নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাসেল মেহেদী পারভেজ। পরিচিত হতে: web.facebook.com/rmparves

র ম পারভেজ

স্বপ্নময় পথিক। দেখা, শোনা ও জানাগুলিকে ব্লগের পাতায় রেখে যেতে চাই।

র ম পারভেজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আইনের সহজ পাঠ - ১ : যৌন হয়রানি বন্ধে হাইকোর্টের দিকনির্দেশনা

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৫৭



যৌন নিপীড়নের সংজ্ঞা প্রদার্নপূবক যৌন হয়রানি রোধে কয়েকটি দিকনির্দেশনা উল্লেখ করে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করে দিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশন। বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি (বি.এন.ডব্লিউ.এল.এ.) এর দায়ের করা একটি জনস্বার্থ মামলায় বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসনে ও বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দীকির সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন (রিট মামলা নং - ৫৯১৬/২০০৮)। রায়ে বলা হয়ছে,যত দিন পযর্ন্ত জাতীয় সংসদে যৌন হয়রানি রোধে কোনো আইন প্রণয়ন করা না হয়, ততদিন এ নীতিমালা বাধ্যতামূলকভাবে কার্যকর হবে।
এই রায়ে র্সবপ্রথম যৌন হয়রানির একটি পূর্ণাঙ্গ সংজ্ঞা পাওয়া যায়। শুধু তা-ই নয়, কোনো ছাত্রী তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বা কোনো চাকরিজীবী তাঁর কর্মস্থলে যৌন হয়রানির শিকার হলে প্রতিষ্ঠান দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারে না। এই রায়ে যৌন হয়রানির যে সংজ্ঞা দেয়া হয়ছে তা সংক্ষেপে নিম্নে দেয়া হলো -
(১) যৌন হয়রানি বলতে বোঝায়:
ক) অনাকাঙ্খিত যৌন আবেদনমূলক আচরণ (সরাসরি কিংবা ইঙ্গিত) যেমন-শারীরিক শ্পর্ষ বা এ ধরনের প্রচেষ্টা;
খ) প্রাতিষ্ঠানিক এবং পেশাগত ক্ষমতা ব্যবহার করে কারো সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করা;
গ) যৌন হয়রানি বা নিপীড়নমূলক উক্তি;
ঘ) যৌন সুযোগ চাওয়া;
ঙ) পর্ণোগ্রাফী দেখানো;
চ) যৌন আবেদনমূলক মন্তব্য বা ভঙ্গি ;
ছ) অশালীন ভঙ্গি, অশালীন ভাষা বা মন্তব্যের মাধ্যমে উত্ত্যক্ত করা, কাউকে অনুসরণ করা বা অশালীন উদ্দেশ্য পূরণে কােনো ব্যক্তির নিকটবর্তী হওয়া বা অনুসরণ করা, যৌন ইঙ্গিতমূলক ভাষা ব্যবহার করে ঠাট্টা বা উপহাস করা;
জ) চিঠি, টেলিফোন, মােবাইল ফােন, এসএমএস, ছবি,কার্টুন, বেঞ্চ, চেয়ার-টেবিল, নােটিশ বোর্ড, অফিস, ফ্যাক্টরি,শ্রেণিকক্ষ, বাথরুমের দেয়ালে যৌন ইঙ্গিতমূলক অপমানজনক কােনো কিছু লেখা;
ঝ) ব্ল্যাকমেইল অথবা চরিত্র হননের উদ্দেশ্যে স্থির বা ভিডিও চিত্র ধারণ করা ।
শাস্তি সম্পর্কে উক্ত নীতিমালায় বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে (ছাত্র ব্যতিরেকে) সাময়কিভাবে বরখাস্ত করতে পারেনএবং ছাত্রদের ক্ষেত্রে, অভিযোগ কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী তাদের শ্রেণিকক্ষে আসা থেকে বিরত রাখতে পারেন। অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করবে এবং সকল সরকারি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং র্কমক্ষেত্রের শৃঙ্খলাবিধি অনুসারে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং যদি উক্ত অভিযোগ দন্ডবিধির যেকোনো ধারা অনুযায়ী অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়, তাহলে প্রয়োজনীয় ফৌজদারি আইনের আশ্রয় নিতে হবে, যা পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট আদালতে বিচার হবে।
উক্ত রায়ে বলা হয়, দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যৌন হয়রানি বিষয়ক একটি অভিযোগ কেন্দ্র থাকবে। এই অভিযোগ কেন্দ্র পরিচালনার জন্য ন্যূনতম পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি থাকবে আর কমিটির প্রধান হবেন একজন নারী। এছাড়া কমিটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ নারী সদস্য থাকবেন। কমিটি যৌন হয়রানির কােনো অভিযোগ পেলে তদন্ত ও অনুসন্ধান শেষে পুলিশের কাছে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পাঠাবেন। এরপর দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী অপরাধের ধরন ও মাত্রা বুঝে বিচার বিভাগ যথাযথ ব্যবস্থা নিবে। রায়ে আরও উল্লেখ করা হয়, কমিটি নির্যাতন সম্পর্কে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এবং পুলিশের কাছে অপরাধীকে না পাঠানো পর্যন্ত নির্যাতিত ও অভিযুক্ত ব্যক্তির কােনো পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.