নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আপনের রাফখাতা

পিছন ফিরে তাকানোর বদলে সামনে তাকানোই বেশি সহজ

ট্রিপল এ

নিজেকে জানার একটা মাধ্যম হচ্ছে লিখে যাওয়া।লেখালেখি করার অভ্যাস নেই বললেই চলে,মাঝে মাঝে "আউল ফাউল"লেখার চেষ্টা করি একটু.....

ট্রিপল এ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কবি,সাহস এবং আমি

০২ রা এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:২২

গল্পটা আমার হতে পারতো......











আমি কখনো সিরিয়াস কোন কিছু নিয়ে লেখি বলে আমার মনে হতোনা।আর আমি লেখালেখি ব্যাপারটা একটু বিরক্তির চোখেই দেখেছি সবসময়।যখন অন্যরা পিসিতে গেম খেলে,তখন খট খট করে টাইপ করাটা আমার কাছে অদ্ভুত লাগতো,এখনো লাগে।কখনো ভাবতে পারিনি যে ফেসবুকে আমার নোট সেকশনে কোন নোট যোগ হবে,কারন দুই-তিন লাইনের বেশি কিছু লিখতে গেলেই প্রচণ্ড বিরক্তি লাগে আমার।কেন জানি বলতে অনেক সহজ লাগে লেখার চেয়ে,মনে হয় গুছিয়ে লেখার চেয়ে গুছিয়ে বলা অনেক সহজ।আর আমার জীবনে এই কথাটার সত্যতা সবচেয়ে বেশি পেয়েছে আমার সাবজেক্ট টিচাররা।যখন তারা নতুন জয়েন করে আমাকে পড়া ধরতো,আমার বলার স্টাইল,স্পিড এবং ফ্লুয়েন্সি দেখে তারা ধরেই নিতো এই ছেলে নিশ্চয়ই ফার্স্ট-সেকেন্ড হবে।তাদের ভুল ধারনা ভাঙ্গার জন্য আমার পরীক্ষার খাতায় লেখা বাজে লেখার উত্তরই যথেষ্ট ছিল।সমস্যাটা এখনো আছে,কোন কিছু নিয়ে বলতে বললে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বলতে পারবো,কিন্তু লিখতে দিলেই আমার হাতে শ্যাওলা জমে যাবে,হাত নড়বে না...........................











লেখালেখির জন্য যে ফেসবুক একটা চমৎকার জায়গা,সেটা ২০১১ এর প্রায় শুরুর দিকেই বুঝে গিয়েছিলাম।এসএসসি পরীক্ষার পর ফুলটাইম নেট পেয়েছিলাম পিসিতে,তখন সারাদিন ফেসবুকেই থাকতাম।সাদ আহাম্মেদ,রিয়েল ডেমোন,জয় কবির,তৃপ্ত সুপ্ত, একুয়া রেজিয়া,রেজা শাওন,নিথর শ্রাবণ শিহাব-এদের লেখা অধিকাংশ গল্প পড়ে টাইম কেটে যেতো তখন।মন রঙিন ছিল তখন,এই লেখকদের প্রত্যেকটা লেখা অসাধারন লাগতো।এদের লেখা পড়ে প্রায়ই ভাবতাম যে এরা কিভাবে লেখে এইভাবে,তোমরা কিভাবে পারো,ম্যান!!!এদের লেখাই আমার মনে এই কথাটা ভালো করে গেথে দিয়েছিল যে,আপন,আর যাই করো না কেন,লেখালেখি করা তোমাকে শিখতেই হবে,যেভাবে পারো না কেন।কিন্তু আমি তখন আসলে ধরতে পারতাম না যে তাদের লেখার মাঝের মুল থিমটা কি,তারা লেখার সময় এইভাবে কথা সাজানোর শক্তি পায় কিভাবে,তারা আসলে লেখে কিভাবে..................











আমি আসলে তখনও বুঝতে পারিনি যে মন রঙিন থাকলেই লেখা যায় না,এইরকম লেখাগুলো কম্পিউটারের স্ক্রিনে আনতে চাইলে একটা থেঁতলে যাওয়া মৃতপ্রায় মন লাগে যেটা ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছে।যখন বুঝেছিলাম তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে,সত্ত্বাকে নির্দয়ভাবে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে,দগদগে ঘা যুক্ত সেই সত্ত্বা শ্বাস নিতে গিয়ে দেখল বাতাসে অক্সিজেন নেই,তাই কার্বন-ডাই-অক্সাইডে ভর্তি এই নগরে সত্ত্বা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে সোজা হওয়ার চেষ্টা করার জন্য একমাত্র অবলম্বন পেল এই গল্পগুলোকে।আমার সত্ত্বাকে শুধু পুড়িয়েই থেমে যায়নি,বরং পোড়া ছাইগুলো ছড়িয়ে দিয়েছে চারদিকে যেন ছাই থেকে নতুন ফিনিক্স না জন্মাতে পারে।আজ পর্যন্ত আমি ছাইয়ের টুকরো খুঁজে যাচ্ছি,খুঁজে যেতে থাকবো অনন্তকাল পর্যন্ত।ঠিক সেই সময়টাতেই আমি বুঝে গেলাম আসলে একটা নিখুঁত লেখা কিভাবে তারা লেখে।তাই এর পর থেকে আমি তাদেরকে বুঝতে শুরু করলাম,তাদের লেখাকে নিজের ভিতরে ধারন করার জন্য তাদের প্রত্যেকটা লেখাকে শব্দে শব্দে,আবেগের প্রত্যেকটা মুহূর্তে কেটেছি,নিজেকে সেই লেখাগুলোর গভীর থেকে গভীরে নিয়ে গেছি।কেন জানি আমার কাছে হুমায়ুন আহমেদ,জাফর ইকবাল,এমনকি কাফকা বা মার্কেজের থেকে এই লেখকদের লেখা বেশি ভালো লেগেছিল তখন,এমনটা কখনোই ছিলোনা যে আমি খুব কম পড়েছি,আসলে কিছু লেখা থাকে শুধুমাত্র নিজের জন্য,যেটা পড়লে মনে হয় সেই গল্পের কোন একটা চরিত্র আমি।এইরকম লেখাগুলোর খোঁজ করে গেছি সবসময়,মাঝে মাঝে পেয়েছি,মাঝে মাঝে পাইনি,আর কিছু সময় এমন কিছু লেখা পেয়েছি যেই লেখাগুলোর প্রেমে পড়তে দেরি করিনাই একদমই..................











দিন যায়,মাস যায়,বছরও শেষ হয়ে যায়,মৃত মানুষের চামড়াও উজ্জ্বল হতে থাকে মেকআপ ছাড়াই।মানুষ আসলে বড় বাঁচা বেঁচে গেছে।যদি আত্মা পোড়া গন্ধ নাকে আসতো,তাহলে এক মুহূর্তেই পুরো পৃথিবী পচা লাশের গন্ধে ভরে যেতো।যাই হোক,মৃত সত্ত্বা নিয়েও বেঁচে থাকা যায়,ভালো করেই চলাফেরা করা যায়।কিন্তু সমস্যা হয় তখনই যখন কেউ নতুন করে জিগ্যেস করে,"তুমি তো ভালোবাসতে পারো না"।তাদের অভিযোগের কোন জবাব দিতে পারিনা আমি।বলতে পারিনা যে দেহ ভালোবাসতে পারেনা,পারে শুধু লালসা মিটাতে।যেই সত্ত্বার দায়িত্ব ছিল ভালোবাসা,সে মরে গেছে অনেক আগেই।বলতে পারিনা,অশ্লীল শোনাবে দেখে চুপ থাকি।মাঝখানে শুধুমাত্র পড়ে গেছি,কারন লেখা আমার সত্ত্বাকে বাঁচাতে পারে,হয়তো।পড়ার মধ্যে কোন ভালোলাগা ছিল না,ছিল না লেখকের জন্য কোন স্তুতি।এই সময়টাতে আমি শুধু অনুভব করে গেছি কিভাবে আবেগের জন্ম দিতে হয়,কিভাবে নিজের লেখার প্রত্যেকটা চরিত্র,প্রত্যেকটা সত্ত্বাকে ভালোবাসতে হয়।এই লেখকদের অবাক হওয়ার কথা ছিল যদি তারা জানতো যে কোন এক পাঠক তাদের লেখাগুলোকে প্রায় তাদের সমান ভালোবাসা দিয়েছে..................















সময় কিন্তু থামেনি।রুক্ষ হয়েছি,খনখনে হাসি দেয়া শিখেছি,যন্ত্রের মতো আচরন করা শিখেছি,বাস্তব বুঝতে শিখেছি এবং সবচেয়ে বড় সাফল্য-হতাশ হতে শিখেছি।এখন আর এতোটা অস্থিরতা নিয়ে পড়ি না কোন কিছু,এখন হিসাব করে পড়া শিখে গেছি।যদিও এখন আমি আমার উপলব্ধি করা,অনুভব করা শিক্ষাগুলো আমার লেখার মাঝে কাজে লাগাই না।ইদানিং আমি লেখালেখি নামের ভাঁওতাবাজি শুরু করেছি,অস্ত্রশস্ত্র আর যুদ্ধ কৌশল নিয়ে কিছু মৌলিক ধারনা টাইপ লেখা লিখে নিজেকে কি যে হনু রে টাইপের ভাবা শুরু করেছি।অবশ্য আমার সেটা করার যোগ্যতাও ছিল না,যদিনা ফারহিন সোহান কবির লিটা নামের একজন অসাধারন লেখক আমাকে লিখতে না শিখাতো।লেখক-শুনে বেখাপ্পা লাগার কোন কারন নেই,আমার কাছে "লেখিকা" নামের শব্দটার কোন মানে নেই,এটা একটা আস্তাকুর থেকে তুলে আনা শব্দ।আমার কাছে সবাই লেখক,সবাই কবি এবং আমার বিশ্বাস,কথাটা আমি কবির কাছেই সত্যিকার অর্থে শিখেছি।আজ পর্যন্ত আমার দেখা সকল লেখকের মধ্যে লিটা আপু সেরাদের মাঝে একজন,কারন আমি জানি আমি কি পড়ছি এবং আমি জানি লিটা আপু কি লিখছে।আমার অধিকাংশ লেখার পিছনে লিটা আপুর লেখা ছিল রোল মডেল,আমি এতোগুলো কবির মধ্যে শুধুমাত্র লিটা আপুকেই অনুসরণ করেছি,সুতরাং ঠিক যেই মুহূর্তে লিটা আপু ইনবক্সে নক করে বললো,"সাইকো ধরণের কিছু লেখতে পারবি তুই?আমি যদি থিম দেই?"ঠিক সেই মুহূর্তে আমি বুঝে গিয়েছিলাম,আমার গুরুদক্ষিণা দেয়ার সুযোগ এসেছে,আমাকে কিছু একটা করতে হবে,যেটা আমার গুরুর চোখে মানানসই হবে.....................















সাইকো থ্রিলার আমার পড়তেও ভালো লাগেনা,সাইকো মুভি দেখতেও আমার ভালো লাগেনাই কখনো।আমি বলছিনা আমার এই ধরনের কিছু ভয় লাগে,রক্তের কটু গন্ধ নাকের সার্বক্ষণিক সঙ্গী হয়ে গেলে ভার্চুয়াল রক্তপাতের উপর আকর্ষণ হারিয়ে ফেলাই স্বাভাবিক।এই ধরনের কোন কিছু আমি লেখার কথা কখনো কল্পনাও করিনি।কিন্তু কবি আমাকে বলেছে লিখতে,সুতরাং আমার সেটা লিখতেই হবে,অন্তত আমার মৃতপ্রায় সত্ত্বা সেটা লিখে দিবে কবির জন্য।লেখার বিষয় খারাপ ছিলোনা,প্লটও অনেক সহজ ছিল,অন্তত প্রথমবারে আমার তাই মনে হয়েছিল।আমার কাজ খুব সহজ,একটা চরিত্রের হাতের কব্জি কেটে ফেলতে হবে আমাকে,এটা আবার এমন কি!আমার জানায় ভুল ছিল,ভুল ছিল লেখাটার গুরুত্ব বোঝায়।ঠিক যেই মুহূর্তে আমি জানতে পারলাম আমাকে সত্যিকার অর্থে কি লিখতে হবে,ঠিক সেই মুহূর্তে কেউ একজন আমার সত্ত্বার গায়ে আবার আগুন ধরিয়ে দিলো।যেই আগুনে পোড়া মাংসের উপর চামড়া বাঁধা শুরু হয়েছে দুই বছরে,ঠিক সেই কাঁচা চামড়ার উপর আগুন ধরিয়ে দিয়ে চলে গেলো কেউ।তবুও সত্ত্বা কেন জানি আগের চেয়ে বেশি জান্তব চিৎকার করার শক্তি পেয়ে গেলো,কারন এতদিন পর সত্ত্বা বুঝতে পেরেছে তার কি করতে হবে,তাকে একটা কব্জি কেটে আলাদা করে দিতে হবে শরীর থেকে,কারন সেই হাতটা তো ছুঁয়েছে কোন একজনকে,সেই হাতটা ধৃষ্টতা দেখিয়েছে কোন একজনকে এক মুহূর্তের জন্য ছুঁয়ে.................................















একটা হাত কেটে ফেলা আমার জন্য কোন বড় সমস্যা না,আমি খাবার খেতে খেতে হোস্টেল,'স এর মতো মুভি দেখি নির্বিকার ভাবে।কিন্তু যখনই নোটপ্যাডটা অন করে একটা শব্দ লিখতে যাই,আমি আসলে লিখতে পারিনা কেন জানি।আমার মতো একটা কসাইয়ের চোখ কম্পিউটার স্ক্রিনের দিকে তাকালেই কেন জানি ঘোলা হয়ে যায়,কোন কারন ছাড়াই চশমা মোছার নাটক করি নিজের সাথে।স্পিকারে আর্টসেলের দুঃখবিলাস,ওয়ারফেজের তোমাকে,রুপকথা,শিরোনামহীনের বন্ধ জানালার মতো গান বাজতে থাকে,রিপিট হতে থাকে বার বার।জানালার পর্দা সরানো হয় না,রুমে লাইট জ্বালানো হয় না,আলোর উৎস হয়ে যায় স্ক্রিনের সামান্য ঝলকানি।দুই বছর আগে ফিরতে আমার টাইম মেশিন লাগেনি,ফিরে গিয়েছি কোন কষ্ট ছাড়াই।এতোদিন শুধুমাত্র কল্পনাতেই গিয়েছিলাম লেখকদের লেখা চরিত্রদের ভিতরে,এই প্রথম কোন চরিত্রকে বাস্তবে অনুভব করতে যাওয়ার তীব্র নেশা আমাকে মানসিক ভারসাম্যহীন বানাতে পেরেছে খুব সহজভাবেই।মনিটরের সামনের ফাকা জায়গাতে ছিল ব্লেড,স্কালপেল,ফাইল ওপেনার আর ছোট সাইজের একটা চাপাতি,কারন আমাকে এটা হাত কাটতে হবে,সেটা নিজের হোক বা গল্পের কোন চরিত্রের।আমি দিন রাত দেখতে চাইনি,আমার টেবিল ছেড়ে আমি বিছানাতে যেতে চাইনি কারন আমার একটা হাত কাটতে হবে,প্রত্যেকটা মুহূর্ত আমি আগুনে পুড়তে থাকা একটা সত্ত্বাকে ভালো করে জ্বালিয়ে দেয়ার জন্য অনুভব করে গেছি শুধু একটামাত্র কথা-চলো,হাতটা কেটে ফেলি............











লেখাটা আমার জন্য সহজ ছিলো না।ব্লেডটা নিয়ে হাতের উপর বুলাতাম,পোঁচ দেয়ার ভঙ্গি করতাম,দিতে চাইতাম এবং এই অদম্য ইচ্ছাকে দমিয়ে একটা করে লাইন লিখতাম,খুব ইছা করতো সেই চরিত্রের কষ্টটা বোঝার জন্য,কারন ঠিক একই অপরাধ তো আমিও করেছিলাম।খুব ইচ্ছা করতো হাতে একটা পোঁচ দিয়ে রক্ত বের হওয়া দেখার জন্য,কিন্তু আমি দিতে পারিনি শুধু কবির কথা ভেবে।এই চরিত্র কবির,গল্পটা কবির নিজের।আমি নিজের গায়ের রক্ত ঝরিয়ে আমার গুরুর সৃষ্টিকে অপমান করতে পারিনা।আমি লিখতে চেয়েছি,কিন্তু মন সায় দেয়নি,আমাকে সত্যিকার করে লিখতে দেয় নি,একটা দায়সারা লেখা দিয়েছি আমি কবিকে,আমার গুরুকে।আমি আমার গুরুর প্রত্যাশা মতো লিখতে পারিনি,তবুও আমি সন্তুষ্ট কারন আমি পেরেছি চরিত্রটার হাতটা কেটে ফেলতে।হয়ত ভয় পেয়ে আমি নিজের হাতে ব্লেড চালাতে পারিনি,হাহ,অথচ গল্পটার নাম "সাহস"।আমি সাহস দেখিয়ে হাতটা বাস্তবে কাটতে পারিনি...............











অথচ গল্পটা আমার হতে পারতো....................................

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.