নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি কেউ না...।

রোদ্র রশিদ

নিজেকে জোকার ভাবি যেন হাজার কষ্টে হাসতে পারি, হাসাতে পারি ।

রোদ্র রশিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

“আছি সেই দিনের অপেক্ষায়”

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:১৯


রাস্তায় দাড়ানো কোন সুন্দর গাড়ি দেখলে গনি হা করে চেয়ে থাকে। একদিন ওকে জিজ্ঞাস করলাম, ‘কি দেখিস’। মুচকি হেসে ও বলল, ‘গাড়ি কিনবতো , তাই মডেল পছন্দ করছি’।
‘কবে কিনছিস গাড়ি’?
‘এইতো পড়াশুনা শেষ হলেই চাকরি আর চাকরি পেয়েই গাড়ি কিনব’।
‘চাকরি পেয়েই গাড়ি!! কিরে ঘুষ খাবি নাকি’?
প্রচণ্ড রেগে ও বলল, ‘উঁহু , কোনদিন ঘুষ খাব না । সৎভাবে সর্বোচ্চ পরিশ্রম করে গাড়ি কিনব।
আমি বিশ্বাস করি গনি কোনদিন ঘুষ খাবেনা। কিন্তু আমি ঘুষ খাব, প্রচুর পরিমানে ঘুষ খাব। কেন খাব না? শুধুমাত্র ঘুষের টাকা দেয়া হলনা বলেই বড় আপুর চাকরিটা হলনা। আব্বার পেনশনের টাকা উঠাতে গিয়েও ঘুষ দিতে হল। কৃষি ব্যাংক থেকে বড় ভাইয়ের জন্য কৃষি লোন তুলতে গিয়েও ঘুষ। ময়মনসিংহ পাসপোর্ট অফিসে- পাসপোর্ট করার সময় অনেক হয়রানির পর দালালকে ঘুষ, পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য পুলিশকে ঘুষ দিয়ে তবেই পাসপোর্ট মিলল। এইতো গতকাল দেওয়ানগঞ্জ স্টেশনে টিকেট কাটতে গেলে শুরুতে টিকেট নাই জানালেও ঘুষ দিলে ঠিকই টিকেট মিলল। মাত্র ৩০টাকা ঘুষ। খুব কম তাইনা? কিন্তু ঘুষ দেয়ার জন্য আমি এই অতিরিক্ত ৩০টাকা কোথায় পাব। সত্যি বলছি আমি ঘুষ খাব । ঘুষের টাকা পেলে এই দেশটাকে পর্যন্ত বিক্রি করে দিতে দ্বিধা করব না।
আমার কথা শুনে গনি ভীষণ রেগে বলল, ‘তোর বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, আর তুই টাকা পেলে দেশ বিক্রি করে দিবি’?
-‘জানিস নিজেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পরিচয় দিতেও এখন খারাপ লাগে। এইতো সেদিন একটা জাতীয় দৈনিকে দেখলাম, “বাংলাদেশে প্রায় ৬৪ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা আছে”, আবার অন্যান্য তথ্য মতে ৭২ হাজারেরও বেশি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। কল্পনা করতে পারিস, ৬৪ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা, তাদের সন্তান, নাতি নাতনী মেডিকেল, ভার্সিটিতে ভর্তি, বি.সি.এস সহ সকল চাকরি ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দ সব ধরনের সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে’।
গনি বলল, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয়ে গেছে, একদিন দেখবি এসব ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদেরও বিচার হবে’।
-‘কিসের বিচার, পাঁচ বছর পর পর ক্ষমতার অদল বদল, সামনে আবার হয়তো যুদ্ধাপরাধীরাই ক্ষমতায় আসবে। এদেশে কিচ্ছু হবেনা’।
-‘হবে , অবশ্যই হবে। ক্রিকেট খেলার সময় দেখিসনা। ১৬ কোটি বাংলাদেশী কেমন এক হয়ে যায়। প্রতিপক্ষের পায়ে বল লাগলে মুশফিক, সাকিব, তামিমের সাথে আমরাও কেমন চিৎকার করে আউটের আবেদন করি। সামান্য ক্রিকেট খেলা নিয়ে যে দেশের মানুষ এমন এক হয়ে যায় । দেশের স্বার্থে সে দেশের মানুষ কি চুপ করে থাকবে’?
আমি আর কিছু বলিনা, চুপ করে সেই দিনের জন্য অপেক্ষা করি।

গল্পের পেছনের গল্পঃ
২০১৩ সালের সর্বশেষ গজেট অনুযায়ী র্বতমানে দেশে গজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ২ লাখ ৫ হাজার ৪৮২ জন । ১৯৮৬ সালে এরশাদরে শাসনামলে (গেজেট হিসাবে প্রকাশিত হয়নি) সংখ্যা ছিল ১ লাখ দুই হাজার ৪৫৮। ১৯৮৮ সালে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের করা তালিকা মতে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ৭০ হাজার ৮৯২। ১৯৯৪ সালে বিএনপির শাসনামলে তালিকাভুক্ত হন ৮৬ হাজার। আওয়ামী লীগের আমলে (১৯৯৬-২০০১) সবুজ মুক্তবার্তায় প্রকাশিত হয় এক লাখ ৮২ হাজার নাম। সেখান থেকে বাছাই করে ২৭ হাজার ৫৪৮ জনকে বাদ দিয়ে লাল মুক্তবার্তায় প্রকাশ করা হয় এক লাখ ৫৪ হাজার ৪৫২ জনের তালিকা। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল এক লাখ ৯৮ হাজার ৫২৬। র্বতমান মহাজোট সরকারের মেয়াদে নতুন তালিকাভুক্ত হয়েছে ৬ হাজার ২৭৪ জন। তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য মুক্তিযোদ্ধা সংসদে বস্তাবন্দী হয়ে আছে আরও প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার আবদেন।
সরকার পরিবর্তন হলেই মুক্তিযোদ্ধাদের নতুন তালিকা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফলে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। এ র্পযন্ত পাঁচটি তালিকা হয়েছে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে ভুয়ার সংখ্যা কত?
মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চেয়ারম্যান হেলাল র্মোশেদ খানের মতে সংখ্যাটি ৪৩ থেকে ৪৫ হাজার হতে পারে। তবে ২০০৯ সালের এপ্রিলে জাতীয় সংসদে মুক্তিযোদ্ধাবিয়ক প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ৭২ হাজার।
চিৎকার করে বলছি, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিচার চাই। আশ্চর্য পাশ থেকে একজন বলছে, চিল্লাইয়েন না। চিল্লাইলে শব্দ দূষণ হয়।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৫

আনিসা নাসরীন বলেছেন: ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা আর ঘুষ দিন দিন বাড়ছে আর বাড়ছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.