নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি জাহিদ রাজ রনি। অঘ্রান অভ্রু নামটা বোকামি করে দেয়া এবং পরে আর নাম পাল্টানোর অপশন খুঁজে পাইনি। পত্রিকায় লিখি \'জাহিদ রাজ\' নামে। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে আমি: jahidrajrony

অঘ্রান অভ্রু

একদিন কাক হয়ে উড়াল দিবো

অঘ্রান অভ্রু › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প: প্রত্যাবর্তন

১১ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৮


বাংলাদেশ সময় রাত বারোটায় বাবা আমাকে কল দিলেন! সাধারণত কোন বিপদ-আপদ ছাড়া এতো রাতে কল দেয়ার কথা না। মুহূর্তেই নানাবিধ অশুভ কল্পনায় ঘুরপাক খেয়ে মোটামুটি লাফিয়ে উঠে কল ধরলাম। বাবা স্বাভাবিক ভাবেই হেসে বললেন,
- কিরে ব্যস্ত নাকিরে?
- হ্যা কিছুটা। এতো রাতে! কি ব্যাপার?
- ঘুম আসে না, ভাবলাম তোর সাথে গল্প করি!
- আচ্ছা!

'আচ্ছা' বললেও আদতে আমি চমকে উঠেছিলাম বাবার কথা শুনে। বর্তমান বাবাদের মতো আমার বাবা কোনকালেই আমার বন্ধুর মতো ছিলেন না। দেখো গেলো বিকেলে বন্ধুদের সাথে খেলছি, দূরে বাবা আসছে দেখলেই আমি দৌড়ে পালাতাম! বাবার সাথে কাজের কথার বাহিরে কখনো গল্প করেছি মনে পড়েনা। মূলত বাবার সাথে এক প্রকার রাগ করেই আমার দেশত্যাগ। কাজেই মাঝরাতে বাবার ঘুম না আসাতে বাবা আমার সাথে গল্প করবেন- ব্যাপারটা আমার জন্যে ভূত দেখার মতো!

বাবা ঘোরলাগা গলায় বললেন,
- তোদের ওখানকার পরিবেশ কেমন এখন?
- স্নোফল হচ্ছে কয়েকদিন ধরে।
- দেশে আসবি না আর?
- জানি না বাবা। দেখি!
- দেশ ছেড়ে থাকতে ভালো লাগে?

আমি কিছু বললাম না। একটা লম্বা দীর্ঘশ্বাস বুকের অতলে চেপে রাখলাম। বাবার কিছু একটা হয়েছে। বাবা আমার সাথে এমন গল্প করার মানুষ না। ব্যাপার কি? বাবাকে আমার এখন একজন মানুষিক সন্ত্রাসী মনে হচ্ছে। যিনি আঁটঘাট বেঁধে নেমেছেন, তার দেশ বিভাগী অভিমানী ছেলেকে কাঁদানোর জন্যে!

- বাবা তোমার কি হয়েছে?
- কিছু না তো।
- এভাবে কথা বলছো কেনো?
- তোর বয়স কত হলো বলতো?

আমি বয়স বলতে গিয়ে চমকে উঠলাম! আজ আমার জন্মদিন! বরাবরের মতোই ভুলে বসে আছি। জন্মদিন এখন সোশ্যাল মিডিয়া কেন্দ্রিক। সকালে ফেসবুকে চেক না করায় একেবারেই মনে নেই! এখানে আমার বন্ধু বান্ধবও বিশেষ নেই, যারা জন্মদিন মনে রেখে শুভেচ্ছা জানাবে।

বাবা ফোনের ওপাশ থেকে হাসলেন। একে একে মা বাবা, ছোট বোন সবাই শুভেচ্ছা জানালো। বাবা বললেন, তোর জন্মদিনের কেক কাটা হবে। ফু দিয়ে মোমবাতি নিবিয়ে দে, আমি মোমবাতির সামনে ফোন ধরছি! আমি আটহাজার মাইল দূর থেকে ফোনে ফু দিলাম। দূরে থাকার সুবিধা হলো আমি যে এখন কাঁদছি এটা বাবা বুঝবেন না। ফোন রাখার আগে মাকে শুধু বললাম, দুই টুকরা কেক ফ্রীজে রেখো আম্মু! বাবাকে কিছু জানাবে না। একটা সারপ্রাইজ বাবারও পাওনা রইলো!

জাহিদ রাজ রনি
প্রথম প্রকাশ: ১ এপ্রিল ২০১৭, ছুটির দিনে, প্রথম আলো।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৪:১৯

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: গল্পটি আগেই পড়া ছিল। আবারও পড়লাম।
অনেক সুন্দর গল্প।

১১ ই জুন, ২০১৭ রাত ১১:২৮

অঘ্রান অভ্রু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। অনুপ্রেরণা পেলাম

২| ১১ ই জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৯

কল্পদ্রুম বলেছেন: সুন্দর গল্প।

১১ ই জুন, ২০১৭ রাত ১১:২৮

অঘ্রান অভ্রু বলেছেন: ধন্যবাদ, জনাব।

৩| ১১ ই জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৪

জাহিদ অনিক বলেছেন: বাহ। পিতাপুত্রের এই অভিমানটুকু বেশ রেশ বইয়ে দিল মস্তকে ।

১১ ই জুন, ২০১৭ রাত ১১:৩০

অঘ্রান অভ্রু বলেছেন: অনুপ্রেরণা পেলাম। মস্তকে বেশ বইয়ে দিতে পেরেছি, এটা আমার লেখার স্বার্থকতা বলা যায়

৪| ১১ ই জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৪

প্রতিভাবান অলস বলেছেন: সুন্দর

১১ ই জুন, ২০১৭ রাত ১১:৩০

অঘ্রান অভ্রু বলেছেন: ধন্যবাদ

৫| ১১ ই জুন, ২০১৭ রাত ৯:১২

ধ্রুবক আলো বলেছেন: সুন্দর গল্প

১১ ই জুন, ২০১৭ রাত ১১:৩১

অঘ্রান অভ্রু বলেছেন: ধন্যবাদ

৬| ১১ ই জুন, ২০১৭ রাত ১১:৩১

সুমন কর বলেছেন: হৃদয় ছুঁয়ে গেল। +।

১১ ই জুন, ২০১৭ রাত ১১:৩৪

অঘ্রান অভ্রু বলেছেন: ধন্যবাদ দাদা। আপনারা আমাকে ফেসবুক ভুলিয়ে দিচ্ছেন প্রায়। সামুতে মজা পাচ্ছি :)

৭| ১১ ই জুন, ২০১৭ রাত ১১:৪০

সুমন কর বলেছেন: লেখা-লেখি করতে চাইলে, ফেবু নয় ব্লগই উত্তম। এখানে সাথে সাথে পাঠকের ফিডব্যাক পাওয়া যায়। আর ফেবুতে শুধু ১টা লাইক দিয়ে চলে যাবে, পড়ে দেখবে না।

তবে ব্লগে সময় দিতে হবে। ভালো ভালো লেখা পড়তে হবে ও মন্তব্য করবে। এতে ব্লগারদের সাথে পরিচয় বাড়বে। তারা আপনার সম্পর্কে জানবে এবং লেখা পড়বে।

শুভ ব্লগিং।

১১ ই জুন, ২০১৭ রাত ১১:৪৮

অঘ্রান অভ্রু বলেছেন: আচ্ছা, তাই করছি কয়েকদিন যাবত। শুভকামনা আপনার জন্যে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.