নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রায় তিন মাস আগে আমাদের পাড়ায় এক কুকুরের আবির্ভাব হয়। কুকুরটি বয়স এক থেকে দের বছরের বেশি হবে না। শারীরিক অবস্থা ছিল খুব খারাপ। অন্যান্য কুকুরের মত ও খাবারও পেত না তেমন। হঠাৎ একরাতে আমার খালাতো বোনের বাসায় গেলে ওকে বারান্দা দিয়ে অসহায়ের মত বসে থাকতে দেখলাম আমরা। মুহুর্তের মধ্যে আমরা মায়ায় জরাই গেলাম। তারপর ওকে লক্ষ্য করে কয়েকটা বিস্কুট ছুড়লাম নিচে। কুকুরটা খুব কৌতুহলের সাথে খেল। আমরা ভাবলাম ওকে এভাভেই খেতে দিব। পর পর এক সপ্তাহ আমি, কখনও আমার বোন ওকে ভাত, রুটি , বিস্কুট নিচে গিয়ে খেতে দিতাম। পাড়ার কিছু অসুস্থ মস্তিষ্কের লোক আমাদের এই ওকে আদর করে খাওয়ানোটা পছন্দ করত না। আমাদের খাওয়া দেওয়াই বরং কুকুরটিকে মারত। তাই দেখে আমাদের মনে অনেক দুঃখ লাগত। আশ্চর্যরের ব্যপার ও শুধু মারই খেত কিন্তু কাউকে পাল্টা আক্রমণ করত না। অবশেষে আমরা ওকে খাবার দেওয়া বন্ধ করলাম, কেননা আমরা ওকে খাবার দেই তাই সবাই মারত। আর সেটা আমদের ভব লাগছিল না। কটাদিন বাসায় বসে ভাবছি ইস! কুকুরটা বুঝি না খেয়ে আছে, যাব কি? মনে মনে আমরা চাইতাম ও যেন নিজেই খাবারের ব্যবস্থা করে ফেলে। আমাদের চাওয়াটা বাস্তবে পরিণত করল ইভান আর চিসতি নামের দুইটা পাড়ার ছোট ভাই। ওরা নিয়ম করে কুকুরটিকে খাবার দিতে লাগল। ও হয়ে উঠল আমাদের আদরের কুকুর টমি।
ইভান ভাইয়া টমি নামটা রাখল। ও অস্টম শ্রেণীর ছাত্র । চিশতী রোজ রাতে ওকে খাবার খেতে দিত। গলাই একটা রসিও দিল। বেশ কয়েক সপ্তাহে টমি বলবান আর রোগশূন্য হয়ে উঠল। পাড়ার আরও কিছু ছেলেরাও ওকে আদর করত আর ডাক দিয়ে খাওয়াত। ছোট ছোট বাচ্চারাও ও সাথে খেলা করতে চাইত। টমি খুব আল্লাদি ছিল। ও শুধু আমদের দেখলে ছুটে আসত আদর পেতে আর আমাদের আদর করতে। কোন ধরণের চিৎকার অস্বাভাবিক আচরণ ও মধ্যে ছিল না। He was really a good boy as well as good manner.
এদিকে আমি আমার বোন ওকে রাস্তায় দেখলে আদর করে কখনও রুটি খেতে দিতাম। দুইদিন ও আমার পিছে আমার বাসা অবধি আমাকে রেখে গেছে। কিন্তু টমি এভাভে আমাদের সবার মাঝ থেকে চলে যাবে আমারা ভাবতেও পারি নাই।
২রা ডিসেম্বর রাতে চিশতীর বাসায় টমিকে গলাই ফাসি দিয়ে মেরে ঝুলিয়ে রেখে যাই এক হৃদয়হীন পাষণ্ড। এই ঘটনা আমাদের কানে আসতেই নিজেকে খুব অপরাধী বলে মনে হতে লাগল আমাদের। একটা পশু যার কোন দোষ নেই তাকে কিভাবে একটা মানুষ মেরে ফেলতে পারে। হ্যাঁ আজ সর্বত্রই হইত নিরীহ মানুষের প্রাণ চলে যাচ্ছে কিন্তু তাই বলে এই কুকুরটি কি দোষ যাকে মরতে হবে। একটা নিরীহ প্রাণীকে এভাভে মেরে ফেলাও তো অপরাধ নাকি এটা কোন পাপই নেই? ঈশ্বরের সৃষ্টি কি কুকুর না? তাহলে কেন এভাভে কিছু অমানুষ অকারণে ওদের নির্যাতন করে। সত্যি সেদিন খুব কেদেছি টমির জন্য। টমিকে আর পাব না কিন্তু এমন কিছু করতে হবে যাতে এ রকমের কাজ পুনরায় না হয়। অপরাধ করলে ক্ষমা করা যাই , কিন্তু শাস্তি পেতে হয় । তাই আমরাও সেই জঘন্য কর্মকাণ্ডে লিপ্ত লোকটির শাস্তির চেয়েছি। চিশতী তাই ফেসবুকে সাহায্যের জন্য হাত বাড়াই সাথে আমি আমার বোনও তাদের যথাযত পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানাই। অবশেষে গতকাল বিকাল ৪.৩০ অভয়অরণ্য নামে এক সংস্থা এসে লোকটিকে থানায় নিয়ে যায় । প্রায় ৪,৫ ঘন্টা থানায় রেখে তার পরিবারের কথায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। লোকটির দুই ছেলেমেয়ে আছে তাই আমরা অতটা তার মত নির্দয় হলাম না। হইত আইনে এখনও কোথাও নিরীহ জীবের হত্যার সুনির্দিষ্ট সাজা আমাদের দেশে নেই। আমরা চাই জনগণের মধ্যে সচেতনতা আসুক। মানুষের সাথেও আমাদের আশেপাশের পশু-পাখিরাও পরিবেশের অঙ্গ সেটা আমদের বুঝতে হবে।
(বিঃদ্র- নিচের কিছু লিঙ্ক দিলাম যা এই পোস্টের জন্য উপযোগী)
Click This Link
Click This Link
২| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:০২
সুমন কর বলেছেন: শিরঃনাম দেখে পোস্টে ঢুকলাম, কিছুটা পড়ে বুঝার পর আর পড়লাম না........
৩| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:১৪
চিত্রা নদীর পাড়ে বলেছেন: সুমন কর ভাইয়ের কি আমার পোস্ট দেখে মাথা গরম হয়ে গেল? হতাশ হলেন পড়ে যা বুঝলাম...
৪| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৩৩
চিত্রা নদীর পাড়ে বলেছেন: তামিম ইবনে ভাইয়া আপনি ভুল বলেন নাই আবার একদম ঠিক ও না। আজকাল শুধু মানুষ হত্যার জন্য লেখাই হয় আর টকশোতে কথা। উদ্যগের বড় অভাব। আশা রাখি ভবিষ্যতে সম্মেলিত চেষ্টায় আমরা অনেক কিছু করতে পারব। যেখানে একটা কুকুর মেরে ফেলা দোষ বলে মনে করা হয় না সেখানে আমরা সামনে খুব একটা আগাবো কি বোধ হয় পিছিয়েই যাব । anyways thanks for your comment.
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:০০
তামিম ইবনে আমান বলেছেন: যেখানে সাধারন মানুষ হত্যার বিচার হচ্ছে না সেখানে কুকুর নিয়ে এত কিছু ভাবতেই অবাক লাগলো। যদিও পশু পাখির প্রতি আমার এক্সট্রা মহব্বত নেই আবার শত্রুতাও নেই