নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এলোমেলো ভাবনা

ঘোরাঘুরি ছাড়া কিছু ভাল লাগেনা

ভবঘুরে মিথি

আমি বন্‌দি কারাগারে

ভবঘুরে মিথি › বিস্তারিত পোস্টঃ

আতঙ্কের নাম ড্রোন

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:১৬







একবিংশ শতাব্দীর রাজনৈতিক অঙ্গনে সাড়াজাগানো একটি নাম ড্রোন। এর আভিধানিক অর্থ হল গুঞ্জন। ড্রোনের চলার শব্দের সঙ্গে মেৌমাছির গুনগুনের মিল থাকার কারণেই এ নাম। ডানা মেলা এই যানি্ত্রক পাখিটির চোখ একবার যেখানে গিয়ে পড়বে, নিমেষেই তছনছ হয়ে যাবে সেই জায়গা। সামরিক অঙ্গনে বেশ দাপটের সঙ্গে রাজত্ব করছে ড্রোন। বিশ্বমোড়ল যুক্তরাষ্ট্রের একটি দারুণ রাজনৈতিক হাতিয়ার এই ড্রোন। বেশ কয়েকটি স্বাধীন সার্বভেৌম দেশের উপর বেশ দাপটের সঙ্গে নজরদারি চালাচ্ছে মার্কিন এই চোখ। তালেবান নিধনের নাম করে বিভিন্ন দেশের আকাশে নির্বিঘ্নে বিচরণ করছে ড্রোন। এমনই একটি দেশ আমাদের প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান। সম্প্রতি পাকিস্তানের পার্বত্যাঞ্চলগুলোয় একের পর এক ড্রোন হামলা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র আর হামলা বন্ধে চলছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পাকিস্তানের তদবির। ২০০৪ সাল থেকে পাকিস্তানে ড্রোন হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০০ মানুষ মারা গেছে। যানি্ত্রক এই পাখিটির খঁুটিনাটি











ড্রোন কী : বিমানবাহিনীর আধুনিকতম সংযোজন হল মনুষ্যবিহীন যুদ্ধবিমান ড্রোন। এ বিমান চালাতে কোনও পাইলট বা ক্রু লাগে না। কম্পিউটারের সাহায্যে দূরনিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই ড্রোন নিয়ন্ত্রণ করা হয়। কখনও-কখনও পাশাপাশি উড়তে থাকা কোনও বিমান থেকেও এটিকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। ড্রোনে সংবেদনশীল যন্ত্র ও ক্যামেরা থাকে। ওই ক্যামেরার মাধ্যমে গৃহীত ভিডিওচিত্র স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সঙ্গে-সঙ্গে পঁেৌছে যায় ড্রোন নিয়ন্ত্রণকারী অপারেটরের কাছে। অপারেটরের পাঠানো নির্দেশনাও একইভাবে চলে যায় ড্রোনে। আর এতে সময় নেয় মাত্র ২ সেকেন্ড। আকাশসীমায় গুপ্তচরবৃত্তি চালানো, নিজ দেশের আকাশসীমা পাহারা, আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ, শত্রুদের বেতার ও রাডার সিস্টেমে ব্যাঘাত ঘটানো, আড়ি পেতে তথ্য জোগাড় করা, বায়ুদূষণের মাত্রা নির্ণয়, জাহাজ, নেৌচলাচল পর্যবেক্ষণের কাছে এমনকি আগুন নেভানোর কাজেও এখন ব্যবহার করা হচ্ছে ড্রোন। তা ছাড়া শত্রু এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপসহ দারুণ সব কাজ করে ড্রোন। যুদ্ধে পাইলটের মৃতু্যঝুঁকি না থাকায় যে-কোনও পরিস্থিতিতে এ বিমান ব্যবহার করা যায়। তা ছাড়া এরা একটানা আকাশে থাকতে পারে ৩০ ঘণ্টা। ঘুটঘুটে অন্ধকারেও কাজ চালিয়ে নিতে পারে। কুয়াশা বা মেঘের মধ্যেও সঠিকভাবে টার্গেট স্ক্যান করে তথ্য পাঠায়। পারে একটি নির্দষ্টি এলাকার মোবাইল ফোন, রেডিও বা টেলিভিশন সংকেতও পর্যবেক্ষণ করতে। এসব বৈশিষ্ট্যের কারণে যুদ্ধক্ষেত্রে এর চাহিদা ব্যাপকভাবে বাড়ছে।











ড্রোন আবিষ্কারের ইতিহাস : ১৯৫৯ সালে মার্কিন বিমানবাহিনী প্রথম ড্রোন তৈরির কাজ হাতে নেয়। ১৯৬৪ সালে ভিয়েতনাম যুদ্ধে টনকিন উপসাগরে প্রথম ড্রোনের ব্যবহার করা হয়। তখন যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাপারে কিছু না জানালেও ১৯৭৩ সালে স্বীকার করে ড্রোন ব্যবহারের কথা। সেই থেকে এর ব্যবহার চলছে। ১৯৭৩ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে সিরীয় মিসাইল ব্যাটারি যখন একের পর এক ইসরায়েলি বিমান ধ্বংস করে নাজেহাল করে দিচ্ছে, তখনই এ ড্রোন গোয়েন্দাগিরি করে সিরীয় প্রতিরক্ষাব্যবস্থা নিয়ে ইসরায়েলকে সতর্ক করে তাদের রক্ষা করেছিল। ১৯৮২ সালে লেবানন যুদ্ধেও ইসরায়েলের হয়ে মার্কিন সেনাবাহিনী ড্রোন ব্যবহার করে। ১৯৯১ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধে মার্কিন সেনাবাহিনী আরও অধিক মাত্রায় ব্যবহার করে এ পাইলটবিহীন বিমান। ২০০১ সালে শুরু করে আফগানিস্তান যুদ্ধ, যা এখনও চলছে। আর আফগানিস্তানের পর্বতসংকুল দুর্গম গিরিপথে তালেবানদের ওপর নিখুঁত নিশানা চালিয়ে তাদের নাস্তানাবুদ করে ছাড়ছে। বাদ যায়নি ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধে সাদ্দামকে কুপোকাত করতে।















কেমন হয় ড্রোন : পাইলটবিহীন এ বিমানটি শুধু প্রাণসংঘাতের ভূমিকায় কাজ করে না। কাজের ভিত্তিতে এ বিমানকে ভাগ করা হয়েছে বিভিন্ন ভাগে। টার্গেট বিমান, গোয়েন্দা বিমান, কমব্যাট বিমান, পরিবহন বিমান, গবেষণা ও উন্নয়ন বিমান আর রয়েছে বাণিজ্যিক বিমান। আকার ও আকৃতিতে মনুষ্যবিহীন এ বিমান বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। সবচেয়ে ছোটগুলো মাত্র কয়েক পাউন্ড ওজনের খেলনা বিমানের সমান আবার বড়গুলো বোয়িং বিমানের কাছাকাছি। ওজন ৪০ হাজার পাউন্ডের কাছাকাছি। কিছু কিছু আছে কেৌশলগত আবার কিছু হাইপারসনিক ড্রোন। শব্দের চেয়ে দশ গুণ বেশি দ্রুত এ ড্রোন ছুটতে পারে। ঘুরতে পারে মহাকাশের কক্ষপথেও। সামরিক কাজে ব্যবহূত ড্রোনগুলোর পাইলট না থাকায় ককপিট, অক্সিজেন সিলিন্ডার, প্যারাসুটের দরকার পড়ে না। তাই ইচ্ছামতো গোলাবারুদ, মিসাইল ইত্যাদি বহন করতে পারে। একেকটি ড্রোনে থাকে আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপণযোগ্য মিসাইল, এন্টি ট্যাংক মিসাইল, আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য মিসাইল।

সামরিক কাজের জন্য ড্রোন তৈরি হলেও এখন বিপুলভাবে বেসামরিক কাজেই ব্যবহার করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৫০টি কোম্পানি ড্রোন তৈরি করছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় দেড়শটি মডেলের ড্রোন তৈরি হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও ইরান ঘোষণা দিয়ে ড্রোন তৈরি করছে। অবিশ্বাস্য গতিতে বাড়ছে চালকবিহীন এ বিমানের চাহিদা।









মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.