নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একদিন যখন আমি ছোট ছিলাম, তখন আমার দিগন্তব্যাপী বড় বড় স্বপ্ন ছিলো। এরপর কিভাবে কিভাবে যেন একদিন আমি বড় হতে শিখলাম, ব্যস্তানুপাতিক হারে আমার স্বপ্নরা শিখলো সংকীর্ণ হতে। আজ অণুবীক্ষণ হাতে মস্তিষ্কের আনাচে-কানাচে স্বপ্নদের খুঁজে বেড়াই। ঝাঁকঝাঁক নিউরন আবর্জনার ফাঁকে স্বপ্নরা কোথায় যেন বিলীন হয়ে গেছে!
আমার খুব ক্লোজ এক ফ্রেন্ডের নাম দিপু (ছদ্মনাম)
সেইদিন হঠাত করে দিপুর ফোন,
- দোস্ত কি করোছ?
- এই তো কিছু না। ঘুম থেকে উঠলাম মাত্র।
- দোস্ত একটু ভিআইপি তে আসবি? একটা জরুরী দরকার ছিলো।
- আচ্ছা, থাক তুই আমি আওতেছি।
দিপুর হঠাত কি জরুরী দরকার তাই দেখতে কিছুক্ষন পর আমি ভিআইপিতে হাজির হই।
গিয়েই দেখি আমাদের দিপু সেজেগুজে ফুলবাবু হয়ে বসে আছে।
- কিরে কি জরুরী দরকার তোর?
- দোস্ত কাহিনী তো ঘইটা গেছে!! ওর কান বিস্তৃত হাসি।
- আমি বললাম, ‘কি কাহিনী আবার ঘটাইলি?’
- আমি তো দোস্ত এক পিচ্চির উপর ক্রাশ খাইয়া গেছি J
- পিচ্চি মানে?
- মাইয়া ক্লাস সিক্সে পড়ে
- ক্লাস সিক্স :o ধূরর শালা! এইটা তো দুধের শিশু।
- হোক দুধের শিশু। রিয়েল ভাবে প্রেম করলে এদের সাথেই করতে হয়। নাইন-টেনের মেয়েরা বেশি ম্যাচিউরড। তাছাড়া ঐ লেভেলে ভ্যাকেন্সিও থাকে না। সবদিক থেকে দুধের শিশুরাই পারফেক্ট। এদেরকেই পেলেপুষে বড় করতে হবে।
- তো আমারে ডাকলি কোন কাজে?
- আজকে মাইয়ারে প্রোপোজ করতে যামু। তুই একটু আমার সাথে যাবি। একা একা সাহস পাই না। তাছাড়া তোর তো স্কুলে ভালো জানাশুনা।
অতঃপর নিরুপায় হইয়া বন্ধুর মন রক্ষা করিবার উদ্দেশ্যে গার্লস স্কুল অভিমুখে যাত্রা করিলাম। কিছুক্ষন অপেক্ষা করার পর দেখি ক্রাশাক্রান্ত দিপুর সেই মেয়ে গুটিগূটি পায়ে এগিয়ে আসছে। দিপু স্মার্ট একটা ভঙ্গি করে মেয়েটির দিকে এগিয়ে যায়। আমিও দিপুর সাথে সাথে যাই। দিপু মেয়েটিকে ডাকে…
- এই মেয়ে একটু শোনো
- হ্যা ভাইয়া, বলেন
- তোমার নাম ঐশী না?
- হ্যা, আপনি জানলেন কিভাবে?
- আর তোমার বাসা তো শিমুলতলায়, ই-ব্লকের দ্বিতীয় বাড়িটা, তাই না?
- আপনি এতোকিছু জানেন কিভাবে?
মেয়েটা অবাক! শুধু মেয়েটা না, অবাক আমিও। দিপু তলেতলে যে এতো জল ঘোলা করে রাখছে এইটা কে জানতো? ট্রিকস ও ভালোই জানে। দিপু আম্বার জিজ্ঞেস করলো –
- তোমার একটা বড় বন আছে না, বিবিএ তে পড়ে? আর একটা ছোট ভাই আছে। তোমার আব্বু ……
মেয়েটা দিপুকে থামিয়ে দিয়ে বললো, ‘ভাইয়া আপনি কি চান বলেন তো? আর এতকিছু জানলেন কার কাছ থেকে?
এবার মাথা নিচু করে দিপুর স্বলজ্জ উত্তর, ‘আসলে হইছে কি স্পোর্টস এর দিন তোমাকে ফার্স্ট দেখেই অনেক ভালো লেগেছিলো। আর এখন মনে হচ্ছে আই এ্যাম ইন লাভ উইথ ইউ!
মেয়েটি অবাক হয়ে একবার দিপুর দিকে আরেকবার আমার দিকে তাকালো। তারপর অনেকটা ঝাঝালো কন্ঠেই বললো,
‘ভাইয়া, আপনারা ভাবলেন কিভাবে যে ক্লস সিক্সে পড়া একটা মেয়ে এখনো সিঙ্গেল?? আমার বয়ফ্রেন্ড আছে এবং আমরা একে অপরের সাথে স্ট্রংলি কমিটেড !!’
কথাগুলে বলেই মেয়েটি দ্রুত পায়ে চলে গেল।
আর দিপু?
দিপু তাকিয়ে আছে মেয়েটির চলে যাওয়ার দিকে।
বাংলায় ‘আকাশ থেকে পড়া’ বলে একটা কথা আছে। দিপুর তখনকার অবস্থা ছিলো আকাশ থেকে পড়ার মতো। অবশ্য আমার অবস্থা ছিল তার কয়েক কাঠি উপরে।
মোরাল অব দ্যা স্টোরীঃ দুধের শিশু বলে এখন আর পৃথিবীতে কিছু অবশিষ্ট নাই।
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে মে, ২০১৫ সকাল ১১:১৬
নীল আকাশ বলেছেন: জটিল। সিংগেল রা তা হোলে কোঠায় যাবে এখন!