ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা

১৩ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১:০৯

জানি না কেমন করে আমার সব পছন্দ-অপছন্দ রুমানার সাথে মিলে যায়। রাজ কাপুর, আমির খানের আমি অন্ধ ভক্ত, রুমানাও। আমরা দুজনই বাপ্পা মজুমদারের গান ভীষণ পছন্দ করি। হিঁদল ভর্তা, ছোট মাছের চচ্চড়ি হলে আমি যেমন কয়েক গামলা ভাত একাই খেতে পারি, সেও। আমার সবচেয়ে অপছন্দের খাবার দুধ। আম্মার ঝাড়ির ভয়ে নাক চেপে ধরে আমি সামান্য দুধ খেলেও রুমানা দুধ খেতেই পারে না। দুধ খেলেই ও বমি করে সব বের করে দেবে।
শুধু একটা যায়গায় আমাদের দুজনের দারুন অমিল। ফুটবল বিশ্বকাপে ওর পছন্দের দল আর্জেন্টিনা আমার ব্রাজিল। ওর যুক্তি “নব্বই মিনিট ধরে কয়েকটা কালো ভূতের নাচন দেখার কোনো মানে হয় না। আর্জেন্টিনার সব খেলোয়াড় কত্ত কিউট”। মেয়েরা বোধয় এমনই হয়। আচ্ছা বাবা, যদি চেহারাই দেখবি তো ফুটবল খেলা কেনো, টিভি খুলে কোনো বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতা দেখ। ফুটবলের শৈল্পিক প্রদর্শনী দেখতে হলে তো ব্রাজিলের খেলাই দেখতে হবে।
বিশ্বকাপ শুরু হয়ে গেছে। প্রথম খোঁচাটা ওকে আমিই দিলাম। বললাম,‘কিরে ব্রাজিলের প্রথম ম্যাচ দেখেছিস। ব্রাজিলের এই দলের সামনে তোর দল টিকতে পারবে তো?’ ও বলল, ‘এবার আর বিশ্বকাপ খেলা দেখা হবে না রে, বিশ্বকাপের মাস জুড়ে আমার ফাইনাল পরীক্ষা।’ ধ্যাত! মেডিক্যালে এত্ত পড়ার চাপ। ভাগ্যিস মেডিক্যালে পড়ি না!!!
বরাবরের মত এবারও আমাদের আমগাছটায় উড়বে বিশাল ব্রাজিলের পতাকা, তবে আমার মনে উড়বে আর্জেন্টিনার পতাকা। পাগলিটার হয়ে আর্জেন্টিনার খেলায় হয়তো আমিই হাততালি দেবো। রুমানার জন্যই চাইছি, আর্জেন্টিনা যেন এবার বিশ্বকাপে ফাইনালে ওঠে।তবে হ্যাঁ, ফাইনালে কিন্তু আর্জেন্টিনাকে হারতেই হবে ব্রাজিলের কাছে...।

গল্পের পেছনের গল্পঃ গল্পটা গত বিশ্বকাপের সময় লেখা এবং ‘ছুটির দিনে’ প্রথম আলোতে (০৫/০৬/১০) প্রকাশিত। সত্যি বলছি, বয়ফ্রেন্ড গার্লফ্রেন্ড যদি একিই দলের সাপোর্টার হয় তাহলে কিন্তু এই খুনসুটির মজাটা পাওয়া যাবে না। তাই দুজন দুই দলের সাপোর্টার হওয়াই ভালো। ব্রাজিল আর্জেন্টিনা নিয়ে তার সাথে আমার ঝগড়া গুলো আমি দারুন উপভোগ করি।

১ টি +০/-০