![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১১ জুন, ২০১৩:
# আর কোনো সুন্দরী মেয়ের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করবো না। সাথে অ্যাকাউন্টে কোনো সুন্দরী মেয়ে থেকে থাকলে অতিসত্বর বিদায় হন। ফেসবুকে অধমের একটা মাত্র অ্যাকাউন্ট, সেটাও দূর্ঘটনার শিকার হলে…
১২ জুন, ২০১৩:
# গোলাম আজমের রায় যেকোনো দিন। মুজাহিদের রায় যেকোনো দিন। জামায়াতের বৈধতা নিয়ে রায় যেকোনো দিন।
বাই দ্যা ওয়ে, আপনাদের 'যেকোনো দিন'টা ঠিক কোন দিন?
# এদেশে প্রেমিকার হাত ধরা তাৎক্ষনিক দন্ড আইনের আওতায় পড়ে, মাগার ১৭ মাসের শিশু ধর্ষণের দন্ড দিতে ৩৪ মাস লেগে যায়। বড় বিচিত্র দেশে আছি ডিয়ার মির্জা আব্বাস!
১৪ জুন, ২০১৩:
# বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ সরণের 'সীমান্তে হত্যা শূন্যে নেমেছে' বলার চব্বিশ ঘন্টার মধ্যেই সীমান্তে দুইজন বাংলাদেশী যুবককে হত্যা করেছে বিএসএফ। সাভারে কওমী মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ মাওলানা মোশাররফ হোসেনের যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গেছে ৯ বছরের মাদ্রাসা শিক্ষার্থী গোলাম রাব্বী। আজ চে গুয়েভারার জন্মদিন। তার সাথে আছে জাতীয় সংসদের কঁচড়া, ইন্টারনেটের অপব্যবহার রোধে অদ্ভুত আইন। আছে মেয়র নির্বাচনের ঝাঁঝ। আছে ফিফা কনফেডারেশনস কাপ। দক্ষিণ আফ্রিকা-ওয়েস্ট ইন্ডিজের বৃষ্টিবিঘ্নিত মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। আরও কত কী। সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে কী আর লেখার টপিকের অভাব হয় ফেসবুক-ব্লগে? তবু এসব কিছু নিয়েই লিখতে ইচ্ছে করছে না। সবই অপ্রাসঙ্গিক লাগছে। বরং অঞ্জনের গানটাই খানিক প্রাসঙ্গিক লাগছে:
'মেঘ পিওনের ব্যাগের ভিতর মন খারাপের দিস্তা
মন খারাপ হয়ে কুয়াশা হয়, ব্যাকুল হলে তিস্তা।'
১৫ জুন, ২০১৩:
# দক্ষিণাঞ্চলকে নির্বাচনী ইশতেহারে দেওয়া সবচেয়ে বড় প্রতিশ্রুতি ছিলো পদ্মা সেতুর সাথে সাথে গ্যাস সংযোগ। কানাকড়িও পূরণ করেনি আওয়ামী লীগ। খুলনায় লীগ জিতলে সেটাই সবচেয়ে বড় দূর্ঘটনা হতো। নিজের কথা বলি, পদ্মা সেতু না হওয়ায় ১২-১৪ ঘন্টা লাগে ময়মনসিংহ থেকে খুলনা পৌছাতে। মাঝে মাঝে তারও বেশি। ১৪ ঘন্টা জার্নি করে নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করার প্রয়োজনীয়তা খুঁজে পাইনি। আমার ধারণা দক্ষিণাঞ্চলের অনেকের ক্ষেত্রেই কথাটা কমবেশি একইরকম। সাধারণ মানুষের কাছে স্বাধীনতার স্বপক্ষ-বিপক্ষ থেকে নিজেদের স্বার্থটাই বড়। এবং সেটাই নির্বাচনে প্রতিফলিত হলো। বাকিদের কথা ঠিক জানি না, তাই নিজের সিটি কর্পোরেশনেরটাই জানালাম।
খুলনায় মন্দির-হিন্দুদের বাড়িঘর-দোকানপাট পোড়ানোর পরও প্রশাসন বিন্দুমাত্র ব্যবস্থা না নেওয়ায় হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টানের ১২-১৩% ভোট এবার আওয়ামী বাক্সে যাবে, এই আকাশ কুসুম চিন্তা করা কি ঠিক?
একটা রাজাকারেরও ফাঁসি হয়নি এখনও। এক 'স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি' ঝান্ডা ধরে তাবৎ অনিয়ম করে আর কতদিন? সাধারণ মানুষের অজ্ঞতার দোষ দিয়ে লাভ নেই। ভালো করে জানি শহরের বেশিরভাগ মানুষই শিক্ষিত। আর অশিক্ষিতের ভোটের কথা বললে তো ২০০৯ এ তাদের ভোটেই আওয়ামী লীগ জিতেছে, না-কি?
# সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের ফলাফল:
আওয়ামীলীগ ০:৪ মাহমুদুর-হেফাজত।
১৬ জুন, ২০১৩:
# আগেও অনেকবার লেখা কথাটা আবার লিখি, কিছু দিবস আমার কাছে পালনের জন্য নয়, শুধুই লেখার উপলক্ষ্য হয়ে আসে। ঠিক 'মা দিবস'কে উপলক্ষ্য করে না, ওইদিন 'ইন্টারন্যাশনাল নার্সেস ডে' থাকায় মা কে নিয়ে লিখেছিলাম বেশ খানিকটা। আজকে নিউজ ফিড ভর্তি সব বাবাদের নিয়ে একটার পর একটা অসাধারণ ইমোশনাল পোষ্ট দেখে সত্যিই বাপি কে নিয়ে কিছু একটা লেখার ইচ্ছে হয়েছিলো সূর্যটা ঠিক ৯০ ডিগ্রি কোনে থাকার সময়টাতে। লেখাটা শুরুও করেছিলাম এভাবে, হুমায়ূন আহমেদ শিলা আহমেদকে যে 'পৃথিবীতে অনেক খারাপ মানুষ আছে কিন্তু একটাও খারাপ বাবা নেই' কথাটা বলেছিলেন তা আমার কাছে খানিকটা মিথ্যেই মনে হয়েছে। পৃথিবীতে খারাপ বাবা আছে। ক'দিন আগে এক বাবা হিরোইনের নেশার টাকার জন্য নিজের সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছে বলে দৈনিকে পড়েছি। এক সহপাঠী ছিলো। ও ওর বাবাকে খুব ঘৃণা করতো। প্রতিদিন ওর মায়ের গায়ে হাত তুলতো বলে। এক মাতাল বাবার কথাও জানি.…।' এটুকু লেখার পরেই সেলফোনে একটা ম্যাসেজ আসে। লেখা, 'বাবা দিবসে সবাই বাবা কে নিয়ে লিখছে। কিছু লিখবে না? আন্টিকে নিয়ে লিখছিলা, আঙ্কেলকে নিয়েও লেখো। আমার তো বাবা নেই, তাই লিখতে পারছি না। ফেসবুকে জানাতেও চাই না যে আমার বাবা নেই।'
তারপর আর লিখতে পারিনি। 'পড়াশুনার চাপ। অনেক ব্যস্ততা। ফেসবুকে টাইম দিতে পারি না। লেখার সময় কই?' বলে এড়িয়ে গেছিলাম। কিন্তু খারাপ লাগাটা যাচ্ছে না বলেই লিখছি। মানুষ বিয়ের পরে স্মশুরকেও বাবা বলে ডাকে জানি। খুব ভালো করে জানি, ওই বাবার বুকে ঝাপিয়ে পড়া যায়না। যখন তখন যাচ্ছেতাই আবদারও করা যায় না। রাগ করা কিংবা রাগ ভাঙানো যায় না। তবু বাবা বলে তো একটা ডাক দেওয়া যাবে। দুধের স্বাদ ঘোলে তো মেটানো যাবে। ওর আরেকটা বাবা প্রাপ্তির অপেক্ষায় আছি। ততদিন বাপিকে নিয়ে আজকের লেখাটা স্থগিত থাকুক। পৃথিবীতে কত ছোট ছোট বিষয়ের জন্য কত কিছু স্থগিত হয়ে আছে। ছোট্ট একটা রায়ের জন্য গোলাম আজমের ফাঁসি স্থগিত হয়ে আছে। দূর্নীতির জন্য স্থগিত হয়ে আছে পদ্মা সেতুর কাজ। ভালোবাসি শব্দটা বলতে না পারার জন্য স্থগিত হয়ে আছে কত তরুণ-তরুণীর প্রেম। আর আমার বাপিকে নিয়ে একটা ক্ষুদ্র লেখা স্থগিত রাখা তো সেখানে স্রেফ নস্যি। থাকুক না…।
১৭ জুন, ২০১৩:
# মা পার্সেলে কিছু আম পাঠিয়েছিলো। আজ তার একটা কাটতে গিয়ে বেশ খানিকটা আঙুল কেটে ফেলেছি। এসব বলায় বাপি বললো, 'অ্যান্টিসেপ্টিক দিছো? ইনফেকশন যাতে না হয় খেয়াল রেখো।' মা বললো, 'ইশ! কতটুকু কাটছে? অনেক রক্ত পড়ছে? বুড়ো হয়ে গেল ছেলে তাও আম কাটা শিখলো না! এরপর থেকে যেন আর একটা আমও ছুরি দিয়ে কাটবা না। সব খোঁসা ছাড়িয়ে খাবা।'
# রুটিন মেনে চলতে পারিনা বলে যে আফসোসটা ছিলো, তা আর নেই। প্রকৃতিই রুটিন মানে না! আষাঢ় মাসের বৃষ্টির রুটিন না মেনে হাজির হয় চৈত্র মাসের কাঠফাঁটা রোদ নিয়ে।
১৮ জুন, ২০১৩:
# অস্ট্রেলিয়ার রাজত্বের শেষ দেখা হয়ে গেছে বেশ কয়েক বছর আগেই। এবার বোধহয় এপিটাফ লেখার সময় হলো। রেস্ট ইন পিস ক্যাঙ্গারুস।
# বাংলা গান নিয়ে কথা বলার সময় বন্ধুদের সামনে অনেকবার বলেছি, হেপাটাইটিস-টিটেনাসের ভ্যাকসিনের মত প্রত্যেককে অঞ্জন দত্তের টীকা দেওয়া উচিত। এই লোকটার গান, সিনেমা আর অভিনয় নিয়ে অসম্ভব ভালোলাগা থেকে একবার সাহস করে একটা লেখা লিখতে শুরু করেছিলাম। লিখে শেষ করা সম্ভব না দেখে লেখাটা অসম্পূর্ণই রয়ে গেছে। গতকাল জুনিয়র রুমমেট বললো, 'ভাই, এত অঞ্জনের গান শোনেন, কালকে মীরাক্কেলে অঞ্জন দত্ত আসবে। দেখবেন না?' আজ এলার্ম দিয়ে রেখেছিলাম যাতে কিছুতেই মিস না হয়। পড়াশুনা সিঙেয় তুলে অঞ্জন দত্তের জন্যে বসে ছিলাম। শুধুই অঞ্জন দত্তের জন্যে। ক্যামেরার সামনে এমন সব নির্মম সত্য বলে গেলেন; কবে, কখন, কোথায় মিডিয়ায় কোন ঠোঁটকাটা স্পষ্টভাষীকে এভাবে বলতে শুনেছি ঠিক স্মরণে এলো না। প্রিয় অঞ্জন দত্ত, লেখার পরিসরটা বেড়ে গেলো। জেরেমির বেহালা বাজা কোনো মাঝরাতে নিশ্চয়ই লিখাটা সম্পূর্ণ হবে।
১৯ জুন, ২০১৩:
# সিনিয়র দলটার মতই স্পেন অনুর্ধ-২১ ও ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে নিলো সেই ইতালিকে হারিয়েই। ব্যবধানটা ৪-২। টানা দ্বিতীয়বারের মত। যারা স্পেনের রাজত্বের অবসান দেখছিলেন, তাদের একটু জানিয়ে রাখি, পুরো টুর্ণামেন্টেই স্পেনের কাছে কেউ পাত্তাই পায়নি। ইস্কো-থিয়াগো-মোরাতারা জাভি-ইনিয়েস্তা-ভিয়াদের যোগ্য উত্তরসুরি হয়েই উঠে আসছে, এ বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ সামান্যই। কনফেডারেশনস কাপেও স্পেনের শিরোপার অপেক্ষা করছি। শুধুমাত্র এই একটা মেজর শিরোপার ক্যাবিনেটটাই এখনও খালি পড়ে আছে 'লা ফুরিয়া রোজা' দের।
২০ জুন, ২০১৩:
# ১) একটা দল বিদেশের মাটিতে ধরতে গেলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় একটার পর একটা ম্যাচ জিতে নিচ্ছে; ফ্রম ক্রিকেটিং পয়েন্ট অফ ভিউ, আই ডোন্ট ওয়ান্ট অ্যান এরা অফ ডোমিনেন্স অ্যাগেইন লাইক অস্ট্রেলিয়া হ্যাভ হ্যাড।
২) যেখানে অধিবেশনের নামে হররোজ একে অপরকে দোষারোপ করা হয় সেখানে কবিতা উচ্চারিত হচ্ছে, ভাবতেই ভালো লাগছে। প্রিয় হেলাল হাফিজ, নিশ্চিত, জীবদ্দশায় খুব বেশি কবির এই ভাগ্য হয়নি।
বাই দ্যা ওয়ে, শাম্মী আখতার, আমি শহুরে পোলা। আমি কী গালি দিতে পারবো?
৩) 'ভাই, আপনার আগের লেখাগুলো কই?', 'রণি, ইদানিং কী সব হাবিজাবি লিখিস'- এসবের একটা উত্তর আছে। কিছুদিন ধরে ব্যস্ত। আরও কয়েক মাস এভাবেই কাটবে। টু মি, অফলাইন ইজ মোর ইম্পরট্যান্ট দ্যান অনলাইন। কিছু নিয়ে খানিক স্ট্যাডি করে কন্ট্রিবিউটরি কিছু লিখবো, সে সময় জুটছে না। তবে একদম ছেড়ে যায়নি। ইন্টারনেট ইজ কুয়াইট মোর ডেঞ্জারাস অ্যাডিকশন দ্যান স্মোকিং অর অ্যালকোহলিজম ইজ!
৪) স্পেন-তাহিতির ম্যাচ আছে রাতে। স্পেনের খেলা খুব কমই মিস করি। কিন্তু আজ দেখবো না। ইতালির সাথে ড্র করেছে হয়তো, কিন্তু আমার ধারণা স্পেনের কাছে তাহিতি স্রেফ রেপড হয়ে যাবে। কেউকে ধর্ষিত হতে দেখে আনন্দ পেতে হয়না! ;P
৫) গান্ধী পোকার ক্রমাগত 'অহিংস' আক্রমনে চেহারার মানচিত্র রোজরোজ বদলাচ্ছে। এক প্রিয় বন্ধু তো বলেই দিয়েছে, এভাবে চলতে থাকলে আমার চামড়া আর ব্যাঙের চামড়ার মাঝে খুব কম পার্থক্যই অবশিষ্ট থাকবে।
৬) শঙ্খ ব্যানার্জির গাওয়া খুব প্রিয় একটা গান আছে, 'আমি কী করি কী করি, কোন দিকে যাই, কোন পথে হারাই /রক্ত প্রবাহে শ্লোগান উঠেছে, তোমাকে, তোমাকে চাই।' গানটা এতই প্রিয় যে ইউটিউব থেকে রেকর্ড করে ফোনে রেখে শুনি। কোনো সহৃদয়ের কাছে এমপিথ্রি লিংক থাকলে এই অধমকে শেয়ার করলে অথবা মেইল করে পাঠালে কৃতার্থ থাকবো। উহু, অ্যাপ্লিকেশনের ভাষায় বলি, চিরকৃতজ্ঞ থাকবো।
৭) বৃহষ্পতিবারের রাত ছাত্র জীবনের 'চাঁন রাত্তির'। এক সপ্তাহ খুব ব্যস্ততার মাঝে কাটানোর পর এটা আজ প্রচন্ড অনুভূত হচ্ছে। আনুশেহ আনাদিল শুনছিলাম। এখন 'ইউ টু'র গান শুনি।
'Not so much I couldn't test it
Life should be fragrant
Roof top to the basement
The last of the rock stars.'
২২ জুন, ২০১৩:
# ১) ধর্ম শব্দটার আভিধানিক অর্থ ধারণ করা হতে পারে কিন্তু প্র্যাকটিকাল অর্থ ব্যবহার করা। যত মানুষ ধর্মকে ধারণ করে, নি:সন্দেহে ঢের বেশি মানুষ ধর্মকে ব্যবহার করে।
২) একটু গোড়াতে যাই। যেদিন সরকার হেফাজতের হুমকি প্রতিরোধ না করে উল্টো নিরাপত্তার ইস্যু দেখিয়ে ইমরান অ্যান্ড কোং কে সমাবেশ করতে চট্টগ্রামে যেতে দিলো না, আমার বিবেচনায় ওইদিনই নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মেরেছে আওয়ামী লীগ। গজ দাঁত ওঠার সাথে সাথেই তুলে ফেলতে হয়। তা না হলে যে দাঁতের উপর দিয়ে ওঠে ওই দাঁতকেই ডাবিয়ে দেয়।
৩) আমি ব্যাকডেটেড পোলা। দেশে যখন সিম্বিয়ান ফোন আসলো, আমার তখন জাভা ফোন। এরপর যখন উইন্ডোজ-অ্যান্ড্রয়েড আসা শুরু হলো, তখন আমার সিম্বিয়ান। এ অবধি সিম্বিয়ানেই আছি। নতুন কোনো অপারেটিং সিস্টেম আসা দরকার, তাহলে যদি একটা স্মার্ট ফোন পাই!
৪) ফেসবুকে আগ্রহ হারাচ্ছি। সেই যে ত্যানা পেচানো পুন্দাপুন্দি শুরু হয়েছিলো, ওসব নাকি এখন নতুন মাত্রা পেয়েছে। নিউজ ফিড ঘেঁটে পড়ার আগ্রহ পাইনি, তবু কানে এলো ধর্ষণ প্রতিবাদের ইভেন্ট, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ইভেন্ট নিয়েও নাকি অনলাইন-অফলাইন যুদ্ধ হচ্ছে আজকাল। বেশ। ভালো তো। ঝগড়া খুব ভালো জিনিস। পরিষ্কার ভাষায় ঝগড়া করলে গলা পরিষ্কার থাকে। ঝগড়া নিয়ে অনলাইনে বেশি লেখালিখি করলে হাতের লেখাও সুন্দর হয়।
৫) ইন্টারনেট প্যাকেজের দাম কমবে শুনেছিলাম। এটাও কি গোলাম আজমের রায়ের মত 'যেকোনো দিন'এর চক্রে আটকে আছে?
৬) জীবনানন্দকে দু'দন্ড সুখ দিয়েছিলো নাটোরের বনলতা সেন। আমার এখনও নাটোর যাওয়া হয়নি। আমাকে দু'দন্ড সুখ দিয়েছে অঞ্জনের গিটার।
'জন লেননের সোচ্চার ভালোবাসা, ববি ডিলনের অভিমান /হুট করে ভালো লেগে ভালোবেসে কাউকে তাড়াহুড়া করে লেখা গান /এই বুড়ো পুরানো গিটার, দিয়েছে কত কিছু দিয়েছে /ছোটো খাটো সুখ মান-অভিমান দুঃখের গান দিয়েছে.…।'
২৩ জুন, ২০১৩:
# : জানিস, আজ 'সুপারমুন'।
: তো?
: মানে চাঁদটা পৃথিবীর ১৭০০০ মাইল নিকটে চলে আসবে।
: তো?
: ১৪% বড় আর ৩০% বেশি উজ্জ্বল দেখাবে। দেখবি না?
: না।
: ক্যান?
: এমনি। চাঁদটা আসলে ২৩৮০০০ মাইল দূরে নেই, মাত্র কয়েকশ' মাইল দূরে আছে।
: মানে?
: গত পাঁচ বছরে চাঁদটার ওজন কয়েক পাউন্ড বেড়েছে কিন্তু উজ্জ্বলতা একবিন্দু কমে নি।
: মানেটা কী?
: মানে, মানে হইলো.…মান কচু! মান কচু চিনিস?
২৪ জুন, ২০১৩:
# ২০০৭ সালের টি-টুয়েন্টি ওয়ার্ল্ড কাপের ফাইনালের কথা মনে পড়ে গেলো। বেধড়ক পিটুনি খাওয়ার পরেও যোগীন্দর শর্মার হাতে বল তুলে দিয়েছিলো ধোনি। যোগীন্দর শর্মাই জিতিয়ে দিয়েছিলো। আজকেও ভুবনেশ্বর-যাদবের ওভার বাকি থাকার পরেও ধোনি আস্থার সাথে বেধড়ক পিটুনি খাওয়া ইশান্ত শর্মার হাতে বল তুলে দিলো। ইশান্তই ম্যাচের কমপ্লেকশন চেঞ্জ করে দিলো!
ওয়ার্ল্ড কাপ, টি-টুয়েন্টি ওয়ার্ল্ড কাপ, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জেতা এবং ওয়ানডে-টেস্ট-টি টুয়েন্টিতে নাম্বার ওয়ান হওয়ার মাইলফলক স্থাপন করা বিশ্বের একমাত্র ক্যাপ্টেন মহেন্দ্র সিং ধোনি।
২৬ জুন, ২০১৩:
# ফেসবুকে সেই শুরুর আমল থেকে যে আইডি আমার লেখার সবচেয়ে বেশি সমালোচনা করেছে, মাঝে মাঝেই 'খুব ফালতু হইছে লেখাটা' এবং সম্প্রতি মেহজাবীন অনুকরণে 'এত্তগুলো পঁচা হয়েছে লেখাটা' বলার সাহস করেছে, আজ সেই আইডির জন্মদিন। সেই আইডি ব্যবহারকারী প্রিয় বন্ধুর জন্মদিন।
শুভ জন্মদিন @[100000151400793:তৃষা]।
২৭ জুন, ২০১৩:
# 'ইসলামি ব্যাংক কোনো ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান নয়, এই ব্যাংক সকলের।' হুম, এটা পাবলিক প্রপার্টি। ঠিক পাবলিক টয়লেটের মতন।
২৮ জুন, ২০১৩:
# দ্যা লা ফুরিয়া রোজা। স্প্যানিশ ডোমিনেশন অ্যাগেইন। ব্রাজিল, গেট-সেট-রেডি; হেয়ার উই কাম…:3
২৯ জুন, ২০১৩:
# আজ সারাদিনে মা'র সাথে ফোনে প্রায় ৪/৫ ঘন্টা কথা বলেছি। শেষ কবে, কতবছর আগে, কোন চন্দ্রভূখ অমাবশ্যার রাতে ফোনে এতটা কথা বলেছি সেটা আমার 'শর্ট টার্ম মেমোরি লস' ওয়ালা মস্তিষ্ক মনে করতে ব্যর্থ। এখন একটা উইয়ার্ড ফিলিং হচ্ছে। মনে হচ্ছে মা'কে নিয়ে মানিক বন্দোপাধ্যায়ের ময়নাদ্বীপে চলে যাই। তারপর কোলের উপর মাথা রেখে গল্প শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়ি। হোস্টেল জীবনের সবচেয়ে দু:সহ ব্যাপারটা হলো মা'র মুখ না দেখে, মাকে না ছুঁয়ে দিনের পর দিন পার করা।
১ জুলাই, ২০১৩:
# ডেভিড লুইজের অবিশ্বাস্য সেভ আর রামোসের পেনাল্টি মিসের পর এই ম্যাচের ফলাফল নির্ধারিত হয়ে গেছে। আর্জেন্টাইন বা এন্টি ব্রাজিল না, স্পেন সমর্থক হয়ে লিখছি, ব্রাজিল ইজ ফার বেটার দ্যান ম্যান ইন রেড টুনাইট। পিকে ডিজার্ভ দ্যাট রেড কার্ড, রামোস অলসো। নেইমার ইজ অ্যা স্পেশাল ট্যালেন্ট।
বাই দ্যা ওয়ে, গত কনফেডারেশন কাপেও স্পেন হেরেছিলো এবং বিশ্বকাপ নিয়েছিলো। আশাকরি ঠিক এক বছর পর গত বিশ্বকাপের স্পেনকেই দেখবো। দিস ইজ নট দ্যা এন্ড অফ ওয়ার্ল্ড।
#ব্যাডনাইট
#স্পেনএনিওয়ে
২ জুলাই, ২০১৩:
# ১) এর নেতার বউ ইহুদি, ওই নেত্রীর পূর্বপুরুষ উপজাতি। রাস্তা ঘাটে এটা এখন 'হট টপিক'। এই ফাঁকে বলে রাখি, আমার পূর্বপুরুষ জংলি ছিলো। ধর্মহীন এবং উলঙ্গ ছিলো। গুহাতে থাকতো। পাথর দিয়ে আগুন জ্বালাতো। কাচা মাংস খেত। তথ্যগুলোতে একবিন্দু মিথ্যা নেই।
২) অনেকবার পোষ্টমর্টেম দেখতে গিয়েছি। স্যাড বাট ট্রু, যতবারই সুইসাইডাল হ্যাঙ্গিং বা সুইসাইডাল পয়জনিং কেস থাকে তার প্রায় শতভাগই নারী। উচ্চবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত যেখানেই তাকান মেয়েদের কমবেশি মানসিক বা শারীরিক অত্যাচারিত হতে দেখা দুর্লভ কিছু না; অন্তত আমাদের সমাজে। নিজের পরিবারেই পেয়ে যাবেন হয়তো। এটা আগেও ছিলো, হয়ে আসছে এবং হতে থাকবে। মানববন্ধন করে এসব প্রতিরোধ করা যায়না। মূল্যবোধ একদিনে পাল্টানোর বিষয় না।
৩) উইলিয়াম থমাস, ড্যানঅফ আর ট্যাফি নিভার্টের লেখা এবং জন ডেনভারের গাওয়া খুব প্রিয় একটা গান আছে, 'Country roads, take me home /To the place, I belong' আরেকটা আছে মিলন মাহমুদের, 'স্বপ্ন যাবে বাড়ি আমার /পথ দেবো পাড়ি তোমার।' যখন খুব হোমসিকনেস কাজ করে তখন গান দু'টো শুনি। হঠাৎ এতটাই হোমসিকনেস কাজ করছে যে কিছুতেই কিছু হচ্ছে না।
৩ জুলাই, ২০১৩:
# নিউজ-ফিড ভর্তি আশিকি-২ এর পোষ্ট দেখেও সিনেমাটা দেখিনি। আসলে আগ্রহ হয়নি। কিন্তু অপর্ণা সেনের 'গয়নার বাক্স' না দেখে পারলাম না। অভিনেত্রী অপর্ণা সেন থেকে পরিচালক অপর্ণা সেন আমার ঢের প্রিয়। সেটা 'পারমিতার একদিন' থেকেই। অপর্ণা সেনের ডিরেকশনের উপর ঋতুপর্ণ ঘোষ টাইপ ভালোলালা আছে। শুরুটা ক্লাস নাইন-টেনের দিকে। 'পারমিতার একদিন' অসম্ভব মুগ্ধ করেছিলো আমার ওই বয়সটাকেই। এরপর 'পরমা', 'তিতলি', '১৫ পার্ক এভিনিউ', 'ইতি মৃণালিনী' দেখেছি শুধু। ইচ্ছে আছে তাঁর বাকি কাজগুলোও দেখার।
প্রসঙ্গ বদলে যাচ্ছে। 'গয়নার বাক্স' আসলে তিন প্রজন্মে সমাজে নারীদের প্রতি সামাজিক আচরণ পরিবর্তন এবং বিবর্তনের গল্প। এক প্রজন্মের অপ্রাপ্তি, শৃঙ্খল, যৌনতাকে পরের প্রজন্মের মাঝে খুঁজে নেওয়ার ব্যাকুলতা। কাহিনীর বিস্তার সাতচল্লিশের ভারত ভাগ থেকে ১৯৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধ পর্যন্ত। স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রতি সমর্থন, ফরিদপুর-বরিশাল বেশ ব্যাপ্তি পেয়েছে সিনেমাটায়। সিনেমার কয়েকটা প্রিয় মুহূর্তের মাঝে একটা লিখি। একটা জায়গায় এসে জীবনানন্দের 'আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়ি তীরে এই বাংলায়' আবৃত্তি হয় ব্যাকগ্রাউন্ডে। তারপর একটা চুম্বন দৃশ্য এবং এরপরেই 'আমার সোনার বাংলা'।
শেষমেশ, এটা ঠিক আর্ট হাউজ ফিল্ম না। আবার কমার্শিয়ালও না। আর্ট-কমার্শিয়াল মিক্স। অনেকটা অনিক দত্তের 'ভূতের ভবিষ্যত' টাইপ। একটা প্রতীকের আড়ালে কিছু বার্তা দেওয়ার চেষ্টা। বেশ উপভোগ করেছি।
৫ জুলাই, ২০১৩:
# নিজেকে আধাসামাজিক মানুষ পরিচয় দিলেও আজ গিয়েছিলাম একটা সামাজিক কাজে। খানিকটা সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে। দুস্থ এবং পথ শিশুদের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে কাজ শুরু করা কিছু 'ঘরের খেয়ে বনের মহিষ তাড়ানো' টগবগে দেশপ্রেমিকদের সান্নিধ্যে কিছুটা সময় কাটানোর জন্যে। এ দূর্লভ সুযোগ হাতছাড়া করার সাধ্য বা সাধ কোনোটাই ছিলো না আমার। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে কিছু দিনের মাঝেই গড়ে উঠবে একটা স্কুল। একদল স্বপ্নবাজ মানুষের উপর ভর করে দাঁড়িয়ে যাবে একটা আলোকবর্তিকা। সেই আলোয় অ-আ-ক-খ সুর করে পড়বে বস্তির সুবিধা বঞ্চিতরা, মটর বাইক মেরামত কর্মচারী, রেললাইনে মার্বেল খেলা ছেলেটা, ঘরের কাজের মেয়েটা, হোটেলে যাকে 'পিচ্চি' বলে ডাক দেন, সেই ছেলেটাও।
এখন কিছু প্রাতিষ্ঠানিক কর্মযজ্ঞের অপেক্ষা। চাইলে আপনিও হতে পারবেন এই মহৎ কাজের অংশীদার। সেটা দ্রুতই জানিয়ে দেবো। একটার পর একটা পোষ্ট দিয়ে-ত্যানা পেঁচিয়ে অস্থির করে দেবো। তার আগে কয়েকটা দিন এই অসম্ভব সুন্দর ব্যাপারটা একটু গুছিয়ে নিতে দেন।
৬ জুলাই, ২০১৩:
# ১) স্টার সাবস্ক্রাইবারদের গ্রামীনফোন প্রতিদিন যত এসএমএস দেয়, প্রেমিকরা তাদের প্রেমিকাদের প্রতিদিন ততগুলো ম্যাসেজ দেয় কি-না সন্দেহ। #ইরিটেটিং।
২) সকালে ক্যান্টিনে নাস্তা করে বিল দিতে গিয়ে শুনি এক প্রিয় স্যার আমার নাস্তার বিল আগেই দিয়ে গেছেন। এত অবাক অনেকদিন হইনি। আমি হুটহাট অবাক হইও না। স্যার, আপনি করে দেখালেন। ধন্যবাদ শব্দটা ঠিক যথেষ্ট না।
৩) বাতাসে ভেসে আসা খবরে একবার শুনেছিলাম প্রিয় বন্ধু @[1313529677:Atanu] প্রেমিকার জন্যে হাত কেটে ফেলেছিলো। গতকাল রাতে ফেসবুকে প্রেমিকার নামের প্রথম অক্ষর লিখে হাত কাটার আরেকটা নজির তার বন্ধু তালিকা থেকে দেখালো হুমায়ুন ভাই। হাত কাটা, রক্ত দিয়ে চিঠি লেখা, ঘুমের ঔষধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করা; এসব আদি ব্যাপারগুলো মাঝে মাঝে এখনও ফিরে আসছে। #ইন্টারেস্টিং।
৪) সাঈদী হুজুর লইট্যা মাছ খাওয়া বন্ধ করে দিছে আর এবার আল্লামা হেলিকপ্টার শফি সাব দিলো তেতুল খাওয়া বন্ধ করে। #যাশ্ִশ্লা!
৫) গোপালগঞ্জের পরে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি বলে পরিচিত গাজীপুরে লীগের পরাজয়ের পর নিশ্চয়ই এটা মানতে দ্বিধা থাকার কথা না যে মানুষ লীগকে বর্জন করেছে এবং তারা পরিবর্তন চায়, না-কী? #টিটফরট্যাট।
৬) ক্রিকেট নিয়ে ক্যান লিখছি না ইনবক্সগুলোর উত্তর হলো, ক্রিকেট দেখছি না, তাই লিখছি না। খেল খতম। একটা কারণ, সময়ও মিলছে না। আর বাংলাদেশের খেলা না থাকলে লেখার আগ্রহই পাই না। বরং প্রিমিয়ার লীগ খুব মিস করছি। শুরু হতে আরও মাস দেড়েক বাকি। কবে লিভারপুল মাঠে নামবে, কবে মেসি-নেইমার-সানচেজ; তিন সাউথ আমেরিকান অ্যাটাকিং কম্বোকে দেখবো সেই অপেক্ষায় আছি।
৭) মনসরণির খুব প্রিয় 'জলে আগুন জ্বালো' গানটা শুনি। ব্যান্ডটা সম্ভবত: হারিয়েই গেলো।
'তোমায় যতটা জানি
তুমি জলে আগুন জ্বালো
বৃষ্টি খোঁজনি তুমি
তাই বৃষ্টি তোমায় খোঁজে।'
৮ জুলাই, ২০১৩:
# যেকোনো নির্বাচনের আগে পরে একটা কথা অনলাইনে 'বাংলাদেশের নির্বাচনে প্রার্থী জেতে বা হারে না, জেতে বা হারে রাজনৈতিক দল' কথাটা লিখি। এবং এটাই ধ্রুব সত্য হয়ে গেছে। নেলসন ম্যান্ডেলা, আব্রাহাম লিংকন, মহাত্মা গান্ধী, জর্জ ওয়াশিংটনদের এনে গাজীপুরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ব্যানারে দাঁড় করিয়ে দিলেও জিততে পারতো না। জিততে হলে অবশ্যই নামের পাশে বিএনপি বা আওয়ামী লীগের একটা ট্যাগ থাকতেই হয়। সৎ, যোগ্য, কর্মঠ, উচ্চ শিক্ষিত, নীতিবান, দেশপ্রেমিক; এসব নির্বাচনে জেতার কোনো শর্তই না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একটা জায়গার ভোটাররা ভোটের কিছুদিন আগে থেকেই প্রার্থীর নাম জানা শুরু করে। অবশ্য তার আগেও চলে আরেক প্রতিযোগিতা। প্রার্থী বা সদস্যের প্রার্থীতা বা দলের সমর্থনটাও কেনা হয় টাকার বিনিময়ে; কেন্দ্রীয় সদস্যদের কে বেশি ঘুষ দিলো অনেকটা তার উপর নির্ভর করেই। নির্বাচনের ব্যানার ছাপানোর আগে তাদের চেনে শুধু ছাত্রদল-ছাত্রলীগ-শিবির-ছাত্র ইউনিয়ন করে এমন নেতা-পাতি নেতা-ক্যাডাররাই। সাধারণ মানুষ না চিনে, না জেনে, শুধু দলীয় ট্যাগ দেখেই ভোট দিতে যায়। এবং ফলাফল বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নির্ভর করে ওই মুহূর্তের তাৎক্ষণিক জনপ্রিয়তার উপরে। এটাই হয়ে আসছে এতদিন ধরে। এবং এটাই চলতে থাকবে।
১১ জুলাই, ২০১৩:
# জেমস অ্যান্ডারসন ভীষণ উপভোগ্য। সুইঙ্গিং আর ওভারকাস্ট কন্ডিশনে এই মুহূর্তে ব্যাটসম্যানদের জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিনতম বোলার; সম্ভবত ডেল স্টেইন থেকেও খানিকটা বেশিই উপভোগ্য। স্টেইনের শক্তির জায়গা গতির সাথে আউট-সুইং। অ্যান্ডারসন খানিকটা শন পোলক ধাঁচের। দুই দিকেই সমান সুইং আদায় করে নেয়। দুই দিকেই অল্প জায়গার মাঝে এতখানি সুইং করাতে পারে, এই মুহূর্তে বিশ্বে এমন কেউকে চোখে পড়ে না। ভুবনেশ্বর কুমার-জুনায়েদ খান-ট্রেন্ট বোল্টদের প্রতিশ্রুতিশীল বলেই থেমে যেতে হবে এই মুহূর্তে। তার বেশি না। একটা নতুন জিনিস খেয়াল করলাম। অ্যান্ডারসন ইদানিং বল করার ঠিক আগ মুহূর্তে গ্রিপটা বাম হাতে ঢেকে নিচ্ছে ব্যাটসম্যানকে ধাঁধায় ফেলতে। অনেকটা শেষ বেলার পরিবর্তিত জহির খানের মত। অ্যান্ডারসন বছর খানেক আগে বলেছিলো জহির খানের কাছ থেকে হাতের মাঝে বল ঢেকে রাখা শিখতে টিপস নিয়েছে। এবং আগে টুকটাক করলেও এই অ্যাশেজেই সম্ভবত: পুরোপুরি অ্যাপ্লাই করছে সেটা। এতে সুইং অনুমান করা আরও কষ্টসাধ্য হয়ে গেছে। নটিংহ্যামের ট্রেন্ট ব্রিজে গত চার সেশনের মাঝে হিউজ-অ্যাগারের অবিশ্বাস্য, অপ্রত্যাশিত জুটিটা ব্যাতিরেকে এই মুহূর্ত পর্যন্ত অ্যাশেজের সবচেয়ে উপভোগ্য ব্যাপারটাই ছিলো জেমস অ্যান্ডারসনের সুইং।
ভষ্মদারের লড়াই দেখছি। সাদা পোশাক আর লাল বলের সবচেয়ে পুরাতন এবং মর্যাদার লড়াই। মাত্র কয়েক বছর আগেও অপ্রতিরোধ্য একটা দলকে এখন খড়-কুটো ধরে লড়তে হচ্ছে। সেই হেইডেন-ল্যাঙ্গার-মার্টিন-পন্টিং-গিলক্রিস্ট-ম্যাকগ্রা-গিলেস্পি-লি-ওয়ার্নদের চেহারার 'ডোন্ট কেয়ার' ভাব, প্রতিটা 'আমরাই বিশ্বজয়ী' পদক্ষেপ, দাপট, স্লেজিং; সেই বিশ্বজয়ী চেহারাগুলো ব্রেন কোনোভাবেই তাড়াতে পারছে না। আর আজ, স্টুয়ার্ট ব্রড মাইনর ইনজুরিতে পড়ায় মাত্র তিন বোলার নিয়েই অস্ট্রেলিয়ার এক পর্যায়ের স্কোর ছিলো ১১৭/৯! ১৯ বছরের ডেবুট্যান্ট অ্যাস্টন অ্যাগারের বিশ্বরেকর্ড(নাম্বার ইলেভেনে ডেবুট্যান্ট হিশেবে সর্বোচ্চ রান) করে অপ্রত্যাশিত চমক না দেখালে এতক্ষণে এই টেস্টের ফলাফল লেখা হয়ে যেত। উল্টো অস্ট্রেলিয়াই লিড নিয়ে নিলো!
অস্ট্রেলিয়ার সোনালী যুগটাতে নাসের হোসেন-মাইকেল ভন-আন্ড্রু ফ্লিনটফ-অ্যান্ড্রু স্ট্রাউসের দলগুলোকে দূর্বল দেখে সমর্থন করতাম। চিরকাল আন্ডারডগদের প্রতি খানিকটা স্বভাবগত দূর্বলতা থাকায় সমর্থনটা বদলে গেছে এবার। এই খর্বশক্তির অস্ট্রেলিয়াকেই সমর্থন করছি এই অ্যাশেজে। যদিও অ্যাশেজের কাছে চাওয়াটা সেই আগের মতই আছে এখনও; প্রতিদ্বন্দ্বিতা!
১২ জুলাই, ২০১৩:
# ১) রিয়াল মাদ্রিদ রিয়াল সোসিয়াদাদের স্বল্প পরিচিত আসিয়ের ইল্লারামেন্দিকে বায়-আউট ক্লজ ভাঙে কিনতে খরচ করেছে ৩৮ মিলিয়ন! ওদিকে ডেভিড ভিয়াকে কিনতে অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ খরচ করলো মাত্র ৫ মিলিয়ন! জুভেন্টাস কার্লোস তেভেজকে কিনে নিলো মাত্র ৮ মিলিয়নে! আবার কলম্বিয়ান উইঙ্গার জেমস রড্রিগেজকে মোনাকো কিনলো ৪৫ মিলিয়নে! পেয়িং ওভার দ্যা ওড; দিস ট্রাডিশন হ্যাজ অবটেইনড বাই রিয়াল মাদ্রিদ, চেলসি, ম্যান সিটি, পিএসজি, আনঝি অ্যান্ড নাও মোনাকো। ইউরোপিয়ান ট্রান্সফার মার্কেট ইজ টোটালি ক্রেজি।
২) ইন্ডিয়া-শ্রীলংকা-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ট্রাই সিরিজের ফাইনালে গতরাতে ধোনিকে একটা অবিশ্বাস্য কান্ড করতে দেখলাম। ৯ উইকেট পড়ে গেছে। অপর পাশে নাম্বার ইলেভেন ইশান্ত শর্মা। হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে ধোনি দৌড়ে রান নিতেও পারছে না। এমন অবস্থায় আইস কুল ব্রেনে ম্যাচ নিয়ে আসলো শেষ ওভারে। ৫ বলে দরকার ১৫। ৬, ৪, ৬। ২ বল হাতে রেখেই ম্যাচ শেষ! এই কাজটা গত কয়েক বছর ধরেই করছে ও। দুপুরে ইশান্ত শর্মা, রোহিত শর্মা, রাহুল শর্মা, যোগীন্দর শর্মা এবং করণ শর্মার আপন ভাই @[100000300079621: Asish Sharma](:p) বললো, 'আগে ইন্ডিয়ান সাপোর্টাররা শচীন আউট হলে টিভি বন্ধ করে দিতো, আর এখন ধোনি ক্রিজে আসলে টিভি ওপেন করে।' অ্যাপার্ট মাইকেল বেভান, নেভার সিন অ্যা কুল হেডেড ফিনিশার লাইক ধোনি। নো অফেন্স, আনডাউবট্ִলি দ্যা বেস্ট ফিনিশার ইন রিসেন্ট টিমস।
৩) ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা থাকলে স্টার ক্রিকেট অন করে কিছুক্ষণ অ্যাশেজ দেখেন। নিশ্চিত বলছি, অ্যাশেজের একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ টেস্টে যতটা 'টেস্ট' লুকিয়ে আছে সেটা ১০ টা ওয়ানডে আর ১০ টা টি-টুয়েন্টি মিলেও পাবেন না। এবং এই ম্যাচটা এখন পর্যন্ত তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণই হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়াকে কাগজে-কলমে দূর্বল ভাবলেও মাঠের লড়াইটা হচ্ছে সেয়ানে-সেয়ানে।
১৩ জুলাই, ২০১৩:
# ১) নো ওয়ান নোটিশ, হঠাৎ করে যুদ্ধাপরাধীর বিচার ইস্যুটা হারিয়ে গেছে। দুই মাসের মাঝে কাদের মোল্লার রায়, গোলাম আজমের রায়, ফাঁসি কার্যকর; কোনোকিছু নিয়েই উচ্চবাচ্য নেই। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ফলাফল পুরো মোটিভটাকেই চেঞ্জ করে দিয়েছে। আউল-ফাউল ইস্যু নিয়ে জোরালো আন্দোলন দানা বাধা শুরু হয়েছে। অল নো দ্যা রিজন বিহাইন্ড ইট। এখন থেকে যত আন্দোলন হবে, সব কিছুর পিছনের উদ্দেশ্যটা খুব 'কমন'। আই ডাউবট্ִ, যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি আদৌ দিতে পারবে সরকার? নাকি নিজের বাপের হত্যার বিচার করেছি, বাকিদের না হলেও হয়; এটা ভেবেই বসে আছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী?
২) পদ্মা সেতু, যুদ্ধাপরাধীর বিচার, শেয়ারবাজার, হলমার্ক, ছাত্রলীগ, বিএসএফ, সাগর-রুনি, বিশ্বজিৎ-লিমন, ত্বকী-শওকত ওসমান, আবুল-সুরঞ্জিত, পরিমল-পারসোনা, ইলিয়াস গুম, হেফাজতকে প্রশ্রয়; লিস্টটা ক্রমেই বড় হচ্ছে।
৩) রাজনীতি নিয়ে লেখার উপর কড়া নিষেধ আছে। তাই বলি এই স্ট্যাটাসটা কিন্তু খেলা নিয়ে। মৌসুমের প্রথম প্রি-সিজন ম্যাচে লিভারপুল দুর্দান্ত খেলে প্রেস্টনের সাথে জিতেছে ৪-০ গোলে। তাই মনটা বেশরকম ভালো। অ্যাশেজের প্রতিদ্বন্দ্বিতাও দারুণ জমে উঠেছে। অ্যাশেজ অ্যাট ইটস্ִ বেস্ট রাইট নাও। অস্ট্রেলিয়ার জয় চাইছি খানিকটা ক্রিকেটীয় কারণেও। এই ম্যাচ অস্ট্রেলিয়া জিতলে অ্যাশেজের আকর্ষণ অন্তত চতুর্থ টেস্টের আগে শেষ হচ্ছে না, সেটা নিশ্চিত।
১৪ জুলাই, ২০১৩:
# ১৯৭১ সালের বিভিন্ন সময়ে গোলাম আজমের মুখনিসৃত অমর বাণী সমগ্র:
১) 'পাকিস্তান যদি না থাকে তাহলে জামাত কর্মীদের দুনিয়ায় বেঁচে থেকে লাভ নেই।' (দৈনিক সংগ্রাম, ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭১)
২) 'বাংলাদেশ নামের কিছু হলে আমি আত্মহত্যা করবো।' (নাগরিকত্ব মামলার শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল। ভোরের কাগজ, ১৯/০৫/৯৪)
৩) 'কালেমার ঝান্ডা উঁচু রাখার জন্য রাজাকারদের কাজ করে যেতে হবে।' (দৈনিক সংগ্রাম, ১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭১)
৪) 'দুষ্কৃতিকারীদের ধ্বংস করার কাজে পূর্ব পাকিস্তানের জনগন সশস্ত্র বাহিনীকে পূর্ণ সহযোগিতা করছে।' (দৈনিক সংগ্রাম, ১৭ আগস্ট ১৯৭১)
৫) 'পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিটি মুসলমান নিজ নিজ এলাকার দুষ্কৃতিকারীদের তন্ন তন্ন করে তালাশ করে নির্মূল করবে।' (দৈনিক সংগ্রাম, ১২ আগস্ট ১৯৭১)
৬) 'দুষ্কৃতিকারীদের মোকাবেলা করার উদ্দেশ্যে দেশের আদর্শ এবং সংহতিতে বিশ্বাসী লোকদের হাতে অস্ত্র সরবরাহ করার জন্য আবেদন করেছি।' (দৈনিক সংগ্রাম, ২৯ আগস্ট ১৯৭১)
৭) 'তথাকথিত বাংলাদেশের আন্দোলনের ভূয়া শ্লোগানে কান না দিয়ে পাকিস্তানকে নতুনভাবে গড়তে আহবান জানাচ্ছি।' (১৬ অক্টোবর বায়তুল মোকাররমের সভায়। দৈনিক পাকিস্তান, ১৭ অক্টোবর ১৯৭১)
৮) 'কোনো ভালো মুসলমানই তথাকথিত বাংলাদেশের আন্দোলনের সমর্থক হতে পারে না। রাজাকাররা খুব ভালো কাজ করছে।' (দৈনিক সংগ্রাম, ২ অক্টোবর ১৯৭১)
৯) 'বর্তমান মুহূর্তে আক্রমনাত্মক ভূমিকা গ্রহণ করাই হবে দেশের জন্য আত্মরক্ষার সর্বোত্তম ব্যবস্থা।' (দৈনিক সংগ্রাম, ২৪ নভেম্বর ১৯৭১)
১০) 'পূর্ব পাকিস্তানের জামাতে ইসলামের কর্মীরা বেশিরভাগ রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনী গঠন করে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যুদ্ধ করছে এবং প্রান দিচ্ছে। এখানে জামাতের অবদানই বেশি। সুতরাং পূর্ব পাকিস্তান থেকে প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রী হলে জামায়াত থেকেই হতে হবে।' (বাংলাদেশ ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস, চতুর্থ খন্ড, মুক্তিযুদ্ধ পর্ব।)
'১৯৭৩ সাল থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত গোলাম আজম সব মিলিয়ে ৭ বার সৌদি বাদশার সাথে দেখা করেন। প্রতিটি বৈঠকেই তিনি সৌদি বাদশাকে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। একই সঙ্গে এই সময়কাল জুড়ে কোনো প্রকার আর্থিক এবং বৈষয়িক সাহায্য সহযোগিতা না করার জন্য মুসলিম দেশগুলোকে প্ররোচিত করার আপ্রান চেষ্টা করেন।' (ভোরের কাগজ, ১১ মার্চ ১৯৯২)
# ১) রোজা-রমজানে হরতাল ডেকে, যানবাহনে আগুন দিয়ে, ভাংচুর চালিয়ে, পুলিশ পিটিয়ে যারা আতংক ছড়ায়, জনমনে সীমাহীন দূর্ভোগের উদ্রেক করে তাদেরকে ইসলামি আদর্শভিত্তিক দল জামায়াত-এ-ইসলাম বলে। #গটইট?
২) একজন আত্মস্মীকৃত যুদ্ধাপরাধী, যার নেতৃত্বে সহস্রাধিক খুন-ধর্ষণ হয়েছে; তার জন্য, রিপিট অ্যাগেইন, তার জন্য বাংলাদেশে হরতাল হয়! আচ্ছা, সপ্তাচর্য নির্বাচন করে কোন শালারা?
৩) সু-সংবাদের পর মিষ্টিমুখ করানোর পুরানো বাঙালি রেওয়াজটা একটু বদলানো হোক। ফাঁসির রায় ঘোষণার আগে গোলামের বাচ্চা গোলামের সামনে প্লেট ভর্তি প্রিয় আমের আচার রাখা হোক। ফাঁসির রায় ঘোষণার সাথে সাথে ওকে আচারমুখ করানো হোক। রিফিউজ করলে যেনো পিছনের মুখ দিয়ে আমের আচার খাওয়ানো যায়, সেই ব্যবস্থাও রাখা হোক।
# ডিম কিনতে গেলাম, ৩৫ টাকা হালির ডিম ৯১ টাকা চায়। 'ক্যামনে কী' বলতে বলতে গেলাম মিষ্টি আর কাচ্চির প্যাকেট কিনতে। জানালো রিজার্ভ যা ছিলো সব শেষ। কিছু বুকিং জমা পড়েছে, আমি দিবো কি-না। একটা রেডিয়ামের কঙ্কাল আছে। দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখবো বলে কাচ্চির বুকিং দিয়ে গেলাম মিটারখানেক ম্যানিলা দঁড়ি কিনতে। দোকানদার আমার দিকে কিছুক্ষণ হা করে তাকিয়ে থেকে বললো, দঁড়ি তো পৌষ মাসেই শ্যাষ। পাকিস্তান থেকে আনার অর্ডার দেওয়া হয়েছে, আগামীকাল চাঁটগা পৌছুবে। নাহ্ִ, মাত্র চার রোজা চলে, এই মাঝেই জিনিসপত্র ঈদের আগের দিনের মত দামী আর দুষ্প্রাপ্য কিভাবে হয়ে গেলো; এটা ভাবতে ভাবতেই ফিরছিলাম। পথে দেখি রাস্তার পাশে একটা ল্যাংটা পাগল তাইরে-নাইরে-না করে খুশিতে লাফাচ্ছে। কিছু লাফাঙ্গার একটা মিছিলও যেতে দেখলাম। যাওয়ার সময় ওদের একজন আমার রিকশার টায়ারের বাতাস ছেড়ে দিয়ে গেলো। জিজ্ঞাসাইলাম না, এত কিছু থাকতে টায়ারের বায়ু ছাড়লি ক্যান? কারণ উত্তরটা আমি জানি। কন্ִজেনিটাল ইমপারফোরেটেড অ্যানাস ওয়ালাদের টায়ারের বা বেলুনের বায়ু ছেড়েই আনন্দ!
বাই দ্যা ওয়ে, বিশ্বাস না হলে রাস্তায় নেমে দেখুন। ফেসবুক ওয়্যাল, অনলাইন নিউজ বা স্যাটেলাইট টিভির খবর থেকে আপনার জানা লাগবে না যে আগামীকাল গোলামের বাচ্চা গোলামের 'ফাঁসি'র রায়!
১৫ জুলাই, ২০১৩:
# সব্বনাশ! গোলাম আজমকে ট্রাইবুনাল খুব করে বকে দিয়েছেন! একজন সম্মানিত অধ্যাপককে ৯০ বার বকা দিয়ে দিয়েছেন স্বচ্ছ্ব, নিরপেক্ষ আদালত! আহারে!
#রেস্টইনপিসবাংলাদেশ।
# ১) আচ্ছা ১৯৭১ এ কি গোলাম আজম বয়স আর অসুস্থতা দেখে নিরস্ত্র বাঙালিদের হত্যা করেনি? ৯০ ঘন্টার মাঝে পালানোর সুযোগ করে দিয়েছিলো?
২) আমার দেওয়া ট্যাক্সের টাকায় খেয়ে দেয়ে বেঁচে থাকবে এমন একজন যে কি-না বাংলাদেশটাই চায়নি? যে বলেছিলো, বাংলাদেশ হলে সে নাকি আত্মহত্যা করবে!
৩) লিখে রাখতে পারেন, একটা ফাঁসিও কার্যকর হবে না। আঁতাতের রাজনীতি শুরু হয়ে গেছে। বুঝে গেছি, শেখের বেটির বাপই একমাত্র বাপ, আর কারো বাপের মৃত্যুর বিচারের দায়ভার সে নেবে না। লীগ এতো বড় 'গেম' খেলবে তা স্রেফ কল্পনার অতীত ছিলো আমার! ওয়েলডান। ইউ ডিফিটেড আওয়ার ইমোশন। নাইস প্লে।
৪) পড়াশুনা-স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বাদ দিয়ে গণজাগরণ-শাহবাগ করে বেড়িয়েছি মাস দুয়েক। মা-বাপিকে না জানিয়ে দিন রাত শ্লোগান দিয়েছি। ছোট্ট ক্ষমতার মাঝে অনলাইনে লিখে গেছি। নেট রেজাল্ট: অ্যা বিগ জিরো। থ্যাংক ইউ মাই ফ্রীডম।
৫) ৫ বা ৬ জানুয়ারি রাতে লিখেছিলাম, দেশবিরোধীদের সাথে একই বাতাসে চিরদিন নি:শ্বাস নেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না। সুতরাং, আজ ফাইনাল করে ফেলেছি, দেশ ছাড়বো। কত মানুষ প্রবাস জীবন যাপন করে। সংখ্যাটায় এক-দু'জন বাড়লে খুব একটা হেরফের হবে বলে মনে হয় না।
#IQuit
# ১) হুম, রণি এখনও গণজাগরণ কর্মসূচির সাথে আছে। 'অট্টহাসি কর্মসূচি' দেখেই আগেভাগে একটা অট্টহাসি দিয়ে নিয়েছি।
২) প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে একটা স্ট্যাটাস, হুম, একটা ফেসবুক স্ট্যাটাস দেওয়ায় কী শাস্তিটাই না দেওয়া হলো! নিশ্চয়ই গোলাম আজমের অপরাধ এর কাছাকাছিই ছিলো, না-কী?
৩) @[100004085875170:আরণ্যক] তার স্ট্যাটাসে লিখেছে (উইথ ডিউ রেসপেক্ট) বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বয়সও বেশি ছিলো, তাদের বিচার কেন মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে হলো না? দেশের অন্যদের পিতা হত্যার বিচার হবে না?
৪) কয়েকমাস পরে একদিন হয়তো পেপার খুলে দেখবো গোলাম আজম অসুস্থ। তাকে চিকিৎসার জন্য সরকারী অ্যাম্বুলেন্সে করে নেওয়া হচ্ছে এয়ারপোর্টে। তারপর ইমার্জেন্সি বিমানে করে সিঙ্গাপুরে। বিমানের গায়ে বাংলাদেশের পতাকা আঁকা।
৫) আওয়ামী লীগের আঁতাতের একটা কারণ সম্ভবত: ধরতে পেরেছি। লীগ বুঝে গেছে তারা আর কিছুতেই ক্ষমতায় আসতে পারছে না। এখনকার আঁতাতের মানে ক্ষমতা থেকে নেমে গেলে যাতে জামাত-বিএনপি কোনো হ্যারাজমেন্ট না করে পরবর্তী পাঁচ বছর সেই চুক্তিতেই সম্ভবত: এই সমঝোতা।
৬) লীগ বা বিএনপির সমর্থকেরা তাদের কোনো প্রিয় নেতার জন্য সারা দেশে একসাথে আইনি বাঁধা ভেঙে ভাঙচূর করার সাহস রাখে? আমার ধারণা, না। জামাত বাংলাদেশের সবচেয়ে এক্যবদ্ধ দল।
৭) আজকের রায় ঠিক কার বিরুদ্ধে হলো? মুক্তিযোদ্ধাদের না গোলাম আজমের? ঠিক কে আসামী ছিলো?
৮) মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর ধর্ম ব্যাবসা আজ এক হয়ে গেছে। দুটোই নাকের গোড়ায় ধরে রাজনৈতিক দলগুলোর কার্য হাসিলের উপায় বৈ আর কিছু না।
৯) ফাইনালি, একটু পর একটা কালো কভার ফটো, যাতে লেখা 'আমি শোকাহত', ঝুলিয়ে এসবের ইতি টানবো ভাবছি। চাইলে একটা ইভেন্টও.…।
১৬ জুলাই, ২০১৩:
# আমার ধারণা আগামীকাল রাজাকার আলী আহসান মুজাহিদের ফাঁসির রায়ই দেওয়া হবে। এবং এই রায়ের নাম হবে 'লোক দেখানো পরিবেশ শান্ত করা রায়'।
বাই দ্যা ওয়ে, গতকাল থেকে একটা উইয়ার্ড অনুভূতি আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে। হঠাৎ হঠাৎ মনে হচ্ছে এই দেশটা আমার না। অন্য কারও। দয়া-দাক্ষিন্য করে আমাকে, আমাদের থাকতে দিয়েছে, তাই থাকছি। কয়েক কাপ ধোঁয়া ওঠা গরম চা খেলাম। তাও মাথা থেকে এসব যাচ্ছে না। এক পেয়ালা ধোঁয়া ওঠা গরম বিষ হবে প্রিয় দেশ?
১৮ জুলাই, ২০১৩:
# ১) অব্ִস্ִ ওয়ার্ডে কয়েকদিন আগে এক মায়ের কাছে শুনলাম উনি পেটের বাচ্চার জন্য ডাক্তারের পরামর্শে বিগত দেড় মাস ধরে বাম কাৎ হয়ে শুয়ে আছে। একবারের জন্য ডানদিকে কাৎ হননি। যে নারী নিজের শরীরের ভিতর আরেকটা শরীর ধারণ করে, নিজের শরীরের রক্ত-মাংসে-যত্নে আরেকটা শরীর সৃষ্টি করে সেই নারীর কাছে পৃথিবীর অন্য সব সৃষ্টি, অন্য সব সৌন্দর্য স্রেফ তুচ্ছ।
২) আগেরদিন রাতে স্ট্যাটাসে লিখেছিলাম, রাজাকার আলি আহসান মুজাহিদের লোক দেখানো পরিবেশ শান্ত করা রায়ে ফাঁসিই হবে। তাই হয়েছে। আলতাফ মাহমুদ, রুমির আত্মারা কিছুটা শান্তি তো পেলো। গোলাম-কাদেরের ফাঁসি না হলে ক্ষোভ কোনোদিন যাবে না। তবু ডাস্টবিনের ৪২ বছর ধরে জমে থাকা দুষিত পঁচা গন্ধের মাত্রাটা কিছুটা তো কমুক।
৩) অ্যাশেজ শুরু হয়েছে। ঠিকমত দেখা হচ্ছে না। তবে রায়ান হ্যারিসকে দেখলাম খানিক। রায়ান হ্যারিসকে দেখলে আমার মাশরাফির কথা মনে পড়ে। দুর্দান্ত প্রতিভা বছরের পর বছর ধরে সঙ্গী হয়ে যাওয়া ইনজুরির কাছে আত্মসমর্পনের গল্প। চাই এই ম্যাচে আর বিতর্ক, বাজে আম্পায়ারিং না হোক। স্টুয়ার্ট ব্রডের মত কেউ স্টুয়ার্ট 'ফ্রড' না হয়ে যাক।
৪) রাত যত গভীর হয়, শুকতারারা উজ্জ্বল হয় আর জিপির ইন্টারনেট স্পীডটাকে কোনো চন্দ্রভূখ অমাবশ্যারা খেয়ে ফেলে! শুনেছিলাম ১৭০ টাকায় ১ গিগা দিবে, সেসবের কী হলো? শ্লার গ্রামীনফোন খুব খ্রাপ, বাকশালী, নাস্তিক। হুম!
৫) অর্ণবের পুরানো অ্যালবামগুলো শুনি। অনেকদিন অর্ণবের অ্যালবাম আসে না। কয়েক বছর আগের অডিও শিল্পের উথানটা পড়তির দিকে। ঈদে কিছু ভালো অ্যালবামের অপেক্ষায় আছি।
'আধখানা পথ হাঁটা, আধা বিশ্রাম
আধখানা ফাঁকিবাজি, আধা সংগ্রাম
একটা বাংলা ভেঙে আধখানা আছে
আধখানা সাধ নিয়ে আধাপেটা বাঁচে।'
১৯ জুলাই, ২০১৩:
# ১) কোথায় যেন পড়েছিলাম, বাঙালি মধ্যবিত্তের ড্রয়িং রুম থেকে শো-পিস চুরি হয়না, হয় হুমায়ূন আহমেদের বই। ছুটি-ছাটায় বাড়ি গেলে বুকসেল্ফে তাকিয়ে উপলব্ধি হয়, কথাটায় খুব একটা মিথ্যে নেই।
২) মিরাকল হ্যাপেনস্ִ। গত বছর ১৯শে জুলাই অমিতের বাসায় ছিলাম। পড়াশুনা শেষ করে ফেসবুকে ঢুকেই ইলেকট্রিক শক লাগার অনুভূতি হয়েছিলো। শুধু বলেছিলাম, '@[100000824406564:অমিত], হুমায়ূন আহমেদ আর নেই'। তারপর দু'জন দীর্ঘক্ষণ নি:শব্দে বসে ছিলাম। কেউ কোনো কথা বলিনি। আজও একটা কারণে অমিতের বাসাতেই যাওয়া লাগলো। সেই খাঁটের উপরটাতেই বসে ছিলাম কিছুক্ষণ। সেদিন চান্নি পসর রাতের বদলে ছিলো ইলশেগুড়ি বৃষ্টি, আজও। আজ রাতেও সেদিনের মতো চাঁদ উঠবে না হয়তো। হাত দিয়ে ধরার মতো উথাল-পাথাল জ্যোস্নারাও আসবে না। ঠিক সেদিনের মতই। প্রিয় হুমায়ূন, মৃত্যুর পরেও রহস্য নিয়ে আছেন? ভুল বলে ফেললাম হয়তো। সম্ভবত: আমি ওইদিন অমিতকে মিথ্যা বলেছিলাম। আপনি মারা যাননি। গতকাল থেকে পত্রিকা-স্যাটেলাইট মিডিয়া-অনলাইন নিউজ-ফেসবুক-ব্লগে আপনার জীবন্ত উপস্থিতি দেখে কথাটা ফিরিয়ে নিলাম। আপনার মৃত্যুকে অস্বীকার করলাম আজ। আজকে ময়মনসিংহে সারাটা বিকেল ঝুম বৃষ্টি হলো। এক দোকানের নিচে আশ্রয় নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম বৃষ্টিবন্দি হয়ে। হঠাৎ দেখলাম দু'টো আঠারো-বিশ বছরের ছেলে হলুদ পাঞ্জাবি পরে ভিজতে ভিজতে গাঙিনারপাড় চৌরাস্তা পার হচ্ছে। একজন মৃত মানুষ কিভাবে সব জায়গাতেই এভাবে উপস্থিত হয়? এই মিসির আলি.…এই.…ব্যাখ্যা দিয়ে যান!
৩) অনেক বিদ্বান বন্ধু আছে আমার। একটা সময় পর্যন্ত হুমায়ূন পড়তে দেখলে উপহাস করে বলেছে, কী পড়িস এসব, যা-তা লেখা। ছোট্ট একটা এলেবেলে কাহিনীকে ত্যানা পেঁচায় যুক্তিহীন একটা দেড়শ' পাতার সস্তা অপন্যাস। এর থেকে তলস্তয় পড়, ভিক্টর হুগো পড়, আলেক্সান্দ্রে ডুমাস পড়, আগাথা ক্রিস্টি পড়। এসব কথা একাধিকবার শোনার 'সৌভাগ্য' হওয়াতে একটা উত্তরও তৈরি হয়ে গেছিলো। বলতাম, সস্তা পাঠকের জন্য সস্তা বই। আমি নিজেই বিরাট সস্তা। আর ছেঁড়া কাপড়ে কি অলঙ্কার শোভা পায়?
৪) চেতনে হোক আর অবচেতনে হোক, কেউ অন্তত বলে যাক, হুমায়ূন আহমেদ ক্যান্সার জয় করে ফিরেছেন। গত একবছর মরীচিকা ছিলো। আগামী একুশে বইমেলায় হুমায়ূনের বই আসবে। বইয়ের নাম 'মৃত্যুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম'।
# ২১ জুলাই, ২০১৩:
# ১) নির্মলেন্দু গুনের কবিতার মত কারো ভিতর থেকে দরজা খুলে দেওয়া লাগবে না। জিজ্ঞাসা করা লাগবে না, 'তোমার চোখ এত লাল কেন?' আমি চাই কেউ একজন আমার মশারি টানিয়ে দিক। অ্যাপ্রোনটা ধুয়ে ধবধবা সাদা করে দিক। বাকিটা আমি নিজেই করতে পারি।
'আমি বলছি না ভালোবাসতেই হবে।'
২) ইয়াহু! এত্তদিনে আমার নাম ফাটছে। নিউজ-ফিড ভর্তি রনি-রনি-রনি। হোক সে গোলাম মওলা রনি অথবা ইচ্ছামানুষ রণি; রনি তো! বাই দ্যা ওয়ে, 'মাই নেম ইজ খান' এর মত করে বলি, আই অ্যাম রণি অ্যান্ড আই অ্যাম নট অ্যা জার্নালিস্ট বিটার।
৩) এক আপু বলেছিলেন, রান্না দুনিয়ার কঠিনতম শিল্পগুলোর একটা। মা-খালারা ত্রিশ-চল্লিশ বছর ধরে সকাল-বিকেল রান্না করে অভ্যস্ত তাও মাঝে মধ্যে লবন বা ঝাল বেশি-কম হয়। ভাত ঝরঝরে না হয়ে আঠালো হয়; এত প্রাকটিসের পরেও। এই কথাটা শোনার পর থেকে বিশ্বাসও করি। এই যেমন সেদিন নিজে নুডুলস্ִ রেধে খাওয়ার সময় এক ধরণের খিঁচুড়ি খাওয়ার অনুভূতি হলো! বাই দ্যা ওয়ে, শিল্প তো; একদিনে হবে না!
৪) তীব্র ভারত বিদ্বেষীদের ফোন-ল্যাপটপ ভরা থাকে হিন্দি গান, হিন্দি এবং তামিল মুভিতে। তারা দিনরাত হিন্দি গান শোনে এবং বাংলা গানের কথা পাড়লে খানিকটা নাক সিঁটকে বলে ওঠে, 'এগুলো গান?' তারা জাস্ট ড্যান্স, ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড মিস করে না আবার হিন্দি সিরিয়াল, জি-বাংলা বা ডোরেমনের আগ্রাসন বাঙালিদের শেষ করে দিলো বলে লম্ফ ঝম্প দেয়। মোবাইলে থাকে ক্যাটরিনার নাভি দেখানো ছবি আর বন্ধু আড্ডায় কথা উঠলে বোরকার অপরিসীম প্রয়োজনীয়তার কথা বলে। শফির আদর্শে বিশ্বাস করে আবার বিকেল হতে না হতেই গার্লফ্রেন্ডের হাত ধরে বের হয়ে যায়। ব্যক্তিগত অবজারভেশন। আপনার সাথে মিলে গেলে কতৃপক্ষ দায়ী নয়!
২২ জুলাই, ২০১৩:
# ১) পূর্ণ চন্দ্র। উথাল-পাথাল জ্যোৎস্না। এই মুহূর্তে রাবীন্দ্রিক প্রেমিকারা গান বাঁধে, 'চাঁদের হাসির বাধ ভেঙেছে, উছলে পড়ে আলো /ও রজনীগন্ধা তোমার গন্ধ সুধা ঢালো।' প্রেমিকেরা বলে ওঠে, 'এমন চাঁদের আলো, মরি যদি তাও ভালো।'
২) কাদের মোল্লার আপিলে সরকার পক্ষ এবং আসামী পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ। রায় হতে পারে যেকোনো দিন। জীবনের অনেকগুলো দিন কুকুরটার 'ভি' চিহ্নটা উল্টো করে ফিরিয়ে দেবো বলে ব্যয় করেছি। ব্যয়টা অপব্যয় না হলেই হয়।
3) 'If blood is the price of independence, then Bangladesh has paid the highest price in history.' (London Times, 1971)
২৩ জুলাই, ২০১৩:
# ১) টিটো ভিলানোভার উত্তরসুরি হচ্ছেন জেরার্ডো 'টাটা' মার্টিনো। মার্টিনোর অধিনস্ত প্যারাগুয়ের খেলার স্টাইল দেখলেও স্মরণে নেই মোটেও। তাই ইউটিউব থেকে নিওয়েলসের কিছু ভিডিও দেখে নিলাম। ভালো লেগেছে। বার্সার প্রথাগত ৪-৩-৩ এই খেলেছে নিওয়েলস। টিকি-টাকা আর প্রেসিং ফুটবলের সাথে উইং প্লে আর কাউন্টার অ্যাটাকিং গেম দেখা যাবে বলেই ধারণা করছি। পরিবর্তনটা অপ্রত্যাশিত ছিলো। নতুন কোচের সাথে মানিয়ে নেওয়ার ব্যাপারও আছে। তবে পরিবর্তন ব্যাপারটা মাঝে মধ্যে সুফল আনেও বটে। গার্দিওলা প্রকৃষ্ট উদাহরণ। তবে অবাক হলাম বার্সায় মেসির প্রভাব দেখে। নেইমারকে সাইন করার আগে স্যান্ড্রো রোসেল এবং যুবিযারেতা মেসির সাথে পরামর্শ করে নিয়েছিলেন। এক্ষেত্রেও তাই হলো। মেসির রিকমেন্ডেশনেই ধরতে গেলে লুইস এনরিকে আর রুবিকে টপকে ম্যানেজার হয়ে গেলেন টাটা মার্টিনো। এই বিরল ক্ষমতাটা জেরার্ড-টট্টিরাও দেখাতে পারে না।
২) জন্মগত প্রতিভা না থাকলেও যে সফল হওয়া যায় তার একটা বড় উদাহরণ বর্তমানের রঙ্গনা হেরাথ। খুব সাধারণ অ্যাকশন আর ডেলিভারি। টার্ণ নেই তেমন, খাটো হওয়াতে বাউন্সও পায় না। আপাত দৃষ্টিতে খুব নিরীহ টাইপের বোলার মনে হবে। এক দৃষ্টিতে ওর কয়েক ওভার বোলিং দেখেন। ধারণাটা ভেঙে যাবে। একই জায়গায়, একই অ্যাকশনে, বিভিন্ন গতিতে বল ফেলছে এবং বলগুলো দু'রকম হচ্ছে। একটা স্বাভাবিক স্পিন করে বের হয়ে যাচ্ছে; আরেকটা আর্ম বল, ভিতরে ঢুকছে। এবং বল দু'টোর অ্যাঙ্গেলের ব্যবধান ৫ ডিগ্রির উপরে। সুতরাং মাঝে মাঝেই ব্যাট মিস করছে। ফলে ব্যাটসম্যানকে বল টার্ণ করার আগেই ফেস করতে হচ্ছে। যথেষ্ট কঠিন। এবং বলের উপর এতটা কন্ট্রোল ওর আগে ছিলো না। এটা প্রচুর পরিশ্রমের ফসল।
৩) বাংলাদেশে প্রিমিয়ার লীগ হওয়া নিয়ে সংশয়। রিচার্ড পাইবাস চলে যাওয়ার পরে বোলিং কোচ জার্গেনসেন এখনও মূল কোচ হয়ে বসে আছেন। বিসিবি একজন হাই প্রোফাইল কোচও আনতে পারছে না। অথচ সামনের নিউজিল্যান্ড সিরিজে তাল থেকে তিল খসলেই হ্যান করেঙ্গা, ত্যান করেঙ্গা শুরু হয়ে যাবে।
২৬ জুলাই, ২০১৩:
# ১) খুব কাছের এক বন্ধুর দীর্ঘদিনের অ্যাফেয়ার ভেঙে গেছে। বন্ধুকে ব্লক করে দিয়েছে ফেসবুক-মিগের মত সামাজিক ওয়েবসাইটগুলো থেকে। ফেসবুকে ম্যাসেজ-ট্যাসেজ করে কোনোভাবে মিটানো যায় কিনা- এই চেষ্টা করতে লগ-ইন করে দেখি আমাকেও ব্লক মেরেছে। আমার অপরাধ, আমি ওর খুব কাছের বন্ধুদের একজন। ব্যাস, এটুকুই। আহ্ִ, হাও সুইট! মেয়ে, গলা সরু হতে পারে, তাই বলে তোমার মাথাটাও টিউব লাইটের মত এতটা সরু কেনো গো?
২) গত কয়েক মাসে যতগুলো মেয়ে আইডি থেকে রিকোয়েস্ট এসেছে তার বেশিরভাগ থেকেই আমাকে পেজের রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছে অথবা গ্রুপে অ্যাড করা হয়েছে। ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট-পেজ রিকোয়েস্ট-গ্রুপ রিকোয়েস্ট; না বাপু, এসবে আমার আর পোষাচ্ছে না। এবার 'অন্য' রিকোয়েস্টের ট্রাই মারো।
৩) যাত্রীর 'ডাক' শুনি। এই কোয়ালিটির অ্যালবাম আট-দশ বছরে একটা-দু'টোই আসে।
'তুমি চাও রোদ্দুর
আমি চাই আকাশ মেঘলা
খোঁজো পূর্ণিমা
বলি চাঁদ ডুবে যাক না
ছুটে চলো একা দূরে
আমার ইচ্ছে করে না
দু'জনেই দু'জনাকে চাই
তবু নিজেদের আজ কেউ চাই না
মেলে না, আজ কিছু মেলে না
ভালোবাসা, বাঁচতে চাওয়া ছাড়া
এ দু'টোই মিলে যায়
বসে একা ভাবি তাই
এই কি বেশি না?
বলো, এই কি বেশি না?'
# ১) এক সুন্দরী তরুণী দু'দিন আগে হঠাৎ করে অনেকের সামনে জানালো, 'রণি, আজ রাতে সেহেরির পরে তোমাকে স্বপ্নে দেখেছি।' বললাম, 'মাই গুডনেস, আমাকে স্বপ্নে দেখছো! কী খাবা বলো? রোজা না থাকলে আজকেই তোমাকে সুলেমানি বিরিয়ানি খাওয়াইতাম। আফসোস, মিস করলা'!
২) ধীরে ধীরে অ্যাভয়েড করা শিখছি। সানি লিওন পোশাক, সমকামিতা, ময়ুরীর রাজনীতি; এসব পড়ার জন্য বেশ ভালোই কিন্তু আমার স্ট্যাটাস লেখার জন্যে না। নিউজফিডের উপদেশমূলক, দেশোদ্ধার টাইপ স্ট্যাটাসও অ্যাভয়েড করছি। দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় এসব স্ট্যাটাসের প্যাটার্ন-ধাঁচ সব চেনা। শুরুর কয়েক লাইন পড়েই বুঝতে পারি। যারা দেয়, তাদেরও কেউ কেউ চেনা। সযত্নে এড়িয়ে যাই। বরং বড় ধরণের অ্যানালাইটিক বা ক্রিয়েটিভ লেখা পড়তে ভালো লাগে। লেংথ্ִ অফ স্ট্যাটাস নেভার বোদারস্ִ মি।
৩) বন্ধু @[100000824406564:অমিত] একটা পেজের অ্যাডমিন। শুনে তব্দা খেলাম। যে বাংলা লিখতে সময়ের অপচয় বলে বাংলিশে স্ট্যাটাস দিতো, সে এখন পেজের জন্য বাংলাতেই লিখে পোষ্ট দেয়! পেজের নাম জিজ্ঞাসা করলাম। বললো, আরে, মেডিকেল রিলেটেডই একটা পেজ। @[322146357892544: মানব যন্ত্রের রহস্য ও তার সমাধান] নামে।
জিজ্ঞাসাইলাম, তা তোর পেজের মেম্বারদের 'যন্ত্র' সুরক্ষায় জোকের তেলের উপকারিতার কথা লিখে পোষ্ট দিয়েছিস তো?
৪) হুমায়ুন ভাইয়ের সাথে একসাথে বিরিয়ানি রাধলাম গতরাতে। ফিলিং- হবে না গুরু, ফাইনালি রেস্টুরেন্ট থেকে মহিলা কুকার খুঁজে বের করে আরেফিন রুমিই হতে হবে!
২৭ জুলাই, ২০১৩:
# ১) এদেশে সঞ্জীব চৌধুরী-রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা থেকে আসিফ-হাসানরা বেশি জনপ্রিয়। এখানে সঞ্জীব চৌধুরীর 'আমাকে অন্ধ করে দিয়েছিলো চাঁদ', 'তোমার ভাঁজ খোলো', 'তোমাকেই বলে দেবো' থেকে হাসানের 'এত কষ্ট কেনো ভালোবাসায়' বা আসিফের 'ও প্রিয়া, ও প্রিয়া তুমি কোথায়' ঢের বেশি জনপ্রিয়। এদেশে সৃষ্টির যথাযথ মূল্যায়ন হয়না এটা বুঝতে এ উদাহরণটাই যথেষ্ট হওয়ার কথা।
২) চারপাশে অনলাইন অ্যাফেয়ার দেখছি। যাদেরই সাথে কথা হয়, শুনি, তার রিলেশন অনলাইন থেকে। আচ্ছা, অনলাইনে কি অ্যাফেয়ার বাংলালিংক দরেই..… যাই হোক, 'দেখিস, ৭ দিনের মধ্যেই ফেসবুক থেকে একটাকে ম্যানেজ করে ফেলবো'- এমন কথাও কানে এসেছে গত কয়েক দিনে। ফেসবুকে নাকি সুন্দরীদের ছড়াছড়ি। এসব রিলেশনের স্থায়িত্ব এবং ভবিষ্যত নিয়ে আমার যথেষ্ট শংকা এবং সন্দেহ কাজ করে। সে যাই হোক, ক্যান্টনমেন্টের ফিজিক্সের মকবুল স্যারের কথা মনে পড়ে গেলো। স্যার একদিন ক্লাসে মেয়েদের পড়া ধরতে গিয়ে বলেছিলেন, 'কাকে রেখে কাকে (পড়া) ধরি, সবই যে সুন্দরী'!
৩) কোনো মোটা মানুষ রোগ-বালাই মুক্ত আছে, এটা আজ পর্যন্ত দেখিনি। শরীরে যত বেশি চর্বি, তত বেশি কমপ্লিকেশন।
৪) মা কে ফোন দিলাম। বললাম, শুধু শেখ হাসিনার মোরগ পোলাও রান্না দেখতে পারবো না, তুমিও আয়োজন করো। ৮ তারিখ রাতে আসছি।
'Country road take me home
To the place, I belong.'
২৯ জুলাই, ২০১৩:
# সুন্দরবনের মাত্র এক-পঞ্চমাংশ ভারতে। মাত্র ১৯%। বাকি চার ভাগই বা ৮১% ই বাংলাদেশে। অথচ বাঘের সংখ্যা বাংলাদেশে ৪০০-৪৫০। হ্যা, বাংলাদেশের বাঘশুমারির এমনই অবস্থা যে রেঞ্জে বলতে হয় সংখ্যাটা। পাশের দেশ ভারতে, সুন্দরবনের মাত্র এক-পঞ্চমাংশ জায়গাতেই সংখ্যাটা ১৪১১। সারা দেশ মিলে ১৭০৬ টা। এবং ওদের বাঘশুমারি এতই স্পেসিফিক যে পুরুষ বাঘ, বাঘিনী, বাচ্চা বাঘের সংখ্যা কত ইন্টারনেটে সার্চ দিলে সাথে সাথেই পেয়ে যাবেন। টিভি খুললেই দেখা যায় মহেন্দ্র সিং ধোনি এতগুলো বাঘ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছেন। এ নিয়েছে এতটা, ও এতটা। ওদের দেশে বাঘ রক্ষা নিয়ে যে পরিমান প্রচারণা দেখি, সচেতনতা দেখি তার কানাকড়িও নেই বাংলাদেশে। উল্টো চলছে রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পায়তারা।
বছর তিনেক আগে আমার সুন্দরবনে স্বচক্ষে বাঘ দেখার দূর্লভ অভিজ্ঞতা হয়েছে, এবং সেটা ছিলো অবৈধ উপায়ে! সাতক্ষীরার শ্যামনগর থেকে এক ভাই হুট করে প্লান-প্রোগ্রাম ছাড়াই মটর সাইকেলে করে নিয়ে গেছিলো। জায়গাটা খুব সম্ভবত মুন্সিগঞ্জের নীলডুমুর। ওখান থেকে একটা নৌকা করে নদী পার হয়ে খাল দিয়ে বেশ খানিকটা ঢুকে পড়েছিলাম ভিতরে। কোনো প্রসাশনিক বাঁধারই সম্মুখীন হতে হয়নি। আমি কৌতুহলে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, 'এখানে সেনাবাহিনী-বিডিআর কিছু নেই? যদি ধরা খাই?' উত্তর এসেছিলো, 'ধ্যাত! চিন্তা করিস না তো। হাতে দু'শো টাকা গুজে দিলেই হবে'। এমনকি আমাদের নৌকার মাঝি পরেরদিন সকালে আসলে হরিণের মাংস দিতে পারবে তিনশো টাকা কেজিতে, সে আশ্বাসটাও দিয়েছিলো! কী ভয়ঙ্কর ব্যাপার!
বিশ্বে মাত্র ১৩ টি দেশে বাঘ অবশিষ্ট আছে। নেট থেকে জানলাম, দেশগুলো হলো: বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভূটান, মিয়ানমার, চীন, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, লায়োস এবং রাশিয়া। এই ১৩ টা 'টাইগার রেঞ্জ' দেশেই আজ 'বিশ্ব বাঘ দিবস' এবং এই ছোট্ট লেখার কারণটাও সেটাই।
৩০ জুলাই, ২০১৩:
# ১) অটোতে যাচ্ছিলাম গাঙিনারপার। ড্রাইভার দুইবার দু'টো রিকশার সাথে বাঁধিয়ে দিলো। উল্টে পড়ে পড়ে অবস্থা। কয়েকজন ড্রাইভারকে ময়মনসিংহের ভাষায় 'কী খাইছুন?', '***পুত, অন্ধ নি?' বলে ঝাড়ি দিয়ে দিলো কতকগুলো। আমার পাশে বসা লোকটা তরুণ ড্রাইভারকে বেশ ভদ্রভাবে জিজ্ঞাসা করে উঠলো, 'ভাই, বিয়ে করেছেন?'
জিজ্ঞাসার ধরণের আকস্মিকতায় খানিকটা ইতস্তত করে ড্রাইভার উত্তর দিলো, হ। সাথে সাথেই লোকটা বলে উঠলো, 'তাইতো কই, ক্যান জীবনের মায়া ত্যাগ কইরা অ্যামনে গাড়ি চালাইতাছুন'!
২) ফেসবুক জীবনেরই একটা অংশ হয়ে গেছে। সকালে-বিকালে, আলাপ-আলোচনায় ফেসবুক আর ফেসবুক। বাস্তব জীবনে সবার বন্ধুত্ব গ্রহণ না করলেও ফেসবুকে মোটামুটি চোখ বন্ধ করে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করি। শুধু ডিলিট করার প্রয়োজন বোধ করলেই বাঁশেরকেল্লা, পুদিনা পাতা ১৮+, ওড়না পেজগুলোতে একটু ঢু মারি। তারপর ঘ্যাচাং। সহমত, ভিন্নমতের সাথে চলা যায়, কিন্তু 'অপমত'-এর সাথে চলা আমার জন্য দুরুহ ব্যাপার।
৩) আগুনের সমর্থক শব্দ অগ্নি, অনল, দহন ইত্যাদি ইত্যাদি। পাকিস্তান ক্রিকেটের সমর্থক শব্দ বিতর্ক, অবসর নাটক, স্পট ফিক্সিং, ম্যাচ পাতানো ইত্যাদি ইত্যাদি। পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজের তৃতীয় ওয়ানডে ফিক্সিং সন্দেহে আবার আঁতশ কাঁচের নিচে।
৪) ঠিক নিশ্চিত নই, তবে যদ্দুর জানি বিসিবির সভাপতি পদে প্রাক্তন ক্রিকেটারদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ নেই। সারা জীবন ক্রিকেট বলতে ঝিঁঝি পোকা জেনে আসা এসব পলিটিশিয়ানদের ডিসিশনের উপর দেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যত নির্ভর করে, কেমন একটা উইয়ার্ড শোনায় না?
৫) ইদানিং প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে আবিষ্কার করছি ঘাড়ে ব্যথা। শিমুল তুলার বালিশটা বিটলামি করতেছে। ব্যথাটাও ক্রমে অসহ্য পর্যায়ে পৌছাচ্ছে। একটা রক্ত মাংসের বালিশ দরকার!
৬) পাঁচ-সাতটা স্ট্যাটাস একসাথে দেওয়াটা কোনো স্টাইল না। এটার পিছনে একটা উদ্দেশ্য আছে। মানহীন কিছু স্ট্যাটাস যাতে একাধিকবার বন্ধুদের নিউজ-ফিড দুষিত করে না ফেলে সেজন্যই সব আবর্জনা একজায়গায় করে এক পলিথিনে ভরে ডাস্টবিনে ফেলি। একটা স্ট্যাটাস খুব সহজেই অ্যাভয়েড করা যায়।
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:০১
ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: মেগা পোস্টে +++++++
সময় নিয়ে পড়তে হবে সবগুলো।