নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
৯ ডিসেম্বর, একাত্তরের এদিনে বাংলাদেশের ন্যায়সঙ্গত স্বাধীনতা যুদ্ধের বিপরীতে অবস্থান নেয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বর্বর পাকিদের সাহায্যার্থে বহুল আলোচিত সপ্তম নৌ বহর বঙ্গোপসাগরে পাঠাবার ঘোষণা দেয়। আমেরিকান ভূখণ্ডের বাইরে সবচেয়ে বড় নেভাল ফোর্স সপ্তম নৌবহর। এর প্রধান ঘাঁটি জাপানের ইয়াকোসুকা। এই বহরে সবচেয়ে উন্নত ও শক্তিশালী জাহাজগুলোই থাকে।
উল্লেখ্য যে, ১৯৭১ সালে পূর্ব হতে চলমান ভিয়েতনাম যুদ্ধের কারণে সপ্তম নৌবহরের বেশির ভাগ জাহাজ ভিয়েতনামের কাছাকাছি ছিল। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর সপ্তম নৌবহরের কয়েকটি জাহাজ নিয়ে ‘টাস্কফোর্স ৭৪’ গঠন করা হয়। জাহাজগুলো সিঙ্গাপুরে একত্র হয়ে বঙ্গোপসাগর অভিমুখে যাত্রা শুরু করে।
এই বহরের জাহাজগুলোর মধ্যে প্রধান জাহাজটি হলো ইউএসএস এন্টারপ্রাইজ। তৎকালীন বিশ্বের সবচেয়ে বড় যুদ্ধ বিমানবাহী জাহাজ এটি। জাহাজটি ৭৫টি জঙ্গি বিমান বহন করে আসছিল, যার বেশির ভাগই ছিল এফ – ৪ ফ্যান্টম ২ ফাইটার প্লেন। ওই সময় জাহাজটিতে নিউক্লিয়ার বোমাও ছিল। সপ্তম নৌবহরের আরেকটি জাহাজ ইউএসএস ট্রিপলি। এটি ছিল একটি অ্যাম্ফিভিয়াস অ্যাসল্ট শিপজ বা উভচর যুদ্ধ জাহাজ। যা জল-স্থলে সমান ভাবে টার্গেটের উপর আক্রমনে সক্ষম ছিল। এতে ২০০০ মেরিন সেনার ব্যাটালিয়ন ও ২৫টি হেলিকপ্টার ছিল।
ওএনএস নামের তিনটি গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার এবং চারটি গান ডেস্ট্রয়ার- যেগুলোর নাম ছিল ইউএসএস বোসেল, ইউএসএস ওরলক, ইউএসএস মেককেইন এবং ইউএসএস এন্ডারসন। এ ছাড়া এই বহরে ছিল একটি নিউক্লিয়ার অ্যাটাক সাবমেরিন। জাহাজগুলো ১৪ ডিসেম্বর মালাক্কা প্রণালি অতিক্রম করে।
মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন দেখল, জাতিসংঘের মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি ও সৈন্য প্রত্যাহার করা যাচ্ছে না তখনই তারা নৌ কূটনীতির আশ্রয় নেয়। উদ্দেশ্য ছিল ভারতকে যুদ্ধবিরতি মানতে বাধ্য করা, পাকিস্তানকে রক্ষা করা, মুক্তিযুদ্ধকে স্তিমিত করা।
যুক্তরাষ্ট্রের এই হুমকির জবাবে সোভিয়েত নৌ-বাহিনী ৬ ও ১৩ ডিসেম্বর নিউক্লিয়ার মিসাইলবাহী দুটি ডুবোজাহাজ বঙ্গোপসাগরে প্রেরণ করে, যারা 'ইউএস টাস্কফোর্স ৭৪'কে ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৭ জানুয়ারি ১৯৭২ পর্যন্ত ভারত মহাসাগরে তাড়া করে বেড়ায়।ভারতীয় নৌবাহিনী তাদের বিমানবাহী জাহাজ ‘আইএনএস ভিকরান্ত’ ও অন্যান্য জাহাজের সাহায্যে বঙ্গোপসাগরে নেভাল ব্লকেড দিয়ে রেখেছিল। রাশিয়া সপ্তম নৌবহরকে ঠেকানোর জন্য বঙ্গোপসাগরে ব্যাপক সামরিক শক্তি সমাবেশের ঘোষণা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্র সম্ভাব্য নৌ যুদ্ধ পরিহার করার জন্য সপ্তম নৌবহর বঙ্গোপসাগর থেকে প্রত্যাহার করে নেয়। সেদিন যদি ভারত এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন নৌ-বহর প্রেরণ করে আমেরিকাকে সপ্তম নৌ-বহর প্রত্যাহারে বাধ্য না করতে পারত তাহলে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের জয়লাভ অনিশ্চিত হয়ে পড়ত নিঃসন্দেহে।
৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৫
তানজীর আহমেদ সিয়াম বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:২৯
রাজীব নুর বলেছেন: খুব মন দিয়ে আপনার ছোট পোষ্টখানা পড়লাম।