নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন মেডিক্যাল টেকনোলজিষ্ট। তিতাস শিশু ও জেনারেল হসপিটালে কর্মরত আছি। রোগীদের সেবা করতে ভালবাসি। রোগ নির্ণয়ে এক্স রে,সিটি স্ক্যান,এম আর আই করে থাকি । রেডিয়েশনে মারাত্তক ঝুকি নিয়ে রোগীদের সেবা করছি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, যাতে সারা জীবন এভাবেই রোগীদের সেবা করতে পারি।
জুম্মা মোবারক
একটার দিকে হানিফ পরিবহনে উঠলাম। আমার কোণাকুণি সামনের সিটে বসেছেন হুজুর টাইপ একজন লোক। তিনি বাস ছাড়ার পরপরই সুপারভাইজারকে বললেন ভাই আমি জুমা পড়বো। নামাজের খুতবার আগে দাঁড়াবেন। সোয়া একটায় দাঁড়ালেই চলবে।
বাস যখন চৌদ্দগ্রাম বাজার পার হচ্ছে তখন সোয়া একটা। তিনি উঠে গিয়ে সুপারভাইজারকে বললেন "ভাই সোয়া একটা বাজে। দাঁড়ান না! খুতবা না শুনলে জুমা সম্পূর্ণ হয় না!"
আমার তখন চোখে ঘুম ঘুম ভাব। হালকা করে কানে বাজছে ভদ্রলোকের সাথে সুপারভাইজারের বাতচিত। শুধু সুপারভাইজার না আরো কয়েকজন যাত্রী বলছে নামাজ দেড়টায়। একটা পঁচিশে দাঁড়ালেই হবে।বাসের সে যাত্রীদের মত আমরা অনেকেই জুমার নামাজ পড়াটাকে দায়সারা গোছের বানিয়ে ফেলেছি। শুক্রবার দুপুরে খুতবার শেষ দিকে মসজিদে ঢুকি ও ইমাম সাহেব সালাম ফেরানোর পর কত দ্রুত মসজিদ থেকে বের হওয়া যায় সে রাস্তা খুঁজি।আমি চোখ খুলেই বললাম সুপারভাইজার সাহেব, বাস দাঁড় করান। ওযু করার একটা সময়ও লাগবে তো! ভদ্রলোক বললেন আমার ওযু আছে ভাই।
অন্যদের অব্যাহত একটা পঁচিশ দাবির মুখে আমার কন্ঠ হাওয়ায় মিলিয়ে গেলো। বাস ড্রাইভার একটা পঁচিশে দেখেন রাস্তার পাশে মসজিদ পাচ্ছেন না! আরো মিনিট তিনেক পর ফেণীর ফতেহপুরের দিকে একটা মসজিদের পাশে গিয়ে দাঁড়ান। ততক্ষণে নামাজ প্রায় শেষ!ভদ্রলোক দৌড়ে গিয়ে নামাজ ধরতে ধরতে ইমাম সাহেব সালাম ফিরিয়েছেন!বাসে এতগুলো পুরুষ মানুষ। কারো কোন বিকার নেই শুধু ওই ব্যক্তি ছাড়া। আমি বাসের জানালা দিয়ে কড়া রোদে দাঁড়িয়ে তাকে নামাজ আদায় করতে দেখছি। জুমা মিস করে ফেলায় সম্ভবত জোহরের নামাজ আদায় করছিলেন।
এতক্ষণ বাস একটা পঁচিশে দাঁড়াতে বলা লোকগুলো দ্রুত আশেপাশে চা দোকান খোঁজা শুরু করলো। কেউ কেউ বেনসন সিগারেট না পাওয়ায় বিরক্ত। গ্রামের দোকানে বেনসন না পাওয়া শীর্ষক হতাশা শুনলাম দুজনের গলায়। একজন বিস্কুট কীভাবে পাঁচ টাকা পিস হয় তা নিয়ে দোকানদারের সাথে ঝগড়া করছে।এক মহিলা বাচ্চার জন্য চিপস কিনতে এসেছেন। শুকনা সুপারি দিয়ে পান খাচ্ছেন দুজন। আর আমি জানালা দিয়ে ওই আল্লাহর বান্দাকে দেখছি। সুপারভাইজার তখন ইমাম সাহেব কেনো নামাজ তাড়াতাড়ি শুরু করেছেন এটা নিয়ে রাগে গজগজ করছেন!দশ মিনিট পর বাস ছাড়লো। সুপারভাইজার বারবার লোকটাকে শুনিয়ে বলছিলো "আইজকা আগে দাঁড়াই গেছে ইমাম সাব।"
আমি ভেবেছিলাম ভদ্রলোক খুব রেগে যাবেন। আমাকে অবাক করে দিয়ে তিনি একটা কথাও বলেননি। শুধু মাথা নিচু করে নিজের আসনে বসে ছিলেন।আমার কোণাকুণি সামনের সিটে বসেছিলেন বলে আমি তাকে দেখছিলাম।পুরোটা পথ আর মাথা তোলেননি। সুপারভাইজারও আর কিছু বলেননি। শুধু মসজিদ্দা স্কুল পার হওয়ার সময় বলেছিলেন আমাকে রয়েল সিমেন্ট কোম্পানির সামনে নামাই দিয়েন। ভদ্রলোক উঠে সামনে যাচ্ছিলেন। সুপারভাইজার তার ব্যাগটা হাতে নিয়ে বললো ভাই কিছু মনে করিয়েন না!
লোকটা আমাকে সর্বোচ্চ অবাক করে দিয়ে সুপারভাইজারের চোখের দিকে তাকিয়ে ঠোঁট কাঁপিয়ে দুই চোখে পানি ঝরিয়ে দিয়ে বললো -
"ভাই জুমার নামাজটা পড়তে পারলাম না!"একজন বাবা তার দুই দশক ধরে লালিত পালিত একমাত্র কন্যাকে পাত্রস্থ করার সময় "আমার মেয়েটাকে দেখে রেখো" বলতে যেভাবে কাঁদে একজন মানুষ এক ওয়াক্ত জুমার নামাজ পড়তে না পেরে যেনো তেমন আবেগেই কথাটা বললো!
কালেক্টেড
০১ লা নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:৪১
রোকনুজ্জামান খান বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আপনার থেকে নতুন কিছু জানলাম ইসলাম সর্ম্পকে । আপনার কেতাবের উপযুক্ত নথি পত্র গুলো পেশ করে দেন , না হলে একদল লোক এটাকে অবিশ্বাস করতে পারে।
২| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:৩২
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
পৃথিবীর অন্যান্ন মুসলিম দেশ, ইন্দোনেশীয়া মালয়শীয়া বা টার্কিতে এভাবে দুরপাল্লার বাস-ট্রেন প্রতি নামাজের ওয়াক্তে থামায়?
০১ লা নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:৪৬
রোকনুজ্জামান খান বলেছেন: সেই সব দেশের জন্য রইলো শুভ কামনা । যারা যাত্রা পথে নামাজের গুরুত্ব সঠিক ভাবে দিয়ে থাকে। আমাদের দেশেও নামাজ সময় গাড়ি থামায় তবে , শুক্র বার ব্যাতিত অন্য কোন দিন নয়।
৩| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:২৯
রাজীব নুর বলেছেন: নামাজি লোকদের আমি পছন্দ করি।
জুম্মার নামাজের জন্য বাস কোনো মসজিদের সামনে দাঁড়ানো দরকার ছিল। বাসের সবাই মিলে জোর গলায় বললেই বাস থামাতো। প্রত্যেক মুসলিম নামাজ আর পানির জন্য কখনও মানা করে না।
০১ লা নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০৬
রোকনুজ্জামান খান বলেছেন: জোর গলায় কে বলবে সবাইতো ছিল ২৫ মিনিটের কাতারে। আপনার মন্তব্যে আমি আনন্দিত। শুভ হোক আপনার প্রতিটি সময়।
৪| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:০৯
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: জুমার নামাজের জন্য সাতটা শর্ত আছে৷এটা একেবারেই বেসিক৷ মাদরাসায় ক্লাস থ্রিতে পড়ায় সম্ভবত৷ দ্বিতীয় শর্ত হলো মুসল্লি স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে মুসাফিরের উপর জুম‘আ ওয়াজিব না। কিতাবের নাম- আল-মু‘জিমুল কাবির লি তিবরানী, পৃষ্ঠা নং-৫১, হাদীস নং-১২৫৭, (আল-মাকতাবাতুস শামিলা)।
এটা না পেলে জুমার নামাজের শর্তসমূহ লিখে গুগলে সার্চ দেন৷ পেয়ে যাবেন৷
এ পরিস্থিতিতে প্রকৃত মুসলমানদের যেটা করা দরকা তা হলো- ওজু করে ওঠা৷ ইশারায় কসর নামাজ পড়ে নেয়া৷ না হলে মাটির ছোট একটা অংশ নিয়ে বাসে ওঠা৷ তায়াম্মুম করে ইশারায় কসর পড়া৷ লোকজনকে কষ্ট তিয়ে বাস থামিয়ে নামাজ পড়া ইসলাম তো দূরের কথা সাধারণ ভব্যতার মধ্যেও পড়েনা৷ কারণ কাসের যাত্রীদের মধ্যে কারো এমন তাড়া থাকতে পারে যার মূল্য অনেক বেশি৷ উনি মনে কষ্ট পেতে পারেন৷ যেখানে সহজেই হক্কুল্লাহ আদায় করা যায়, সেখানে হক্কুল ইবাদ নষ্ট করার কোন মানে হয়না৷
আর একটা কথা ইসলাম না জানার বিষয়টি আপনার জন্য না৷ যিনি বাসের ড্রাইভারকে বাস.থামাতে বলেছেন৷
ইসলামে হক্কুল ইবাদ বা বান্দার হক গুরুত্বপূর্ণ৷ এটা পালন না করলে নামে মুসলমান হবে, ইসলাম নেই৷ অমুসলিম প্রধান দেশে বিশেষ করে উন্নত দেশে দেখবেন ইসলাম নাই কিন্তু মুসলমান আছে৷ মুসলমানদের যে চরিত্র তারা তা ধারণ করছেন৷ আমরা সেটা ধারণ করতে পারিনা৷ মানুষকে কষ্ট দেয়ার বিষয়টি আমলেই নেই না৷
ধন্যবাদ৷
০১ লা নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৫৮
রোকনুজ্জামান খান বলেছেন: আপনার নথি গুলোর জন্য ধন্যবাদ। সময় করে ভেতরের লেখা গুলো পড়বো। গাড়ীতে উঠার পর যে কোন কারণে অযু ভেঙ্গে যেতে পারে। তাই এটিকে সঠিক লজিক বলা যাবে না। জ্যাম/অনান্য কারণে যদি মসজিদ কাছে না পাওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে ইসারায় কসর নামাজ পড়ে নেওয়া যাবে। ড্রাইভার ইচ্ছে করলে গাড়ি টা সঠিক টাইমে মসজিদের আশে পাসে থামাতে পারতো। নামাজের জন্য একটু টাইম ব্যায় করলে সেটা একটু কষ্ট কর হলেও ফল সাধ্য হত। প্রতি মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
৫| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:১৫
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: আপনি ভাই তালগাছ ছাড়েন না। তায়াম্মুম তো করতে পারে। নামাজের জন্য বাস কেন থামাবে? ধর্মীয় আচার পালনে তো কোন ক্ষতি হচ্ছেনা। ইশারায় পড়তে পারে। তাছাড়া বাসে অমুসলিম যাত্রী থাকতে পারে। অনেকে নামাজ পড়েন না। তারা কেন আপনার নামাজের জন্য অপেক্ষা করবে। কোন যুক্তিতে? পাবলিক বাসে ব্যক্তিগত কারো জন্য (অসুস্থতা ছাড়া) দাড়ানো ঠিক না। একাধিক মানুষের মধ্যে নিজের সুবিধার কথা বলাটাও আহম্মকির লক্ষণ। এই করে করে ইসলাম ধর্মের বারোটা বাজানো হয়েছে। ধর্মের নামে মানুষকে কষ্ট দেয়া- এটা কোন ইসলাম না। আমার মন্তব্য খারাপ লাগতে পারে। কিন্তু আমি প্রতিষ্ঠানিক ধর্মীয় শিক্ষায় সর্বোচ্চ মানের লেখাপড়া করা মানুষ। এজন্য কমেন্ট করলাম। এরপর কেউ বাস থামাতে বললে, তাকে ইশারায় কসর পড়তে বলবেন। ধন্যবাদ।
০২ রা নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:০৬
রোকনুজ্জামান খান বলেছেন: ভাই আমিও আপনার সাথে একমত পোষণ করলাম। ঐ লোকটা খুতবা সহ জুমা পড়তে চেয়েছিল। এতে তার সময় লাগত ৩০-৪০ মিনিট। এতে অন্য ধর্মের যাত্রী সহ সবাই কষ্ট পেত। তার থেকে ইসারায় কসর নামাজ পড়াটাই উত্তম।
৬| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১:৫৯
জগতারন বলেছেন:
আমি ব্লগার সায়েমুজজ্জামান -এর সাথে সহমত পোষণ করি।
কোথায় থেকে আজে বাজে (সম্ভবত ফে কু' থেকে) পোষ্ট এনে সামু'তে দেওয়া ঠিক মনে করি না।
সম্ভব হলে নিজের চিন্তাশীল মনের কথা এখানে উপাস্থন করাই শ্রেয়।
০২ রা নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:১১
রোকনুজ্জামান খান বলেছেন: আপনার গঠন মূলক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। এটা ফেবু থেকে নেওয়া ভাল লাগা থেকে সামু তে পোষ্ট । কালেক্টড পোষ্ট থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়। শুভ কামনা রইলো। শুভ হোক আপনার প্রতিটি সময়।
৭| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:১২
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: উনি নামাজ কায়েম করতে পেরেছেন। ইসলামে নামাজ পড়া নয় বরং নামাজ কায়েমের কথা বলা হয়েছে।
০৩ রা নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:০৭
রোকনুজ্জামান খান বলেছেন: গঠন মূলক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:২৬
সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: ইসলাম না বুঝলে যেটা হয়! সফরের সময় জুমা পড়তে হবে- এটা কোন কেতাবে আছে! যেখানে শুধু ওয়াক্তের নামাজ কসর করলেই চলে। সহযাত্রীদের না খোশ করে জুমা পড়া- এর নাম ইসলাম না। গোঁড়ামি।