![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এত ব্যাস্ততা ভাল লাগেনা। ভাল লাগেনা এই যান্ত্রিক জীবন। খুব সাধারন মানের একজন মানুষ আমি, ভুল করি, ভুল স্বীকার ও করি। নিজের দুর্বলতা ঢেকে রাখতে চেস্টা করি না খুব একটা। মানুষকে পর্যবেক্ষন করতে ভালো লাগে। মাঝে মাঝে ব্যাস্ত রাস্তার পাশে দাড়িয়ে মানুষ দেখি। ব্যাস্ত মানুষ, ছুটে চলা মানুষ। জীবনের কোলাহল দেখতে ভালো লাগে। নিঝুম গভীর রাত ও ভালো লাগে।ভালো লাগে সহজ ভাবে জীবনকে উপলব্ধি করতে।
সবে মাত্র পড়ালেখা শেষ হলো জিতুর। এতদিনে ২০ টা ইন্টারভিউ দিয়েও চাকরি যোটেনি। মাত্র ২১ নম্বর ইন্টারভিউ দিয়ে শাহবাগ এসে দাড়িয়েছে। এই কাঠ ফাটা রোদের মাঝে অপেক্ষা করছে রুবির জন্য। রুবি মেডিকেল কলেজের ছাত্রী।
একটু দুড়েই শরবতের দোকান। বড্ড তেষ্টা পেয়েছে জিতুর। পকেটে মাত্র ১৫ টাকা। ৫টাকার শরবত খেলে হয়ত বাসায় যাওয়াটা দুস্কর হয়ে দাঁড়াবে। বেকারদের এই একটা সমস্যা। অতি মাত্রায় হিসেব করে চলতে হয়। হত-দারিদ্রতার চেয়েও কষ্টের।
কিছুদিন পর জিতুর চাকরি হয়ে যায়। চাকরির ৩ মাসের মাঝেই ওরা বিয়ে করে নেয়। ১০ বছরের তিলে তিলে গড়া ওদের ভালোবাসার ভুবন। এবার মনে হয় কষ্টের ফল পেয়েই গেলো।
ভালোই তো চলছিলো ১ বছর পর্যন্ত। রুবিটা আস্তে আস্তে মন মরা হয়ে যাচ্ছে। আগের মত করে আর হাসছেও না। অন্যমনস্ক হয়ে কি যেনো ভেবে যায়। আহত পাখির মত বসে পড়ে থাকছে ঘড়ের কোণে। জানালার পাশে দাঁড়িয়ে ফেল-ফেল চোখে শুন্য আকাশ দেখে সারাদিন।
খুব বেশিই কি দেরি হয়ে গেলো???? রুবি এখন হাসপাতালের আই সি ইউ তে। জিতু এখন জেনেও গেছে রুবির ক্যন্সার। ডাক্তার জানিয়ে দিয়েছেন, বাচার সম্ভাবনা একেবারেই নেই। বড্ড বেশি দেরি হয়েই গেলো তাহলে।
আই সি ইউ'র দরজার ছোট কাচটা দিয়ে ওরা দুজন দুজনাকে দেখছে। জল চুই চুই করে পড়ছে চোখের কোণ দিয়ে। মুখে না পাড়লেও চোখ দিয়ে হয়ত জিতু বলছে,
- "অনেক ভালোবাসি তোমায়। আমায় একা করে যেওনা প্লিজ।"
রুবির চোখের জল হয়ত তারই জানান দিচ্ছে,
-"খুব ইচ্ছে করছে তোমায় জড়িয়ে ধরতে। আরও কয়েক যুগ বাচতে চাই তোমায় নিয়ে। কিন্তু আমার যাবার সময় যে হয়ে এলো। তুমি ভালো থেকো। খুব মিস করব তোমায়।"
জিতু দেখছে রুবির ঘুমিয়ে পড়া। লক্ষী মেয়ের মত ঘুমের দেশে হারিয়ে গেলো রুবি। জিতুর আর কোনো ফোন কল, মেসেজ কখনই পারবে না এই ঘুম-বালিকাকে জাগিয়ে তুলতে।
©somewhere in net ltd.