নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

থমথমে রাত,- আমার পাশে বসল অতিথি-- বললে,-আমি অতীত খুধা,তোমার অতীত স্মৃতি!

সময়ের সমুদ্রের পার--- কালকের ভোর আর আজকের এই অন্ধকার

রাজীব হোসাইন সরকার

বাইরে হিমের হাওয়া হেমন্তের রাত; দরজায় জানালায় অবিরাম রাতের আঘাত।।

রাজীব হোসাইন সরকার › বিস্তারিত পোস্টঃ

কিলিং থার্ড গার্লঃ প্যারা-সাইকো থ্রিলারঃ১

১২ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:০১

কাজেম হায়দার অবাক হয়ে আছেন।

অবাক এখন হতবাক পর্যায়ে।

তার ভ্রু কুঞ্চিত। কুঞ্চিত ভাব কপালে এসে ঠেকেছে। ভ্রুর কুঞ্চিত রেখার মতো কপালের চামড়াও কুঞ্চিত। কুঞ্চিত হওয়ার কারন পিঁপড়া।

সকাল বেলা তিনি বাগানে বসে আছেন। হাতে জীবনান্দের রুপসী বাংলা। তেষট্টিটা কবিতার রুল টানা ছেয়াত্তর পৃষ্ঠার কবিতা সমগ্র। বইটা পড়তে তিনি মজা পাচ্ছেন। দীর্ঘদিন পর এই মজা পাওয়া। কবিতার নাম সন্ধ্যা-হয় চারদিকে।



সন্ধ্যা হয়- চারিদিকে মৃদু নিরবতা

কুটা মুখে নিয়ে এক শালিক যেতেছে উড়ে চুপে;

গোরুর গাড়ীটি যায় মেঠো পথ বেড়ে ধীরে ধীর;

আঙ্গিনা ভরে আছে সোনালী খড়ের ঘন স্তুপে;



বইটির একটা বিশেষ চমক আছে।

একটু চিন্তা করলেই বোঝা যায় চমকটা কি। সবগুলো কবিতার নামকরন করা হয়েছে প্রত্যেকটা কবিতার প্রথম পঙ্কক্তি দিয়ে। এই রকম শুরুর কারন স্ময়ং কবি জীবনানন্দ দাশ। কবিতা লেখার পর কবি পরপারে চলে গেলেন। বই প্রকাশ করতে পারলেন না। কবির ছোট ভাই কবির হয়ে বই প্রকাশ করলেন।

কবির ছোট ভাই অশোকানন্দ দাশ। বই বের করার সময় বিপদে পড়লেন।

বড় ভাই কবিতাগুলোর নাম রেখে যাননি। মানুষকে পৃথিবীতে চলতে গেলে নাম দিতে হয়। কবিতাগুলোকেও দিতে হবে। অনেক কবিতা মানুষককে বেঁচে থাকার শক্তি দিতে পারে। মানুষের চেয়ে কবিতার নাম বেশী প্রয়োজন।

অশোকানন্দ কবি নন। মা কবি, বড় ভাই কবি। তিনি নিজে কবি হতে পারেন নি। কবিতার নাম কিভাবে দিবেন বুঝতে পারলেন না। শেষ পর্যন্ত দুঃসাহসী কাজটা করেই ফেললেন। প্রত্যেক কবিতার প্রথম পঙ্কক্তিকে কবিতার নাম করে দিলেন।



এই কবিতার নামটাও শুরুর পঙ্কক্তি থেকে। কবিতার নাম ‘সন্ধ্যা হয়-চারিদিকে’।

কবি-লেখকদের অসমাপ্ত বই পড়লেই কাজেম হায়দারের মনটা অন্যরকম হয়ে যায়। বিচিত্র একটা অনুভুতি। মনে হয় সাহিত্যিক এই আছেন এই নেই।

‘এই আছেন এই নেই’ ভাবটা আসতেই কাজেম হায়দার পায়ে ব্যথা পেলেন।

নিচে তাকিয়ে দেখলেন তিনি পিঁপড়ার বাসায় দাড়িয়ে আছেন। পিঁপড়ারা তাকে কামড়াচ্ছে।

পিপড়াগুলোর গায়ের রং লাল। এই লাল ঘৃনার উদ্রেক করে।

কাজেম আলী বাঙালী জাতি আর পিপড়ার মধ্যে একটা মিল খুঁজে পেলেন।

অনেক বিষাক্ত পোকামাকড় আছে। মানুষ দেখলেই এরা পালিয়ে যায়। লাল পিপড়ারা পালায় না। এরা সবাই কামড়ায়। এলাকায় হানা দিলে এরা সহজে ছেড়ে দেয় না। কাজেম আলী কিছুক্ষন সময় নিয়ে সবগুলো পিপড়ার বাসা ভেঙ্গে দিলেন।

এরপর পায়ের কাপড় গুছিয়ে পিপড়াদের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকলেন। পিপড়ার বাসা ভাঙ্গার জন্য শাস্তি গ্রহন করছেন। তিনি দোষ করেছেন। দোষীদের দোষ স্বীকার করলে শাস্তি কিছুটা কমে যায়। তার শাস্তি কমে নি।

পিঁপড়ারা প্রবল উৎসাহ নিয়ে তাকে কামড়াচ্ছে। সব সময় প্রতিশোধ নেবার সুযোগ হয় না। আজকে হয়েছে। গোত্রের সব পিপড়া মিলে এই শোধ সুদ-আসলে তুলে নিচ্ছে। কাজেম হক দীর্ঘক্ষন পিঁপড়ার মধ্যে দাঁড়িয়ে থেকে কামড় খেলেন। দোষ স্বীকার করার মাঝে আনন্দ আছে। কঠিন প্রায়চিত্তের মাঝেও শান্তি আছে। তিনি এখন শান্তি পাচ্ছেন।

রাতের বেলা ঘুমুতে গেলেন কাজেম হায়দার। ঘুমানোর সাথে সাথে জন্মদিনের কথাটা মনে পড়ে গেল।

আগামীকাল বাসার সামনের মেহগনী গাছটির জন্মদিন।

সকাল বেলা জেলে পাড়ার বাজার থেকে একটা কেক কিনে আনতে হবে। সাথে একুশটা মোমবাতি। আগামীকাল মেহগনী গাছটির একুশ তম জন্মদিন।

শেষরাতে কাজেম হায়দারের কাঁপুনী দিয়ে জ্বর আসল। জ্বরের মাত্রা ভয়াবহ। ঘরে থার্মোমিটার নেই। থাকলে মেপে দেখা যেত।



তিনি বুঝতে পারলেন পিপড়ার কামড় খেয়ে এই জ্বর এসেছে। পিপড়ার মুখের এসিড শরীরের রক্তপ্রবাহে ঢুকে রক্তের পরিবেশকে উত্থাল-পাথাল করেছে। উত্থাল-পাথাল পরিবেশের জন্যই তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। পিপড়ার মুখে কি এসিড থাকে?

কাজেম হায়দার নিজের মস্তিষ্কের অক্ষমতা দেখে আশ্চর্য হয়ে গেলেন। পিঁপড়ার কামড়ের এসিডের নাম তিনি স্মরণ করতে পারছেন না।



বাজারে গিয়ে কেক কেনার সাথে সাথে একটা বইও কিনতে হবে। বইয়ের নাম হবে ‘পিপড়ার মুখে এসিড’। এই নামে কি কোন বই বাজারে আছে?

কাজেম হায়দারের জানা নেই।

এই পাহাড়ী অঞ্চলে আদিবাসী বাজারে জন্মদিনের কেক আর ‘পিপড়ার মুখে এসিড’ বই পাওয়া যাবে না। এখানে পাওয়া যাবে দেশী মদ, চুয়ানী আর গাঁজা। পাহাড়ে গাজার দাম সস্তা।

এখানে সিগারেটও পাওয়া যায় না।



জন্মদিনে এক প্যাকেট দামী সিগারেট না হলে মানাবে না। একটা সিগারেট থাকবে কাজেম আলীর মুখে আরেকটা থাকবে মেহগনি গাছের পাতায়। গাছকে সিগারেট খাওয়ার ট্রেনিং দিতে হবে। পাতার মধ্যে ছোট ছোট রন্ধ্র গুলো বের করে একটা জলন্ত সিগারেট চেপে ধরতে হবে।

গাছ যে রন্ধ্র দিয়ে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নেয়, আগামীকাল সেই রন্ধ্র দিয়ে সিগারেটের নিকোটিন নিবে।

প্রচণ্ড জ্বরে প্রলাপ বকতে বকতে শেষরাতে ঘুমিয়ে পড়লেন কাজেম হায়দার।



কাজেম হায়দার ঘুমিয়ে পড়ার সাথে সাথেই একটা ভয়ানক ঘটনা ঘটল।

ঘটনা ঘটল একশ পাঁচ কিলোমিটার দূর চট্টগ্রামে।

ঘটনাটি দুইটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর পুনরাবৃতি। অভিজাত এলাকার উচু পাঁচিল ঘেরা তিনতলা বাসায় একটি মেয়ের মৃত্যু হলো। মেয়েটি মৃত্যু হল নিজের বাসায়।

(চলবে)

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:১৮

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: হুমম

১২ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:২২

রাজীব হোসাইন সরকার বলেছেন: :) হুমম। কথাটার অর্থ এখনো বুঝিনাই ইরফান দা :(

২| ১২ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:৩২

টানিম বলেছেন: পরে পড়ব ।

১২ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:৫৭

রাজীব হোসাইন সরকার বলেছেন: :) ওকে টানিম ভাই :)

পড়ার কিন্তু নেমন্তন্ন রইল। :)

৩| ১২ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:১২

ইলুসন বলেছেন: এমনে কেউ গল্প শেষ করে? :( পরের পর্ব কবে দিবেন?

১২ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:৫৮

রাজীব হোসাইন সরকার বলেছেন: ইলিউশন আর ডিলিউশনে না ভুগলে শীঘ্রই দিব বিলে আশা রাখি :)
কমেন্টে আগ্রহ প্রকাশের জন্য ধন্যবাদ। :)
আবার পড়ার নেমন্তন্ন রইল :)

৪| ১২ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:৪৩

সিষ্টেম ইন্জিনিয়ার বলেছেন: আজকাল অনেকের লেখার মধ্যে হুমায়ূন স্যারের ছায়া পাচ্ছি, আপনার এই লেখার মধ্যেও পেলাম।

আজকাল কমেন্ট করতে কেন যেন আালসেমি লাগে, আপনার লেখা এত্ত ভালো লাগলো যে কমেন্ট না করে পারলাম না।
ভালো থাকবেন, ধন্যবাদ।

১৩ ই জুন, ২০১৩ রাত ১২:০১

রাজীব হোসাইন সরকার বলেছেন: অলস ইঞ্জিনিয়ারের কমেন্ট পড়ে আমাকেও ভালো লেগেছে। :)

ভালো থাকার শুভকামনার জন্য ধন্যবাদ। :)
একটা প্রশ্ন থাকল সিস্টেম ভাই , :) আশাকরি একজন লেখক ও পাঠক হিসাবে নিবেন :)

লেখাতে স্যারের ছায়া থাকা কি খারাপ, যদি ভাষা, প্লট ও কাহিনী স্বাতন্ত্র হয়? :)
আপনিও ভালো থাকবেন ভাই :)

৫| ১৩ ই জুন, ২০১৩ রাত ১২:৫১

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: গল্প ভালো।

১৩ ই জুন, ২০১৩ রাত ১২:৫৩

রাজীব হোসাইন সরকার বলেছেন: প্রোফেসর শঙ্কুর কমপ্লিমেন্ট পেলে আর চাইনা কিছু :)

৬| ১৩ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:২৫

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন: শুরুটা বেশ হইসে, তবে আরও একটু বেশি বেশি করে লিখে পোস্ট দিবেন।

১৩ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:১১

রাজীব হোসাইন সরকার বলেছেন: পরামর্শ সাদরে গৃহীত!!! :)

কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ।
পরেরটা পড়ার দাওয়াত থাকল :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.