নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এ্যানিলার জ্বর উঠেছে,তার বাসায় থার্মোমিটার নেই যে মেপে দেখবে। গায়ে কম্বল মুড়িয়ে হাত পা দলাপাকিয়ে শুয়ে আছে। সাদা বাড়িতে থাকা মানুষটা কখনো জানতে পারেনি এ্যানিলা কতটা অসহায় ছিলো সে রাতে।
স্কুলের বাথরুমের দেয়ালে কংক্রিটের লাল রঙের কালিতে এ্যানিলার নাম ছড়িয়ে গেছে, দুর্ভাগ্য ছেলেটির,এ্যানিলা নামের পাশে নিজের নামটা লেখার জায়গাটাও রাখতে পারেনি।
সে রাত শেষ হবার কয়েক ঘন্টা আগে এ্যানিলার কপাল জুড়ে ঘাম বেরোচ্ছিলো,গলা,কাদ ভিজে একাকার। ফ্যান ছেড়ে দিয়ে কম্বল ফেলে এবার বসে পড়লো। জ্বর ছেড়ে গেছে,এবার কিছুটা শান্তি লাগতেছে।
স্কুলের বারান্দায় দাঁড়ালে সামনে একটা বড় পুকুর দেখা যায়,ঘাটলায় বসে থাকা ছেলেটি তখন ও তাকিয়ে আছে বারান্দায়।
এ্যানিলা,তোমাকে দেখতে আসি রোজ। তোমার জন্য কালো টিপ,গোলাপ কিংবা সস্তা কোন ফুল নিয়ে ও নয়। আমার তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করে,ভালো লাগে কিনা জানিনা,তবে দেখতে মন চায়। তোমার বাসার সামনে দিয়ে গেলে হাত পা শীতল হয়ে যায়,ভারী হয়ে উঠে আমার সমস্ত শরীর।
এ্যানিলা ছেলেটির নাম জানেনা,কখনো জানার চেষ্টাও করা হয়নি তার। কিছু মানুষ আছে যারা কখনো কিছু মানুষকে প্রাধান্য দেয়না,কেন দেয়না তারা নিজেরাও জানেনা। কোন ঘৃণা নেই,অভিযোগ কিংবা অভিমান ও নেই,তবুও প্রাধান্য দেয়া হয়না।
এ্যানিলার ভালো লাগতো,ছেলেটিকে না,তার কর্মকাণ্ডে। এই এড়িয়ে যাওয়া ব্যাপারটার যেমন কোন কারণ নেই তেমনি এই ভালো লাগাটার ও কোন কারণ নেই। অযথাই বলা যেতে পারে,এই গ্রহে অনেক কিছুই ঘটে যায় যার জন্য কোন কারণের দরকার পড়েনা...
কয়েকদিন ধরে এ্যানিলা ছেলেটিকে আর দেখেনা,হয়ত আর কখনো দেখতেও পাবেনা। অবহেলা কিংবা প্রকাশ করার জড়তা দু'টি বিষয় কখনো বোঝা যায়না,এভাবে হারায়,এভাবে হারিয়ে যাবে। অনেকগুলো বছর পেরিয়ে আবারো মনে পড়বে তাকে,চলন্ত বাসে কিংবা অফিসের বোর্ড মিটিং এ অথবা বৃদ্ধ বয়সে হাসপাতালের বেডে।
©somewhere in net ltd.