![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজেকে জানার একটা মাধ্যম হচ্ছে লিখে যাওয়া।লেখালেখি করার অভ্যাস নেই বললেই চলে,মাঝে মাঝে "আউল ফাউল"লেখার চেষ্টা করি একটু.....
"সাহস",ইদানিং এই শব্দটা আমার অন্য রকম ভালো লাগা শুরু হয়েছে..........................
যারা এই নামটার মাজেজা জানেন না,তাদের জন্য ব্যাপারটা একটু খোলাসা করেই বলছি।সাহস-একটা অসাধারন সাইকো থ্রিলার,আজ পর্যন্ত যতগুলো বাংলাদেশী সাইকো থ্রিলার লেখা হয়েছে,তার মধ্যে এটা সবচেয়ে বেশি অসাধারন।এই গল্পটাকে অসাধারন বলার অনেক কারন আছে,তবে আমি শুধু একটা কারনে এই গল্পটাকে নিজের সত্ত্বার সাথে জড়িয়ে রেখেছি।আমার বিশ্বাস,একজন সাইকো ভালোবাসতে পারে,এবং সেই ভালোবাসার তীব্রতা কতোটুকু হতে পারে,সেটা "সাহস" গল্পের মতো আর কোন গল্পে আজ পর্যন্ত দেখানো হয়নি..............................
এই গল্পটা এখনো "নির্মাণাধীন" অবস্থায় আছে,এবং আমি ১০০% নিশ্চিত,এই গল্পটা যখন পুরোটা প্রকাশিত হবে,তখন বাংলাদেশের সমস্ত সাইকো থ্রিলার লেখকরা বজ্রাহত হয়ে যাবেন।লেখাটা আসলেই সম্পূর্ণ নতুন একটা ধাঁচের এবং এইটা হওয়াই স্বাভাবিক কারন এই গল্পের লেখক,ফারহিন সোহান কবির লিটা,দ্যা টেস্টিং সল্ট........................
যারা গল্প এবং কবিতা পড়েন,তাদেরকে এই মানুষটার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার ধৃষ্টতা করার ক্ষমতা আমার নেই।মূলত এখনকার তরুণ কবি প্লাস লেখকদের মাঝে ইনি হচ্ছেন ওল্ড টেস্টামেন্ট,এটা উনার যেকোনো একটা লেখা পড়লেই বোঝা যাবে।মজার ব্যাপার হচ্ছে,কবির সাথে যখন আমি প্রথম পরিচিত হই,আমি জানতাম না উনি এইরকম মাপের একজন কবি,যখন জানতে পারলাম তখন আমি সোজা বাংলায় "টাশকি" খেয়েছিলাম একজন সত্যিকারের কবিকে সামনাসামনি দেখে!
আমি কবির তারিফ করে অনেক মজা পাই,যদিও কবি এতে চূড়ান্ত মাত্রার বিরক্ত হয়ে যায় এবং আমার আচরণকে বাচ্চাদের পাগলামি মনে করে।আসলে এই কবি আমার জীবনে বেশ কয়েকটা অসাধারন উপহার আমাকে দিয়েছেন,সেগুলোর জন্য আমি কবির কাছে চিরকৃতজ্ঞ।কবি রক্তদান শিখিয়েছেন,লিখতে শিখিয়েছেন,পাঠক হতে শিখিয়েছেন আমাকে।এমনকি "সাহস" গল্পের ক্ষুদ্র একটু অংশ সৃষ্টির দায়িত্বও কবি আমাকে দিয়েছিলেন,আমার জন্য এটা অনেক বড় একটা আত্মতৃপ্তি যে এই মাপের একটা গল্পের সৃষ্টিতে আমি অংশ নিয়েছিলাম।এই গল্পটাতে অংশ নিতে গিয়ে একজন সত্যিকারের সাইকোর মনের গঠন বুঝতে গিয়ে কখন যে নিজেই সাইকোর মতো চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছি,বুঝতে পারিনি।অবশ্য এটার দরকার ছিল।কারন আমার বিশ্বাস,একজন সাইকো,একজন মানসিক বিকারগ্রস্থ মানুষকে বোঝার সবচেয়ে সহজ উপায়,তার মতো করে চিন্তা করা............
সাধারন কোন কিছু তৈরি করা আর সম্পূর্ণ নতুন কোন কিছু একটা,যা সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারনা পর্যন্ত নেই,সেরকম কোন কিছু নিখুঁতভাবে সৃষ্টি করার মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে।সাহস আমাকে প্রত্যেকটা মুহূর্তে ঠেলে দিয়েছে একদম সহ্যের শেষ প্রান্তে,তবুও আমি বুঝতে পারিনি সাহস আসলে কি চায়,হয়তো আমি এখনো বুঝতে পারিনা।আমি তখন শুধু এতোটুকু জানতাম,আমার এটা লিখতে হবে।গল্পে আমার ভূমিকাটুকু সম্পূর্ণ করা আমার সত্ত্বার দাবী ছিল।আমি জানতাম এই গল্পের উদ্দেশ্য কি,কতোটা কষ্ট থেকে এই গল্পটা সৃষ্টি হচ্ছে,তাই নিজের অজান্তেই গল্পটার প্রতি অস্বাভাবিক মাপের একটা স্রদ্ধা ছিল সবসময়।আমি জানিনা কবি কতোটুকু আবেগ নিয়ে একটু একটু করে গল্পটা সাজিয়েছেন,কতোটুকু কষ্ট বুকে নিয়ে অন্ধকারতম রাতগুলোতে মনিটরের সামনে বসে বসে গল্পটা গুছিয়ে গিয়েছেন এক মনে।আমি যদি কবির জায়গায় থাকতাম আহলে প্রত্যেকটা শব্দ লেখার সাথে সাথে টপ টপ করে কি-বোর্ডের উপর চোখের পানি পড়তে থাকতো,হয়তো।আসলে নিজের সবচেয়ে প্রিয় মানুষটা,যার জন্য নিজের সত্ত্বাকে পর্যন্ত ধুলোয় মিশিয়ে দেয়া যায় এক মুহূর্তে,তার প্রতি জগতের সমস্ত ক্ষোভ,অভিমান,কষ্ট,দাবী,ঘৃণা,রাগ এবং সর্বোপরি মুখ ফুটে বলা যায়না-এমন একটা আকাঙ্ক্ষা নিয়ে নিয়ে যখন খটখট শব্দ তুলে সেই মানুষটার জন্য লিখে যেতে হয় নীরবে,তখন কয়জন মানুষ পারে নিজের আবেগকে সামলে লিখে যেতে?কয়জন পারে?আমি এতোটুকুই জানি,কবি পারেন।আমিও পারার চেষ্টা করেছিলাম,কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমি হয়তো জানোয়ার হতে শিখেছি,কিন্তু আমার সত্ত্বা দখলকারীর মতো জান্তব আচরণ করা এখনো শিখিনাই,তাই আমি পারি নাই নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করে রাখতে..................
আসলে সাহস কি সত্যিই সেই মানুষটার যোগ্য?সবাই সব কিছুর যোগ্য না,সবাই সব কিছুর মর্যাদা রাখার মতো না।হয়তো সাহসের মতো লেখার যোগ্য না সেই মানুষটা,আবার এমনও হতে পারে যে সাহসেরই যোগ্যতা নেই সেই মানুষটার জন্য উৎসর্গ হয়ে যাওয়ার।কবিই ভালো জানেন তিনি গল্পটা কাকে উৎসর্গ করবেন,অবশ্য আমি আজ পর্যন্ত যা কিছুই লিখেছি না কেন,কোন লেখাই কারও জন্য উৎসর্গ করিনাই,স্বার্থপর যে!কিন্তু আমার লেখা প্রত্যেকটা লেখাতেই সেই মানুষটার স্পর্শ আছে,সেই মানুষটার জন্যই আমি আজ পর্যন্ত সব কিছু লিখেছি।আমার প্রত্যেকটা লেখায় আমি তাকে বন্দি করেছি,তাকে আটকে রেখেছি আমার কল্পনার জগতে যেখানে তাকে প্রত্যেকটা মুহূর্ত আমি বিশ্লেষণ করেছি।মানুষ আসলে খুব অদ্ভুত একটা প্রাণী।মানুষের দেহের ডিএনএতে তার সম্পর্কে সব কিছুই লেখা আছে,একটা মানুষকে ক্রিস্টালের মতো দেখা যায় সেই ডিএনএ পড়ে, তবুও মানুষকে আজ পর্যন্ত কেউ বুঝতে পারলো না কারন মানুষ বেঁচে থাকে অনিশ্চয়তায়,নিশ্চিত হলে মানুষের উপর এতো আকর্ষণ হয়তো থাকতো না,মানুষ হয়তো ভালোবাসতে পারতো না..............................
সাহস কি?সাহস হচ্ছে নিজের সত্ত্বার খুনিকে প্রত্যেকটা মুহূর্ত ভালোবেসে যাওয়া,জগতের সমস্তটুকু অভিমান বুকে রেখে সামান্য একটু ভালোবাসার কাঙাল হয়ে থাকা,মৃত্যুর আগমুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করে যাওয়াটা সাহস.........
সে আসবে,এই বিশ্বাসটুকুই সাহস।সে ভালোবাসবে,এই আশাটুকুই সাহস.....................
©somewhere in net ltd.