নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পাঠকের মুগ্ধতাই আমার লেখার প্রেরণা, সত্য প্রচার আমার লেখার উদ্দেশ্য আর মিথ্যাকে বিনাশ করে দিকেদিগন্তে সত্যের আলোকচ্ছটার বিচ্ছুরণই আমার লেখার চূড়ান্ত লক্ষ্য।

বিদ্রহীসূত

রাকীব আল হাসান, সহকারী সাহিত্য সম্পাদক, দৈনিক বজ্রশক্তি।

বিদ্রহীসূত › বিস্তারিত পোস্টঃ

পহেলা বৈশাখ ও নবান্ন: বে’দাত না এবাদত?

০৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৮:২৩

আমাদের দেশের অনেক আলেম ও মুফতির দৃষ্টিতে চৈত্র সংক্রান্তি, পহেলা বৈশাখ, নবান্ন উৎসব ইত্যাদি উদ্যাপন করা প্রকৃতপক্ষে হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি, শেরক ও বেদাত। তাদের জ্ঞানের প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই বলছি, এ বিষয়ে আমাদের কিঞ্চিৎ দ্বিমত রয়েছে।
আল্লাহর শেষ রসুল আরবে এসেছেন, তিনি আরবের মানুষ, তাঁর আসহাবগণও আরবের মানুষ। প্রতিটি এলাকার যেমন নিজস্ব একটি সংস্কৃতি থাকে, নিজস্ব পোষাক, ভাষা, আচার-আচরণ, রুচি-অভিরুচি থাকে তেমনি তাঁদেরও ছিল। আমাদের দেশের একজন নেতা বাংলাতে কথা বলবেন, বাংলাদেশের পোশাক পরবেন এটাই স্বাভাবিক। তেমনি রসুলাল্লাহ ও তাঁর সাহাবীরা আরবীয় পোশাক পরেছেন, আরবীতে কথা বলেছেন, আরবীয় খানা-খাদ্য খেয়েছেন। এর দ্বারা এটা প্রমাণিত হয় না, যে সারা দুনিয়ার মানুষকেই ঐভাবে আরবীতে কথা বলতে হবে, আরবীয় জোব্বা, পাগড়ি পরিধান করতে হবে, খোরমা-খেজুর খেতে হবে। তবে হ্যাঁ, কেউ যদি আরবীয় রীতি নীতি অনুসরণ করে তবে সে তা করতে পারে, কেননা যে কোনো অঞ্চলের সংস্কৃতি গ্রহণ করার স্বাধীনতা সকলের আছে। ইসলাম এসেছে সম্পূর্ণ মানবজাতির জন্য। প্রতিটি জনপদের মানুষের একটি নিজস্ব সংস্কৃতি থাকে যা তাদের ভৌগোলিক ও আর্থ-সামাজিক অবস্থার সঙ্গে সঙ্গতিশীল, যা গড়ে ওঠে হাজার হাজার বছরের ক্রমবিবর্তনের মাধ্যমে। আল্লাহ তাঁর নাজেলকৃত জীবনবিধানে এ সকল সংস্কৃতিকে কোথাও নিষিদ্ধ করে দেন নি, তিনি কেবল নিষিদ্ধ করেছেন অন্যায়, অবিচার, মিথ্যা ও অশ্লীলতা। তিনি এমন একটি জীবনবিধান দিয়েছেন যার নাম দীনুল হক অর্থাৎ সত্যভিত্তিক জীবনব্যবস্থা, দীনুল ফেতরাহ বা প্রকৃতির সঙ্গে সঙ্গতিশীল জীবনব্যবস্থা, দীনুল ওয়াসাতা অর্থাৎ ভারসাম্যপূর্ণ জীবনব্যবস্থা, দীনুল কাইয়্যেমাহ বা আবহমান ও চিরন্তন জীবনব্যবস্থা। এই দীনের মূলনীতিগুলো দীনের নামের মধ্যেই প্রকাশিত হচ্ছে। এই দীনের একমাত্র কাম্য হলো মানুষের সার্বিক শান্তি। তাই এর নাম আল্লাহ দিয়েছেন ইসলাম, আক্ষরিক অর্থেই শান্তি। ইসলামের প্রতিটি বিধানই তাই শান্তির লক্ষ্যে প্রণিত, এর প্রতিটি বিধানই মানবপ্রকৃতি, বিশ্বপ্রকৃতির সঙ্গে এক সূত্রে গাঁথা, প্রতিটি বিধানই ভারসাম্যযুক্ত এবং চিরন্তন সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত।
কিন্তু আমাদের সমাজে ইসলামী সংস্কৃতি বলতেই আরবীয় সংস্কৃতিকে নির্দেশ করা হয় এবং অন্য সকল অঞ্চলের শিল্প-সংস্কৃতি, পোশাক-আশাক, আচরণকে অনৈসলামিক বলে গণ্য করা হয়। যেমন ইসলামের অধিকাংশ আলেমদের সিদ্ধান্তমতে পুরুষের ছতর হলো নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত ঢাকতে হবে। এখন কেউ যদি ধুতি পরিধান করে তাহলেও কিন্তু তার ছতর আবৃত হয়। কিন্তু ধুতি পরাকে কি আলেমরা ইসলামী সংস্কৃতি বলে মেনে নেবেন? না, তারা একে হিন্দুয়ানী পোশাক বলে ঘৃণার চোখে দেখবেন। তারা চান মানুষকে তেমন জোব্বা পরাতে যেটা আরবের লোকেরা পরে থাকেন। আরবিতে আজেবাজে কিছু লেখা থাকলেও আমরা চুমু খেয়ে বক্ষে আগলে রাখি। সুতরাং বোঝা গেল আরবীয় সংস্কৃতিকেই আমাদের সমাজে ইসলাম বলে গণ্য করা হচ্ছে।
এবার মূল প্রসঙ্গে আসি। বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মাত্র ৪৪ বছর, এর আগে হাজার হাজার বছর বাংলাদেশ ভারতবর্ষেরই অংশ ছিল বিধায় এ অঞ্চলের মানুষ একই সংস্কৃতির ধারক ছিল। প্রতিটি অঞ্চলের সংস্কৃতির নির্মাণে ধর্মের পর সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে সে এলাকার অর্থনীতি। এ দিক থেকে বাংলার নিজস্ব সংস্কৃতি বলতে কৃষি সংস্কৃতিই বোঝায়। পলিগঠিত জমির কৃষিনির্ভর বাংলার কৃষক ধর্মে হিন্দু হোক আর মুসলিমই হোক, বৌদ্ধ হোক বা খ্রিষ্টানই হোক, তার জীবনের আনন্দ, বেদনা, উৎসব, আশা-নিরাশার সঙ্গে কৃষি ফসলের নিবিড় বন্ধন থাকবে এ কথা সাধারণ জ্ঞানেই বোঝা যায়। নতুন ধান ঘরে তোলার আনন্দ তাই এ অঞ্চলের মানুষের প্রাণের সঙ্গে যুক্ত। বাংলা ফসলি বছরের সঙ্গে এদের ভাত-কাপড়ের সম্পর্ক। তাই চৈত্রসংক্রান্তি, পহেলা বৈশাখ, নবান্ন উৎসব ইত্যাদি কৃষিনির্ভর বাঙালির জীবনমানের মানদণ্ড। এই বাস্তবতা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।
এখন দেখা যাক, এই উৎসব উদ্যাপন কি ইসলামের দৃষ্টিতে বৈধ না অবৈধ? প্রথম কথা হচ্ছে- আল্লাহ দ্ব্যার্থহীনভাবে কয়েকটি জিনিসকে হারাম করেছেন, সেগুলো হারাম। কিছু খাদ্য আছে হারাম যেমন- শুকর, মদ, মৃত পশু ইত্যাদি। কিছু উপার্জন আছে হারাম যেমন- সুদ, জুয়া খেলা ইত্যাদি। কিছু কাজ আছে হারাম যেমন অশ্লীলতা, রিয়া, অপচয়, অসার কর্মকাণ্ড ইত্যাদি। কিছু কথা আছে হারাম যেমন মিথ্যাচার, গীবত ইত্যাদি। বিয়ে করার জন্য কিছু নারী আছে হারাম যেমন মা, বোন, ফুপু, খালা ইত্যাদি। আল্লাহ যা হারাম করেছেন তার বাইরে যা কিছু আছে তা বৈধ বা হালাল। কোনো বিষয় (যেমন একটি উৎসব) হালাল না হারাম তা নির্ভর করে তার উদ্দেশ্য ও ফলাফলের উপর। কোনো কাজের উদ্দেশ্য বা পরিণতি যদি মানুষের অনিষ্টের কারণ হয় তাহলে সেটা কখনোই ইসলাম সমর্থন করে না। আর যদি তার উদ্দেশ্য হয় মানুষের কল্যাণ বা ইষ্টসাধন তাহলে একে হারাম ফতোয়া দেওয়ার কোনো কারণ থাকতে পারে না।
আমরা পবিত্র কোর’আনের সুরা আন’আমের ১৪১ নম্বর আয়াতটি থেকে কৃষি-সংস্কৃতির দিবস উদ্যাপন প্রসঙ্গে আল্লাহর নীতিমালা জানতে পারি। এ আয়াতে আল্লাহ বলছেন,
তিনিই শস্যক্ষেত্র ও সবজি বাগান সৃষ্টি করেছেন, এবং সে সমস্ত (লতা জাতীয়) গাছ যা মাচার উপর তুলে দেয়া হয়, এবং যা মাচার উপর তোলা হয় না এবং খেজুর গাছ ও বিভিন্ন আকৃতি ও স্বাদের খাদ্যশস্য এবং জলপাই জাতীয় ফল ও ডালিম সৃষ্টি করেছেন- যা একে অন্যের সাদৃশ্যশীল এবং সাদৃশ্যহীন। এগুলোর ফল খাও, যখন তা খাওয়ার উপযোগী হয় এবং ফসল তোলার দিনে এগুলোর হক আদায় করো। কিন্তু অপব্যয় করো না। নিশ্চয় তিনি অপব্যয়ীদেরকে পছন্দ করেন না।
এ আয়াতে তিনটি শব্দ লক্ষণীয়, (ক) ফসল তোলার দিন, (খ) হক আদায় করা, (গ) অপচয় না করা। কোর’আনের প্রসিদ্ধ ইংরেজি অনুবাদগুলোতে (যেমন আল্লামা ইউসুফ আলী, মারমাডিউক পিকথল) ফসল তোলার দিনের অনুবাদ করা হয়েছে Harvest day. আয়াতটিতে আমরা কয়েকটি বিষয় পাচ্ছি:
১. কৃষক যা কিছু চাষ করে তা ফল বা ফসল যাই হোক, সেটা কাটার দিন (ইয়াওমুল হাসাদ) এর হক আদায় করতে হবে। সেই হক হচ্ছে- এর একটি নির্দিষ্ট অংশ হিসাব করে গরিব মানুষকে বিলিয়ে দিতে হবে। ফসলের এই বাধ্যতামূলক যাকাতকে বলা হয় ওশর।
২. যেদিন নতুন ফসল কৃষকের ঘরে উঠবে সেদিন স্বভাবতই কৃষকের সীমাহীন আনন্দ হবে। এই আনন্দের ভাগিদার হবে গরিবরাও। কেননা তারা ফসলের অধিকার পেয়ে সন্তুষ্ট হবে, তাদের দারিদ্র্য ঘুঁচে যাবে। কিন্তু আল্লাহ সাবধান করে দিলেন এই আনন্দের আতিশয্যে যেন কেউ অপচয় না করে।
আমাদের দেশে ফসল কাটার দিনে আনন্দ করা হয়, বিভিন্ন ফসলের জন্য বিভিন্ন পার্বণ পালন করা হয়। উপর্যুক্ত আয়াতের প্রেক্ষিতে দেখা গেল এই দিবসগুলোতে উল্লিখিত কাজগুলো করা ফরদ। যারা একে অস্বীকার করবে তারা আল্লাহর বিধানকেই অস্বীকার করল।
পহেলা বৈশাখও ফসলি বছরের প্রথম দিন হিসাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। এখন কথা হচ্ছে, বর্তমানে আমাদের দেশে যেভাবে (Process) পহেলা বৈশাখ পালন করা হয় সেটা কী উদ্দেশ্যে করা হয়? তাতে কি আল্লাহর দেওয়া দরিদ্রের অধিকার ও আনন্দ উদ্যাপনের মানদণ্ড রক্ষিত হয়?
না। বর্তমানে পহেলা বৈশাখের নামে প্রকৃতপক্ষে যা করা হয় তার উদ্দেশ্য সম্পূর্ণই বাণিজ্যিক। আমরা জানি যে, হলি ক্রিসমাস, ঈদ, পূজা ইত্যাদি প্রকৃতপক্ষে ধর্মীয় উৎসব হলেও বাস্তবে এগুলো বর্তমানে কিছু স্বার্থান্বেষী শ্রেণির বাণিজ্যের উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেমন ঈদ আসার একমাস আগে থেকেই শুরু হয় কেনাকাটা, উৎসবের নামে ধনী ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি অপচয়ের প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়। ধর্মব্যবসায়ী কথিত আলেম শ্রেণি সারা রমজান মাস তারাবি পড়িয়ে, মিলাদ পড়িয়ে, দানবাক্সের আবাদ করে, বহু উপায়ে ‘অর্থকরী ফসল’ ধর্ম বিক্রি করে জোব্বার পকেট ভারি করেন। ঈদের বকশিশ তো আছেই। টিভি চ্যানেলগুলো ঈদকে সামনে রেখে সাতদিনের অনুষ্ঠানমালা সাজায় যার স্পন্সর আদায় করে তারা কোটি কোটি টাকা কামিয়ে নেয়। মুদি দোকান থেকে শুরু করে কোমল পানীয়, ফ্রীজ, টেলিভিশন, মোবাইল কোম্পানিগুলোর ব্যবসা ফুলে ফেঁপে ওঠে। বাজারের প্রতিটি পণ্য ও সেবার সঙ্গে যুক্ত হয় ঈদ অফার। অর্থাৎ ঈদের উদ্দেশ্য ধর্মপালন নয়, মানুষের কল্যাণসাধনও নয়, গরীবের মুখে হাসি ফোটানোও নয়, নিরেট উদ্দেশ্য বাণিজ্যিক স্বার্থ হাসিল। একইভাবে পহেলা বৈশাখের উদ্দেশ্যও বাণিজ্যিক। এই দিনে একটি ৫০০ টাকার ইলিশের দাম হয়ে যায় ৫০০০ টাকা। যারা সারা বছর বার্গার, পিজা আর হটডগ খায় তারা এই একটা দিন বাঙালি পোশাক পরে, মাটির বাসনে শুকনো মরিচ দিয়ে পান্তা-ইলিশ খাওয়ার জন্য হা-পিত্তেশ করেন। প্রতিটি লোকজ জিনিসের দাম হয়ে যায় আকাশচুম্বি। একদিনের এই বাঙালিয়ানা যেন তাদের একদিনের মাতৃভক্তি, দিন শেষ ভক্তি শেষ। এটা যে বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি তাদের অবজ্ঞা ও অবমাননারই বহিঃপ্রকাশ তা চিন্তা করার অবকাশও দিচ্ছে না বৈশাখ ব্যবসায়ীরা। আর আমাদের তারুণ্যও উন্মাদনায় মত্ত হয়ে নব্য ফিউডালিজমের তেলের যোগান দিয়ে যাচ্ছে, অনেক অশ্লীলতারও বিস্তার ঘটছে এই উৎসবকে কেন্দ্র করে। যখন কোনো সাংস্কৃতিক উৎসব পালনের নামে অন্যায় ও অশ্লীল অপসংস্কৃতির চর্চার পথ প্রশস্ত করা হয়, কোনো বিষয়ে সীমালংঘন এবং অত্যাধিক বাড়াবাড়ি দেখা দেয়, তখন প্রতিক্রিয়াস্বরূপ এর বিরুদ্ধে আলেমদের বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি হওয়াটা খুবই সঙ্গত এবং স্বাভাবিক। পাশাপাশি নিজেদের আরবীয় সংস্কৃতির বাইরে কোনো কিছুকে ইসলামী সংস্কৃতি বলে মেনে নিতে না পারার সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি এই উৎসবপালনকেই হারাম ও বে’দাত বলে ফতোয়া দিতে ধর্মবেত্তাদের অনুপ্রাণিত করছে।
কেবল ইসলামের শেষ সংস্করণ নয়, মুসা (আ.) এর উপর যে শরিয়ত নাজেল হয়েছিল সেটিতেও ছিল উৎসব পালনের নির্দেশ। আল্লাহ বলেন,
"Second, celebrate the Festival of Harvest, when you bring me the first crops of your harvest."Finally, celebrate the Festival of the Final Harvest at the end of the harvest season, when you have harvested all the crops from your fields. (Exodus 23:16)
তুমি ফসল কাটার উৎসব অর্থাৎ ক্ষেতে যা কিছু বুনেছ তার প্রথম ফসলের উৎসব পালন করবে। বছর শেষে ক্ষেত থেকে ফসল সংগ্রহ করার সময় ফলসঞ্চয় উৎসব পালন করবে। (তওরাত: এক্সোডাস ২৩: ১৬) সুতরাং ধরে নেওয়া যায় ইসলামের পূর্বের সংস্করণগুলোতেও নবান্ন বা ফসল কাটার উৎসব পালন করার হুকুম ছিল এবং সে মোতাবেকই বিভিন্ন জনপদে এই উৎসবগুলো প্রচলিত হয়েছে।
মানুষ কেবল দেহ নয়, তার আত্মা আছে। দেহের যেমন খাদ্য প্রয়োজন তেমনি আত্মার প্রয়োজন নির্মল আনন্দ। আমরা অস্ট্রেলিয়ার শিনচিলা শহরে প্রতিবছর উদযাপিত তরমুজ উৎসব বা ওয়াটারমেলন ফেস্টিভ্যালের কথা জানি। সেদিন হাজার হাজার তরমুজের রস দিয়ে একটি পিচ্ছিল পথ তৈরি করে তাতে স্কী করা হয়। একইভাবে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ফসল যেমন আঙ্গুর, টমাটো ইত্যাদি নিয়েও হারভেস্ট ফেস্টিভ্যালে অপচয়ের মহোৎসব করা হয়। আল্লাহ খাদ্য ও সম্পদের এই দানবিক অপচয়কে নিষিদ্ধ বা হারাম করেছেন, কিন্তু আনন্দ করতে বাধা দেন নি। আল্লাহ বলেছেন, “খাও, পান কর, কিন্তু অপচয় করো না; কারণ আল্লাহ তাআলা অপচয়কারীদেরকে ভালোবাসেন না। হে রসুল! আপনি বলে দিন, কে হারাম করেছে সাজসজ্জা গ্রহণ করাকে--যা আল্লাহ তার বান্দাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন?” (সুরা আরাফ ৩১-৩২)। এই মুহূর্তে পৃথিবীতে প্রায় এক বিলিয়ন মানুষ আছে যারা দুর্ভিক্ষপীড়িত। সেই সব ক্ষুধার্ত মানুষের হক আছে এই ফল ও ফসলে। এই নবান্নে, পয়লা বৈশাখের উৎসবে, চৈত্রসংক্রান্তির পার্বনে, তাদের সেই হক আদায় করা হলেই এই উৎসব হবে পবিত্র দিন। উৎসব আর ঈদের মাঝে অর্থগত কোনো পার্থক্য নেই, দুটো আসলে একই শব্দ। শুধু নববর্ষের নামে আজ যে নিদারুণ অপচয় হচ্ছে, বাণিজ্যিক স্বার্থ হাসিল করা হচ্ছে অর্থাৎ এর প্রকৃত উদ্দেশ্যকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা হয়েছে, তা না করে যদি সেই অর্থ গরিব-দুঃখী মানুষকে প্রদান করা হতো অর্থাৎ শষ্য, ফলমূল ইত্যাদি সকলে মিলে ভাগাভাগি করে খেত, তাহলে নবান্ন আর পহেলা বৈশাখ পালন এবাদতে পরিণত হতো।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:৫৭

হানিফঢাকা বলেছেন: In general, festival has no problem as long as it does not transgress the boundary set by the Almighty. The trick is, when people try to make it legal in religious boundary, they see it just like a festival and tried to prove Islam has not set any restriction on cultural festival. But they avoided all the incident/events takes place in this festival. This festival alone is not haram, but many of the events that makes it as a festival is haram.

The word Islam means Submission not peace. peace is the root word comes from Salam.

Since the believers believe the whole universe is the dominion of God, his command is supreme. As a result, any cultural practice that cross the limit set by god is prohibited, whether one obey it or not.

People tend to justify their points by reciting verse from their respective holy book, but most of the time out of context, or incomplete.

In last, for Muslim, one can enjoy any festival as long as he within the boundary of Islam set by Almighty.

২| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১২:১৯

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: আপনি কোথায় কলাম লেখেন?

৩| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ২:৫৩

উড়োজাহাজ বলেছেন: কূপমূণ্ডুক মোল্লারাই নবান্ন উতসবকে হারাম মনে করে। কিন্তু সেইসব উতসবও যে এবাদন হতে পারে তা তারা জানে না। বিষয়টি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

২০ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৪:২৩

বিদ্রহীসূত বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।

৪| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:৩৭

টি এম মাজাহর বলেছেন: ভালো লিখেছেন।

২০ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৪:২১

বিদ্রহীসূত বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৫| ১২ ই জুন, ২০১৫ রাত ১২:০৭

মোহাম্মদ জামিল বলেছেন: চমতকার লেখা..ধন্যবাদ........ উপমহাদেশ এর বেশিরভাগ মানুষ আরব্য রজনীর (কল্প, কাহিনীর) ইসলাম মতে চলে..আল্লাহ্ প্রদত্ত আসমানী কিতাব থেকে পুরো এশিয়া মহাদেশ এর মসুলিম বিচ্ছিন্ন।.....

আমরা দৌড় মুখে, বিশ্বাস পর্যন্ত..কর্মক্ষেত্রে আমরা অমুসলিম এর চেয়ে অধম আর এ সব শুধুমাত্র মূর্খতার দরুন..শিক্ষার অভাব...



৬| ১২ ই জুন, ২০১৫ রাত ১২:২১

ভয়ংকর বিশু বলেছেন: কথা সত্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.