নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এই আমি

একদিন জন্মের চিৎকারে পৃথিবীতে এসেছিলাম। আবার একদিন কিছু চিৎকারের মাঝ দিয়েই চলে যাব।

rashedur rhman

অতীতে যে মানুষ আমি দেখেছি বর্তমানে তা দেখি না। আবার বর্তমানে যা দেখি আমি নিশ্চিত ভবিষ্যতেও তা দেখব না। পরিবর্তন তো হবেই। কিন্তু এই পরিবর্তন আমাদের এখানে ভাল হয় না। এই আমার চরম দুঃখ।

rashedur rhman › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি মোবাইল চুরির ঘটনা এবং আমি

০৯ ই জুন, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:৩৭

এটিকে চুরি বললে ভুল হবে। মালিকের অগোচরে যা নেওয়া হয় তাকে চুরি বলা যায়। কিন্তু মোবাইলটি তো মালিকের দৃষ্টির সামনে দিয়ে নিয়ে নিল। নাহ, বিষয়টিকে ছিনতাইও বলা যাবে না। ছিনতাই হলো জোর করে কিছু নিয়ে যাওয়া। কিন্তু মোবাইলটি জোর করে নেওয়া হয়নি। আবার এটিকে দানও বলা যায় না। তাহলে তো মালিকের হাসিমুখ থাকতো। কিছুটা শুভাশিষ থাকতো। কিন্তু এখানে এই সবের কিছুই ছিল না।

ঘটনার বর্ণনা।।

তুরাগ বাসে চড়ে আব্দুল্লাহপুর থেকে বারিধারার দিকে আসছিলাম। আমি বসেছি একদম পিছনের সিটের বাঁ দিকে। সিটটা সামনের দিকে হেলানো। আমাকেও কুঁজো হয়েই বসতে হলো। হাতে ছিল আত্নঘাতি রবীন্দ্রনাথ বইটি। পড়ার আগ্রহ ছিল অনেক বেশি। বাঁকা হয়েও তাই পড়ছিলাম। আমার সামনের এক ভদ্রলোক কথা বলছিলেন জোরে শোরেই। তবে পড়ার ঘোরে থাকায় বুঝতে পারিনি। হাউজ বিল্ডিং আসার পর হঠাৎ লোকটি চিৎকার করে উঠল। এই, বাস থামাও। আরে আরে, করে কি? এই ব্যাটা দাঁড়া! ইত্যাদি চিৎকার শুনে পড়া থেমে গেল। বিস্মিত দৃষ্টিতে তার দিকে তাকালাম। এবং বুঝতে পারলাম, এতক্ষণ তিনি মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন। এবং তার মোবাইল ফোনটি একজন নিয়ে গেছে। থামাথামির কথা বলে ভদ্রলোক নিজেই থেমে গেলেন। কারণ, তিনিও জানেন মোবাইলটি আর পাওয়া যাবে না। পুলিশকে বলে তো কোন লাভই নেই। আমাদের দেশের পুলিশ কোন জিনিসের পিছনে ছোটার চেয়ে ঘুষ খেতেই বেশি ভালবাসে। ভদ্রলোক থেমে গেলেও তার পাশে বসা পরিচিত ভদ্রলোক থামলেন না। এয়ারপোর্ট আসার আগেই সেই নম্বরে ডায়াল করলেন। এবং অবর্ণনীয় ভাষায় গালি দেয়া শুরু করলেন। গালিগুলো বর্ণনা করা গেল না। তবে যেকথা বর্ণনা করতে চাই তার উদ্দেশ্য এতে ব্যহত হবে না। লোকটির রাগের সঙ্গে আমি খুব পরিচিত। আমারও এই ধরণের ব্যর্থ রাগ মাঝেই মাঝেই হয়।

তুরাগ নদীটি শেষ হয়ে গেছে। কালো পানির একটি পঁচা নালা বলাই ভাল একে। বুড়িগঙ্গা তো আরো আগেই শেষ। আমি এই নদীগুলোর পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় রাগে আক্রান্ত হই। আমি যখন প্রচন্ত জ্যামে আটকে থাকি নেতাদের রাস্তা করে দেয়ার জন্য। তখনো রাগে আক্রান্ত হই। আমি যখন কাউকে রাস্তার পাশে প্রস্রাব করতে দেখি তখনো রাগে আক্রান্ত হই। রেগে উঠি গালি দিতে শুনলেও। কিংবা মটরসাইকেল নিয়ে ফুটপাতে উঠে পড়তে দেখলেও আমি রেগে যাই। ঠিক সেই লোকটির রাগ আমার চেয়ে ভিন্ন ছিল না। মোবাইলটির দাম হয়তো খুব কম ছিল। তাই বলে ভদ্রলোক বেশি হতাশা প্রকাশ করেননি। কিন্তু এটিই আমার দেশের চিরায়ত দৃশ্য। এমন রেগে উঠার। এমন চুরির (যদি একে চুরি বলা যায়)। এই দেশকে বদলে দিতে হলে এগুতে হবে এই হতাশার মধ্য দিয়েই। এই অপ্রস্তুত ঘটনাবলির মধ্য দিয়েই। এখান থেকে পালিয়ে নয়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.