নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তৃতীয় পক্ষ

rudrorasel

মানুষ হওয়ার চেষ্টা করছি

rudrorasel › বিস্তারিত পোস্টঃ

নির্বাচন : কলঙ্কময় না বলে পারছি না

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৮:১৮


পেশাগত দায়িত্বপালন করতেই ২৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকাল থেকে নির্বাচনী কেন্দ্রে দৌড়-ঝাঁপ শুরু। যতটি কেন্দ্রে গিয়েছি, প্রতিটি কেন্দ্রেরই প্রায় একই অবস্থা। ভোটার ও পর্যবেক্ষক, সাংবাদিকদের বাঁধা দেওয়াসহ নানা রহস্যময় আচরণ চোখে পড়েছে। মোট কথা ভোট কেন্দ্রগুলো দখল করে নিয়েছিল সরকার দলীয় লোকজন। তাদের নির্দেশে চলছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তারা ড্যাম কেয়ার। প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা চরম অসহায় ছিল। পুলিশও উদাসীনভাবে ঘুরছিল। সরকারদলীয় ওইসব লোকজনকে ভোট কাটতে সহযোগীতাও করতে হয়েছিল পুলিশ ও নির্বাচনী কর্মকর্তাদের। তারা এক ধরনের অসহায় ও বাধ্য ছিলেন। পশ্চিম রামপুরার ওয়ার্ল্ড ভিউ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল কেন্দ্রে ভোট কাটছিল সরকারদলীয় নেতা-কর্মীরা। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে উদাসীনভাবে বসে আছেন পরিচিত এক পুলিশ কর্মকর্তা। আমাকে দেখেই বিব্রত হলেন- কুশলাদি জিজ্ঞাসার ছলে কিছুক্ষণ রাখতে চাইলেন কেন্দ্রের গেটে। আচরণ রহস্যময় মনে হলে আমিও কৌশলে ভিতরে যাওয়ার চেষ্টা করি। অবশেষে তিনি ইশারায় কাফি করে দিলেন। ভিতরে ডুকে দেখি বেঁচারা প্রিজাইডিং অফিসার ঘন ঘন শ্বাস ফেলছেন। টেবিলের সামনে দুজন পুলিশ সদস্য বসা। সকলের চোখে মুখে অসহায়ত্ব। প্রিজাইডিং কর্মকর্তা অভিযোগ করলেন, ‘ছাত্রলীগ গোলমাল করছে।’ বললেন, ‘আপনারা (পর্যবেক্ষক-সাংবাদিক) এখানে অবস্থান করলে আমার জন্য ভালো হবে।’ তাকে একটি ভিজিটিং কার্ড ধরিয়ে দিয়ে বিদায় নিলাম। কেন্দ্রের চৌহদ্দির মধ্যে গেটে ছাত্রলীগ নেতা ও যুবলীগের এক নেতা দাঁড়ানো। দুজনই আমার পূর্ব র্পরিচিত। হাত মিলিয়ে বললেন- ‘ভাই এখানে ভালোই চলছে। আমরা আছিনা। নো প্রোমলেম।’ বুঝলাম, আমি সেখানে যাওয়ায় তাদের ভোট কাটায় কিছু সময়ের জন্য হলেও বিঘ্ন ঘটেছে। আর আমি পরিচিত দেখে তারা ঢুকতে বাধা সৃষ্টি করেনি।
বিকাল ৩টার দিকে ধানমন্ডির আলী হোসেন বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে গেলে একই অবস্থা। এক কনস্টেবল বললো, সাংবাদিক ঢুকতে মানা। আমি পুলিশ কর্মকর্তাদের দারস্থ হলে- একজন বললেন, ওই কেন্দ্রে কিছুক্ষণ পরে যান। এখানে ওই কেন্দ্র ছাড়া আরও তিনটি কেন্দ্র রয়েছে। ওগুলোতে যান, ওই কেন্দ্রে পরে ঢোকেন। তার কথা মতো ওই দুটি কেন্দ্রে ঢুকে দোতলা থেকে পাশের ভবনে চোখ রাখতেই ভোট কাটার মহোৎসব। যাই হোক অন্য কেন্দ্র দিয়ে ওই কেন্দ্রের তিন তলায় পৌঁছলাম পরিচিত এক পুলিশ কর্মকর্তার সহায়তায়। তবে ততক্ষণে বদলে গেছে কেন্দ্রের চিত্র। সব ঠিকঠাক, শুধু তরুন প্রিজাইডিং অফিসার মাথা নিচু করে বেঞ্চের উপর ঝিমাচ্ছিলেন-ঘুমাচ্ছিলেন। আমার উচ্চ স্বরের সালামে ঘুম ভাঙলো তার। বেচারা অসহায় তা দেখেই বোঝা গেল। পরে ওই পুলিশ কনস্টেবলের কাছে আসলাম তার ইনচার্জকে নিয়ে। তার সামনেই ওই কনস্টেবল বললো, কেন স্যার- ডিসি স্যার তাই বলে গেলো না। পরে নিচু স্বরে ওই কনস্টেবলকে অফিসার বললেন, সেটাতো অভ্যন্তরীন। ওই ছোট্ট কথাটি আমার কানে এসেছে। আর অন্য কেন্দ্রগুলোর কোনটিতে বাধা পেয়েছি আর কোনটিতে ঢুকে দেখেছি ভোট কাটার মহোৎসব। আমি প্রার্থী হলে দুপুরে নয় সকালে ভোট শুরুর ৫ মিনিটের মাথায়ই বর্জন করতাম।
আর একটি পর্যবেক্ষন হচ্ছে- আমার কাছে কেন যেন মনে হয়েছিল- পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তারা সেটে যেসব নির্দেশ দিচ্ছিলেন, তা কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা মানছিল না। তবে অভ্যন্তরীন কোন সিদ্ধান্ত ছিল কীনা তা জানা নেই। কারণ সেটে কন্ট্রোল থেকে বার বার বলা হচ্ছিল- জিরো টলারেন্স। তবে নড়ছিল না মাঠ পর্যায়ে কর্মরতরা। অন্য দিকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশও দলীয় স্থানীয় নেতা-কর্মীরা মানেনি। সেখানেও অভ্যন্তরীন কী কৌশল ছিল তা আমার জানা নেই।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.