নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আল্লাহ্‌ সর্বশক্তিমান

হার জিত চিরদিনই থাকবে তবুও সামনে এগিয়ে যেতেই হবে ।

অকুল পাথার

আমি মানুষ হিসাবে কেমন জানি না । তবে ভাল কাজ করতে না পারলেও কারো ক্ষতি করি না। অন্যায় দেখলে প্রতিবাদের ভাষা হিসাবে তৃতীয় উপায়টা বেছে নেই ( পেশী শক্তি নেই বলে)।

অকুল পাথার › বিস্তারিত পোস্টঃ

পহেলা বৈশাখ নিয়ে আমার কিছু অমিয় পাচন।(অনেকের তিতা লাগতে পারে)

১০ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:৪৫

আগামী ১৪ই এপ্রিল আমাদের পহেলা বৈশাখ। আমাদের খুশি যেন ধরে না। সেই অনেক দিন পর মানে ১ বছছর পর আমরা পাইতেছি সেই কাংখিত দিন। ১ দিনের বাঙালী সাঁজার দিন। সকালে ঘুম থেকে উঠে পান্তা ইলিশ খেয়ে দিনটা শুরু করার দিন। মাথায় গামছা বান্ধার দিন। লাল সাদা শাড়ি পড়ার দিন। অর্থাৎ বাঙালী সংস্কৃতিকে ধারন করার দিন(মনে নয় দেহে)। ইলিশ মাছের দাম আকাশ চুম্বী করার দিন।পচা পান্তা খেয়ে পেট খারাপ করার দিন। লুঙ্গি, পাঞ্জাবি আর মাথায় গামছা পড়ে কানে হেডফোন লাগিয়ে হিন্দি আর ইংলিশ গান শোনার দিন। ইন্ডিয়ান অপসংস্কৃতি থেকে প্রাপ্ত প্রায় সম্পূর্ণ পিঠ উন্মুক্ত স্টাইলের ব্লাউজ পড়ে এবং নাভি সমেত পেট উন্মুক্ত রেখে শাড়ি পড়ার দিন। আর রাতে ডিনারে চাইনিজ খেয়ে এই দিনটা শেষ করার দিন।

কতই না সুন্দর কাটে দিনটি। আপনাদের সকলের কাছে আমার প্রশ্নঃ পান্তা ইলিশ খেয়ে হজম করার জন্য কোকাকোলা খেলেই কি আমারা বাঙালী হয়ে গেলাম? ইলিশ খাওয়ার জন্য সে কি ভালবাসা। ঐ দিন ইলিশ খেতে না পারলে যেন আপনি বাঙ্গালীই নন। তার জন্য ইলিশ মাছের সে কি দাম এখনিই ২২০০ টাকা কেজি। আল্লাহই জানে ঐ দিন কত দাম হবে। নিম্নবিত্তরা দূরে থাক মধ্যবিত্তরাও ইলিশ মাছ ছুতে পারবে না। শুধুমাত্র যারা এই বাঙালী সংস্কৃতিটাকে চুলোয় উঠিয়েছে তারাই পারবে ঐদিন বাঙালী হতে। আর বাকিরা অন্য জাঁতি গোষ্ঠীর হবে হয়তো। যেমন যারা প্রায় প্রতিদিনই পান্তা ভাত খায় বা লুঙ্গি গামছা পড়ে কাজে যায় তারা ঐ দিন ইলিশের অভাবে বাঙালী হতে পারবেনা। আমিতো ঐদিন বাসা থেকে বেরই হব না কারন ২২০০ টাকা কেজি ইলিশ মাছ কেনার সামর্থ্য আমার নেই। আর ঐদিন ইলিশ মাছ না খেলে তো আমি বাঙ্গালীই না তাহলে বের হব কি জন্য। এটা তো আর আমদের অনুষ্ঠান না, এটা এখন উচ্চবিত্তদের অনুষ্ঠান। নতুন জামা কাপড় কেনার কথা না হয় নাই বললাম। আমাদের দেশটা আসলে অপসংস্কৃতিতে ভরে গেছে। দিন দিন আমরা ভুলেই যাচ্ছি আমরা বাঙালী। ইংলিশ এবং ইন্ডিয়ান অপসংস্কৃতি আমাদের যেভাবে ঘিরে ধরেছে এর থেকে মুক্তি পাওয়া দুস্কর। এভাবে চলতে থাকলে আজ থেকে ৫০ বছর পর এদেশে আর কোন বাঙ্গালীকে খুঁজে পাবেন না। পহেলা বৈশাখ তো এখনই পান্তা ইলিশ এবং নতুন জামা কাপড়ে সীমাবদ্ধ ভবিষ্যতে ঐদিন বারে গিয়ে মানুষ নাচানাচি করবে। বাঙালী সংস্কৃতি ধ্বংসের মুখে আর আমরাই নিজ হাতে এটাকে ধ্বংস করছি তিলে তিলে। আমাদের এখন আর বাংলা গান ভাল লাগে না। বাংলা গান শুনলে মানুষ খ্যাত বলবে। ভাল লাগুক বা না লাগুক কিছু বুঝি আর নাইবা বুঝি হিন্দি আর ইংলিশ গান শুনতেই হবে। অন্তত তথাকথিত স্মার্ট হওয়ার জন্য। চুলের স্টাইলটা ডেভিড বেকহামের মত হতেই হবে তাছাড়া মানুষ স্মার্ট বলবে না। এদের অনেকই জানে না ডেভিড বেকহাম কেডা। যদি বেকহাম স্টাইল করলে স্মার্ট হওয়া যায় তাহলে আমার বাসার কুত্তাটাও স্মার্ট কারন ওর পিঠের চুল গুলো অনেকটা ঐ স্টাইলের। কিছুদিন আগেও মানুষ থ্রি কোয়াটার পড়তে অসস্থি বোধ করত কিন্তু ঐদিন দেখলাম এক ভদ্রলোক হাফ প্যান্ট পড়ে রাস্তায় ঘুরতেছে(কোন বিদেশি না ১০০% বাঙালী)। আর আমাদের মা বোনেরা তো হিন্দি সিরিয়াল দেখে পুরাই ঐ স্টাইলে চলতে শুরু করে দিয়েছে। তাদের পোশাক আশাক থেকে শুরু করে চলন বলনেও ঐ স্টাইলের। দিনে দিনে পরকীয়া বৃদ্ধি পাচ্ছে অতঃপর ডিভোর্স এবং সংসারে অশান্তি ঐ হিন্দি সিরিয়ালের কল্যাণে। কারন ঐ সমস্থ সিরিয়ালে এই গুলিই দেখায় আর আমাদের মা বোনেরা ঐগুলি দেখে শিখে এবং বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করে। আমরা ১৯৪৭ পরে ১৯৭১ সালে স্বাধীন হয়েছি ঠিকই কিন্তু মনটাকে স্বাধীন করতে পারিনি তাই আজও ঐ ব্রিটিশদের এবং ইন্ডিয়ানদের অনুকরন করে যাচ্ছি অন্ধভাবে। আমরা অনুকরন করতেছি ওদের খারাপ টা ভাল টা না। তাই আমাদের এত অধঃপতন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.