| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস | 
রোকনুজ্জামান খান
	আমি একজন মেডিক্যাল টেকনোলজিষ্ট। তিতাস শিশু ও জেনারেল হসপিটালে কর্মরত আছি। রোগীদের সেবা করতে ভালবাসি। রোগ নির্ণয়ে এক্স রে,সিটি স্ক্যান,এম আর আই করে থাকি । রেডিয়েশনে মারাত্তক ঝুকি নিয়ে রোগীদের সেবা করছি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, যাতে সারা জীবন এভাবেই রোগীদের সেবা করতে পারি।
আমার বড় ভাইয়ের নাম ছিল খোকন। সেই নামের সাথে মিলিয়ে আমার নাম রাখা হয়েছিল রোকন। আমার বড় ভাই আমার থেকে ২ বছরের বড় ছিল। তাই আমরা ছিলাম ডানপিটে। সারাদিন ঝগড়া ঝাটি এটা ওটা নিয়ে মেতে থাকতাম আমরা। মাঝে মাঝে মারামারিও লেগে যেত। কিন্তু আমি পারতাম না ভাইয়ার সাথে যখন ভাইয়া একটু জোরে মার দিত তখন আমার খুব জিদ হতো আমিও তাকে জোরে মারতে চেষ্টা করতাম।ভাইয়া তখন দৌড় দিত আমিও তার পিছনে পিছনে দৌড় দিতাম কিন্তু ধরতে পারতাম না। এক পর্যায়ে আমি ব্যর্থ হয়ে কান্না করতে করতে মায়ের কাছে বিচার দিতাম ভাইয়া আমাকে মারছে। মা ভাইয়া কে শাসন করে আমাকে শান্তনা দিত। তখন আমি খুশি অনুভব করতাম। ভাইয়া আমার সাথে অভিমান করতো কিছু ক্ষন পরেই আবার অভিমান চলে যেত। এভাবেই আমরা বড় হতে থাকলাম
একটা সময় আমাদের সুন্নতে খতনা/মুসলানির সময় চলে আসলো। যেহেতু আমরা প্রায় একই সমান ছিলাম তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো আমাকে এবং ভাইয়া কে একই দিনে একই সাথে মুসমানি করানো হবে। যেই কথা সেই কাজ,হাজাম ডাকা হলো। আমাদের দুই ভাইকে গোসল করানো হলো। আমি খুব ভয় পেতে শুরু করলাম। তাই ভাইয়াকে আগে করানো হলো।আমি এই সুযোগে ভয়ে পালিয়ে গেলাম এবং আমাকে ধরে আনা হলো। এসে দেখি ভাইয়ারটা কাটা হয়ে গেছে এবং ভাইয়া কাতরাচ্ছে। এবং সেই সময়ে আমাকেও করানো হলো। আমাদের দুই ভাইকে একই বিছানায় শোয়ানো হলো। আমরা শুয়ে শুয়ে বিভিন্ন গল্প করতাম। 
পারা পরশী সবাই আমাদের দেখতে আসতে আমরা খুব লজ্জা পেতাম আর সবাই বলতো আমাদের দুই ভাইকে একই দিনে বিবাহ করানো হবে। আমরা এই কথা শুনে মনে মনে মজা পেতাম। ভাইয়া দেখতে খুব ফর্সা ছিল এবং আমি কালো ছিলাম। কালো হওয়া সত্বেও সবাই বলতো আমি নাকি সুন্দর বউ পাবো। আমি এগুলা শুনলে খুব লজ্জা পেতাম সে সময়। ভাইয়া ক্লাস সেভেনেই প্রেমে পড়ে গেল সেসময় ।কিন্ত আমাকে বুঝতে দিত না। লুকিয়ে লুকিয়ে চিঠি পড়তো। কিন্তু আমাকে কখনোই দেখতে দিত না কারণ ছিল আমি যদি মায়ের কাছে বলে দেই সেজন্য। আমার খুব খারাপ লাগতো ভাইয়া আমার থেকে দূরে দূরে থাকতো। কাছে গেলে আগের মতো সেই ভাব টা আর থাকতো না।তারপর একদিন চিঠি লিখতে গিয়ে ভাইয়া আমার কাছে ধরা খেয়ে গেল এবং সব খুলে বললো এবং কাউকে যাতে না বলি সেই বিষয়ে বারণ করে দিল।
 ক্লাস টেনের টেষ্ট পরিক্ষার আগের রাতে ভাইয়া কে আর খুজে পাওয়া গেল না । অনেক কেই কল করা হলো কিন্তু কেউ খোজ দিতে পারলো না। আব্বার খুব রাগ হয়েছিল সেসময় তার চিন্তা ছিল পরিক্ষা নিয়ে সেইবার পরিক্ষা না দিলে ১ বছর পিছিয়ে যাবে ভেবে। তিন দিন পর ভাইয়া বিয়ে করে ভাবীকে নিয়ে বাড়িতে আসলো। সবাই অবাক হয়ে গেলে এত ভদ্র ছেলেটার কৃত কর্ম দেখে। এখন ভাইয়ার এক ছেলে ক্লাস ওয়ানে পড়ে। আমাদের দুই ভাইয়ের এখনো অনেক মিল এবং ভাব। 
 
সবাই দোয়া করবেন আমরা দুই ভাই সারাজীবন এভাবেই মিলে মিশে থাকতে পারি।
@ধন্যবাদ
 
২২ শে আগস্ট, ২০২০  রাত ১০:২০
রোকনুজ্জামান খান বলেছেন: : তারপর থেকে সে আর পড়াশোনায় নিয়মিত হতে পারে নাই। পড়াশোনার দিকে ভাইয়ার মন ছিল উদাসীন। আব্বা অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। এখন সে ড্রাইবার। মাসিক বেতনে কোম্পানীর গাড়ি চালায়।
২| 
২২ শে আগস্ট, ২০২০  রাত ৯:৫৯
শেরজা তপন বলেছেন: কি অবস্থা! আপনার ভাইয়ের-তো এখন বিয়ে করার বয়স হয়েছে
ভাল অবশ্যই শুভকামনা রইল।  ( শব্দটা মনে হয় 'আজাম' না 'হাজাম' হবে)
আরো লিখুন
 
২২ শে আগস্ট, ২০২০  রাত ১০:১৮
রোকনুজ্জামান খান বলেছেন: আমার অবস্থা মোটামোটি। পড়াশোনা করে প্রাইভেট চাকরীর গানি টানতেছি। বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে বাবা-মা। ভালো কিছুর অপেক্ষায় আরো কিছুটা সময় নিতে হচ্ছে আমাকে। বানাটি সঠিক করে নিয়েছি। আরো অনেক স্মৃতি আছে ভাইয়ার সাথে লেখার চেষ্টা করবো।
@ধন্যবাদ
৩| 
২২ শে আগস্ট, ২০২০  রাত ১০:১১
রাজীব নুর বলেছেন: বড় ভাই এর সাহস আছে। খুব সাহসের কাজ করেছে।
 
২২ শে আগস্ট, ২০২০  রাত ১০:২৭
রোকনুজ্জামান খান বলেছেন: হুম বুঝতে ভাই... ভাইয়া টা কার। মারামারি আড্ডাবাজি সে কখনো করেনাই। সবাই কে অবাক করে দিয়ে সাহস করে শুধু বিয়েটা করেছিল।
৪| 
২২ শে আগস্ট, ২০২০  রাত ১০:৪০
ওমেরা বলেছেন: আপনাদের গল্প ঠিক আমার দুই ভাইয়ার মত। তারাও দুই বছরের ছোট বড় ! তাদেরও অনেক কিছু একসাথে হয়েছে । তারা এখনো বন্ধুর মত । খুব ভালো লাগলে আপনার ভাইকে নিয়ে স্মৃতি কখা ।
 
২২ শে আগস্ট, ২০২০  রাত ১১:০৬
রোকনুজ্জামান খান বলেছেন: ভাইয়ার থেকে আমি শাসন ও পেয়েছি আবার বন্ধুর মত ভালবাসাও পেয়েছি৷ যেখানেই গিয়েছি একসাথে। মজার ব্যাপার হলো এখনও আমরা জামা কাপড় কেনা কাটা করলে একই রকম কিনি। আমার পড়ালেখার পেছনে তার অবদান অনেক। তাই ভাইয়ার প্রতি আমার ভালবাসা কখনো শেষ হবার নয়। যেনে ভালো লাগলো আমাদের মত আপনার ও দুইটা ভাইয়া আছে৷
৫| 
২৩ শে আগস্ট, ২০২০  রাত ১:০৬
নেওয়াজ  আলি বলেছেন: ভাই বড় ধন রক্তের বাঁধন । বিপদ আপদে ভাই ভাইয়ের কাছে আসে
 
২৩ শে আগস্ট, ২০২০  সকাল ১১:৫৭
রোকনুজ্জামান খান বলেছেন: নারী তাকে অনেক আমার থেকে ছিন্ন করতে চেয়েছে কিন্তু পারে নি। বিপদে বড় ভাই এগিয়ে এসেছে এবং উদ্ধার করেছে। আমিও ভাইয়াকে ভালবাসি এবং সন্মান করি।
৬| 
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০  রাত ৩:০৯
সাবিনার বচন বলেছেন: ভাইয়ার গল্প যদিও অল্প ভাল লাগল বেশী।
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে আগস্ট, ২০২০  রাত ৯:২৮
চাঁদগাজী বলেছেন:
১০ম শ্রেণীতে বড় ভাই বিয়ে করে ফেলেছিলেন? এখন উনি কি করেন?