![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিষ খাওয়ার আগে কি মানুষ হাত মুখ ধোয়?
ঘটা এ দেশে পালিত হয় বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস।
মানুষ খাওয়ার আগে হাত ধোয়, মুখ ধোয়।
কিন্তু খায়টা কি?
কীটনাশকযুক্ত সবজি,
কেমিকেলযুক্ত ফল,
হেভী মেটালযুক্ত ডিম,
ফরমালিন দেওয়া মাছ,
হরমোনের প্রভাবযুক্ত মাংস,
জিএমও ফসল- আরো কত কি?
সবাই বলছে এগুলোর প্রভাবে ১৬ কোটি মানুষই আছেন ঝুকির মাঝে।
হাত ধুয়ে বা মুখ ধুয়ে বিষ খাইতে চাইলে কে থামাবে?
০৮ ই জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪০
রেজা সিদ্দিক বলেছেন: হয়তো তাই।
আর আমরা হাম মুখ ধুয়ে সবই খেতে থাকি
২| ০৮ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৩৬
ঠোঁটকাটা০০০৭ বলেছেন: জব্বর কইছেন।
আমাদের সমাজে আগুণ লাগলেও অনেকে ঘরে বসে তামাক টানে।
আর বিষ খাওয়ার আগে হাম মুখ ধোয়।
০৮ ই জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪১
রেজা সিদ্দিক বলেছেন: ধন্যবাদ
৩| ০৮ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৪৭
সোহানী বলেছেন: হুম তাই............... বিষ খেতে খেতে আমরাই বিষধর সাপ হয়ে যাবো একদিন।
০৮ ই জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৬
রেজা সিদ্দিক বলেছেন: তাইতো হতে চলেছি।
৪| ০৮ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৩:১৪
নাহিদ ইসলাম ৩৫০ বলেছেন: চিন্তা নাই। বিষ খাওয়ার অভ্যাস হয়ে যাবে।
প্রযুক্তি বিষয়ক বাংলা ব্লগঃ আইডিয়া বাজ
০৮ ই জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৬
রেজা সিদ্দিক বলেছেন: ধন্যবাদ। অভ্যেস হয়েই গেছে
৫| ০৮ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৩:২৩
ডি মুন বলেছেন: এখন তো ভেজাল খাইতে খাইতে এমন অবস্থা হয়ে গেছে যে আসল টা খাইলেই মনে খটকা লাগে এর থেকে উত্তোরণের কি কোনো পথ নাই ?????????????????????
০৮ ই জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৬
রেজা সিদ্দিক বলেছেন: এমনই হয়
৬| ০৮ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৫
জামিল হাসান বলেছেন: সারাদিন কর্মব্যাস্ত ছিলেন। দিনটা ছিলো আর্দ্র, গরম পড়েছিলো খুব। বাসায় ফিরতে হয়েছে বাসে ঝুলে ঝুলে। বাসের ভেতর ঘর্মাক্ত সহযাত্রীদের সংস্পর্শ এড়ানো সম্ভব হয় নি। তাই ঠিক করলেন বাসায় গিয়েই গোসল করতে হবে। জীবাণুনাশক সাবান দিয়ে। 'স্বাস্থ্যকে রক্ষা' করতে হবে না? চারপাশে তো অদৃশ্য রোগজীবাণু গিজগিজ করছে। একমাত্র জীবাণুনাশক সাবানই পারে এসব লুকিয়ে থাকা জীবাণুদের কুপোকাত করে আমাদের সুস্থ রাখতে।
উপরের লেখাটা পড়ে কি আপনার কোন সাবান বা হ্যান্ডওয়াশের বিজ্ঞাপনের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে? সুনির্মিত বিজ্ঞাপনগুলো আমাদের জীবনে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। হঠাৎ আবির্ভুত হয়ে সুদৃশ্য বোতলে ভরা হ্যান্ডওয়াশগুলো গত কয়েক বছরে ঘরে ঘরে ছড়িয়ে গেছে। আপনি নিজেই হয়তো খাওয়ার আগে এসব হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধুতে ভোলেন না। ইদানিং জীবাণুনাশক সাবান আর রকমারী হ্যান্ডওয়াশের টিভি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে অণুজীববিজ্ঞানের সাথে প্রথম-পরিচয় হয় সাধারণ দর্শকদের। এই বিজ্ঞাপন থেকে আমরা জানতে পারি অদৃশ্য সব ব্যক্টেরিয়ারা নাকি আমাদের শত্রু, মানুষের বহুবিধ অসুখের কারণ। অদৃশ্য ক্ষুদে শয়তানরা সর্বত্রই কিলবিল করছে, বিজ্ঞাপন অনুযায়ী তাই আমাদের বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। সাধারণ সাবানেরা নাকি খুব Slow, ধীরে কাজ করে। বিপরীতে বিজ্ঞাপনের হ্যান্ডওয়াশ ৯৯% জীবাণু ধ্বংশ করে দেয়। তাই বিজ্ঞাপনের সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ ব্যবহারে ছোটছেলেমেয়েরা খুব কম অসুস্থ হয়, ফলে স্কুলে তাদের হাজিরা থাকে শতভাগ।
বুঝতেই পারছেন যে উপরের অনুচ্ছেদের কথাবার্তা মূলত বিজ্ঞাপনীয় রঙিন ধারাভাষ্য। কিন্তু কথা হলো -- আমরা যে বাড়তি দাম দিয়ে জীবাণুনাশক সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ কিনছি, প্রমাণ কই এর ফলে মানুষ কম অসুস্থ হচ্ছে? নানা রকমের স্যানিটারি, এন্টিব্যাক্টেরিয়াল, এন্টিমাইক্রোবিয়াল, এন্টিবায়োটিক হস্তধৌতকারক আর সাবানের এতো ব্যপক প্রচলন হলো হঠাৎ করে -- এদের উপকারীতা ঠিক কতটুকু? উপরে বর্নিত কঠিন/তরল সাবান প্রায়ই সক্রিয় উপাদান হিসেবে ট্রাইক্লোসান বা এই জাতীয় জীবাণুনাশক রাসায়নিক থাকে। এই ট্রাইক্লোসানই প্রকৃতপক্ষে কতটুকু কাজের? ট্রাইক্লোসানের কোন ক্ষতিকর প্রভাব নেই তো আবার?
ঠিক এইসব প্রশ্ন নিয়ে ২০০৮ সালে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের এলিসন নামে একজন বিজ্ঞানী একটি জরিপ পরিচালনা করেন [১]। ১৯৮০ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন হ্যান্ডওয়াশের উপযোগীতার উপর যেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়েছে তাদের সারমর্ম বিশ্লেষণই ছিলো এই জরিপের প্রধান লক্ষ্য। তিনি খুঁজেছেন সাধারণ সাবানের বিপরীতে জীবাণুনাশক সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ ব্যবহারের ফলে মানুষের পেটের পীড়া অথবা শ্বসনতন্ত্রের রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কত। আমাদের মনে হবে যে জীবাণুনাশক সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ ব্যাবহারে নিশ্চয়ই পেটের পীড়াজনিত বা শ্বসনতন্ত্রের রোগ কম হবে। কিন্তু না, এলিসনের জরিপের ফলাফল আমাদের আশানুরূপ ছিলো না; বরঙ তার চেয়ে ভিন্ন কিছু উঠে আসে।
প্রথমত, এলিসন দেখলেন, বিভিন্ন অন্ত্রিক রোগব্যাধী (পেটের পীড়া) কিংবা শ্বসনতন্ত্রের রোগপ্রতিরোধে সাধারণ সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাসই যথেষ্ট। এই ফলাফলটা খুব সাধারণ, তেমন আহামরি কিছু না, কিন্তু এখান থেকেই আমাদের আশাভঙ্গের সূচনা। এলিসন এরপর দেখলেন বিভিন্ন হ্যান্ডওয়াশ বা জীবাণুনাশক সাবান আসলে কী করছে। দেখা গেলো, সাধারণ সাবানের তুলনায় আন্ত্রিক বা শ্বসনতন্ত্রের রোগপ্রতিরোধে তারা খুব কার্যকর কিছু করছে না। এলিসন উদাহরণসরূপ পাকিস্তানে পরিচালিত একটা গবেষণার খবর দেন [২]। সেখানে দেখা যায় সাধারণ সাবান ব্যবহারে পেটের রোগ সংক্রমণ ৫০ ভাগের মতো কমে যায়। বিপরীতে জীবাণুনাশক সাবান ৫০ ভাগের চাইতে সামান্য কম হারে পেটের পীড়া প্রতিরোধ করে।
এলিসন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক পরিচালিত একটি গবেষণায় অনুরূপভাবে দেখান 'নীরোগ' মানুষের ক্ষেত্রে সাধারণ সাবান কিংবা 'অ-সাধারণ' জীবাণুনাশক সাবান একই ফলাফল দিচ্ছে। তবে হাঁপানি বা ডায়বেটিকসের মতো 'দূরারোগ্য' ব্যাধিতে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে এই ফলাফল বদলে যাচ্ছে [৩]। আরেকটা অপ্রত্যাশিত পর্যবেক্ষণে দেখা গেলো যেসব রোগী জীবাণুনাশক সাবান ব্যবহার করছেন, তাদের মধ্যে জ্বর-সর্দি-কাশির হার যেসব রোগী সাধারণ সাবান ব্যবহার করছেন তাদের চাইতে বেশি! সোজা কথায়, জীবাণুনাশক সাবান ব্যবহারে আসলে রোগীরা আরো দূর্বল হয়ে পড়ছেন।
উপরের কথাবার্তা যদি আপনাকে ধাঁধাঁ লাগিয়ে দেয় তাহলে আবারো বলি, যেসব লোক এন্টিবায়োটিক সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ ব্যবহার করেন তারা সাধারণ সাবান ব্যাবহারকারীদের চাইতে বেশি সুস্থ থাকেন এমন কোন প্রমাণ নেই। আর যারা দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত, তাদের ক্ষেত্রে জীবানুনাশক সাবান বা হস্তধৌতকারক ব্যবহারে বেশি দূর্বল হয়ে পড়তে দেখা যায়। এটাই ছিলো এলিসনের গবেষণার সারাংশ।
ধাঁধাঁ কাটিয়ে উঠার পর মাথায় প্রশ্ন আসবেই, কেন এমনটা হয়? জীবাণুনাশক সাবান কি তাহলে হাতের ৯৯% ব্যাক্টেরিয়া মেরে ফেলে না? নাকি ব্যাক্টেরিয়া মেরে ফেলে বলে রোগীরা আরো দূর্বল হয়ে পড়ে? বিপরীতে সাধারণ সাবান দিয়ে হাত ধুলে আসলে কী ঘটে ত্বকের উপর?
আসলে সব ব্যাক্টেরিয়া কিন্তু মানুষের জন্যে ক্ষতিকারক নয়। আমাদের ত্বকের প্রতি বর্গইঞ্চিতে হাজার হাজার রকমারী ব্যাক্টেরিয়া বসবাস করে। সবসময়, সবার ত্বকেই এদের পাওয়া যাবে। এই ব্যাক্টেরিয়াগুলোকে দুই দলে ভাগ করা যায়। এক দল হলো স্থানীয় বিভিন্ন প্রজাতীর 'নাগরিক' ব্যাক্টেরিয়া, মানুষের সাথে যাদের সহবিবর্তন হয়েছে দীর্ঘসময় ধরে। এই সহবিবর্তনের ফলে এরা আমাদের ত্বকে নির্বিবাদে বসবাস করতে শিখেছে। এদের খাবার-দাবার আসে ত্বকের মরা কোষ থেকে। এমন কি ঘাম থেকেও এরা প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায়। বিনিময়ে এরা ত্বকের জন্যে একধরনের প্রতিরক্ষা-স্তর হিসেবে কাজ করে। নাগরিক ব্যাক্টেরিয়া ছাড়াও ত্বকে পাওয়াযাবে বিভিন্ন পর্যটক ব্যাক্টেরিয়া। প্রায়ই এই পর্যটকদের সাথে থাকে জৈবরাসায়নিক অস্ত্র-শস্ত্র, যা কিনা আমাদের জন্যে ক্ষতিকর হতে পারে।
৯৯% ব্যাক্টেরিয়া হত্যা কিন্তু হাত ধোয়ার লক্ষ্য নয়। সাধারণ সাবান দিয়ে হাত ধুলে তা আমাদের ত্বকীয় নাগরিকদের খুব একটা পরিবর্তন করে না। প্রকৃতপক্ষে ত্বকের নাগরিক ব্যাক্টেরিয়াদের পরিবর্তন করার ফলাফল মানুষের জন্যে খুব একটা সুখপ্রদ হবে না। দরকার হলো ত্বকে ঘুরতে আসা পর্যটকদের সরিয়ে দেয়া যাতে তারা নিজেদেরকে ত্বকের গায়ে প্রতিষ্ঠিত করতে না পারে। পর্যটকদের সবাইকে যদি সরিয়ে ফেলা নাও যায়, তাহলে তাদের মধ্যে অন্তত যারা ক্ষতিকারক তাদেরকে ত্বক থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে। সাধারণ সাবান দেখা গেছে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব নতুন পর্যটকদের মেরে ফেলতে সক্ষম।
সাধারণ সাবানই যথেষ্ট। তবে হাত ধোয়ার সঠিক নিয়ম মানতে হবে। সূত্র WHO।
তাহলে অ-সাধারণ(!) জীবাণুনাশক সাবান বা হস্তধৌতক কি করে? তারা কি নতুন পর্যটকদের সরিয়ে ফেলতে পারে না? সত্যি বলতে কি, কেউই জানে না! গবেষণাগারের নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে এরা যাবতীয় ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়াকে মেরে ফেললেও দেহের ঘনজঙ্গলে এরা প্রকৃতপক্ষে কি করে তার সুস্পষ্ট কোন চিত্র নেই। যতদূর মনে হয়, এরা কিছু কিছু ক্ষেত্রে ত্বকের অল্প কিছু পর্যটক এবং কিছু কিছু স্থানীয় নাগরিক ব্যাক্টেরিয়াদের মেরে ফলতে পারে। আমরা যতক্ষণ সুস্থ থাকি, ততক্ষণ এটা কোন সমস্যা না আসলে, স্থানীয় ব্যাক্টেরিয়ারা আবার নিজেদের পুনরুদ্ধার করে ফেলে। কিন্তু যখন আমরা অসুস্থ, তখন পর্যটক ও স্থানীয় ব্যাক্টেরিয়া হত্যার পরিণাম ভিন্ন হতে পারে। অসুস্থ অবস্থায় আমাদের রোগপ্রতিরোধ ব্যাবস্থা দূর্বল থাকে। তাই মৃত-স্থানীয় ব্যাক্টেরিয়ার শূণ্য জায়গায় আরো খারাপ স্বভাবের পর্যটক ব্যাক্টেরিয়া খুব দ্রুত উপনিবেশ গড়ে তুলতে পারে। এসময় স্থানীয় ব্যাক্টেরিয়া কর্তৃক প্রতিযোগীতার মুখামুখী তাদের হতে হয় না। জ্বর-সর্দি-কাশি আবির্ভাবের পেছনে এই পর্যটকরাই সম্ভবত দায়ী।
জীবাণুনাশক হাতধৌতকারক আর সাবানের প্রভাব যদি আমাদের হাতেই শেষ হয়ে যেত তাহলে খুব ভালো হতো। আসলে যা হয়, হাত ধোয়ার পর পানির সাথে সাথে ড্রেন বেয়ে এই জৈবরাসায়নিক পদার্থগুলো ছড়িয়ে যায় আমাদের পরিবেশে। এন্টিবায়োটিক হাতধৌতকারকরা ড্রেনে গিয়ে কি করে তা দেখার জন্যে বিজ্ঞানীরা কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। দেখা গেছে, ট্রাইক্লোসানের খুব উচ্চ ঘনত্বেও ড্রেনের মোট ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা অপরিবর্তিতই থাকছে। তারমানে ব্যাক্টেরিয়ার মোট জনসংখ্যার উপর এর কোন প্রভাব নেই। তবে ব্যাক্টেরিয়ার প্রজাতি স্তরে ট্রাইক্লোসানের কিছু প্রভাব দেখা গেলো। ট্রাইক্লোসান দূর্বল ব্যাক্টেরিয়া মেরে ফেললেও অন্যান্য সহিষ্ণু ব্যাক্টেরিয়ার কিছু হয় না। এরকম কিছু সহিষ্ণু ব্যাক্টেররিয়া দেখা গেছে যারা রীতিমতো ট্রাইক্লোসান হজম করে ফেলতে পারে! তাছাড়া ট্রাইক্লোসান এন্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ব্যাক্টেরিয়ার সহায়ক হিসেবেও কাজ করতে পারে [৪]। সারা বিশ্বজুড়ে এসব এন্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ব্যাক্টেরিয়ার দ্রুতবিবর্তন, সংক্রমণ ও ব্যাপ্তি একটা বিশাল চিকিৎসাগত সমস্যা। এন্টিবায়োটিক-রোধী ব্যাক্টেরিয়া দিয়ে রোগ-সংক্রমণ হলে সাধারণ এন্টিবায়োটিক ওষুধগুলি আর কাজ করে না। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এমন সব রোগজীবাণু চিহ্নিত করা হচ্ছে যারা অনেক ধরনের এন্টিবায়োটিক সহ্য করতে পারে। এদেরকে বলা হয় সুপারবাগ। এদের দ্বারা রোগ হলে প্রচলিত এন্টিবায়োটিক ঔষুধ হিসেবে আর কাজ করবে না। সুতরাং এরা জনস্বাস্থের জন্যে খুবই বিপজ্জনক। তাহলে বিষয়টা দাঁড়াচ্ছে যে ট্রাইক্লোসান, আমাদের নিকট ভবিষ্যতকে আরো ঝঞ্ঝাটপূর্ণ করতে নীরবে ইন্ধন যোগাচ্ছে।
ড্রেনে গিয়েও ট্রাইক্লোসানের যাত্রা শেষ হয় না। বিভিন্নভাবে সে ছড়িয়ে পড়ে নদী-খাল-বিলে। বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন জলাধারে খুব বেশি পরিমাণে ট্রাইক্লোসানের উপস্থিতে পর্যবেক্ষণ করেছেন। ত্বকের যেমন স্বাভাবিক ব্যাক্টেরিয়াগোষ্ঠি আছে, ঠিক তেমনি বিভিন্ন জলাধারে প্রাকৃতিকভাবে অনেক ব্যাক্টেরিয়া থাকে যা ঐ বাস্তুসংস্থানের অপরিহার্য অংশ। ট্রাইক্লোসান সেখানকার স্বভাবিক ব্যাক্টেরিয়াদেরও ক্ষতি করে। দেখা গেছে ট্রাইক্লোসান এমনকি জলাধারের মাছের হরমোনের স্বাভাবিক কাজে বাধা দেয় [৫]। উদাহরণ -- ট্রাইক্লোসানের সংস্পর্শে আসা মাছের স্বাভাবিক শুক্রাণুর পরিমাণ কমে যেতে দেখা গেছে। মাছের যৌনজীবনে আমাদের তেমন কোন আগ্রহ থাকবে না, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সমস্যা হলো, বিবর্তনীয় ব্যাখ্যা অনুযায়ী মাছের সাথে আমাদের হরমোনের অনেক মিল রয়েছে। মাছের হরমোনের জন্যে যেটা ক্ষতিকারক, সেটা মানুষের জন্যেও হুমকীস্বরূপ। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে ট্রাইক্লোসানের দ্রুত ব্যাপ্তি একটা বড় দুঃশ্চিন্তার বিষয় [৬]।
মীনা কীভাবে স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যাবহার শেষে হাত ধুতে উৎসাহিত করতো মনে আছে? ১৯৯১ সালে ইউনিসেফের উদ্যোগে কার্টুন চরিত্র হিসেবে মীনার জন্ম। এর জনক মুস্তাফা মনোয়ার।
বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপনগুলো ব্যাবসার খাতিরে নানা রকম মিথ তৈরি করে। বিজ্ঞানের ছদ্মবেশ ব্যবহার করে এসব মিথ সহজে প্রতিষ্ঠা করা যায় মানুষের মনে । অনেকসময়ই দেখা যাবে তাদের কথাবার্তা আসলে ভন্ডামীপূর্ণ, মিথ্যা। বিজ্ঞানের রঙ মাখাতে পারলে যে ব্যাবসা আরো ভালো হবে সেটা তারা ভালো ভাবেই জানে। ওই মীনা কার্টুনটার কথা মনে আছে? যেখানে টিয়াপাখি মিঠু সবাইকে বলে বেড়ায় ''হাঁত ধোঁও, হাঁত ধোঁও''? আমাদের দরকার আসলে ভালো করে (সাধারণ) সাবান দিয়ে হাত ধোয়া - খাওয়াদাওয়ার আগে, শৌচকার্যের পরে, বাইরে থেকে এসে। মীনা কার্টুনে অবশ্য ছাই দিয়ে হাত ধোঁয়ার কথা বললেও সেটা ততটা নিরাপদ নয়। ছাই বা মাটি দিয়ে হাত ধুলে একটা আশঙ্কা থাকে জীবাণু সংক্রমণের। যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচটি শহরে জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে সেখানে আট হাজারজন ব্যাক্তি শৌচকার্যের পর ঠিকমতো হাত ধোন না! বাংলাদেশের হাত ধোয়া সহ সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি কতজন মানুষ মেনে চলছে এ ধরনের কোন হিসেব জানা নেই। তবে পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের চাইতেও খারাপ বলে আশঙ্কা হয়। আসলে আমাদের কোন বিশেষ অলৌকিক ক্ষমতাসম্পন্ন জীবাণুনাশক সাবান/হস্তধৌতকারকের দরকার নেই। দরকার কেবল সাধারণ, শতাব্দী পুরনো, মীনা কার্টুনের মতো সাধারণ সাবান দিয়ে হাত ধোয়া। এবং বাসায় বিশেষ করে ছোটদের হাতধোয়ার অভ্যাস রপ্ত করানো।
সাইন্টিফিক আমেরিকান ব্লগে প্রকাশিত Rob Dunn এর Scientists Discover That Antimicrobial Wipes and Soaps May Be Making You (and Society) Sick অবলম্বনে লেখা। সাবানের বদলে ছাঁই ব্যবহার করার উপযোগিতা নিযে প্রশ্ন তুলে রিপোর্ট সরবরাহ করে সহযোগিতা করেছে রুশান আহমেদ আবীর।
তথ্যসূত্র:
১) Aiello AE, Coulborn RM, Perez V, Larson EL. 2008. Effect of hand hygiene on infectious disease risk in the community setting: a meta-analysis. Am J Public Health 98:1372-1381.
২) Luby SP, Agboatwalla M, Painter J, Altaf A, Billhimer WL, Hoekstra RM. Effect of intensive handwashing promotion on childhood diarrhea in high-risk communities in Pakistan: a randomized controlled trial. JAMA. 2004;291:2547–2554.
৩) Larson EL, Lin SX, Gomez-Pichardo C, Della-Latta P. Effect of antibacterial home cleaning and handwashing products on infectious disease symptoms: a randomized, double-blind trial. Ann Intern Med. 2004;140:321–329.
৪) Aiello AE, Larson EL. Antibacterial cleaning and hygiene products as an emerging risk factor for antibiotic resistance in the community. Lancet Infect Dis. 2003;3:501–506.
৫) Raut, S. A., and R. A. Angus 2010. Triclosan has endocrine-disrupting effects in male western mosquitofish, Gambusia affinis. Environ Toxicol Chem 29: 1287–1291.
৬) Rees Clayton, E.M., Todd, M., Dowd, J.B., Aiello, A.E.† (2010) The impact of bisphenol A and triclosan on immune parameters in the US population, NHANES 2003-2006. Environmental Health Perspectives
৭) Professor Sally F. Bloomfield, Professor Kumar Jyoti Nath. 2009. Use of ash and mud for handwashing in low income communities.International Scientific Forum on Home Hygien
মূল লিখাঃhttp://bn.zero2inf.com/article/1278/hand-wash-effective#.U5TpOHJdXSk
০৯ ই জুন, ২০১৪ ভোর ৬:১১
রেজা সিদ্দিক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার লেখার জন্য
৭| ০৮ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৬
লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: কিনবো কি, খাব কি !! হাত ধুয়ে কি খাব !! বিষ !!!
০৮ ই জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৭
রেজা সিদ্দিক বলেছেন: ধন্যবাদ
৮| ০৮ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:১২
জামিল হাসান বলেছেন: বেনিয়া কর্পোরেট সাম্রাজ্য এবং তাদের দালাল দের অবৈধ সহবাস এর ফসল এই হাত ধোয়া দিবস যার আড়ালে বিলিয়ন ডলার বাণিজ্য ।
০৯ ই জুন, ২০১৪ ভোর ৬:১৩
রেজা সিদ্দিক বলেছেন: ধন্যবাদ, আপনার মন্তব্যের জন্য
৯| ০৮ ই জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৪
বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন: না ভাই হাত ধুয়ে বিষ পান করার দরকার নাই। এমনিতেই বিষ পান করতে করতে মানুষ আমরা বিষধর প্রাণী হয়ে গেছি। একসময় দেখা যাবে বিষ পান না করলে ঘুম হয় বা আমরা বাচি না।
সুতরাং এ বিষ পানের হাত থেকে বাচার কোন উপায় নাই। তবে আছে একটা আবার প্রস্তর যুগে ফিরে যেতে হবে।
০৯ ই জুন, ২০১৪ ভোর ৬:১১
রেজা সিদ্দিক বলেছেন: কী আর করা
১০| ০৮ ই জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩৮
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আমাদের লোভ
আমাদের অনুকরণপ্রিয়তা
আমাদের আত্ম-পরিচয়ের অভাব
আমাদের স্ব-জ্ঞানের প্রতি কম আস্থা
আমাদের কর্পোরেট দাসত্বে স্বেচ্ছায় বন্দী হওয়া.........................
প্রাকৃতিক জল হাওয়া খাবারে বেড়ে উঠা প্রকৃতির শিশুটির সাথে শহুরে ডিজিটাল শিশুটির মতো
আমরাই আমাদের হত্যার প্রতিযোগীতা করছি-
আমরা নিহত হবার বাসনায় নিত্য দৃঢ়তায় কষ্ট করে এগিয়ে যাচ্ছি
প্রকৃতির বিরুদ্ধে! চোখ ঝলসানো বিজ্ঞাপনে
অথবা লোভে
অথবা অনুকরনপ্রিয়তায়....................................
০৮ ই জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৭
রেজা সিদ্দিক বলেছেন: হম সহতম
১১| ০৮ ই জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৩
নীল জানালা বলেছেন: বিষ খাইলেও মরবো না খাইলেও মরবো। খায়াই মরুক। জানোয়ারের আবার বাঁচা মরা।
০৯ ই জুন, ২০১৪ ভোর ৬:১০
রেজা সিদ্দিক বলেছেন: ধন্যবাদ
১২| ০৮ ই জুন, ২০১৪ রাত ৯:৫৩
সুমন কর বলেছেন: ভালো বলেছেন। সহমত।
০৯ ই জুন, ২০১৪ ভোর ৬:১০
রেজা সিদ্দিক বলেছেন: ধন্যবাদ
১৩| ০৮ ই জুন, ২০১৪ রাত ১০:০৫
স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:
সুমন কর বলেছেন: ভালো বলেছেন। সহমত।
০৯ ই জুন, ২০১৪ ভোর ৬:১০
রেজা সিদ্দিক বলেছেন: ধন্যবাদ
১৪| ০৮ ই জুন, ২০১৪ রাত ১০:০৮
উড়োজাহাজ বলেছেন: হ্যা, আমরা হাত ধুয়েই বিষ খাই। বিষে জীবাণু এলাউড নয়।
০৯ ই জুন, ২০১৪ ভোর ৬:০৯
রেজা সিদ্দিক বলেছেন: হম, ধন্যবাদ
১৫| ১০ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৫৯
একজন ঘূণপোকা বলেছেন:
অনেক সুন্দর কথা বলেছেন!!
হাত ধুয়ে কি বিষ খাবো।
আসলে হাত ধুতে হয় যতটা না স্বাস্থ্যগত কারনে, তারচেয়ে বেশি চোখের সৌন্দর্য্যের কারনে।
১২ ই জুন, ২০১৪ রাত ১১:৩১
রেজা সিদ্দিক বলেছেন: ধন্যবাদ
১৬| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:০৯
শাশ্বত স্বপন বলেছেন: রেজা ভাই, জামিল হাসানের মন্তব্য পড়ে মনে হল, ফলের চেয়ে বিচি বড়। আপনার সামান্য লেখার উপর কত বড় মন্তব্য। যাই হোক, আপনি আপনার লেখাটা আর একটু বড় করেন, আপনার নামে দৈনিক আমাদের সময়ে ছাপিয়ে দেব। আর জামিল ভাই যদি অনুমতি দেন তাহলে তার কিছু কিছু অংশ ছাপাতে চাই।
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৭:২৭
রেজা সিদ্দিক বলেছেন: শ্বাশ্বত স্বপন,
আমি তো ধারণাটি জনপ্রিয় করতে চেয়েছি।
ধন্যবাদ। চেষ্টা করবো বড় করতে।
১৭| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:২৭
নতুন বলেছেন: আমাদের লোভ আমাদের কোথায় নিয়ে যাইতেছে কেউই চিন্তা করতেছেনা...
একটা জিনিস মাথায় ঢোকেনা ....
আপনি যদি ১টা পন্যে ভ্যাজাল দেন.... ( কিন্তু নিজের জন্য ভালটা রেখে দেন)
কিন্তু আপনিতো আরো ৫টা ভ্যাজাল পন্য কিনে খাচ্ছেন... তাই সবাই ভ্যাজালই খাচ্ছে....
এটা কি ভ্যাজাল যারা দেয় তাদের মাথায় নাই?
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৭:২৮
রেজা সিদ্দিক বলেছেন: ঠিকই বলেছেন।
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১:২১
is not available বলেছেন: চিকিৎসাবিঙ্গানীদের বিষ হজম করার ঔষধ আবিষ্কারের চেষ্টা করা উচিত| কারণ আমাদের বিষ মাখানো খাবার খেয়েই থাকতে হবে এটা সবারই জানা হয়ে গেছে|