নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্তিযুদ্ধের সেই উত্তাল দিনুলোতে, অজস্র তরুণ কি অসম সাহসিকতা নিয়ে দেশমাতৃকাকে রক্ষা করেছিল! ব্যাটা নিয়াজী বলেছিলো, “বাঙালী মার্শাল রেস না”। ২৫শে মার্চের পরপরই যখন লক্ষ লক্ষ তরুণ লুঙ্গি পরে হাটু কাদায় দাঁড়িয়ে অস্র হাতে প্রশিক্ষন নিতে শুরু করল, বাঙালীর এই রাতারাতি মার্শাল রেস হয়ে যাওয়া দেখে পাকিস্তানি শাসক চক্র রিতিমত আহাম্মক বনে যায়। সেই অসম সাহস সেই পর্বত প্রমাণ মনোবল আবার ফিরে আসুক বাংলাদেশের তরুণদের মাঝে। দূর হোক দুর্নীতি, হতাশা, গ্লানি, অমঙ্গল। আর একবার জয় হোক বাংলার অপরাজেয় তারুণ্যের।
কালিগুলাঃ এক উন্মাদ সম্রাটের কাহিনী
----------------------------- ডঃ রমিত আজাদ
ক্ষমতা যে একটি রক্ত-মাংসের মরণশীল মানুষকে কতটা উন্মাদ করে তুলতে পারে এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ রোম সম্রাট কালিগুলা।
এই উন্মাদ সম্রাটের পুরো নাম জুলিয়াস সিজার অগাস্টাস গেরমানিকাস ডাক নাম Gaius। জন্ম ৩১ আগস্ট ১২ খ্রিস্টাব্দ। খুব বেশী বছর বাঁচার সৌভাগ্য হয়নাই তার, মাত্র ২৯ বছর বয়সে ৪১ খ্রিস্টাব্দ এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হয়েছে তাঁকে।
তাঁর পিতা গেরমানিকাস (Germanicus) ছিলেন রোম সম্রাট তীবেরী (Tiberius )-র ভাগ্নে ও পালিত পুত্র। গেরমানিকাস ছিলেন একজন সফল জেনারেল ও রোমের জনগণের কাছে একজন অত্যন্ত জনপ্রিয় ব্যাক্তিত্ব। কালিগুলা শব্দের অর্থ 'ছোট সৈনিকের বুট'। পিতার সাথে একটি যুদ্ধে সঙ্গ দিয়ে এই নাম তিনি অর্জন করেছিলেন।
দুঃখজনকভাবে কালিগুলার বয়স যখন মাত্র সাত বছর তখন তার পিতা গেরমানিকাস মারা যায়। সেসময় তিনি সস্ত্রীক বসবাস করছিলেন বর্তমান তুরস্কের এন্টিওক (আন্তাকিয়া) নামক নগরীতে। কালিগুলার মাতা এসময় ছয় সন্তান নিয়ে রোমে ফিরে আসেন। কিন্তু তিনি তৎকালীন সম্রাট তীবেরীর সাথে ক্রমবর্ধমান তিক্ত শত্রুতায় জড়িয়ে পড়েন। ধীরে ধীরে তার পরিবারের সদস্যরা মৃত্যুবরণ করতে থাকে। সম্ভবত শৈশবের এই ভয়াবহ দিনগুলো কালিগুলার মানসিক ভারসাম্য নষ্ট করে।
৩৭ খ্রিস্টাব্দের ১৬ই মার্চ সম্রাট তীবেরীর মৃত্যু হয়। যদিও তীবেরী তখন ৭৮ বয়স্ক বছরের বৃদ্ধ ছিলো, তারপরেও কোন কোন ইতিহাসবিদ মনে করেন যে, তীবেরীকে হত্যা করা হয়েছিলো। প্রায়োটরিয়ান প্রিফেক্ট ম্যাক্রো বালিশ চাপা দিয়ে তীবেরীকে হত্যা করে। আবার অনেকে মনে করে কালিগুলা নিজেই এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছিলো। যাহোক এই হত্যাকান্ডের মূল উদ্দেশ্য ছিলো তীবেরীকে হটিয়ে কালিগুলাকে ক্ষমতার আসনে বসানো।
ঘটনার বারো দিন পরে, অর্থাৎ ২৮শে মার্চ কালিগুলা সিনেটের অনুমোদনক্রমে রোমের সম্রাটের দায়িত্বভার গ্রহন করে। কালিগুলাকে সম্রাটের আসনে পেয়ে রোমের জনগণ উল্লসিত হয়ে ওঠে। কারণ কালিগুলা ছিলো তাদের প্রিয় গেরমানিকাসের পুত্র। কালিগুলার মধ্যে তারা গেরমানিকাসের ছায়া দেখতে চেয়েছিলো। তাই অভিষেক অনুষ্ঠানের সময় জনতা মুহুর্মুহু হর্ষধ্বনী দিচ্ছিলো, 'আমাদের সন্তান', 'আমাদের তারকা'।
ক্ষমতা মানুষকে বদলে দেয় বলে একটা কথা প্রচলিত আছে। কালিগুলার ক্ষেত্রেও তাই ঘটলো। জনগণের আশা-আকাঙ্খার কোন পূরণই তিনি করলেন না আবার পিতার নামও ডুবালেন। তিনি তার শাসনের প্রথম ছয় মাস সময় একটি উন্নতচরিত্র এবং সহনীয় শাসক হিসেবে কাজ করলেও তারপর বেরিয়ে এলো তার আসল চেহারা। ঔদ্ধত্য, যৌন বিকৃতি, নিষ্ঠুরতা, ক্ষমতার অপব্যবহার, বিলাসিতা, কথায় কথায় মুন্ডুচ্ছেদ, সম্মানী ব্যাক্তিদের অবমাননা ও তাদের প্রতি রূঢ় আচরণ, কোন অপকর্মটি যে করেনি এই উন্মাদ সম্রাট সেটা খুঁজে বের করাই মুশকিল হবে। পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারন করে যখন কালিগুলা তার ঘনিস্ট ব্যক্তিদেরকেই হত্যা করতে শুরু করে। যাকেই সে তার ক্ষমতার জন্য থ্রেট মনে করতো তারই মুন্ডুচ্ছেদ করতো। এমনকি সে তার কাজিন গেমেলাসকেও হত্যা করে।
কালিগুলার এহেন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ ও উচ্ছৃঙ্খল কর্মকান্ডে যেমন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে জনগণ তেমনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে অভিজাতদেরই একাংশ। কিন্তু সেই সময় বাক স্বাধীনতা বলে কিছু ছিলনা বলে অসন্তোষ প্রকাশের কোন সুযোগ সাধারণ মানুষের ছিলনা। তাদের ক্রোধের ঢেউ কেবল বুকের ভিতরে ফুঁসে উঠে বুকের ভিতরেই আছড়ে পরতো। কিন্তু অভিজাতরা এদিক থেকে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে ছিলো। এই অসন্তোষের ফলস্বরূপ সেনাপতিবৃন্দ, সিনেট ও আদালত সদস্যরা অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে। এই পরিকল্পনার নেতৃত্বে ছিলো সেনা অফিসার ক্যাসিয়াস কায়েরিয়া (Cassius Chaerea)। কায়েরিয়া সহ পরিকল্পনার তিনজন মূল হোতা থাকলেও, রাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের অনেকেই বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছিলো ও তার সাথে জড়িত ছিলো। কেন এই অভ্যুত্থান? অভ্যুত্থানের নায়করা স্পষ্টতই বলেছে, কালিগুলাকে সরানোর উদ্দেশ্য রোমকে রক্ষা করা। সেই সময়ে নির্বাচন বা এই জাতীয় গণতান্ত্রিক কোন পথ চালু না থাকায়, সম্রাটকে সরানোর জন্য একমাত্র পথটিকেই বেছে নিতে হয়েছে - তাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়া।
অবশেষে ৪১ সালের ২২শে জানুয়ারীর এক উজ্জ্বল দিনে কালিগুলা বক্তৃতা করছিলো থিয়েটারের অভিনেতাদের উদ্দেশ্যে। এদিকে তারই অনুগত বাহিনীর অভ্যুত্থানকারীরা পায়ে পায়ে এগিয়ে যায় কালিগুলার দিকে ক্ষমতার উত্তাপে অন্ধ কালিগুলা দিনের উজ্জ্বলতায়ও দেখতে পেলনা তাদের, আর দেখতে পেলেও জনতার পুঞ্জিভুত ক্ষোভের মোকাবেলা সে করতে পারতো বলে মনে হয়না। অভ্যুত্থানকারীরা উপর্যুপরী ছুরিকাঘাত করে তাকে হত্যা করে। প্রথম ছুরিকাঘাতটি করেছিলো ক্যাসিয়াস কায়েরিয়া।
এভাবেই পরিসমাপ্তি ঘটে একটি বিকৃত রুচি, নিষ্ঠুর, ক্ষমতার অপব্যবহারকারী উন্মাদ সম্রাটের।
(ইতিহাস থেকে কেউ কেউ শিক্ষা গ্রহন করে, কেউ কেউ শিক্ষা গ্রহন করেনা। যারা শিক্ষা গ্রহন করেনা তাদের পরিণতি পূর্বতনদের মতোই হয়।)
তথ্যসূত্রঃ
১। উইকিপিডিয়া।
২। ইন্টেরনেটে প্রাপ্ত বিভিন্ন আর্টিকেল।
সকল লেখকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
২৭ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:২১
রমিত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
২| ২৭ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:৪১
বোকামন বলেছেন:
গুড পোস্ট ! শিক্ষনীয় ...
পোস্টে প্লাস রইলো :-)
২৭ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:৪৯
রমিত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
৩| ২৭ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:০৪
আম্মানসুরা বলেছেন: ভালো লাগল, অনেক কিছু জানলাম।
২৭ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৪৪
রমিত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
৪| ২৭ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:০৫
রাঘব বোয়াল বলেছেন: আপনি এই চমৎকার পোস্টটি যদি না করতেন তাহলে হয়তো এর সম্বন্ধে আর জানাই হতোনা।
২৭ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৪৫
রমিত বলেছেন: সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
সামু কর্তৃপক্ষকেও ধন্যবাদ, নির্বাচিত পোস্ট করার জন্য।
৫| ২৭ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:০৬
আরজু পনি বলেছেন:
ইতিহাস যেমন বিখ্যাতদের মনে রাখে তেমনি মনে রাখে কুখ্যাতদের বটে।
ভালো লাগা রইল শেয়ারে।
২৭ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৪৬
রমিত বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
হ্যাঁ, কুখ্যাতই বটে কালিগুলা।
৬| ২৭ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:২০
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: রোম সম্রাটদের ঘটনা গুলি নৃশংস। বেশিরভাগ সম্রাট মৃত্যু বরণ করেছেন আততায়ীর হতে। স্বাভাবিক মরণ কয়জনের হয়েছে কে জানে। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ।
২৭ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৪৯
রমিত বলেছেন: রোম সাম্রাজ্য ছিলো একটি নির্যাতন নীপিড়নের রাষ্ট্র। সে সময় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কাউকে সরানো যেতনা, তাই হত্যার পথই অবলম্বন করতে হতো।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
৭| ২৭ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৩৯
জুন বলেছেন: খুব সুন্দর পোষ্ট। সংক্ষিপ্ত কিন্ত সুলিখিত।
বলা হয়ে থাকে হিষ্ট্রি রিপিটস ইটসেলফ। ইতিহাস থেকে শিক্ষা না নিলে একই পরিনতি তাদেরও বরণ করে নিতে হয়।এটাই ক্ষমতার মদমত্ততায় সবাই ভুলে যায়।
+
২৭ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৫০
রমিত বলেছেন: ঠিক তাই, ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়াটা জরুরী।
আপনাকে ধন্যবাদ।
৮| ২৭ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৫৩
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ভালো পোস্ট।
২৭ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৫৯
রমিত বলেছেন: ধন্যবাদ
৯| ২৭ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:০৩
বাংলার হাসান বলেছেন: ইতিহাস থেকে কেউ কেউ শিক্ষা গ্রহন করে, কেউ কেউ শিক্ষা গ্রহন করেনা। যারা শিক্ষা গ্রহন করেনা তাদের পরিণতি পূর্বতনদের মতোই হয়।
২৭ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:১৩
রমিত বলেছেন: জ্বী, ইতিহাস সেরকমই বলে। আপনাকে ধন্যবাদ।
১০| ২৭ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৩
বাংলাদেশী দালাল বলেছেন:
সুন্দর পোস্ট ধন্যবাদ
২৮ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৪৫
রমিত বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।
১১| ২৭ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৪৩
স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: চমৎকার একটি পোষ্ট ! শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ !
২৮ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৪৪
রমিত বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।
১২| ২৮ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ২:৪৯
নির্লিপ্ত স্বপ্নবাজ বলেছেন: কালিগুলা!! বদমায়েশের বাপ।
আপনাকে থ্যাঙ্কু, লেখাটার জন্য।
২৮ শে জুলাই, ২০১৩ ভোর ৫:২৬
রমিত বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ৮:১০
ইমরাজ কবির মুন বলেছেন:
চমৎকার পোস্ট ডঃ রমিত। স্পার্টাকাস দেখে এ ব্যাপারে অনেক জানসিলাম ||