নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অশান্ত বাশিওলা

raselabe

তাই মনে হয় আমি বড় স্বার্থপর।

raselabe › বিস্তারিত পোস্টঃ

পালকিরর কথা

২১ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ২:১৭

আধুনিক প্রযুক্তির যানবাহনের যুগে
হারিয়ে গেছে হাজার বছরের ঐতিহ্য
‘পালকি’। গ্রামবাংলার ঐতিহ্য পালকি এখন
আর দেখা যায় না। কয়েক বছর আগে
গ্রামের বিয়ের বর-বধুকে বাহনের অন্যতম
বাহন ছিল এই পালকি। পালকির সঙ্গে
মিশে ছিল মধুময় এক স্বপ্ন। গায়ের পথে
পালকি করে নববধুকে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য
দেখতে গ্রামের ছেলে-মেয়েরা
রাস্তায় আর বৌ-ঝিয়ের বাড়ির ভিতর
থেকে উঁকি-ঝুকি মারত। পালকির মধ্যে
বসা বৌকে দেখে তারাও হারিয়ে যেত
কল্পনার রাজ্যে। ছয় বেয়ারা পালকি
কাঁধে নিয়ে ছন্দ তুলে বৌকে নিয়ে
যেত বাংলার শ্যামল মেঠো পথে। এ
যুগের বধুরা আর পালকিতে লজ্জারাঙা
মুখে শ্বশুর বাড়িতে যায় না। শ্যামল
বাংলা, সেই মেঠো পথ, নতুন বধু সবই আছে,
কিন্তু যান্ত্রিক যুগে নেই শুধু পালকি।
পালকির ব্যবহার কিভাবে কখন এদেশে শুরু
হয়েছিল তা সঠিকভাবে যায়নি। তবে
মোঘল ও পাঠান আমলে বাদশাহ, সুলতান,
বেগম ও শাহাজাদীরা পালকিতে
যাতায়াত করত বলে জানা গেছে।
ইংরেজ আমলের নীলকররা পালকিতে
করে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে ঘুরে
বেড়াতো। আর সেজন্যই পালকি অভিজাত
শ্রেণীর বাহন হিসেবে গন্য করা হতো।
পালকি দেখতে অনেকটা কাঠের
বাক্সের কাঠামো। দৈর্ঘ্য ৬ ফুট প্রস্থ তার
অর্ধেক কাঠামো লম্বা দুপাশে বাঁশের
সাহায্যে গাঁথা। পালকির উপরে দামী
কাপড় দ্বারা মোড়ানো থাকত। তৎকালীন
বাঙ্গালির সংস্কৃতিতে পালকির অবস্থান
ছিল সুদৃঢ়। আগের দিনে বিত্তশালী
পরিবারগুলোতে নিজস্ব পালকি ও
বেয়ারা থাকত। আর নিম্নবিত্তরা তাদের
বৌ-ঝিদের আনা নেয়ার জন্য ভাড়া করত
পালকি। অন্যসব কাজে পালকি ব্যবহার
হলেও বিয়ে-সাদিতে পালকির ব্যবহার
ছিল অপরিহার্য্য। বর্তমানে পালকির প্রচলন
না থাকায় এ পেশার সাথে জড়িতরা
জীবন-জীবিকার তাগিদে অন্যান্য পেশা
বেছে নিয়েছে। পালকির বেয়ারা
মকসুদপুর উপজেলার আইকদা গ্রামের সাহেব
ফকিরের সাথে আলাপকালে তিনি
জানান, বিয়ে সাদির হলেও এখন আর
আমাদের কেউ ডাকে না তাই এ পেশা
ছেড়ে দিয়েছি। বিবর্তনের ধারায়
সবকিছুর পরিবর্তন ঘটেছে। ফলে বর্তমানে
রাজা-বাদশা নেই, তাই পালকি ও
বেয়ারাও নেই। বর্তমান যুগের নববধুরা
পালকিতে চড়ে শ্বশুর বাড়িতে যাওয়ার
স্বপ্ন দেখে না। তারা জাকজমকভাবে
সাজানো প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসে
চড়ে শ্বশুর বাড়িতে যায়। তবে সেদিন আর
বেশি দূরে নয়, যেদিন আমাদের নতুন
প্রজন্ম পালকি নামক মানুষের ঘাড়ে চড়ে
বসা কোন বাহনের কথা বই পুস্তকে পড়বে
এবং লোকশিল্প যাদুঘরে গিয়ে সাজানো
গোছানো কৃত্রিম পালকি দেখবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.