![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নামে প্রেমের যত নাম, আর যত কাহিনী... পার্টঃ২
=====================================
সালঃ ২০১১
অচেনা নাম্বারে মেসেজ গিয়েছিলো তাতেই। উনি আমার বিগ ফ্যান। মাঝে মাঝেই ফোন দিয়ে রান্না ঘরের খুরচুন, চামচ, ডাল ঘুটনী দিয় মারামারির প্লান করতেন। আমিও করতাম। কে কাকে কিভাবে হাসপাতালে পাঠাবে সেই প্লানিং। কারন তখন অবদি কেউ আমরা কখনো হাসপাতালের বেডে শুয়ে দেখিনি। ছোট বোনের পরীক্ষার প্রথম দিন ওকে হল পর্যন্ত পৌছে দিয়ে আসবো। তাই সকাল উঠেই ফ্রেশ হলাম। তাও আবার কী যেনো মনে করে ওয়াশ রুমে গেলাম। পরে ওয়াশ রুম থেকে হাসপাতালের বেড হয়ে অপারেশন থিয়েটার। সেদিন সেই পাতিল মাস্টারের সাথে দেখা করার কথা ছিলো। কিন্তু বেচারী দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করার পর যখন আমাকে ফোন দিয়েছিলো। তখন আমি ওপারেশন থিয়েটারে। ফোন কোথায় ছিলো নিজেও জানতাম না। পরে উনি আর আমার কোন খুঁজ কোন দিন নেয় নি। একদিন ফেবুর বদৌলতে জানতে পারলো সব, অবশ্য ততদিনে উনি অন্য কারো পার্মানেন্ট পাতিল মাস্টার হয়ে গেছেন। তবে খুব আফসোস আর দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন।
সালঃ২০১২
আমার মেঝু ভাইয়ের এক বড় ভাই। যিনি এক সময় আমাকে দেখেছিলেন হাসপাতালে মেঝু ভাইয়ের সেবা করতে। হাসপাতালের ডাক্তার নার্স সবাই আমার প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলো। উনি প্রথম সেদিন আমাকে দেখে বিস্মিত হয়ে ছিলো। শুধু বলেছিলো তুই তো দেশী পিয়ারারে। সেই ভাইয়া আর আমার মেঝু ভাই যেদিন হাসপাতাল থেকে আমাকে নিয়ে আসতে গিয়েছিলো সেদিন উনি তো পুরাই হতবম্ব। আমাকে যখন এ্যাম্বুলেন্সে উঠানো হচ্ছিলো, তখন বলা হলো একটা পা বাড়ানোর জন্য। আমি তখন আমার যেই পায়ে ২৭ টা সেলাই করা ছিলো। সেই পা ই আগে বাড়িয়ে ছিলাম ওই ভাইয়া তখন আমাকে বলেছিলো তুর ওপারেশন হইছে কোন পায়ে। আমি তখন বলছিলাম ওটা তো অতীত। উনি তখন বলছিলো তুই তো রোবটের জাত ভাই। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার সেই ভাইয়ের ১০ দশ স্টুডেন্ট আমার নাম শুনলেই ফিদা হইতো। তারপর পায়ের বেন্ডেজ খোলার পর একদিন আমাকে ফেস টু ফেস দেখার পর ই সেই সংখ্যা ১ এ এসে নামে। সেই ১ ছিলো ছোট খাটো হাতির বাচ্চা। কিন্তু উনি সেই ভাইয়ার মতো জানতো আমি না কী দেশী পিয়ারা। নানান অযুহাতে উনি আমার ধারে কাছে ঘুর ঘুর করতো। সবাই তো ভাবতো আমার আর ওর ইয়ে... আছে। কিন্তু উনি আমার কাছ থেকে কম্পিউটার, বাচ্চাদের হেন্ডল করা, আর কথা বলার কিছু ধরন মুখস্ত করেই এক সময় ঈদের চাঁদ হয়ে গেলো। কারন তখন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে চান্স পেয়েছিলো। বেচ উনি তো উনি ই নাম টা ছিলো শান্তু মটো। সাবাই ডাকতো। আমি শুধু মটো বলতাম।
সালঃ২০১৩
ঢাকার বাইরে বগুড়াতে। একি সাথে দুই প্রতিষ্ঠানে টিচিং করি। একটাতে কম্পিউটার আর ট্রাভেল এন্ড টুর অপারেশ এর ক্লাস নেই। আর এক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক আর উনার উয়াইফের অনুপস্থিতিতে আমিই প্রতিষ্ঠানের সব দেখাশোনা করি। একটা কোচিং সেন্টার প্লাস স্কুল। বগুড়ার মেইন শহরে। জলেশ্বরী তলায়। নাম ইউনিক কোচিং সেন্টার। ওখানে যে কত জনের জামাই আদর আর দাওয়াত পেয়েছি তা আর নাম বলে শেষ হবে না। তবে ওগুলোর সব ই ছিলো অনেকটা এক তরফা। কিন্তু কিডিদের কাছে কারো কোন অবস্থান তখন ছিলো না। দশ বছরের পুরোনো প্রতিষ্ঠানে গিয়ে। মাত্র তিন মাসে সব কিডিদের কাছে আমি ই আমি। অন্য কারো নামটা পুরো কোচিং এ খুব একটা শোনা যেতো না কিডিদের মুখে। ওদের সাথে মাখামাখি দেখে কখনো কখনো অনেক অভিবাবকও আমার প্রেমে পড়তো। একদিন রাতে হঠাৎ এপেন্ডিসাইডের ব্যথা। তারপর শহীদ জিয়া মেডিক্যাল কলেজে আমার অপারেশন। তারপর বাড়ির সবার অনুরোধে সবার সব প্রেম মায়া মমতা ভালোবাসাকে ছেড়ে ঢাকায় চলে আসি। এখন অবদি আর কোন দিন বগুড়ায় যাই নি। কিডিদের ভয়ে
সালঃ ২০১৪
জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় মা বাবা আত্নীয় স্বজন সবার ই প্রেম ভালোবাসা আমার জন্য নিষিদ্ধ হয়ে গেলো। তার মাঝেও একজন মোবাইলে আমার খুজ খবর নিতো। লাইফের অনেক না বলা কথা ওর সাথে শেয়ার করেছি। একটা সময় একটি বার আমার সাথে দেখা করার জন্য অনেক আকুতি মিনতি করে। কিন্তু ওর কিছু কথা, আচরন আর শব্দের ব্যবহারে আমি প্রায়ই অবাক হতাম। কিন্তু আমার জন্য এতো আবেগ আর দরদ এই ভেবে আবার সব ভুলেও যেতাম। কিন্তু কোন একদিন আমি যখন জানতে পারলাম সে একজন কল গার্ল। তারপর সে আর আমার সাথে কোন যোগাযোগ রাখে নি। একদিন ফোন দিয়ে অনেক কেঁদে বলেছিলো আমার লাইফ থেকে একটি দিন ওকে ভিক্ষা দিতে। কিন্তু আমি পারি নি। এতো বছরের ধরে রাখা ইগো আর নষ্ট করি নি। এই ভেবে যে ও আমার কাছে প্রথম সব সত্য গোপন করেছে। তারপর সে একদিন তার হাসব্যান্ডকে নিয়ে হানিমুনে গেলো আমাদের সিলেটে। স্টুডিওতে ছবি ওয়াশ করতে দিয়েছিলো। সেই স্টুডিও থেকেই আমি একটি ফোন পাই। তারপর একদিন সেই মেয়ে আমার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে সব কিছুই গোপন করার অনুরোধ করে মোবাইল নাম্বার চেইঞ্জ করলো...
সালঃ২০১৫
ঈদের আগের দিন রাতে। ফেবুতে বসে বইপোকাদের গল্প কবিতা নামে একটি পেইজ খুজে পাই। রিকুয়েশ্ট পাঠাই। এবং মিনিটের মধ্যেই এড হয়ে যাই। সেদিন প্রথম বার বই বা বই বিষয়ক কোন পোস্ট বা লেখা মনোযোগ দিয়ে বেশ অনেক্ষণ পড়ি। বৃষ্টি বিষয়ক একটি পোস্টে একজনের সাথে কমেন্টস এ পরিচয়। টুকটাক টেক্সট আদান প্রদান। তখন আমার ফেবু আইডিতে রিকুয়েশ্ট পাঠানোর অপশনটা অফ করে রাখাছিলো। সেই নিয়েই অনেক গল্প। তখন ওর বিএফ এর সাথে ব্রেক আপের মাত্র দুই মাস। আর তখন আমি পুরোদস্তুর নারী বিদ্বেষী। হায় হ্যালো ছাড়া কোন মেয়ের কথা তখন কানে নেই না। কিন্তু মেয়েটির কিছু কিছু বিষয় খুব ভালো লাগতো। অনেক সময় কেটেছে ইনবক্সে। কখনো লিস্টে এড করার কথা বলেনি। একটা পর্যায় নেট কানেকশন না থাকার কারনে মোবাইলে টেক্সট। কিন্তু মোবাইল নাম্বার পাবার পর দু'এক দিন পর্যন্ত শুধু টেক্সট আদান প্রদান হতো। এক সপ্তাহ পর প্রথম ওর কল পাই। আমার সময়টা তখন খুব বাজে যাচ্ছিলো। এক মাত্র ওই ছিলো কিছু শেয়ার করার মতো কেউ। কিন্তু আর সবার মতো ও একদিন ভাবতে শুরু করলো আমি হয়তো ওর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছি। অনেক চেষ্টা করেও বুঝাতে পারি নি। কাউকে ভালোবাসতে গেলে যতটুকু বিশ্বাস বা সাহস লাগে তা আমার নেই। কিন্তু এতো ভালো একজন বন্ধুকে হারানোর কষ্টে অনেক কিছু করেছি। মাঝে একটা সময় ওর সাথে এমন আচরণ করেছি। ভাবতেই লজ্জা লাগে। ওকে নিয়েই আমার প্রথম কোন বড় গল্প এই গ্রুপে স্থান পায়। ওকে অনেক নামে ডাকতাম। ম্যাপস, হাতির ডিম, পপস... নাম বিষয়ে কোন দিন কোন প্রশ্ন করতো না। প্রেম ভালোবাসায় বিশ্বাস হারালেও। ওর সাথে পরিচয় হবার পর প্রথম উপলব্ধি হয়। কোন মেয়েও হয়তো আমার বন্ধু হতে পারে।..... (চলবে)
©somewhere in net ltd.