নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি জাহিদ রাজ রনি। অঘ্রান অভ্রু নামটা বোকামি করে দেয়া এবং পরে আর নাম পাল্টানোর অপশন খুঁজে পাইনি। পত্রিকায় লিখি \'জাহিদ রাজ\' নামে। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে আমি: jahidrajrony

অঘ্রান অভ্রু

একদিন কাক হয়ে উড়াল দিবো

অঘ্রান অভ্রু › বিস্তারিত পোস্টঃ

মায়ের দেয়া শার্ট

১০ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:৫২

দরজির দোকানে গিয়েছিলাম আমার পূর্বে সেলাই করতে দেয়া শার্ট নেয়ার জন্যে। আরেকটা ছেলে এসেছে তার শার্টের কাজ করানোর জন্যে। দরজি তখন কাজ করছে আমার শার্টের। আমি আর ছেলেটা দোকানের বাহিরে পেতে দেওয়া টুলে বসে অপেক্ষা করছিলাম। অনেক্ষন চুপচাপ বসে থাকার পর আমিই ছেলেটাকে জিজ্ঞেস করলাম,

– শার্ট কি বানাতে দিয়েছেন?
– না চাপানোর জন্য আনলাম। অনেকদিন আগের শার্ট।
– অহ আচ্ছা!
– এটা আসলে একজনের স্মৃতি, যে শার্টটা দিয়েছে সে এখন পৃথিবীতে নাই।
– নাই মানে? মারা গেছে?
– হ্যা!
– অহহ স্যরি।

…আমি ধরেই নিয়েছিলাম এটা হয়তো তার প্রেমিকা শ্রেণীর কারো দেওয়া শার্ট, যে যেকোন ভাবে মারা গিয়েছে। ছেলেটা একটু চুপ থেকে নিজেই আবার বলা শুরু করলো,
– এটা আমার আম্মার দেওয়া শার্ট!
– কিভাবে মারা গেছেন?
– অসুস্থ্য হয়ে।
– ওহ, দুঃখজনক!
– হাসপাতালে তিনদিন ছিলো আম্মা। সুস্থ্য হওয়ার পর বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় এম্ভুলেন্সে কথা বলতে বলতে আম্মা মারা যায়। আমি আর আপনি যেরকম কথা বলতেছি, এরকম। আমার আম্মা চল্লিশ বছর বেঁচে ছিলো।

আমি কিছু বলার আগেই ভেতর থেকে ডাক আসলো, আমার শার্টের কাজ হয়ে গেছে। আমি বড় বাঁচা বেঁচে গেলাম, কারন মা হারানো শোকগ্রস্ত একজন সন্তানকে সান্তনা দেওয়ার ভাষা আমার জানা নেই। আমি বের হয়ে যাওয়ার সময় বললাম, ‘ভাই মন খারাপ কইরেন না। আম্মার দেওয়া শার্ট যত্নে রাইখেন।’

তারপর, দরজির দোকান থেকে সদ্য বানানো আমার শার্টটা হালকা করে বুকে চেপে ধরে বাসার পথে পা বাড়ালাম! ছেলেটাকে বলা হয়নি, আমার মা বেঁচে আছেন। এই যে শার্টটা আমি বানাতে আসলাম, এটার কাপড়টা আমার মায়ের কাছ থেকে পাওয়া জন্মদিনের উপহার! দর্জির দোকানের টুলে বসে অপেক্ষা করতে করতে, আমার এই শার্টটার মূল্য অনেকটা বেড়ে গেছে!


মায়ের দেয়া শার্ট | জাহিদ রাজ রনি

পরিমার্জিত আকারে প্রথম প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ছুটির দিনে, প্রথম আলো।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:০৩

মাইনুল ইসলাম আলিফ বলেছেন: ভাল লিখেছেন।শুভ কামনা রইলো।

১০ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:১২

অঘ্রান অভ্রু বলেছেন: অনুপ্রেরণা পেলাম। অনেক ধন্যবাদ

২| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:২৮

ফাহমিদা বারী বলেছেন: ভালো লাগলো।
কিছু বানান ভুল পেলাম ভাই। একটু দেখে নিয়েন।
শুভকামনা।

৩| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:৩৮

মনিরা সুলতানা বলেছেন: লেখায় ভালোলাগা !!

৪| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:৪৫

ওমেরা বলেছেন: আমার আম্মুও আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে ,সেগুলো এখন কেবল আম্মুর স্মৃতি বহন করে ।

৫| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১২:২০

মার্কো পোলো বলেছেন:
হৃদয়বিদারক! ছেলেটার কথা শুনে বুকের ভিতর অদৃশ্য কষ্ট অনুভব করলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.