নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
এ বছর লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে সিপিআইএম একটি আসনও পায়নি। চৌত্রিশ বছর পশ্চিমবঙ্গ শাসন করা দলটি এবারের লোকসভা নির্বাচনে একেবারে জিরো! বিষয়টি নিয়ে শিবু'দার খুব মেজাজ খারাপ। পশিচমবঙ্গে লোকসভার ৪২টি আসনের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে ২২টি আসন। ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) পেয়েছে ১৮টি আসন এবং কংগ্রেস পেয়েছে মাত্র ২টি আসন। সিপিআইএম পশ্চিমবঙ্গে এভাবে ধরাসাই হবার জন্য শিবু'দা দুষলেন বরং দলের নেতাদেরকেই।
জনশ্রুতি হলো- ভোটের রাজনীতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কুপোকাত করার জন্য সিপিআইএম নাকি তলে তলে বিজেপিকে সমর্থন দিয়েছে। শিবু'দা অবশ্য এমন কথা বিশ্বাস করতে রাজি নন। ওদিকে টিএমসি ভক্তদের সুর আবার আরেকটু ভিন্ন। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি'র এই উত্থানের পেছনে নাকি সফটওয়্যার কারসাজি মুখ্য ভূমিকা রেখেছে। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে নাকি সেরকম ভেলকি লাগানো ছিল! ইভিএম-এ ভোট যেখানে দাও না কেন, তা নাকি বিজেপি'র বাক্সে গেছে! এই নিয়ে তৃণমূলের ভেতরে চলছে এখন চুলচেরা বিশ্লেষণ!
আরেক দলের বক্তব্য হলো- মোদিজি গুহায় ধ্যান করতে বসে নাকি রাতারাতি ভোটারদের হৃদয় জয় করেছেন। মোদিজি'র ব্যক্তিগত ক্যারিশমায় নাকি এবারো বিজেপি গোল করেছে! কিন্তু এসব ব্যাপারে শিবু'দার সাফ কথা- ভোট শেষ! এখন রাজনৈতিক আলাপ নিষেধ! তারচেয়ে বসে বসে সা-রে-গা-মা-পা'র অনুষ্ঠান দেখাই ভালো। ভোটের আলাপটি জমে ওঠার আগেই শিবু'দা এভাবে স্ক্রু টাইট দিয়ে দিলেন!
আলু-কুমড়ো-ঝিঙ্গে মিলিয়ে শিবু'দা যে মিক্স সবজি রান্না করেছেন, তার একদম তুলনা হয় না। সাথে পটল ভাজি, বেগুন ভাজি আর ডাল। আহা আর কী চাই! শিবু'দা বললেন, আজকে কাতল মাছ রান্না করেছি। মাছ খেতে না চাইলে ডিম সিদ্ধ খাও! আমরা যেটাকে ডিমের ভুনো বলি, শিবু'দা সেটাকেই বলেন- ডিম সিদ্ধ! কিন্তু শিবু'দার সবজি এত টেস্টি হয়েছে যে, মাছ বা ডিম কিছু আর খাওয়ার মত পেটে একদম জায়গা নেই!
'৪৬ সালে নোয়াখালী দাঙ্গার সময় শিবু'দার বাবা পূর্ববঙ্গ ছেড়ে পশ্চিমবঙ্গে স্থানান্তর হন। চৌদ্দপুরুষের জন্মভিটে ছেড়ে ভারতে আসার পর পরিবারটি তখন একদম সর্বশান্ত হয়ে পড়ে। যে কারণে শিবু'দার আর স্কুলে পড়া হয়নি। তাই শিবু'দার বাবা'র সাথে কর্মজীবনে প্রবেশ ঘটেছে সেই শিশু বয়সেই। তারপর থেকে কর্মকেই শিবু'দা সর্বদা ধ্যান জ্ঞান করেছেন। শিবু'দার একটাই কথা- কর্মই আসল ধর্ম। আর কোনো বিকল্প নাই!
বাসায় ফিরতে ফিরতে শিবু'দার শেষ কথাটি মনে গেঁথে গেল। এই যে আমরা নষ্ট একটা এডুকেশান সিস্টেেমে কতগুলো বছর জীবন থেকে নষ্ট করেছি। কতগুলো বছর গেল ছাত্র আন্দোলনের নামে। কতগুলো বছর গেল এরশাদের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে। কতগুলো বছর নষ্ট হলো শিক্ষাজীবনের সেশন জ্যামে। আর এখন ঢাকার ট্রাফিক জ্যামে আমাদের কত হাজার ঘণ্টা জীবন থেকে নষ্ট হচ্ছে। তবুও আমরা এই নষ্ট সিস্টেমকে একবিন্দুও পাল্টাতে পারলাম না। শুধুমাত্র কর্মকে ধ্যান-জ্ঞান করলে এতদিনে কিছু একটা হয়ে যেত!
অথচ আমাদের জীবনের বিনিময়ে রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারকদের এসব নিয়ে কোনোই মাথাব্যথা নাই। দিনদিন তাদের বিদেশে স্বপ্নের সেকেন্ড হোম হচ্ছে। তাদের ছেলেমেয়েরা বাইরে ওয়েল এডুকেশান পাচ্ছে। আর আমজনতার উপর ছড়ি ঘোরানোর জন্য আমাদের সিস্টেমকে তারা কূটকৌশলে একেবারে বারোটা বাজিয়ে রাখছে! এই যে রাজনীতির নষ্ট ভ্রষ্ট আবর্জনায় আমরা ডুবে মরছি, এর থেকে উত্তরণের আর কী কোনো উপায় নাই! হয়তো সময় একদিন এসবের কড়ায় গণ্ডায় জবাব বুঝিয়ে দেবে!
-------------------- চলবে----------------------------
৩১ মে ২০১৯
২| ০১ লা জুন, ২০১৯ রাত ১:৪৮
চাঁদগাজী বলেছেন:
আপনি যদি বিয়ে না করে থাকেন, একটা বিয়ে করে ফেলেন।
৩| ০১ লা জুন, ২০১৯ সকাল ১১:৩২
আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: আপনার সাবলীল বর্ননাশৈলী চমৎকার লাগছে পড়তে....
চলুক....
৪| ০১ লা জুন, ২০১৯ দুপুর ১:৫৫
রাজীব নুর বলেছেন: চলুক---
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা জুন, ২০১৯ রাত ১:৩৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
আমাদের রাজনৈতিক দলের লোকেরা বৃটিশের মতো কলোনিয়েল ব্যবসা চালু করেছে বাংলাদেশে।
সমাজতন্ত্রের অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স আধুনিক বিজ্ঞান, অংক ও সোস্যাল সায়েন্সের উপর ভিত্তি করে রচনা করা হয়েছে; ৩৪ বছর সিপিএম পশ্ছিম বাংলায় ভারতের পঁচা অর্থনীতি চালু রেখে ভেবেছিলো যে, তারা সোস্যালিজমে আছে, ইডিয়টগুলো।