নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হইচই, হট্টগোল এড়িয়ে চুপচাপ, নিরিবিলিতে লুকিয়ে থাকতে ভাল লাগে।

রিম সাবরিনা জাহান সরকার

যা-ই লিখি, কাঠবিড়ালীর মত এখানে জমিয়ে রাখি। https://rimsabrina.blogspot.com/

রিম সাবরিনা জাহান সরকার › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোরাল দ্বীপের হীরা-পান্না-৩ (শেষ পর্ব)

২৮ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৩:৪৩



৮.
ডিম-পরোটার উপরে এমনিতেই নাস্তা হয় না। সাথে আলু ভাজি থাকলে এই দুনিয়াবি নাস্তাই বেহেশতি চেহারা পায়। ঠেসে-ঠুসে খেয়ে দেয়ে মন আবেগে টইটুম্বুর। বাঙ্গালির মনের বাস তার পেটে। কে যেন কবে বলে গিয়েছিল। ষোল আনা সত্য কথা।

ফুরুফুরে মনে আবার বেরিয়ে পড়লাম। তবে তার আগে ছোট খাট একটা মেডিক্যাল ক্যাম্প বসে গেল। ভাইয়া আর আপু তাদের ডাক্তারি বিদ্যার জাদুবলে চাচার হাঁপানীর ওষুধ বদলে দিল। আড়াল থেকে আমাদের ভাল-মন্দ রেঁধে খাওয়ানো ইয়াসীরের মায়ের হাড়ের সমস্যার উপায় বাতলে দেয়া হল। আরো কতগুলো লোকজনও এসে দাঁড়িয়েছে। তাদেরও কিছু কিছু গতি করে ঝটিকা ক্যাম্পটা গুটিয়ে ফেললাম আমরা। আমার মায়ের আশা ছিল তার ছেলে বিধানচন্দ্র-টাইপ ধনন্তরি ডাক্তার হবে। বিধানচন্দ্র না হলেই বা কি। লোকগুলোর চোখ-মুখে কৃতজ্ঞতার ছাপের দামও তো কম না। বেড়াতে আসা শহুরে ডাক্তার আর তার ডাক্তার বউ তাদের যত্ন নিয়ে দেখেছে। তারা যারপর নাই খুশি। চাচা এগিয়ে এসে ভাইয়ার হাতে আলতো চাপ দিয়ে কথা আদায় করে নিল, আবার যেন আসি। গেস্টহাউসটা সামলে রাখা এই পরিবারের সবাই অনেকটা এগিয়ে এসে বিদায় দিল আমাদের। সরলতার আরেক নাম বোধহয় বাংলাদেশের মানুষ।

সাগরতীর ধরে না হেঁটে অনেকটা ভেতর দিয়ে যাচ্ছি। বামে তরমুজের ক্ষেত আর ডানে ধান মাড়াই চলছে। মাঝে ক্ষেতের আল। তাতে ধূলা উড়িয়ে ছুটছে রন আর তাফসু মিয়া। যেন মাত্রই খাঁচা থেকে পালিয়েছে। এখন দৌড়ে জান নিয়ে পালতে পারলেই বাঁচোয়া। এক-আধটা মহা বিরক্ত ছাগল ঘাস চিবানো রেখে অনিচ্ছায় পথ ছেড়ে দিচ্ছে। ফেরারী আসামী ধরতে আমাদেরও পড়িমড়ি ছুটতে হচ্ছে।

গাঁয়ের মেঠো পথে দৌড়ে আত্মহারা লাগছে। শিকড় খুঁজে পাবার আনন্দে আত্মহারা। হঠাৎ ছবির মত শান্ত একটা বিল দেখতে পেলাম। তার জলেও কোরাল উঁকি ঝুঁকি। ক্যানভাসে আঁকা নিঁখুত ছবির মত দৃশ্যটা ক্যামেরাবন্দী করে নিলাম সযত্নে। বিল ছাড়িয়ে আরো এগোতে দেখি কার যেন খড়ের গাদায় অলস গরু জাবর চিবাতে ব্যস্ত। তার ব্যস্ততায় হানা না দিয়ে কি ভেবে খড়ের গাদা দুই হাতে জাপটে ধরলাম। খড়ের মাঝে ধান-ধান ঘ্রান। চট করে ঘ্রানটা সেই যে মাথায় ঢুকে পড়ল, আর বেরোলো না।

বিল পেরিয়ে, গরু ডিঙ্গিয়ে, কার উঠানের হাস-মুরগী তাড়িয়ে শেষতক এসে থামলাম তীরের কাছ ঘেঁষে। সৈকতটা লোকালয়ের খুব কাছে অথচ একেবারে জনমানবশূন্য। কিন্তু চেনা-জানা পৃথিবীর কোন কিছুর সাথে এ জায়গার তো মিল নেই। সাগর এখানে তার আপন মনে আছড়ে পড়ছে। কোরালের ভেসে থাকা শরীরের গাংচিলের জটলা। কেয়া গাছের সারিকে সাক্ষী মেনে বৈঠাবিহীন একটা একলা নৌকা নির্বিকার পড়ে আছে। ছুটে আসা ঢেউয়ের ফেনিল ফনায় তার কিছু আসে যায় না।

চিরচেনা পৃথিবীর বাইরে ছিটকে পড়ে আমাদের বিস্ময় আর কাটে না। দুটো কৌতুহলী ছেলেমেয়ে পিছু পিছু এসেছে। এই সৈকত তাদের কাছে গাঁয়ের পেছনের পুকুরপাড়। এই দেখে লোকগুলো এমন বোবা হয়ে গেল কেন, তাদের ছোট মাথায় ব্যাপারটা খেলছে না। কাঁধের বোঝা আর পায়ের চপ্পল নৌকাটায় চাপিয়ে পান্নারঙ্গা ঢেউয়ে পা ভেজাতে নামলাম আমরা। নরম বালুতে নাম লিখে আবার জলের কালিতে মুছে দিয়ে হা হা হাসিতে নিস্তব্ধ সাগরতীর কাঁপিয়ে স্বাদ নিলাম অদ্ভূত ছেলেমানুষীর। বঙ্গোপ্সাগরের এই ছোট্ট বিন্দুর মত দ্বীপের ছোট্ট এই তীরে জগতের সমস্ত সৌন্দর্য্যের যে অর্ধেকটাই লুকানো আছে, সেই কথা আমরা ছাড়া আর কেউ জানলো না। স্থানীয়দের আদর করে দেয়া নাম তিলোত্তমা আসলেই এক তিলোত্তমা, স্বর্গের জলপরী। স্রষ্টা স্বর্গ থেকে অফুরান মনিমানিক্য ছড়িয়ে দিয়েছে এই বালুকাবেলায়।

৯.
তল্পিতল্পা গুটিয়ে আবার শুরু হল হন্টন। আমাদের ভ্রমনের দ্বিতীয় গেস্টহাউসে পৌঁছাতে পৌঁছাতে খিদেয় সেদ্ধ হয়ে গেলাম। ক্লান্তিও ঝোঁপ বুঝে কোপ মারছে এই সুযোগে। ছাউনির নিচে সবাইকে বসিয়ে হাতে ডাব ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। ধাতস্থ হয়ে ঠিক করলাম, জোয়ার থাকতে থাকতেই আবার সাগরে যাবো। দেখা গেল এই গেস্ট হাউসের প্রস্তুতি বেশ ভাল। তাদের সংগ্রহে স্কুবা ডাইভিংয়ের সরঞ্জাম আছে। সেখান থেকে কয়েকটা আন্ডার-ওয়াটার গগলস্ নিয়ে খিরকির দরজা দিয়ে বেরিয়ে দেখি, আরে ঐ তো দূরে তিলোত্তমা দেখা যাচ্ছে।

কেয়ার কাঁটা আর কাঁধ সমান ঝোঁপ পেরিয়ে অনায়াসে পেরিয়ে পৌঁছে গেলাম ওপাশে। জোয়ারের বড় বড় ঢেউ দেখে বাচ্চাদের নামতে দেয়া হল না। তাদেরকে আমার জিম্মায় দেয়া হয়েছে। সঙ্গে নিয়ে আসা খেলনা শাবল আর বালতি দিয়ে আগ্রহ নিয়ে বালুর দূর্গ বানাচ্ছি। কাছেই রুমিকে হাওয়া খেতে দেখা যাচ্ছে। পানিতে নামে নি সে। এই বেড়ানোর কোন কিছু নিয়ে তাকে ভাবতে হচ্ছে না। ভাইয়া-আপু তাকে মানিব্যাগও ছুঁতে দিচ্ছে না। সে ব্যাপারটাকে “ডিফল্ট” জামাই আদর ভেবে নিয়েছে রাশভারী মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এখানে এসে সে খুশি হয়েছে নাকি বেজার, সেটা বোঝার উপায় নেই। দশজনের আনন্দের প্রকাশ যে এক রকম না, সেটা প্রমান করতে সে হঠাৎ বাঁই বাঁই করে এক দিকে দৌড়ানো শুরু করেছে। অথচ দৌড়ানো তার দু’চোখের বিষ। ডেকে লাভ হল না। সে মেঠো ইঁদুরের গতিতে দৌড়ে মিলিয়ে যাচ্ছে। এই চৌষট্টি হাজার বর্গমাইলের পুরোটাই তার। এর তীর ঘেঁষে সে একবার ঘুরে আসতে চায়।

তাফসু মিয়া তার বালুর কেল্লা হেলায় ফেলে বাবার পিছু নিয়েছে। ভাইয়া-আপু আর রেন পানি ছেড়ে উঠে এসেছে এর মাঝে। রনকে মায়ের কাছে গছিয়ে আমিও বাবা-ছেলে বরাবর ছুটলাম। শন শন বাতাস কেটে দৌড়াচ্ছি। নাকি উড়ে যাচ্ছি? এত স্বাধীন কখনো লাগে নি।

দুইজনকে শেষ মেষ বাগে পেয়ে ফিরিয়ে এনে ছানাবড়া চোখে দেখি এদিকে আরেক কান্ড। রন-রেন দুই ভাইবোন মিলে ভাইয়াকে ভাস্কর্য বানিয়ে ফেলেছে। কাজটা ভেজা বালু চেপে চেপে নিখুঁতভাবে করা হয়েছে। গালে হাত নিরুপায় বসে থাকা ভাইয়াকে অগাস্ট রোনে রদ্যাঁ’র ‘দ্যা থিংকার’-এর মত লাগছে। এই বিখ্যাত ফরাসী ভাস্করের সাথে তার নামের মিল আছে। দুইজনের নাম রোনে। ফ্রান্সে জন্ম নেয়ায় ভাইয়ার নাম নিয়ে যথেচ্ছা কেরিক্যাচার করা হয়েছে। চার শব্দের নামের অর্ধেকই ফরাসী। বছর চল্লিশের আগে মায়ের পিএইচডি গাইড আর হাসপাতালের ডাক্তার কি ভেবে দারুন উৎসাহে নিজেদের নাম উপহার হিসেবে গছিয়ে দিয়েছিল। উপহারের ঢেঁকি গিলে তার নাম গিয়ে দাঁড়িয়েছে ‘রোনে সুজন ক্লোদ সরকার’। বেচারার জীবনটাই গেছে জনে জনে নামের ব্যাখ্যা দিয়ে।

গেস্টহাউসের ছাইনিতে বসে সবাই অল্প বিস্তর ঘামছে। ফর্সা হওয়ায় ঝুমু আপু আর রুমির গাল-কপাল আপাতত টকটকে লাল টমেটো। ভাইয়া আর আমি আগ্রহ নিয়ে তাই দেখছি। আমরা দুই বর্নবাদী ভাই-বোন খুঁজে খুঁজে ফর্সা লোক বের করেছি। খুব বড় দাও মারা গেছে। খাটিয়ে রাখা হ্যামকগুলোতে হাত-পা টান টান করতে করতে এক ধরনের আত্মপ্রসাদ নিয়ে ভাবছি আমরা। একটু পরেই অবশ্য বোঝা গেল কে আসলে দাও মেরেছে। আমাকে দেখা গেল এই দুদিনের আধোয়া কাপড় ধুয়ে চিপিয়ে চিপিয়ে গেস্টহাউসের তারে শুকাতে। ভাইয়াকেও লাগিয়ে দেয়া হয়েছে রনকে গোসল দেবার কাজে। ওদিকে ফর্সা দুজনকে হ্যামক দখল করে আধবোজা চোখে গেস্টহাউসের দারুন সাউন্ড সিস্টেমে নব্বইয়ের দশকের ইংরেজি গান শুনতে দেখা গেল। জর্জ মাইকেল আর পিঙ্ক ফ্লয়েড গানের ব্যাকগ্রাউন্ডে কাপড় নাড়তে অবশ্য অতটা খারাপ লাগলো না। আমার।

১০.
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা। ঝুমু আপুর চাপাচাপিতে বাগানে কেটে রাখা কোর্টে বাডমিন্টন চলল খানিকক্ষন। তাকে দেখে এখন কে বলবে যে তার সারা দিন কাটে রোগীদের হাড়-গোড় কেটে বা জুড়ে দিয়ে। অর্থোপেডিক সার্জনের ভারী তকমাটা খুলে সে খোলা চুল উড়িয়ে ছোট্ট মেয়ের উচ্ছ্বাসে খেলছে। যার যার যাপিত জীবনের বোঝা আমরা ঢাকায় রেখে এসেছি। এখানে আর আনি নি। এদিকে, খেলাটা একদম না জানা রেন দশ মিনিটের মাথায় দুর্দান্ত চাপ মেরে আমাকে বসিয়ে দেবার যোগাড় করছে। এক কোনে তাফসু মিয়া আর রন খুব মনোযোগে দাবার ছক নিয়ে বসেছে। তাফসু মিয়া ইচ্ছেমত রাজা-মন্ত্রী উল্টে দিচ্ছে তো রন হাতি-ঘোড়া ছুটিয়ে রাজার ঘাড় মটকানোর তাল করছে। এমনতর দাবা খেলা দেখলে দাবার আসল রাণী, রাণী হামিদ বোধহয় হাত কামড়ে মরে যেত।

একটা দুইটা করে তারা ফুটতে শুরু করেছে সন্ধ্যা পেরোনো রাতের আকাশে। খেলাধূলা শিকেয় তুলে আমরা আকাশ দেখতে বেরোলাম। গোটা কয়েক তাকিয়ে পেতে দিয়েছে গেস্টহাউসের হাসিখুশি কেয়ারটেকার। তাতেই গ্যাঁট হয়ে শুয়ে আছি আকাশের দিকে মুখ করে। সেই মুখ আমাদের হা হয়ে গেল পর মুহূর্তেই। হীরার কুচি ছড়ানো এই চাঁদোয়া আবার আকাশ হয় কেমন করে?

রেন আর আমি এক সাথে আকাশ দেখছি। সে আমার ভক্ত। আমিও তার কড়া ভক্ত। এক রেখায় ভেসে থাকা বড় বড় তিনটা তারার দিকে তাক করে রেন দেখালো, ‘রিম, ঐ যে অরিয়ন’স বেল্ট’। কালপুরুষ ইত্যাদি তার মুখস্থ। তার দু’টা বিষয়ে ব্যাপক আগ্রহ। এক, মিশরীয় মমী আর দুই, গ্রহ-নক্ষত্র। আশেপাশে মিশরীয় কি দেশীয় মমী বা তাদের ভূত না থাকার কারনে সে তার আকাশবিজ্ঞানের জ্ঞান কপচানোর ধান্দায় আছে। আচমকাই কালপুরুষের হাতের বাঁকানো ধনুক থেকে একটা তীর ছুটে যেতে দেখলাম মনে হল। ইংলিশ মিডিয়ামের রেন আর বাংলা মিডিয়ামের আমি প্রায় এক সাথে ‘শ্যুটিং স্টার’ আর ‘তারা খসা’ বলে চেঁচিয়ে উঠলাম। আরো কতগুলো তারা খসিয়ে বিশাল এক চাঁদ উঠেছে। আগের দিনে উত্তম-সুচিত্রার সিনেমায় বোম্বে থেকে বিশাল গোল লাইট এনে কায়দা করে ঝুলিয়ে চাঁদ বানানো হত। এই চাঁদকে দেখে মনে হচ্ছে তাকেও হালের মুম্বাই থেকে আনানো হয়েছে। তারা খসাদের ‘শ্যুটিং’ শেষ হয়ে গেলে বাতি নিভিয়ে সরিয়ে নেয়া হবে।

১১.
এই দুই দিনে কোরাল দ্বীপের সৌন্দর্য্য খেয়ে মন ভরেছে আর পেট ভরেছে সাগরের দারুন স্বাদের মাছ, কাঁকড়া আর লবস্টার খেয়ে। মন-পেট পুরে তৃপ্তি নিয়ে আজকে ফেরত যাচ্ছে আমাদের দলটা। আবারো সেই স্পিডবোট। আবারো আগুনরঙ্গা লাইফ জ্যাকেট। পার্থক্য একটাই। সাগর মারাত্মক উত্তাল। ঝাঁকি খেয়ে আমাদের অবস্থা হল কাঁচের জার থেকে ছলকে পালানো মাছের মতন। একেবারে ফিশ আউট অব ওয়াটার। এই বুঝি স্পিডবোট চার টুকরা হয়ে ছড়িয়ে পড়ে আর আমরা ভাঙ্গা পাটাতন আঁকড়ে ভাসতে থাকি। এর ভেতরে রন আর তাফসু হো হো করে হাসছে। তাদের ‘ন ডরাই’ ভাবভঙ্গিতে সাহস খোঁজার চেষ্টা করছি। কারন, ভয়ে একেকজনের কিডনী গলে যাবার মত অবস্থা।

নাফ নদীতে এসে হাঁফ ছাড়া গেল অবশেষে। স্পিডবোটটা স্পিড কমিয়ে মামুলি বোট বনে গেছে। কাছেই সাদা বকের মেলা বসেছে জেগে ওঠা ছোট ছোট চরে। দেখলাম আকারে বড় এক বককে ঘিরে সভা বসিয়ে দিয়েছে তারা। হুমদো বড় বকটা ভাষন দিচ্ছে, ‘ভাইয়েরা আমার, এলাকার এক বিশিষ্ট বক ধার্মিক আমি। আপনাদের দোয়ায় এবার পালক মার্কায় দাঁড়িয়েছি। আমার চরিত্র পালকের মতই সফেদ। ভোটটা আমাকে দিতেই হবে-এইটা কিন্তু ছোট ভাইয়ের আবদার,... ইত্যাদি।‘ সভার সামান্য তফাতে বুড়ো এক মদনটাক খুব উদাস মুখে কি যেন চিবোচ্ছে। কত সাদা-কালো পালক এল-গেল। সব তার দেখা আছে। দুটো গাংচিল এসে টাকে ঠোকর দিয়ে গেলেও তার কোন প্রতিক্রিয়া দেখা গেল না। মদনটাক ভাইকে আমাদের খুব ভাল লেগে গেল।

ঘাটে নেমে দূরে দৃষ্টি ছুড়ে দিলাম। যদি কোরাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন্সকে আবার দেখা যায়। কিন্তু দেখা গেল না। ঢেউয়ের আড়ালে মিলিয়ে গেছে। মিলিয়ে গেলেও কোরাল দ্বীপের হীরা-পান্না আমাদের স্মৃতির কুঠুরিতে চোখ ধাঁধাঁনো এক গুপ্তধন হয়ে থাকবে বহুদিন। (সমাপ্ত)

-রিম সাবরিনা জাহান সরকার
মিউনিখ, জার্মানি

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:২০

রাজীব নুর বলেছেন: এটা শুধু ভ্রমন কাহিনি নয়, সুন্দর গল্পও।

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৩:০৭

রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব ভাই। ভাল আছেন আপনি? মাফ করবেন দেরিতে উত্তর দেবার জন্যে।

২| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:৩১

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: কোরাল দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে যেমন আপনাদের মন ভরেছে তেমনি পড়ে মন ভরেছে আমাদের মত পাঠককুলের। দ্বীপে কি কি মাছ খেলেন সেটা লিখলে ও ছবি দিলে আমরাও তার স্বাদ আস্বাদন করতে পারতাম। দারুণ উপভোগ্য ভ্রমণ কাহিনীতে ভালো লাগা রইলো।
শুভেচ্ছা নিয়েন।

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৩:১২

রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: সালাম নেবেন। কেন যেন মনে হয় খানা-খাদ্যের বর্ননায় ভ্রমন কাহিনী স্থূলতা পায়। তাই সযত্নে এড়িয়ে যাই। তবে মাথায় রাখলাম ব্যাপারটা। বিলম্বে উত্তরের জন্যে ক্ষমাপ্রার্থী।

৩| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:৩৫

পদ্মপুকুর বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন। আপনার ভায়ের নামটা প্রথমআলোতে দেখে জানতে চেয়েছিলাম, ওখানে কিছুই বললেন না, এখানে দিব্যি দুই প্যারা ফেঁদে ফেললেন!!! ভালো। কিছুদিন আগে আমি নিজেই একদঙ্গল বন্ধুবান্ধবী নিয়ে সেন্টমার্টিন্স ঘুরে আসলাম, মাছ-ডাব খাওয়া ছাড়া বিশেষ কোনো কিছু দেখতে পারলাম না আর আপনি কিভাবে যেনো আমাদের গল্পগুলোও জেনে লিখে ফেললেন.... ভালো ভালো।

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৩:১৭

রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: ব্লগের মন্তব্যগুলো গুরুত্ব দিয়ে নেই। ফিডব্যাকগুলো কাজে লাগানোর চেষ্টা থাকে। ঐ দুই প্যারা আপনার মন্তব্য আর জিজ্ঞাসার ফসল। ধন্যবাদ জানবেন। আর দেরিতে উত্তর দেবার অপরাধ মাফ করবেন।

৪| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:০৮

নেওয়াজ আলি বলেছেন: অনুপম,

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৩:১৮

রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই নেওয়াজ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.