরিজিনাল যেসব সংলাপ ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলোর কোনই মাথামুন্ডু নাই।

মুভিটি বাজার জাত করা হয়েছে যে মুভির নায়ক-নায়িকা হলো রণবীর এবং ঐশ্বরিয়া রাই। যেটা একটি ডাহা মিথ্যা কথা। মুভির অভিনেতাদের নামেও প্রথমে ঐশ্বরিয়ার নাম। অথচ ঐশ্বরিয়া রাই মুভিতে বড়জোড় ২০-৩০ মিনিট আছেন। এছাড়া অহেতুক রণবীর-ঐশ্বরিয়ার ঘষাঘষির দৃশ্য দেওয়া হয়েছে যেটা খুবই মেজাজ গরম করা। ঘষাঘষিই যদি দেখাবি তাহলে সানি লিওনরে আন।

অভিনয় নৈপুণ্য নিয়ে কোন অভিযোগ নেই। রণবীর এবং আনুশকা দারুন অভিনয় করেছেন। তাদের জন্য মায়া লাগতেসিল। বেচারা দুইটা অহেতুক এই ফালতু মুভির জন্য কষ্ট করলো। এছাড়া মুভির চিত্রগ্রহণ ভালোই। ছোট ছোট দৃশ্য ভালভাবে বানালেও পুরা মুভি একেবারেই খাপছাড়া। মনে হয় যেন জোড় করে কাঁদতে হবে। করণ জোহারের কাছে এটা আশা করি নাই।

মুভিটির একমাত্র ভালো দিক হলো সংগীত। অসাধারণ মানের সুর দিয়েছেন প্রীতম। প্রত্যেকটি গান দুর্দান্ত লেভেলের ভালো। তারপরেও মুভিতে অহেতুক পুরানো দিনের গান ঢুকানো হয়েছে। মুভিতে চিত্রনাট্য এতটাই দুর্বল যে লেখকরা পুরাই খেই হারায় ফেলসে। এক দৃশ্যে নায়ক হঠাৎ বলে ওঠে :”আমি একটা গান গাই?”।

হিন্দী মুভি প্রায়ই অন্য মুভি থেকে কপি করে। রণবীর কাপুর মনে হয় এই প্রথম নায়ক যিনি নিজের মুভির কপি করা মুভিতেও নায়ক হলেন। মুভিটির কাহিনী হুবহু “রকস্টার” এর মত। মুভিটি দেখে বোঝা যায় যে করণ জোহারের নামের কারণে কেউ চিত্রনাট্য পড়েও দেখেনি।
মুভিতে ফাওয়াদ খানের দুই মিনিটের রোলের কারণে বেশ বিতর্ক চলছে যেটা দুঃখজনক। কিন্তু আরও বেশি দুঃখজনক হলো যে মুভিটি কেমন হয়েছে, এটা নিয়ে করণ জোহারের ভয়ে বলিউডের মানুষেরা হয় চুপ আছেন কিংবা মিথ্যা কথা বলছেন। এক রিভিউয়ার তো নিজের চাকরী যাবার ভয়ে “Youtube” এ না দিয়ে “Periscope” এ লাইভ চ্যাটের নামে রিভিউ দিয়েছেন।

সব মিলিয়ে খুবই হতাশাজনক। এমনকি করণ জোহারের “স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার” এর থেকে ভালো মুভি।

রেটিং – ০.৫ / ৫.০

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৮:৪৩

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: .৫ রেটিং!!
রিভিউ মজাদার হইছে

০২ রা নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১:৪১

রাজিন বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১১:৪৬

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: এমনিতেই রোমান্টিক ফিল্ম দেখিনা। এটা দেখবোনা আগেরই সিদ্ধান্ত। আপনার রিভিউ দারুণ হয়েছে। পাবলিক এখন আর সেই মান্ধাতা আমলের প্রেম কাহিনী পছন্দ করে না।

৩| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৬ রাত ২:৫২

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন:
সেই রিভিউ।
আমার ট্রেইলার দেইখাই বিরক্তি লাগছে।

সবচেয়ে কষ্ট পাইছি এই মুভির ডিরেক্টর করন জোহার জেনে। এইরকম ফালতু মুভি করার টিপস কি সে ফারাহ খানের থেকে নিয়ে আসছে?

দেখার ইচ্ছাও নাই এই মুভি।

০২ রা নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১:৪৪

রাজিন বলেছেন: ট্রেলার দেখে আমি খুবই আশাবাদি ছিলাম। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৪| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৭

সুমন কর বলেছেন: আপনার রেটিং – ০.৫ / ৫.০ B-)

রিভিউ পড়ে মজা পেলাম।

০২ রা নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১:৪৫

রাজিন বলেছেন: ধন্যবাদ

৫| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৪৬

মানবী বলেছেন: এমন এক নিম্নমানের সিনেমা দেখার সময় ও পরে নিজের উপর রাগ হয়েছে জীবনের মূল্যবান সময় এমন আবর্জনার পিছনে নষ্ট করে! ভালো যে পয়সা খরচ করে হলে গিয়ে নয় বরং বাসায় অন্যান্য কাজে ব্যস্ত থেকে দেখেছি!!

ভারতের হিন্দু জঙ্গীবাদি দল এমএনএস যদি নির্বোধের মতো ফাওয়াদ খান নিয়ে বাড়াবাড়ি প্রতিবাদ না করতো তাহলে এই মহাবিরক্তিকর সিনেমাটিও বম্বে ভেলভেটের মতো সুপার ফ্লপ হতো!

পুরো সিনেমায় একমাত্র স্বস্তি ছিলো টোটাল ২ মিনিটের জন্য ফাওয়াদ খান। সন্ত্রাসীদের চাপের মুখে যাঁর উপস্থিতি কমিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছে পরিচালক।
আনুশকা শর্মা, রনবীর ভালো অভিনয় করে তবে এই সিনেমার গল্প নেই, অভিনয়ের সুযোগ নেই... তাই এই খিচুরি গল্পে তারাও সমান বিরক্তিকর!
বরাবরের মতো ঐশ্বরিয়া অভিনয়গুন একস্প্রেশন বর্জিত অতি সুন্দর এক প্লাস্টিকের পুতুলের বিরক্তিকর ভূমিকা পালন করেছে!

ব্লগার রাজিন .৫/৫ স্টার দিয়ে ঔদার্য্য দেখিয়েছেন, আমি হলে .০১/৫ দিবো!

০২ রা নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১:৪৬

রাজিন বলেছেন: সহমত। অনেক ধন্যবাদ

৬| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৬ রাত ২:০৬

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: এইটা রিভিউ ছিল! দারুণ রিভিউ ছিল! :)
রেটিং ভালো হইছে।

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৭:৪৩

রাজিন বলেছেন: ধন্যবাদ

৭| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৪০

মেহেরুন বলেছেন: দেখার পরে বমি আসছে। বিরক্তিকর একটা মুভি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.