নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সমরেশ মজুমদারের একটা বিখ্যাত বই “গর্ভধারিণী” পড়েছিলাম। বইটা আমার কাছে এক কথায় অসাধারণ লেগেছে। ভাল লাগার কারণ অবশ্য আছে, কাহিনীর মধ্যে আমি নিজেকে খুঁজে পেয়েছিলাম। হারিয়ে গিয়েছিলাম এক অন্য জগতে। আমার ভিতর লুকিয়ে থাকা অনেক ইচ্ছার সাথে মিল পেয়েছি নির্দ্বিধায়। উপন্যাসে মূল চরিত্র চার বন্ধুকে নিয়ে। তারা এ বর্তমান সমাজের প্রতিচ্ছবি । জইতা, সুদিপ , আনন্দ আর কল্যাণ । কখনও তাদের মাঝে আমি দেখেছি আমার বন্ধুদের। লেখকের লেখা আমার মনকে ছুঁয়ে গেছে। উপন্যাসের চার বন্ধু ভিন্ন ভিন্ন সামাজিক পরিবেশে বেড়ে উঠেছে । তাদের নিজেদের ব্যক্তিজীবন আলাদা কিন্তু তাদের লক্ষ্য ,উদেশ্য,চিন্তা এক। তারা চেয়েছিল সমাজের খারাপ লোকগুলিকে ছেঁটে ফেলতে। নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করতে। যেখানে কোন প্যারাডাইসের মত বড়লোকদের অনৈতিক কাজের বিনোদন থাকবে না, থাকবে না ভেজাল ওষুধের কারখানাই লিপ্ত দেশের মাস্তান। সরকারের নানান নাটকীয়তা অত্যন্ত বিচক্ষণ এবং রসালভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আজকের দিনে যে ভাবনা গুলি আমরা ঘরে বসে অহরহ ভাবছি ঠিক সেই ভাবনার বাস্তবিক রূপ দিয়েছেন তিনি। প্রতিটা মানুষের মত আমারও কিছু ইচ্ছা আছে। আমার ইচ্ছা, যদি কোনদিন সম্ভব হয় আমি একটা লাইসেন্স রিভেলভার কিনব। মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে কিছু দুস্ট লোকদের যদি এভাবে মেরে উরিয়ে দিয়ে দেশে শান্তি মিলানো যেত ! চুরি করে, ডাকাতি করে কিংবা বিনা অপরাধে খুন করে মানুষ দিব্যি দিনের পর দিন লোকের সাথে এক রাস্তায় এক আবাসে বাস করছে। অথচ কিছু সমাজের কুচক্রী, অসুস্থ, লম্পট রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী , উঁচু স্তরের ব্যক্তিবর্গের বিপক্ষে গিয়ে যখনই কেউ কিছু প্রতিবাদ করেছে তখনই তাদেরকেই আইনের চোখে নজরবন্দী করা হয়েছে। এই চার বন্ধু তাই সেই আগাছেকে ছেটে পরিস্কার করতে গিয়ে পলিশের চোখে বন্দি হয়েছে। তবু তারা ভয় করেনি, ভয় করেনি ধরা পরলে তাদের জেল হবার কিংবা মৃত্যুদন্ডের। বইটি পড়ে আমি তাদের মত এক জন হতে চেয়েছি। আমার ইচ্ছা করেছে এভাবে সমাজের কল্যাণে কিছু করতে। অন্তরের প্রবৃদ্ধি কয়েকশো গুন বেরে গেছে বইটি পড়ে । কিন্তু এই গুটিকয়েক শয়তানকে শেষ করে আসলে কি সমাজে শান্তি মিলবে ? না, কখনই না বরং রক্তবির অসুরের মত একটাকে শেষ করলে হয়ত একশো টা বৃদ্ধি পাবে। বাড়বে নানা অশান্তি। তাই উপন্যাসের চরিত্রগুলির শুরু হয় নতুন করে পথ চলার প্রয়াস । তারা এক বিস্তির্ন্য লোকালয়ে যেখানে সভ্যতার কোন ছোঁয়া তখনও পৌছাইনি, যেখানে ধনী গরিবের ভেদাভেদ, নেই কোন জাতের বালাই সেখানে এক নয়া দিগন্তের সূচনা ঘটাতে চায়। তাদের আত্মত্যাগ,অধ্যাবসায়,সম্মিলিত প্রচেষ্টা শেষ মেশ সাফল্য হতে সাহায্য করে। তাদের এই বহুদিনের ইচ্ছা বাস্তব জলজ্যান্ত প্রতিছবি আকারে দেখা দেয়। তাদের কাছে তখন ব্যাপারটা অবিশ্বাস্য ধরলেও, হৃদয়ে আনন্দের পরশ বইতে লাগে। উপন্যাসের মত হইত আমার পক্ষে বিরল যায়গা বের করা সম্ভব না যেখানে সভ্যতার ছাপ পরেনি। কিন্তু আমি নিশ্চিত বলতে পারি জনগণের টনক নাড়াতে, চাইলে আমরা যুব সমাজ অনেক কিছুই করতে পারি। আমদের মধ্যে সাহস সঞ্চার করে সকল বাধাকে উপেক্ষা করে চলার পথকে সাবলীল করতে হবে। হয়ত আমদের বাবা মা আপনজন মাঝে লুকিয়ে থাকা সেই কীটকে প্রত্যাহার করার অঙ্গীকারবদ্ধ হতে হবে। উপন্যাসে লেখক চার বন্ধুর আপনজনের ভিতরেই অন্যায় অনিয়মের যে ধারণা দিয়েছেন তা থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান যে আমাদেরকেও স্বজনপ্রীতি ত্যাগ করতে হবে। অন্যায়ের সাথে আপোষ না করে সাহসের সাথে প্রতিবাদ করতে হবে। উপন্যাসটা আমি নিজে পড়ে বার বার শুধু ভেবেছি, অনুপ্রানিত হয়েছি , আমার সারা শরীরে রক্তে শিহরিত হয়েছে। তাই সবার সাথে শেয়ার করলাম। শুধু আখ্যিক ভাবে না আমি চাই সবার জীবনেই সেই সৎইচ্ছা বিস্ফোরিত হোক। সমাজকে কলুষিত হওয়া থেকে আমাদের ভুমিকা অনিবার্য ।
( বিঃ দ্রঃ – যারা পড়েননি দেরি না করে পড়ার অনুরোধ করলাম)
২| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৩
চিত্রা নদীর পাড়ে বলেছেন: শুনে খুব ভাল লাগল শামিম ভাই
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩২
লেখাজোকা শামীম বলেছেন: পড়েছি। ভালো লেগেছে।