![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এত ব্যাস্ততা ভাল লাগেনা। ভাল লাগেনা এই যান্ত্রিক জীবন। খুব সাধারন মানের একজন মানুষ আমি, ভুল করি, ভুল স্বীকার ও করি। নিজের দুর্বলতা ঢেকে রাখতে চেস্টা করি না খুব একটা। মানুষকে পর্যবেক্ষন করতে ভালো লাগে। মাঝে মাঝে ব্যাস্ত রাস্তার পাশে দাড়িয়ে মানুষ দেখি। ব্যাস্ত মানুষ, ছুটে চলা মানুষ। জীবনের কোলাহল দেখতে ভালো লাগে। নিঝুম গভীর রাত ও ভালো লাগে।ভালো লাগে সহজ ভাবে জীবনকে উপলব্ধি করতে।
মিডিয়া জগতে যেতে মানুষ কত কি-ই না করে!! একটা বিশেষ প্রভাব পড়ে থাকে মেয়েদের ক্ষেত্রে।
একটু আকটু সাজগুজ করা, বেছে বেছে খাবার খাওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি। এটা কোনো অস্বাভাবিক ঘটনা-ই না। তবে ঘটনা ঘটে যখন অতিরিক্ত হয়ে যায় এই বিষয়গুলো। একটা ঘটনা বলি।।
কোনো এক মফস্বল থেকে সুলতানা নামের মেয়েটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়ে যায়। বলা বাহুল্য মেয়েটা অনেক ভালো মেধাবী। মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনটা যতটা স্বাধীন ততটা নিয়ন্ত্রণ হয়তো সবাই রাখতে পারে না নিজের উপর। সুলতানা নামের মেয়েটাও পারেনি। ডিপার্টমেন্টের বড় ভাই পছন্দ করে ফেলে সুলতানাকে। সেই থেকে ছায়ার মত লেগে থাকা তার সাথে। যেকোনো বিপদে আগলে রাখা ঐ বড় ভাইটা কখন যে সুলতানার বিশ্বাস অর্জন করে নেয় তা সুলতানা নিজেও জানে না।
ঐ বড় ভাইটার সখ ছিলো ছবি তোলা। DSLR এ তোলা ছবির সৌন্দর্য দেখে সুলতানা একসময় দিশেহারা হয়ে যায়। একদিন সে বাংলাদেশের টপ মডেল হবে। পত্রিকা, ম্যাগাজিনে তার ছবি ছাপবে। তাকে বিশ্ব দেখবে, বাহবা দিবে আরো ইত্যাদি ইত্যাদি বিষয়ে স্বপ্ন দেখানো সুলতানাকে নিজের হাতের মুঠোয় বন্দি করে নেয় একসময়।
ফোটগ্রাফারের মন বলে কথা!! সাধারন জামা কাপড় পড়ে কি আর মডেল হওয়া যায়? সেলেব্রেটি হওয়া যায়? মডেলদের হতে হয় আকর্ষনীয়। এই তো খেলা শুরু। ফোটসেশন এখন ইনডোরে হয়। আকর্ষনীয় জামা-কাপড়ে, আকর্ষনীয় পোজে, আর আকর্ষনীয় ক্লিকে। দিন যায় আর সুলতানার স্বপ্ন বেড়ে উঠতে থাকে। ফোটগ্রাফারের সাথে নাকি ওপেন মাইন্ডলি চলতে হয়?? খুব কাছাকাছি নাকি আসতে হয় একে-অপরকে??? একটু অন্তরঙ্গ সম্পর্ক হলেও নাকি খুব একটা মন্দ না??? আমি অবশ্য জানি না। যেটা বলছিলাম, একদিন তারা অন্তরঙ্গ হয়ে যায়। আর, কোনো একদিন কোনো এক ম্যাগাজিনে সুলতানার একটি ছবিও চলে আসে।
তখন সুলতানার স্বপ্ন আরেকটু বেড়ে উঠে। একটু জনপ্রিয়তাও পেয়ে যায় ক্যাম্পাসের ভিতর। কোনো এক সিনিয়র ফোটোগ্রাফারের নির্বাচিত মডেলও হয়ে যায় সুলতানা। এখন ফটোসেশন হয় স্টুডিওতে। লোভে আসক্ত হয়ে যাওয়া সুলতানা নিজেকে অন্য মাত্রায় দেখতে চায় বলেই হয়ত নিজের দাবিতেই অনেক কাছেই ভিড়তে থাকে তার সিনিয়র ফোটগ্রাফারের। নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার পুরস্কার হিসেবেই হয়তো তার একখানা ছবিও চলে আসে পত্রিকায়। সুলতানা অনেক খুশি। সুলতানা আনন্দে ভেসে দূরে হারিয়ে যায়।
কিন্তু খুব বেশি দিন হয়তো সেই আনন্দ ধরে রাখতে পারেনি। ক্যাম্পাসের অধিকাংশই নিজের মোবাইলের দিকে তাকিয়ে মিলিয়ে নিচ্ছে সুলতানার চেহারাটা। সুলতানা বুঝে উঠতে পারে না। কোনো একদিন ফোন আসে তাকে ব্যবহারের জন্য। বিভিন্ন ভয় দেখিয়ে তাকে ব্যবহার করা হয় পণ্য হিসেবে। একটা কালো দাগ লেগে গেলো। কাধে বয়ে বেড়াচ্ছে এক অভিশপ্ত উপাধি।
সুলতানা আর পারে না নিজেকে আবিষ্কার করতে। পালাতে পারছে না নিজের মাঝ থেকে, পারছে না হারিয়ে যেতে সবার থেকে।
কি আজব দুনিয়া তাই না??? মাঝে মাঝেই জানতে ইচ্ছে হয়, দুনিয়াটা আজব?? নাকি, দুনিয়ার মানুষগুলাই আজব???
©somewhere in net ltd.